Honda Livo 110 ৩০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - জাহিদ হাসান শান্ত

This page was last updated on 18-Jul-2024 03:58am , By Raihan Opu Bangla

আমি মো জাহিদ হাসান শান্ত। আমার ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল আমি বাইক কিনবো। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি কিনবো কল্পনা করতে পারিনি। আর Honda Livo 110 বাইকটি আমার জীবনের প্রথম বাইক। আজ আমি আমার Honda Livo 110 বাইকটি নিয়ে ৩০০০ কিলোমিটার রাইড করার পরে আপনাদের সাথে কিছু অভিজ্ঞতা এবং বাইকটির ব্যাপারে কিছু কথা শেয়ার করবো ।

Honda Livo 110 ৩০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ

honda livo user in bangladesh

  বাইক ভালোবাসি সেই ছোট থেকেই অনেক বন্ধুদের বাইক আছে। বড় ভাইদের বাইক আছে আর সেই থেকেই বাইককে ভালোবাসি । আসলে হোন্ডা লিভো কিনব সেটা ভাবতে পারিনি অন্য বাইক কিনার ইচ্ছে ছিল। বাজাজ পালসার, টিভিএস এপাচি আরটিআর পুরনো কিনার চিন্তাভাবনা ছিল। কিন্তু এক বড় ভাই সাজেস্ট করছে হোন্ডা লিভো নতুন কিনতে তাই সেই বড় ভাইয়ের কোথায় সমর্থ দিয়ে Honda Livo কিনেছি এবং হোন্ডা লিভো আমার কাছে ভালো লেগেছে।

বাইকটি ক্রয় করতে আমার খরচ পড়েছে ১,৩৪,০০০/- টাকা। তখন বাইকটির দাম ছিল ১,১৬,০০০/- টাকা এবং কাগজ করতে ১৬,০০০/- টাকা, সেই সাথে ২০০০ টাকা আমার ক্রেডিট কার্ডের জন্য চার্জ নিয়েছে। তাই টোটাল ১,৩৪,০০০/- টাকা পরেছে । বাইকটি আমি শনিড় আখরার হোন্ডার অফিশিয়াল শো-রুম ফাহিম অটো থেকে কিনেছি । আমি বাইকটি কিনতে গিয়েছিলাম দুপুর ১ টার দিকে সাথে আমার বস ছিলেন। তখন উনি পেমেন্ট করে চলে আসেন পরে আমি সবকিছু কমপ্লিট করে ৩ টার পরে আমি বাইকটি বসায় নিয়ে আসি।

honda livo user review

  বাইকটি যখন শোরুম থেকে বের করে চাবিটা আমার হাতে দিলো তখন নিজের কাছে অনেক খুশি লাগলো আমার বাইকের চাবি হাতে পেয়ে তখন মনে খুব আনন্দ উপভোগ করছিলাম। নিজের প্রথম বাইক নিয়ে আমি শোরুম থেকে বাসায় আসি । বাইকটি এত তাড়াতাড়ি কেনার কারণ ছিল একটি বড় ভাইয়ের সাথে রাগ করে। তা না হলে বাইকটি এত তাড়াতাড়ি কেনার কোন পরিকল্পনা আমার মাঝে ছিল না । হুট করেই বাইকটি কেনা হয়ে গিয়েছিল ।

Honda Livo 110 ব্যাপারে কি বলব ১১০সিসির সেগমেন্ট এর বাইকের মধ্যে অনেক ভালো একটি বাইক। বাইকের পারফরম্যান্স খুব ভালো যেমন মাইলেজ তেমন টপ স্পিড মোটামুটি সব দিক থেকেই বাইকটি খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে । আসলে আমি চাকরি করি আমার এলাকাতেই। বাইকটি একমাত্র কিনেছি শখের জন্য বাইকটি আমি প্রতিদিন চালাই না কারণ প্রতিদিন তো চালানোর মত সময় নেই। বাইকটি আমি সপ্তাহে দুদিন চালাই হঠাৎ তিনদিন কিন্তু প্রতিদিন চালানো হয় না যখন বাইক চালাই তখন নিজের কাছে অনেক আনন্দ অনুভব করি।

livo 110 in bangladesh

  বাইকটি আমি সার্ভিসিং করিয়েছি দুই থেকে তিনবার হবে আর যেই শোরুম থেকে বাইকটি কেনা হয়েছে সেই শোরুম থেকেই সার্ভিসিং গুলো করিয়েছি কারণ আমার চারটা ফ্রি সার্ভিস রয়েছে। প্রতিটি সার্ভিস এর মান ছিল সন্তোষজনক । ২৫০০ কিলোমিটার চালানোর আগে আমি প্রতি লিটারে ৬৫ কিলোমিটার এর মত মাইলেজ পেয়েছি । ২৫০০ কিলোমিটারের পর থেকে আমি প্রতি লিটারে ৬০ কিলোমিটারের মত মাইলেজ পেয়েছি মনে হয় আমি সঠিক বলতে পারছি না। তবে মাইলেজ খুব ভালো পাচ্ছি ।

বাইকটি আমি খুব যত্ন করি। আমি যখন বাইকটি ব্যবহার করা শুরু করি তখন থেকেই খুব যত্নসহকারে ব্যবহার করি। বাইকটিকে আমি সপ্তাহে দুবার ওয়াশ করাই । নিয়মিত চেইন টাইট, ক্যাবেল লুব, এয়ার ফিল্টার ক্লিন এবং চাকার প্রেশার চেক করাই। বাইকের ইঞ্জিন ওয়েল হিসেবে হোন্ডার রিকমেন্ডেট ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার করি । গ্রেড 10w 30w এবং পার্ফরমেন্স বেশ ভালো । আমি যখন বাইকটি কিনেছি এর কিছুদিন পর এক বন্ধু বাইকটি চালানোর সময় অনেক বড় একটা এক্সিডেন্ট করে সমস্যা করে ফেলেছে তার জন্য এয়ার ফিল্টার, প্লাগ ,হেডলাইট এগুলো পরিবর্তন করা হয়েছে ।

livo 110 price in bangladesh

 আমি বাইক মডিফাই করতে ভালোবাসি সেজন্য আমার হোন্ডা লিভোর হ্যান্ডেল পরিবর্তন করেছি লুকিং গ্লাস পরিবর্তন করিয়েছি, নতুন সিট কভার লাগিয়েছি , আরো কিছু মডিফাই করেছি । আমার হোন্ডা লিভো দিয়ে আমি সর্বোচ্চ ১০০ পর্যন্ত স্পিড উঠিয়েছি রোড ছিল মদনপুর থেকে কাচপুর পর্যন্ত । 

হোন্ডা লিভো বাইকটির ভালো কিছু দিক হচ্ছেঃ

  • মাইলেজ বেশ ভালো
  • আউট লুকস দেখতে সুন্দর
  • ডিজাইন ১১০ সি সি বাইক হিসেবে চমৎকার
  • ইঞ্জিন সাউন্ড স্মুথ
  • সিট বেশ বড় পিলিয়ন নিয়ে কম্ফোর্ট পাওয়া যায়

বাইকটির কিছু খারাপ দিক হচ্ছেঃ

  • স্পিড যখন ৮০+ হয় তখন ইঞ্জিনে অনেক সাউন্ড করে
  • সবচেয়ে খারাপ দিক হচ্ছে এর পিছনের চাকা চিকন
  • পিছনে টায়ার অনেক চিকন যার ফলে ব্রেক করতে গেলে কিছুটা সমস্যার পড়তে হয়
  • ইন্জিন কিল সুইচ নাই
  • রেডি পিকাপ নাই

honda bike price in bangladesh

 আমার হোন্ডা লিভো বাইকটি কেনার প্রায় দুই সপ্তাহ পর আমি ঢাকা থেকে কুমিল্লা দাউদকান্দি মামার বাড়িতে রাত্রিতে বেড়াতে যাই । কিছু দিন আগে ঢাকা থেকে বিক্রমপুর যাই ৩০০০ কিলোমিটার চালানোর মধ্যে এই ২ টা আমার লং ট্যুর হয়। Honda Livo 110 আসলে কম রেঞ্জের মধ্যে এবং ১১০ সিসির বাইক এর মধ্যে খুব ভালো একটি বাইক। আপনি যদি কম বাজেটে ভালো লুকস এবং ভালো মাইলেজ এর একটি বাইক চান তাহলে অবশ্যই হোন্ডা লিভো বাইকটি নিতে পারেন । এই বাইকটি ব্যবহার করে আমার অনেক ভালো লেগেছে । বাইকটি আসলেই অনেক জোস দেখতে ১৫০ সিসি বাইক এর মতই লাগে। মাইলেজ অনেক ভালো মোটামুটি সব দিক থেকেই এই হোন্ডা লিভো অনেক ভালো । চলুন দেখে আসি honda motorcycle price in bangladesh এর সর্ম্পকে বিস্তারিত। ধন্যবাদ।

লিখেছেনঃ জাহিদ হাসান শান্ত

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।