Haojue KA135 টেস্ট রাইডি রিভিউ - টিম বাইকবিডি

This page was last updated on 26-Jul-2024 05:19pm , By Raihan Opu Bangla

বর্তমান সময়টি অনেক বেশি কঠিন ও চ্যালেঞ্জের, কারণ আমরা এমন একটি সময় পার করছি যেখানে জীবনের ঝুঁকির সাথে সাথে মৃত্যু ঝুঁকি তো রয়েছে সেই সাথে প্রতিদিনের কাজে বের হবার সময় গণ পরিবহণ ব্যবহারেরো রয়েছে ঝুঁকি ও খরচ ব্যয় বেড়েছে। এই সময়ে মোটরসাইকেল আপনার সবচেয়ে ভাল বন্ধু এবং পরিবহনের ক্ষেত্রে সুবিধাজনক হবে।

 আজ আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি Haojue KA135 টেস্ট রাইড রিভিউ।

Haojue KA135 টেস্ট রাইড রিভিউ - ইঞ্জিন ইতিমধ্যে আমরা Haojue DR160 বাইকটি টেস্ট রাইড করেছি, বাইকটি আমাদের অনেক পছন্দ হয়েছে। তো, ১,২২,০০০/- টাকার মধ্যে Haojue KA135 বাইকটি আমাদের কি দিচ্ছে। প্রথমত, বাইকটিতে দেয়া হয়েছে এমন একটি ইঞ্জিন যা থেকে 10.7 BHP @ 8000 RPM & 11.3 NM of Torque @ 6000 RPM। ইঞ্জিনের সাথে দেয়া হয়েছে ৫ স্পিড গিয়ারবক্স। ইঞ্জিনটি হচ্ছে এয়াকুল্ড, ২টি ভাল্ব এবং ফুয়েল সাপ্লাই সিস্টেম হচ্ছে কার্বুরেটর। বাইকটির TSR ইঞ্জিন নিশ্চিত করে যে ইঞ্জিন থেকে সর্বোচ্চ পারফর্মেন্স প্রদান ও ফুয়েল ইকোনমি। আমাদের টেস্ট রাইডের সময় আমরা বাইকটি থেকে শহরে মাইলেজ পেয়েছি ৪২-৪৫ কিলোমিটার এবং হাইওয়েতে পেয়েছি ৪৫-৫০ কিলোমিটার প্রতি লিটার। ওজনে বাইকটি মাত্র ১২৬ কেজি এবং এর স্যাডেল হাইট হচ্ছে ৭৭০মিলিমিটার। এছাড়া এতে সেলফ এবং কিক উভয় ধরনের স্টার্ট দেয়া হয়েছে। এই সেগমেন্টের অন্য বাইকের মত এর হ্যান্ডেল বার এতটা প্রশস্ত না হলেও আপনি খুব সহজেই একে টার্ন করাতে পারবেন। সুইচ গিয়ার্স এর কোয়ালিটি বেশ ভাল এবং এতে দেয়া হয়েছে একটি পুরোপুরি ডিজিটাল স্পিডোমিটার, এতে রেভ কাউন্টার, স্পিড গজ, গিয়ার চেঞ্জিং ইন্ডিকেটর, লো ব্যাটারি লাইটস, ওয়ার্নিং লাইটস এবং ইঞ্জিন ওয়েল চেঞ্জ ইন্ডিকেটর শো করে থাকে। ১৩৫সিসি সেগমেন্টে পুরোপুরি ডিজিটাল স্পিডোমিটার খুব একটা দেখতে পাওয়া যায় না। স্পিডোমিটারটি পুরোপুরি ডিজিটাল এবং সবচেয়ে ভাল দিক হচ্ছে এতে ইঞ্জিন ওয়েল চেঞ্জ ইন্ডিকেটর দেয়া হয়েছে। এছাড়া সুইচ গিয়ার্স এর কোয়ালিটি বেশ স্ট্যান্ডার্ড।Haojue KA135 টেস্ট রাইড রিভিউ - এপিয়ারেন্স যদিও Haojue KA135 বাইকটি কমিউটার সেগমেন্টের, তবুও বাইকটিতে স্পোর্টি এবং এনার্জেটিক লুকস ও ডিজাইন দেয়া হয়েছে। বাইকটির সামনের দিকে রয়েছে এরো হেড হ্যালোজেন হেডলাইট, মাসকুলার ফুয়েল ট্যাংক, স্প্লীট সিট এবং স্পোর্টি বডি প্যানেল। বাইকের হেডলাইটের ডিজাইনটি এগ্রেসিভ ভাবে করা হয়েছে, এর সাথে দেয়া হয়েছে পাইলট ল্যাম্প, মাল্টি শেডস হাউজিং, স্পোর্টি ডেন্টস। বাইকটির ফুয়েল ট্যাংক বাইকের সবচেয়ে মাসকুলার পার্ট, এর স্পোর্টি ডেন্টস এর সাথে দুপাশের এক্সটেন্ডেট শ্রাউড এর স্পোর্টি লুকস কে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। সাইড প্যানেল গুলো ম্যাট এবং গ্লোস পার্ট দিয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে, তবে বাইকের রেয়ার পার্ট কিছুটা ন্যারো করা হয়েছে।

বাইকটির সবচেয়ে আকর্ষনীয় দিক হচ্ছে সবুজ কালার এর সাথে গ্লোসি কালার, তার চেয়ে বড় কথা হচ্ছে বাইকটির কালার খুবই ইউনিক এবং কালার কোয়ালিটি বেশ ভাল। হাওজু বাইকটিতে ডাবল হর্ন গ্রেইব রেইল দিয়েছে পিলিয়নের আরামদায়ক রাইডের জন্য। এছাড়া তারা এক্সহস্ট মাফলার সহ, মাডগার্ড যুক্ত করেছে স্পোর্টি ডিজাইন। অন্যান্য বাইকের মতো, এই বাইকেও দেয়া হয়েছে সাড়ি গার্ড, ক্রাশ গার্ড, এক্সট্রা ফুট পেগ মেয়ে পিলিয়নের জন্য, যাতে করে তারা এক সাইডে পা দিয়ে আরামে বসতে পারে এবং রাইডে কোন সমস্যা না হয়। আপনি ভাবতে পারেন যে এখানেই বোধহয় শেষ, কিন্তু না এখানে এর ফিচার্স শেষ নয়। বাইকটির ফ্রেম হচ্ছে স্টিল ফ্রেম, এলয় রিম, টিউবলেস টায়ার যুক্ত করেছে, তবে বাইকটির টায়ার গুলো কিছুটা চিকন, এর কারনে স্পিড ও ফুয়েল ইকোনমি বেশ ভাল পাওয়া যায়। তবে কর্নারিং এ আপনি কনফিডেন্স পাবেন না। বাইকটির টায়ার হচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড ৯০ সেকশন রেয়ার টায়ার ১২৫-১৩৫ সিসি সেগমেন্টে। Haojue KA135 বাইকটির সামনের দিকে দেয়া হয়েছে ২৭০মিমি ডিস্ক ব্রেক এবং রেয়ারে দেয়া হয়েছে কনভেনশনাল ড্রাম ব্রেক। এছাড়া টেলিস্কোপিক সাসপেনশন দেয়া হয়েছে সামনের দিকে এবং রেয়ারে দেয়া হয়েছে ডাবল লোডেড সাসপেনশন। সাসপেনশন এর ফিডব্যাক খারাপ নয়, তবে আমার মনে হয় এই সময়ে ডাবল ডিস্ক ব্রেক দেয়া উচিত ছিল। হ্যালোজেন হেডলাইট ঢাকা বা শহরের রাস্তায় চলাচলের জন্য বেশ উপযোগী। তবে হেডলাইটের আলো ছড়িয়ে পরে না এবং খুব কম জায়গাতেই এর আলো পরে। বাইকটি প্রায় এক সপ্তাহে ৮০০ কিলোমিটার রাইড করার পরও রাইডিং এ কোন ধরনের ক্লান্তিবোধ হয়নি। বাইকটির ইঞ্জিন বেশ স্মুথ, আপনি ৬০০০ আরপিএম এর পর এর ভাইব্রেশন অনুভব করতে পারবেন। ভাইব্রেশন খুবই কম এছাড়া আপনি প্রতিদিন এর রাইডে তেমন ভাইব্রেশন ফিল করবেন না। ব্রেক এর ফিডব্যাক ভালো তবে আরও ভাল হতে পারত। কারণ সামনের দিকে সিঙ্গেল পিস্টন ক্যালিপারের সাথে এর ফিডব্যাক খুব একটা ভাল পাওয়া যায় না। রেয়ার ব্রেক বেশ ভাল, যদিও আপনি যদি খুব বেশি চাপ প্রয়োগ করেন তবে এটি লক হয়ে যাবার সম্ভাবনা খুব বেশি। তাই আপনাকে খুব সাবধানতার সাথেই ব্রেকে চাপ প্রয়োগ করতে হবে। Haojue KA135 এর এক্সেলারেশন বেশ স্মুথ, ইঞ্জিন উচ্চ আরপিএম এ তেমন কোন সমস্যা করে না। এটা কোন রেডিপিকাপ নেই। সৎ ভাবে বললে আপনি এই বাইকটি খুব বেশি স্পিডে রাইড করতে পারবেন না। আপনি বাইকটি ৬০-৭০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা স্পিডে রাইড করতে ভালবাসবেন।

Haojue KA135 ভাল দিকঃ

  • বিল্ড কোয়ালিটি
  • কালার কোয়ালিটি
  • স্টং চেসিস, যা আপনাকে মিডিয়া স্পিডে কর্নারিং করতে সহায়তা করবে
  • সাসপেনশন ফিডব্যাক ভাল
  • গিয়ার স্মুথ
  • মাইলেজ প্রায় ১২৫সিসি বাইকের কাছাকাছি
  • ইঞ্জিন ব্রেকিং অনেক ভাল

Haojue KA135 খারাপ দিকঃ

  • সিঙ্গেল পিস্টন ফ্রন্ট ব্রেক
  • রেয়ার ব্রেক এ প্রেশার দেয়া হলে এটি লক হয় এবং স্কীড করে
  • হেডলাইটের আলো অনেক কম
  • স্পীড টপ অনেক কম

যদি আপনি মধ্যম উচ্চতার হন এবং চাইনিজ বাইকের মধ্যে ভাল বিল্ড কোয়ালিটি এর সাথে ভাল ফিডব্যাক চাচ্ছেন, তবে আপনি হাওজু এর বাইক নিতে পারেন। এই ছিল Haojue KA135 টেস্ট রাইড রিভিউ। ধন্যবাদ।