Honda CB Hornet 160R CBS ১১০০০ কিলোমিটার রাইডিং অভিজ্ঞতা - আকাশ

This page was last updated on 01-Aug-2024 03:42am , By Shuvo Bangla

আমি আবদুল্লাহ আল আকাশ। আমার বাসা যশোর। আমি Honda CB Hornet 160R CBS বাইক ব্যাবহার করি। আমি বর্তমানে যে বাইকটা ব্যাবহার করছি সেটা আমার জীবনের প্রথম বাইক। এটা আমার ইমোশন বললেও ভুল হবেনা।

Honda CB Hornet 160R CBS ১১০০০ কিলোমিটার রাইডিং অভিজ্ঞতা - আকাশ

Honda CB Hornet 160R CBS

বাইকটা কিনেছি ১১ আগস্ট ২০২২ এ। এখন পর্যন্ত তার সাথে পথ চলা ১১০০০ কিলোমিটার সম্পূর্ন হলো । বাইকের প্রতি ভালোবাসা শুরু ১১-১২ বছর তখন এলাকার খুব কম মানুষ বাইক চালাতো তখন থেকে ভালো লাগে ইচ্ছা হয় নিজের একটা বাইক কেনার। মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে হওয়ায় কিছুটা কস্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় তারপর পড়াশুনার পাশাপাশি শুরু হয় কাজ করা সেখান থেকে নিজ টাকা আর ফ্যামিলি থেকে হেল্প নিয়ে নিয়ে নিই নিজের বাইক।

বাইকিং ভালো লাগার দিক হলো নিজের ইচ্ছামতো ঘুরাঘুরি করা যায়। কোথাও যাওয়ার দরকার হলে গাড়ির অপেক্ষায় থাকা লাগে না। অন্যের বিপদে নিজের সাধ্যমত হেল্প করা যায়। বাইকটি নেওয়ার ইচ্ছা জন্মে যখন প্রথম মার্কেটে আসে এক বড়ভাই কিনেছিলো তার কাছে থেকে শোনা ব্রেকিং অনেক ভালো এবং এইটার মাইলেজ সব গাড়ি থেকে একটু বেশি আর অনেক কম্ফোর্ট। 

মধ্যবিত্ত হওয়ার কারণে বাইকটা বেছে নেই। বাইকটি কেনা হোন্ডা অফিশিয়াল শোরুম  চৌগাছা থেকে । বাইকটি মুল্য ২,৪০০০ টাকা। বাইক কিনতে যাওয়ার আগের রাতে ঘুমই হয়নি মনে হয় কখন সকাল হবে আর কখন বাইক কিনতে যাবো যাই হোক ফ্যামিলি নিয়ে গেলাম বাইক কেনার জন্য প্রচুর বৃস্টির মধ্য। Honda, Tvs, Bajaj শো রুম গুলোতে ঘুরলাম পছন্দের তালিকায় থাকা হোন্ডা হরনেটই নিলাম। 

ফ্যামিলির সবাই খুশি। বাইক নিয়ে বাসায় আসার পর নিজের বাইক চালানোর জন্য মন ছটফট করতে লাগলো। প্রথম বাইক কেনার জন্য যতটা কষ্ট আর ধৈর্য ধরেছি তা বলে বোঝানো যাবে না । বাইকটি নেওয়ার মুল কারণ কাজে যাওয়া আসা দূরত্ব দিয়ে ২০ কিলোমিটার এর কাছাকাছি অন্যান্য বাহনে যাতায়াত করতে সময় অনেক লাগে আর বাইকের তুলনায় খরচ বেশি তুলনামূলক।


নিজের এলাকায় ঘোরাঘুরি করার জন্য বাইকই সেরা। আর দূরে কোথাও গেলে বাইকের বিকল্প কিছু হয় না। বাইকের ফিচার গুলোর মধ্য আছে ১৪০ সেকশন এর টায়ার যেটা দিয়ে কর্নারিং এর সময় কনফিডেন্স বেশি পাওয়া যায় এবং cbs ব্রেকিং সিস্টেম এর জন্য ব্রেকিং এবং কন্ট্রোলিং ভালো হওয়ায় প্রথম পছন্দ এটা। প্রতিদিন বাইকটি চালানোর শুরুতে বিসমিল্লাহ বলে চালানো শুরু করি। 

আর একটা কথা মাথায় থাকে সাবধানে আস্তে ধীরে চালোনো। বাইকটি এখন পর্যন্ত ৩ টি সার্ভিস করিয়েছি যে শোরুম থেকে নেওয়া সেখান থেকে আর আমার নিজের কাছে মনে হইছে হোন্ডার সার্ভিস খুবই খারাপ যার জন্য কখনো মনে হয়নি আর সার্ভিস করাবো। যেগুলা করিয়েছে গাড়ির যে সমস্যা গুলা থাকে সেগুলা বললে তার কোনো উপকার হয় না সেজন্য আর সার্ভিস করাইনি।

হোন্ডার মাইলেজ খুবই ভালো। মাইলেজ নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই ব্রেকিং পিরিয়ড চলাকালীন মাইলেজ পেয়েছি ৪০ এর আশেপাশে আর তারপর থেকে ৪৫ + পেয়েছি। মেইনটেনন্যান্স খরচ ও নিজের সাধ্যমত হওয়ায় কখনো কোনো কিছু বাদ রাখিনি। প্রতি সপ্তাহে একবার চেইন লুব করা ইঞ্জিন অয়েল সময় মতো পরিবর্তন করা টায়ার প্রেশার ঠিক রাখা কখনো ছাড় দেওয়া হয়নি।


প্রতি সপ্তাহে নিজে নিজে ওয়াস করা পলিশ দেওয়া সবকিছু সুন্দর করে যত্ন নেওয়া হয়। ছায়ায় পার্কিং করা আর যখন সময় পাই তখনই বাইকটা মুছে রাখি। ইঞ্জিন অয়েল চেঞ্জ করার জন্য প্রথম থেকেই হুন্দাই 20w40 গ্রেডের সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েল ব্যাবহার করছি  যার মুল্য ৫৫০ টাকা। বাইক কেনার কিছুদিন পর ওয়েলসিল চেঞ্জ করা লাগছিলো তাছাড়া ১০,০০০ কিলোমিটার এর আর কোনো কিছু চেঞ্জ করা লাগেনি। এখন পর্যন্ত বাইকের টপ স্পীড পাইছি ১২১। 

Honda CB Hornet 160R CBS বাইকের কিছু ভালো দিক -

  • মাইলেজ ১৬২ সিসি ইঞ্জিন হিসেবে অনেক ভালো। 
  • অনেক কম্ফোর্টেবল সিটিং পজিশন । 
  • সাউন্ড স্মুথ যেটা আমার খুব ভালোলাগে। 
  • ব্রেকিং সিস্টেম খুব ভালো। 
  • অন্যান্য বাইকের তুলনায় ওজন কম।

Honda CB Hornet 160R CBS বাইকের কিছু খারাপ দিক -

  • বিল্ড কোয়ালিটি নিম্নমানের যেটা বাজেট হিসেবে আরো ভালো হওয়া উচিত। 
  • আগের মতো এনালগ মিটার বর্তমানে সব বাইকে প্রায় ডিজিটাল মিটার। 
  • রেডি পিকাপ অন্যন্য বাইকের তুলনায় কম। 
  • পেইন্ট কোয়ালিটি খুব নিম্নমানের যা কিছুদিন ব্যাবহার করলে বোঝা যায়। 
  • বাইকের পেইন্ট উজ্জ্বলতা দ্রুত হারায় ফেলে। 
  • গিয়ার শিফটিং অনেক হার্ড।


সবকিছু ভালো মন্দ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত অনেকটা পথচলা হয়েছে আর অনেক বাকি। বাইক নিয়ে একদিনে ১৩০ কিলোমিটার পথচলা হয়েছে কখনো নিরাশ করেনি। এর মাঝে বিশ্রাম এর জন্য ২০-৩০ মিনিট বিরতি ছিলো। সবশেষে মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে হওয়ায় বাইক কখনো নিরাশ করেনি মাইলেজ মেইন্টেনন্যান্স খরচ অনেক কম হয়েছে। 

যারা মাইলেজ নিয়ে চিন্তা করেন আবার ১৫০ সিসি বাইক পছন্দ তাদের জন্য এটি খুব সুন্দর বাইক হবে। এককথায় বাজেট ফ্রেন্ডলি বাইক। আর যাই হোক কখনো কাউকে নিরাশ করবে না আশাকরি। ধন্যবাদ । 

লিখেছেনঃ আবদুল্লাহ আল আকাশ

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।