Haojue DR 160 ২৪০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - সায়েম

This page was last updated on 30-Jul-2024 08:36am , By Shuvo Bangla

আসসালমুআলাইকুম আমি সায়েম সিরাজ ।ব্যাবহার করছি Haojue DR 160 বাইকটি। আমার বাইকটি বর্তমানে ২৪,০০০ কিলোমিটার এর বেশি রাইড করা হয়েছে। এবং বাইকটির বয়স ১ বছর ২ মাস ।

haojue dr 160 at tetulia

আমি ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় থাকি এবং আমার ১ম Haojue বাইক ছিল Haojue KA 135 যেই বাইকটা আমি ২০ হাজার কিলমিটার + চালিয়েছিলাম । টু বি অনেস্ট ঐটা ছিল আমার ১ম চাইনিজ বাইক। যখন এই বাইকটির কথা বা এই ব্র্যান্ড কে নিয়ে কাওকে বলতাম তখন তারা সবাই মজা নিত আমার সাথে তখন শুধু চুপ করে থাকতাম কারণ আমি জানতাম এমন একদিন আসবে যখন সবার চিন্তা ধারা পরিবর্তন আসবে এবং চায়না বেশি দিন যায়না এই ওয়ার্ড টা থেকে আমি একটু রিলিজ পাবো ।
 

Haojue DR 160 বাইকটিকে বাংলাদেশের নাম্বার ১ পজিশন এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে -

আলহামদুলিল্লাহ সেই দিনটা আজকে মনে হয় চলে আসছে যেখানে বাংলাদেশের মোস্ট অফ দ্যা নিউ বাইক রাইডার এবং বাইকার বাইক বিডি ফলো করে সেই বাইক বিডি পেজ থেকে এমন একটি নিউজ আসবে দেখে সত্যি আমি আজ অনেক খুশি । যেখানে বাংলাদেশ এ আরো পপুলার চায়না বাইক থাকা সত্বেও Haojue DR 160 বাইকটিকে বাংলাদেশের নাম্বার ১ পজিশন এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে ।
 
আবারো ধন্যবাদ জানাচ্ছি বাইক বিডি কে এবং ওয়াসিফ আনোয়ার ভাই কে। কয়েকটা কারণে মূলত আমি ২ চাকার বহন বাইক কে অনেক ভালোবাসি তার মেইন কারণ হলো আমি সহজেই যেকোনো জায়গায় যেকোনো সময় মুভ করতে পারি , বন্ধুদের সাথে টুর এও যেতে পারি , বলতে গেলে এখন বাইক ড্রাইভিং টা কেমন যেনো মনে হয় রক্তের সাথে মিসে গেছে ।
 
আমি যখন আমার আগের কে ১৩৫ বাইক টি ব্যাবহার করতাম ঠিক তখন ই এই বাইকটির সম্মন্ধে জানতে পারি এবং তখন কার হাওজুয়ের সার্ভিস ম্যানেজার সাব্বির রিজন ভাইয়ের পরামর্শেই বাইকটি নিয়ে ফেলি এবং এই বাইকটি ক্রয় করার পেছনে অনেক দুষ্ট মিষ্টি মানুষের কান কথা ছিল চায়না বাইক বেশি দিন যায়না আরো অনেক কিছুই।
haojue dr 160 bike
 

Haojue DR 160 কিনতে যাওয়ার দিনের কথা - 

বাইকটি আমি ১৯৯৫০০ টাকা দিয়ে কর্ণফুলী 3s সেন্টার থেকে ক্রয় করি । যেদিন বাইক কিনতে যাবো সেদিন আমি প্রস্তুত ছিলাম না যে আমি বাইকটি কিনবো , কিনতে যাচ্ছিলাম কেপিয়ার ১৬৫ শেষ পর্যন্ত এত মানুষ না করতেসিল যে আমি নিজেই কনফিউশন এ পড়ে যাই , কিন্তু মনে মনে আমার এই বাইক এর জন্য খারাপ লাগতেছিলো তাই মাঝ রাস্তা থেকে U টার্ন মেরে চলে যাই তেজগাঁও শোরুমে এবং বাইকটি কিনে নিয়ে আসি
 

বাইকটির ১ম চালনর অভিজ্ঞতা ছিল আমার কাছে দারুন কারণ এই বাইকটির রেডি পিকআপ অনেক বেশি যার কারণে বাইক টি চালিয়ে অনেক আনন্দ বোধ করি আমি । প্রথমেই বলি হওজু ই ব্র্যান্ড চাইনার নাম্বার ১ মোটর সাইকেল উৎপাদন প্রতিষ্ঠান । গত ১৬ বছর যাবৎ হওজু ই ব্র্যান্ড তাদের এই সাফল্য কে অটুট ভাবে ধরে রেখেছে ,বাজারে সুনামধন্য সুজুকি ব্র্যান্ড ও তাদের সাতে চায়নাতে জয়েন ভেনচার হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে।
 
মূলত চায়নাতে সুজুকি ব্র্যান্ড এর বাইকগুলি হাওজু কোম্পানি থেকে ডিস্ট্রিবিউট হয়ে থাকে । প্রথমেই কথা বলি বাইকের লুকস নিয়ে বাইকটির লুকস আসলেই অসাধারণ।

Haojue DR 160 বাইকে যেসব ফিচার রয়েছে - 

বাইকটি তে ব্যবহার করা হয়েছে ফোর স্ট্রোক সিঙ্গেল সিলিন্ডার টু ভালব এস ও সি ১৬২সি সি ইঞ্জিন যার থেকে আপনি পাবেন 15 BHP  হর্স পাওয়ার এবং 14 NM টর্ক এবং ইঞ্জিন কে ঠান্ডা করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে ইয়ার কুল সিস্টেম তার সাথে বাইকের ইঞ্জিন পারফরম্যান্স কে স্মুথ ভাবে রান করার জন্য বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ওয়েট মাল্টি ক্লাস প্লেট সিস্টেম যার মাধ্যমে বাইকটি রাইডিং টাইম এ স্মুথ একটা ফিল নিশ্চিত করে ।

haojue dr 160

এবার কথা বলা যাক বাইকটির হেডলাইট অ্যান্ড টেল লাইট নিয়ে । কোম্পানি সত্যি বুঝা যাচ্ছে তাদের নিউ মডেল Haojue DR 160 বাইকটিতে যথেষ্ট সময় ব্যবহার করেছে বাইকটিকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য । প্রথম দেখায় এর হেডলাইট এর প্রেমে যে কেউ পরে যাবেন কারণ হেডলাইটটি দেখতে ফুল্লি ট্রান্সফরমার এর মত।
 
বাইকটির মিটারটি সম্পূর্ণ ডিজিটাল এবং এতে ব্যবহার করা হয়েছে নেগেটিভ সাইট এল ই ডি লাইট। হেডলাইট এবং টেল লাইট এ ব্যবহার করা হয়েছে সম্পূর্ণ এল ই ডি লাইট ।বাইকটির পার্কিং লাইট এন্ড ইন্ডিকেটর লাইট গুলো এলইডি লাইটের ব্যবহারের ফলে রাইডিং সময়ে আপনার সামনে থাকা যেকোনো রাইডার আপনাকে খুব সহজেই নোটিশ করতে পারবে। বাইকটির লোয়ার এবং আপার লাইট এলইডি হওয়ায় আপনি রাতে খুব সুন্দর ভাবে বাইকটি রাইড করতে পারবেন।
 
বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে জাপানিজ কে ওয়াই বি ব্র্যান্ডের ইউএসডি Upside-Down সাসপেনশন এবং বাইকটিতে রিয়ার সাসপেনশন হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে একই ব্র্যান্ডের মনোশক সাসপেনশন। যার মাধ্যমে আপনি অন রোড বা অফ রোড এ রাইড করার সময় যথেষ্ট কম্ফোর্টেবল ফিল করবেন। এবং অফ রোডে রাইড করার সময় এর উভয় সাসপেনশন যথেষ্ট কার্যকর এটা নিশ্চিত হতে পারবেন ।
 

বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে সিবিএস ব্রেকিং বা কম্বাইন্ড ব্রেকিং সিস্টেম যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই সিক্সটি এবং ফর্টি রেশিওতে দ্রুত গতিতে বাইক কে খুব সহজেই আপনার নিজের কন্ট্রোলে আনতে পারবেন। বাজারে অন্যান্য ব্র্যান্ডের সি বি এস বা কম্বাইন্ড ব্রেকিং সিস্টেম এর যে বাইক গুলো রয়েছে তারমধ্যে আমি অবশ্যই Haojue DR 160 বাইক এর ব্রেকিং সিস্টেম কে এগিয়ে রাখব কারণ আপনি যখন বাইকের রেয়ার ব্রেক প্রেস করবেন তখন আপনি ফিল করতে পারবেন যে সামনের ব্রেকিং সিস্টেম খুব সহজেই 40 পার্সেন্ট রেশিওতে সুন্দরভাবে কাজ করছে।
 

Haojue DR 160 বাইকের ব্রেকিং সিস্টেম - 

বাইকটির ফ্রন্টে ব্যবহার করা হয়েছে ২৮০ মিলিমিটার ডিস্ক প্লেট অ্যান্ড রেয়ার এ ব্যবহার করা হয়েছে ২২০ মিলিমিটার ডিস্ক প্লেট। বাইকটিতে সামনে ব্যবহার করা হয়েছে ১০০/৭০ সেকশনের টিউবলেস টায়ার এবং পিছনে ব্যবহার করা হয়েছে ১৩০/৭০ সেকশনের টিউবলেস টায়ার । উভঁয় চাকার রিম গুলো হলো এলোয় রিম এবং রিমের সাইজ হলো ১৭।
 
আমার এই বাইকটি টোটাল ৫বার সার্ভিস দিয়েছি তা ছাড়া আর কোনো সার্ভিস আমি দেইনি ।আর আমি সার্ভিস করাই কর্ণফুলি মেইন সার্ভিস সেন্টার থেকে ।
 
২৫০০ কিলোমিটার পূর্বে মাইলেজ পেয়েছি ৪০ করে এবং ৫০০০ কিলোমিটার এর পড়ে মাইলেজ পাই ৪৫। আমি মনে করি যত্নে রতন মিলে তাই আমি আমার বাইকটি সব সময় ই যত্নে রাখি। এখন পর্যন্ত আমার বাইক এর ব্রেক সু ২ বার এবং বল রেসার ২ বার পরিবর্তন করি।
haojue dr 160 bike pic
আমি সর্বদা চেষ্টা করি অন্যের থেকে একটু আলাদা থাকতে তাই সেটা আমার বাইক এর ক্ষেত্রেও কেনো না আমি আমার যেই বাইক টি ইউজ করতেছি এইটা আমি কালার এর কিছু পরিবর্তন আনছি যেটা ব্রাজিল এ দেখা যায় এই কালার টা ।
 
বাইকটি দিয়ে আমার সর্ব্বোচ টপ স্পীড পেয়েছি ১৩৩ ।
 

Haojue DR 160  বাইকটির ভালো দিক এর কোনো শেষ নেই -

  • USD সাসপেনশন
  • CBS ব্রেকিং সিস্টেম
  • EFI
  • LED হেডলাইট
সত্যি বলতে এই বাইকের খারাপ দিক একটাই সেটা হলো এর স্টক চেইন , এটা অতিরিক্ত লুজ হয় । বাইকটি ৫ ফিট ৬ ইঞ্চি লোকদের জন্য পারফেক্ট । তাছাড়া বাইক এর কোনো নেগেটিভ দিক নাই ।
haojue dr 160 at khagrachari
বাইকটি দিয়ে সর্বোচ্চ একটানা ২৩ ঘণ্টা  রাইড করা হয়েছে । এই ২৩ ঘণ্টায় বাইকটি একটা বারের জন্যও পারফরম্যান্স ড্রপ করে নাই ।যেখানে সাথের বাইক গুলো পারফরম্যান্স ড্রপ করছিল , বাইকটির আপ রাইড হেন্ডালের কারণে একটানা অনেক ক্ষন চালানো যায় কোনো বেক পেইন বা অসস্তি লাগেনা ।
 
আমি আমার বাইকটির পার্ফরমেন্স নিয়ে অনেক খুশি । ধন্যবাদ ।
 
লিখেছেনঃ সায়েম সিরাজ
 
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।