Honda X-Blade 160 ৮০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - সাকিল

This page was last updated on 31-Jul-2024 03:49pm , By Shuvo Bangla

আমি সাকিল, আমার বাড়ি বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলায়। আজ আপনাদের সাথে Honda X-Blade 160 বাইকের মালিকানা রিভিউ শেয়ার করবো ।

honda x-blade 160

আমি থাকি বগুড়া সদরে । একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের সদ্য মাস্টার্স পাশ করা বেকার ছেলে আমি। আমার সাবজেক্ট ছিল গণিত, আর সেই সুবাদে আমি টিউশনি করাই। বাইকের প্রতি আমার অনেক আগে থেকেই একটা আলাদা ভালোবাসা কাজ করে কিন্তু কেনার সামর্থ্য না থাকায় শুধু অন্যের বাইক গুলো দেখে যেতাম আর ভাবতাম কবে আমারও একটা হবে।

টিউশনির টাকা জমাতে শুরু করলাম একটা সময়, প্রায় দুই বছর অনেক কষ্ট করার পর দুই লাখ টাকা কোনো রকম ভাবে ম্যানেজ করলাম ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। এর পর চিন্তায় পরে গেলাম বাইক সিলেক্ট করা নিয়ে, Honda ব্রান্ড পছন্দ ছিল তাই অনেক কিছু চিন্তা ভাবনার পর X-Blade টা সিলেক্ট করলাম ।

বাইকটি পছন্দ করার সবচেয়ে বড় কারন ছিল মাইলেজ, যেটা অন্য কোন ১৫০ সিসি বাইকে অসম্ভব। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১০ তারিখ এ বগুড়া হোন্ডার শোরুম কর্ণফুলী ইন্ডাস্ট্রিতে গেলাম। আমার পছন্দ ছিল কালো কালারের টা কিন্তু সেখানে কালো কালারটা পেলাম না, এমনিতেই ভিতরে উত্তেজনা ১০০/১০০, যখন পেলামনা তখন মনের অবস্থা তো খারাপ ।

honda x-blade 160

Also Read: Top 5 160cc Standard Bikes In Bangladesh At A Glance

Honda Showroom থেকে বললো যে কিছু টাকা জমা দিয়ে অর্ডার করতে হবে তাহলে ১০-১৫ দিনের মধ্যে তারা এনে দিতে পারবে। কি আার করার তাই করলাম। এখন আমার আর এই ১০-১৫ দিন কাটে না, ১ টা করে দিনই ১০-১৫ দিনের সমান লাগত।

যাইহোক অবশেষে ৮ দিন পর ১৮ তারিখে বাইকটা হাতে পেলাম। বাইকের মূল্য ১,৭৩,৯০০ টাকা পরিশোধ করতে হলো। সাথে ২ বছরের জন্য রেজিষ্ট্রেশন করে নিলাম, আর ড্রাইভিং লাইসেন্সটাও করে ফেললাম। নতুন বাইক সাথে চালকও আমি নতুন, খুব কেয়ারফুলি ব্যবহার শুরু করি। রাতে মনে হয় বাইক নিয়েই ঘুমাই এরকম একটা অবস্থা।

১০ দিন পর আমি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরি এবং আমার অপারেশন করতে হয় পেটের ভিতর অ্যাপেনডিক্সের নারি টা ফেটে গেছিল । প্রায় ১ মাস আর বাইক চালাতে পারলাম না, হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে শুধু ভাবি কবে বাড়ি যাবো বাইক চালাবো। কি যে কষ্ট এটা বলে বুঝানো যাবে না।


আল্লাহর রহমতে সুস্থ হলাম আর বাইককে সঙ্গী বানালাম। এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০০০ কিলোমিটার চালানো হয়েছে। প্রথম দিকে ৪০-৪২ এর মতো মাইলেজ পেয়েছি আর ২৮০০ কিলোমিটার পার হওয়ার পর একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম বাইক যেন হঠাৎ করে খুব বেশি ফ্রী হয়ে গেল আর মনে হচ্ছিল মাইলেজটাও বেশী পাচ্ছি।

আলহামদুলিল্লাহ এখন বর্তমানে আমি ৫২-৫৬ মাইলেজ পাচ্ছি। শহরের ভিতরেই বেশী চালানো হয় আমার, গড়ে প্রতিদিন ৩০-৩৫ কিলোমিটার রাইড করা হয়। হাইওয়েতে সর্বোচ্চ ১০০ পর্যন্ত স্পিড তুলেছি এর উপর আর সাহস হয়নি। সবদিক থেকে ভালোই মনে হয় আমার কাছে তবে কিছু সমস্যাও ফিল করি বাইকটা নিয়ে।

honda x-blade 160

আসলে ভাল খারাপ দুটারই কম্বিনেশন আছে বাইকটাতে, তবে ভাল দিক গুলোই বেশি। এখানে বাইকটির বিশেষ কিছু ভাল এবং খারাপ দিক উল্লেখ করবো -

Honda X-Blade 160 বাইকের ভালো দিক -

  • অসাধারণ মাইলেজ
  • একটা আন কমোন লুক
  • বেষ্ট সিটিং পজিশান
  • পিলিয়ন নিয়েও খুব ইজিলি রাইড করা যায়
  • খুব সুন্দর সাউন্ড কোয়ালিটি।

Honda X-Blade 160 বাইকের খারাপ দিক -

  • সামনের চাকা তুলনামূলক চিকন হওয়ায় স্কিড করার একটা ভয় কাজ করে।
  • পিছনের চাকার বিট কম হওয়ায় ইমারজেন্সিতে ৬০-৬৫ তেও স্কিড করে, একটু বেশিই সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়।
  • কাদা রাস্তায় চালানোটা বেশ কষ্টের ।
  • ইন্জিনকিল সুইচ না থাকায় চাবি দিয়ে বন্ধ করতে হয়।

honda x-blade 160

তবে ভালো মন্দ সবমিলে বাইকটি আমার কাছে বেষ্ট। ৭০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত আমি হোন্ডার মিনারেল ইন্জিন অয়েলটা ব্যবহার করেছি, তখন দাম ছিল ৫৫০ টাকা, যা ১০০০ কিলোমিটারের মধ্যে পরিবর্তন করতাম, কিন্তুদাম বাড়ার কারনে এখন সেল ব্যবহার করি যার দাম ৯০০ টাকা ।

২০০০ কিলোমিটারের মধ্যে পরিবর্তন করি, ফিডব্যাক ভালোই পাচ্ছি কোন অসুবিধা মনে হচ্ছে না। আল্লাহর রহমতে এখন পর্যন্ত ছোট বা বড় কোন ধরনের এক্সিডেন্ট হয়নি। আপনারা যারা বাইক কিনবেন ভাবছেন তারা এই বাইকটা নিতে পারেন, সবদিক থেকে ভালোই লাগে আমার কাছে। ধন্যবাদ ।

 

লিখেছেনঃ সাকিল 
 
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।