Lifan KPR 150 V2 সিটিতে মাইলেজ ৩৮ কিলোমিটার - আরিফ

This page was last updated on 28-Jul-2024 01:28am , By Raihan Opu Bangla

আমি আরিফ । আমি গত ২ বছর যাবত Lifan KPR 150 V2 কালো-সবুজ কালারের বাইকটি রাইড করেতেছি । আমার এই বাইক প্রায় ৩১হাজার কিলোমিটার চলেছে। আমি চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট সদরঘাট এলাকায় বাস করি। আজ আমি আমার এই বাইকটি নিয়ে ৩১ হাজার কিলোমিটার রাইড করার অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।

Lifan KPR 150 V2 সিটিতে মাইলেজ ৩৮ কি.মি. রাইড করার অভিজ্ঞতা

lifan kpr 150 v2 black green color engine with front tireআমার জীবনের প্রথম বাইক ছিলো Yamaha Enticer 125 বাইক। বাইকটি আমি কিনেছিলাম আমার এলাকার এক বড় ভাইয়ের থেকে এবং সেই বাইক দিয়েই আমি প্রথম বাইক চালানো শিখি। এই বাইক নিয়ে প্রথম কক্সবাজারে যাওয়া। প্রায় এক বছরের মত Yamaha Enticer 125 রাইড করি। আমার বাইক এবং বাইকিং ছোট বেলা থেকেই শখ। প্রথম বাইকে ওঠা মামার বন্ধুর বাইকে সেই থেকে বাইকের প্রতি ভালো লাগা শুরু হয়। আস্তে আস্তে ভালো লাগা থেকে বাইক এখন ভালোবাসার এক বাহন এবং আবেগে পরিনিত হয়েছে।

Lifan KPR 150 V2 বাইকটি বেছে নেওয়ার কারন হচ্ছে বাইকটি প্রথম দেখায় খুব ভালো লেগেছিল। এই বাজেটে স্পোর্টি লুক, এত ভালো সার্ভিস যা আমাকে মুগ্ধ করে। যার কারনে Lifan KPR 150 V2 বাইকটি বেছে নেই। তখন বাইকটির দাম ছিলো ১,৮৫,০০০ টাকা । বাইকটি চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলাকার KDA Motors থেকে ক্রয় করেছিলাম।

lifan kpr 150 v2 black green color with rider and rear brake

বাইকটি যেদিন কিনতে যাব সেদিন আমার ফ্যামিলির সবাই গ্রামের বাড়ি (বরিশাল) বেড়াতে যাচ্ছিল। তাই খুব দ্রুত সমস্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে বাইক নিয়ে বাসায় চলে আসি এবং ছোট ভাই, ছোট বোন ও আম্মু আব্বু কে দেখাই এবং আমার বাইক দেখে তারা গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হয়। বাইকটি যখন প্রথম চালাই তখন অনুভূতি অনেক ভালো ছিল। প্রথম স্পোর্টিং বাইক চালানোর অনুভূতিই আলাদা ছিলো।

Lifan KPR 150 V2 বাইকের ফিচার সমুহ -

  • ৪ স্ট্রোক সিংগেল সিলিন্ডার
  • ৬ গিয়ার
  • ১৪.৭ বিএইচপি ৮০০০ আরপিএম
  • ইঞ্জিন ১৪৯ সিসি
  • লিকুইড কুলিং সিস্টেম
  • ডাবল ডিস্ক ব্রেকিং সিস্টেম

আমার বাইকে এখন পর্যন্ত শো-রুম প্রদত্ত ৫ টি সার্ভিস করানো হয়েছে অনেক আগেই। আর এটি আমাদের চট্টগ্রামের অফিসিয়াল সার্ভিস সেন্টার থেকে করানো হয়েছে এবং এই সার্ভিস সেন্টার থেকে সবসময় সেটিস্ফাইড হয়েছি সার্ভিস করিয়ে। 

এই বাইকটির ব্রেকিং পিরিয়ড অথাবা ২৫০০ কিলোমিটার এর পূর্বে মাইলেজ পেয়েছি ৩৩-৩৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার সিটিতে এবং বর্তমানে পাচ্ছি ৩৬-৩৮ কিলোমিটার প্রতি লিটার সিটিতে। আমার বাইক নিয়ে আমি সর্বদা সেন্সিটিভ ছিলাম তাই এটা মেইনটেইন ও সবসময় ভালো করতাম।kpr 150 v2 front headlight tire and side panelআমি আমার বাইকে সব সময় মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি (20w40) গ্রেডের শেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি এবং প্রতি ৮০০ থেকে ৯০০ কিলোমিটারে পরিবর্তন করি । বাইকটিতে এখন পর্যন্ত চেইন স্পোকেট এবং ব্রেক সু ছাড়া অন্য কোনো পার্টস পরিবর্তন করা হয়নি। বাইকের দুই পাশের কীটের কালার মোডিফিকেশন করা হয়েছে এবং Lifan KPR এর স্টিকার ও মোডিফাই করা হয়েছে। বাইকটি নিয়ে আমি ঢাকা - চট্টগ্রাম হাইওয়েতে সর্বোচ্চ ১২১ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা স্পিড তুলেছি।

Lifan KPR 150 V2 বাইকটির কিছু ভালো দিক -

  • স্বল্প বাজেটে খুবই ভালো সার্ভিস পাওয়া যায়
  • কোনো ভাইব্রেশন নেই
  • লং ট্যুরের জন্য উপযুক্ত একটি বাইক
  • হ্যান্ডেলবার কন্ট্রলিং খুবই ভালো
  • হেড লাইট খুবই ভালো আলো দিয়ে থাকে

Lifan KPR 150 V2 বাইকটির কিছু খারাপ দিক -

  • বাইকটির উইন্ডশিল্ডটি খুবই দুর্বল, যা অল্পতেই চাপ পরলে ভেঙে যায়
  • ক্লাচ কেবল একটু হার্ড
  • চেইন খুব দ্রুত লুজ হয়ে যায়
  • টার্নিং রেডিয়াস
  • ব্যাক সাইড আমার ভালো লাগেনি

kpr 150 v2 long tour rider and tail light

 এছাড়া তেমন কোনো খারাপ দিক পাইনি বাইকটিতে । বাইকটি নিয়ে আমি প্রথম লং ট্যুর দেই চট্টগ্রাম থেকে বরিশাল। আর যাওয়ার পথে বাইকটি আমাকে একটুও হতাশ করেনি, বরং মুগ্ধ করার মত বিষয় ছিলো যে আমি চট্টগ্রাম থেকে বরিশাল গিয়েছি তবুও বাইকটির ইঞ্জিন পার্ফরমেন্স ড্রপ করেনি। 

এই দিক দিয়ে আমি ল্যং ট্যুরে বাইকটি নিয় কখনো হতাশ হয়নি। বরং খুব কমফোর্টেবল ভাবে রাইড করেছি। সর্বশেষ বাইকটি নিয়ে গত ২ বছরে অনেক সন্তুষ্ট। অনেক লং রাইড দিয়েছি অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে ৷ স্বল্প বাজেটে Lifan KPR 150 V2 থেকে ভালো এবং স্পোর্টি বাইক আমি আর পাবো বলে মনে হয় না। ধন্যবাদ।

লিখেছেনঃ আরিফ

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।