Hyosung Aquila GV300 - ভি টুইন ইঞ্জিনের ববার বাইক এখন বাংলাদেশে
This page was last updated on 28-Jan-2025 12:34pm , By Badhan Roy
ক্রুজার সেগমেন্টের সাথে আমাদের পরিচিতি থাকলেও ববার হচ্ছে ক্রুজারের আরেকটি টাইপ, যা বাংলাদেশের বাইকারদের কাছে তুলনামূলক নতুন। ববার ও ক্রুজারের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে ববার তুলনামূলক কম্প্যাক্ট, মাসকুলার এবং গতানুগতিক ক্রুজারের তুলনায় কিছুটা কম ওজনের হয়ে থাকে।
Hyosung Aquila GV300
এগ্রেসিভ লুক, পাওয়ারফুল স্মুথ রাইডিং ফিল, মাসকুলার রোড প্রেজেন্সের সাথে এর লং রাইড প্র্যাক্টিকালিটির জন্য ববার বাইকগুলোর সারা বিশ্বে আলাদা জনপ্রিয়তা বিদ্যমান যা বিভিন্ন মুভিতে বেশ লক্ষণীয়। বাংলাদেশের বাইকারদের ৮ ভাল্ভের ভি টুইন ইঞ্জিন সহ ববার বাইকের পরিচয় করিয়ে দিতে বিশ্বখ্যাত কোরিয়ান ব্র্যান্ড Hyosung বাংলাদেশে এনেছে তাদের ৩০০ সিসির Aquila GV300 বাইকটি।

Hyosung Aquila GV300 - ডিজাইন
যেমনটা শুরুতেই বলা হয়েছে, Hyosung AQUILA GV300 এর ডিজাইন ক্রুজার শেপ ও ববার ক্যাটাগরির। ইন্টারনেট থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, বাইকটির ডিজাইন বিশ্বখ্যাত Harley Davidson বাইক থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে করা হয়েছে। বাইকটির দিকে প্রথম তাকালেই এর বিশাল টুইন সিলিন্ডারের ইঞ্জিন টির দিকে নজর যেতে বাধ্য।

এর সাথে এর রাউন্ড হেডল্যাম্প, ক্রুজার শেপের টেইল লাইট, কম্প্যাক্ট সিট এবং মেটাল বডি একে প্রচন্ড পরিমাণ এগ্রেসিভ লুক এনে দেয়। বাইকটির আয়তন যদিও দানবীয় কিন্তু সিটিং পজিশনের কারনে বাইকটি চালানো এবং হ্যান্ডেলিং এর দিকে যথেষ্ট সাবলীল। বলা যাই এই ইউনিক এগ্রেসিভ ডিজাইন দ্বারা এটি সহজেই আলাদা আকর্ষণ সৃষ্টি করতে পারবে।
Hyosung Aquila GV300 - ইঞ্জিন স্পেসিফিকেশন
Hyosung AQUILA GV300 বাইকটির ইঞ্জিন যে কোন বাইকারের নজর কাড়তে বাধ্য। কারন এতে রয়েছে ইলেক্ট্রনিক ফুয়েল ইঞ্জেকশন- লিকুইড কুলড EFI প্রযুক্তির ২ সিলিন্ডার বিশিষ্ট ২৯৬ সিসির ভি-টুইন ৮ ভাল্ভ ৪ স্ট্রোক এর বিশাল ইঞ্জিন যা ২৯.৭ হর্সপাওয়ার শক্তি ও ২৫.৬ নিউটন মিটার টর্ক উৎপন্ন করে ৮৫০০ আরপিএম এ।

২ সিলিন্ডারের সাথে ২ ধরনের অয়েল বাথ ওয়েট মাল্টিপ্লেট মেইন ডিস্ক ক্লাচ ও স্লিপার ক্লাচ ওবং ৬ স্পিড গিয়ারবক্স একটি স্মুথ ও শক্তিশালী পারফর্মেন্স দিতে সক্ষম। বাইকটির সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১৪৫-১৫০ কিমি প্রতি ঘন্টায়। বাইকটির লুব্রিকেন্ট ক্যাপাসিটি ৩ লিটার এবং ইঞ্জিন অয়েল গ্রেড 10w-40. বলে রাখা ভাল, ইঞ্জিন অয়েল ফিল্টার পরিবর্তনের সময় আরো ২০০ মি.লি অয়েল অর্থাৎ ৩.২ লিটার ইঞ্জিন অয়েল বাইকটিতে ইনপুট করতে হবে।
Hyosung Aquila GV300 - ফিচারস
Hyosung AQUILA GV300 এর কিছু উল্লেখযোগ্য ফিচারস হলো:
সিট হাইট, ওজন ও গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স- ৭১০ মি.মি এর সিট হাইটের সাথে ১৫০ মি.মি গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ও ক্রুজার শেপ হওয়ার কারনে প্রায় সব উচ্চতার বাইকাররা এটি রাইড করতে পারবেন। যদিও বলা যায় সেগমেন্টের অন্যান্য বাইকের তুলনায় এর ওজন কিছুটা কম, ১৭২ কেজি ওজনের কার্ব ওয়েট থাকছে বাইকটিতে যা বাংলাদেশে প্রচলিত অন্যান্য বাইকের মধ্যে তুলনামূলক ভারী এবং ম্যানুয়াভারিং স্পেস ও বেশি এটি মাথায় রাখতে হবে।
ইগনিশন সিস্টেম- সেলফ ইলেক্ট্রিক ইগনিশন।
ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার উইথ এনালগ ট্যাকোমিটার: ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টারটি বেশ ইউনিক, ট্রেডিশনাল বড় এনালগ ট্যাকোমিটারের সাথে ডিজিটাল ক্লাস্টারটি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদর্শন করে যেমন ফুয়েল লেভেল, একাধিক ট্রিপ মিটার, স্পিডোমিটার, ট্যাকোমিটার, গিয়ার, সার্ভিস ইন্ডিকেটর, এবিএস ইন্ডিকেটর, ফুয়েল ইঞ্জেকশন ফল্ট এলার্ট, ডুয়াল ইঞ্জিন টেম্পারেচার ইন্ডিকেটর ইত্যাদি।
পাওয়ারফুল লাইটিং: হেডল্যাম্প, টেইল ল্যাম্প এবং টার্ন ইন্ডিকেটর প্রত্যেকটি ই হ্যালোজেন যা স্টাইলিশ এবং ভিজিবল, সাথে প্র্যাক্টিকাল। এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে এলইডি এর বদলে হ্যালোজেন লাইটিং নিয়ে, কিন্তু ক্রুজার বাইকের রেট্রো লুকের সাথে মানানসই রাখতে হ্যালোজেন লাইট ব্যাবহার করা হয়েছে যা অত্যান্ত শক্তিশালী। লাইট ও সেলফ ইগনিশন কে শক্তি প্রদানের জন্য থাকছে ১২ ভোল্ট ৫ এম্পিয়ারের শক্তিশালী ড্রাই সেল ব্যাটারি।
টিউবলেস টায়ার: বাইকটির টায়ার সাইজ- সামনের টায়ার 120/80-16, পিছনের টায়ার: 150/80-15. টিউবলেস টায়ার ও মোটা চাকা কনফিডেন্স ও কমফোর্ট অনেকাংশেই বাড়িয়ে একটি সুন্দর লং রাইডের অভিজ্ঞতা দিবে বলে আশা করা যায়।
ব্রেক: ব্রেকিং কে আরো দ্রুত এবং নিরাপদ করতে বাইকটির সামনে দেওয়া হয়েছে ২৭০ মি.মি ডিস্ক ও ডুয়াল পিস্টন ব্রেক ক্যালিপার ও পিছনে ২৫০ মি.মি ডিস্ক ও ডুয়াল পিস্টন ক্যালিপার। ডুয়াল চ্যানেল এবিএসের সাথে নিরাপদ ব্রেকিং নিশ্চিতে এই সেগমেন্ট এর অন্যান্য বাইকের সাথে এটি অবশ্যই তুলনায় এগিয়ে।
সাসপেনশন সিস্টেম: বাইকটির সামনে আপসাইড ডাউন ফর্ক (USD) ও পিছনে কমফোর্টেবল ডুয়াল শক অ্যাবজর্বার ব্যাবহার করা হয়েছে যা রাইডিং কে করবে অত্যান্ত আরামদায়ক।
মাইলেজঃ ইন্টারনেট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ১২.৫ লিটারের ফুয়েল ক্যাপাসিটির সাথে প্রতি লিটার জ্বালানী তেলে বাইকটি ২৫ কিলোমিটার মাইলেজ দিতে সক্ষম। মাইলেজ আমাদের গতানুগতিক চিন্তাধারায় কিছুটা কম মনে হলেও মাথায় রাখতে হবে একটি ৩০০ সিসির ৮ ভাল্ভ টুইন সিলিন্ডারের পাওয়ারফুল ইঞ্জিন যেমন পারফরমেন্স দিবে সেইরকম জ্বালানী ও খরচ করবে।
পরিশেষে বলা যায়, যেহেতু হায়ার সিসির চলমান দৌড় প্রতিযোগীতায় বাইকটি ইতিমধ্যেই আকর্ষনীয় স্পেসিফিকেশন সহ বাংলাদেশে এসেছে সুতরাং ক্রুজার সেগমেন্ট এ শীঘ্রই বাংলাদেশের রাস্তায় অন্যতম শক্ত প্রতিদ্বন্দিতা করতে পারবে। আমরা আশাবাদী, Hyosung বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় এই ববারটির মূল্য বাংলাদেশের বাইকারদের হাতের নাগালে রেখে সর্বোচ্চ বিক্রোয়োত্তর সেবা নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমাদের হায়ার সিসির একটি সুন্দর অভিজ্ঞতা খুব দ্রুতই নিশ্চিত করবে- যা অল্প কিছু সময়ের ব্যাপার মাত্র।
বাইকের লঞ্চিং, মূল্য ও প্রি বুকিং, বিষয়ক তথ্য সবার আগে পেতে বাইকবিডির সাথেই থাকুন।
