CF Moto 250SR – ২০০ থেকে ২৫০ সেগমেন্টের নতুন প্রতিদ্বন্দী
This page was last updated on 24-Nov-2024 04:57pm , By Badhan Roy
CF Moto আন্তর্জতিক বাজারে খুবই জনপ্রিয় একটি চাইনিজ ব্র্যান্ড। বাংলাদেশের রাস্তায় CF Moto ব্র্যান্ডের ১৫০-১৬৫ সিসির বাইক মাঝেমধ্যে নজর কাড়ে এর ইউনিক ডিজাইন, ইঞ্জিন সাউন্ড ও পারফর্মেন্স এর কারনে। হায়ার সিসির চলমান এই দৌড় প্রতিযোগীতায় অংশ নিতে CF Moto তাদের ২৫০সিসি লাইনআপ এর 250SR মডেল টি বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে।
CF Moto এর SR এর পূর্ণরূপ Sport Racing যা দ্বারা বোঝা যায় এটি একটি স্পোর্টস সেগমেন্ট এর বাইক। অনেকেই একে বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে এভেইলেবল এবং সামনে আসতে যাচ্ছে এমন ২০০-২৫০ সিসি সেগমেন্টের বাইকের সাথে কম্প্যারিজনে এগিয়ে রাখছেন এর আকর্ষণীয় ফিচারস এবং পাওয়ারফুল ইঞ্জিনের কারনে। আজ এই লেখায় এক নজরে CF Moto 250SR সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে।
CF Moto 250SR – ডিজাইন
প্রথম দেখায় CF Moto 250SR বাইকটির লুক একই ব্র্যান্ডের 300ss মডেলের সাথে বেশ সাদৃশ্যপূর্ণ। সামনের ডুয়াল হেডল্যাম্পের আকর্ষণীয় শেপটি Mclaren P1 স্পোর্টস কার থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে করা হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। বাইকটির লুক অত্যান্ত এগ্রেসিভ ও স্পোর্টি।
স্পোর্টি এরোডায়নামিক শেপ বাইকটিতে বেশ প্রিমিয়াম একটি ফিল দেয়। বাইকটির বডিকিট যথেষ্ট ডিউরেবল ও দেখতে বেশ বড়সড় বা বাল্কি ফিল দেয়। সিটিং পজিশন যথারিতি স্পোর্টি ও চওড়া লুকিং গ্লাস বাইকের সৌন্দর্য্য যেমন বাড়ায় তেমন প্র্যাক্টিকাল ও বটে। এর সাথে আকর্ষণীয় গ্রাফিক্স বাইকের দিকে নজর ফেরাতে বাধ্য করে।
CF Moto 250SR – ইঞ্জিন স্পেসিফিকেশন
CF Moto 250SR বাইকটিতে রয়েছে ইলেক্ট্রনিক এফ আই (EFI) প্রযুক্তির লিকুইড কুলড সিঙ্গেল সিলিন্ডার, DOHC ২৪৯.২ সিসির ৪ ভাল্ভ ৪ স্ট্রোক ইঞ্জিন যা ৯৭৫০ আরপিএম এ সর্বোচ্চ ২৭.১০ হর্সপাওয়ার শক্তি ও ২২ নিউটন মিটার টর্ক উৎপন্ন করে ৭৫০০ আরপিএম এ। CF-SC ওয়েট মাল্টিপ্লেট স্লিপার ক্লাচ এবং ৬ স্পিড গিয়ারবক্স একটি স্মুথ এবং কুইক রেসপন্স দিতে সক্ষম। বাইকটির সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১৩০-১৩৫ কিমি প্রতি ঘন্টায়।
CF Moto 250SR – ফিচারস
CF Moto 250SRএর কিছু উল্লেখযোগ্য ফিচারস হলো:
সিট হাইট, ওজন ও গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স- ৭৮০ মি.মি এর সিট হাইটের সাথে ১৩৫ মি.মি গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স রয়েছে বাইকটিতে। ১৬৫ কেজি ওজনের কার্ব ওয়েট হওয়াতে বাইকটি বেশ ভারী অনুভব হয়, তবে বাইকটির ওয়েট ব্যালান্সিং বেশ ভাল এবং এটাও মাথায় রাখতে হবে উচ্চ সিসির বাইকের ব্যালান্সিং এর জন্য এর ওজন বাড়তি হওয়া স্বাভাবিক।
ইগনিশন সিস্টেম- সেলফ ইলেক্ট্রিক ইগনিশন।
ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার: ৫ ইঞ্চির বিশাল টিএফটি স্ক্রিন টি দেখে প্রথম দেখায় একটি স্মার্টফোন মনে হতে পারে। অত্যান্ত চমৎকার এই ডিজিটাল ক্লাস্টারটিতে রাইডার নিজের পছন্দ মত স্ক্রিন থিম সেট করতে পারবেন। বিভিন্ন সাধারণ তথ্যের পাশাপাশি এটা আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদর্শন করে।
যেমন এটিতে রয়েছে তাপমাত্রা, ম্যাপ নেভিগেশন, একাধিক ট্রিপ মিটার, স্পিডোমিটার, ট্যাকোমিটার, গিয়ার, সার্ভিস ইন্ডিকেটর, এবিএস ইন্ডিকেটর, সাইড স্ট্যান্ড ইন্ডিকেটর, ঘড়ি ইত্যাদি। এর সাথে থাকছে ব্লুটুথ কানেক্টিভিটি যা CF Moto এর নিজস্ব অ্যাপ দ্বারা সহজেই বিভিন্ন তথ্য বাইকার তার নিজের স্মার্টফোনে দেখতে যেমন পারবেন তেমনই ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টারে সিংক করতে পারবেন।
এলইডি লাইটিং: ডি আরএল সহ বাইকটির ডুয়াল হেডল্যাম্প সম্পর্কে ইতিমধ্যেই ডিজাইন সেকশনে বর্ণনা করা হয়েছে। টেইল ল্যাম্প এবং টার্ন ইন্ডিকেটর প্রত্যেকটি ই এলইডি যা স্টাইলিশ এবং ভিজিবল।
আন্ডারবেলি এক্সহস্ট- বাইকটির এক্সহস্ট সিস্টেম আন্ডারবেলি হওয়ার কারনে বেটার বেজ এর সাউন্ডের পাশাপাশি বাড়তি ওজন হ্রাস করা হয়েছে।
টিউবলেস টায়ার: বাইকটির টায়ার সাইজ- সামনের টায়ার 110/70-17, পিছনের টায়ার: 140/60-17. টিউবলেস CST radial টায়ার ও এলয় রিম একটি সুন্দর রাইডের অভিজ্ঞতা দিবে বলে আশা করা যায়।
ব্রেক: ব্রেকিং এবং সেফটি এর উপর CF Moto খুবই জোর নজর দিয়েছে তা বলতেই হয়। বাইকটির ব্রেকিং সিস্টেমে সামনে ব্যাবহার করা হয়েছে ২৯২ মি.মি এর ডিস্কের সাথে ৪ পিস্টন ক্যালিপার ও পিছনে ২২০ মি.মি এর ডিস্ক ও সিঙ্গেল পিস্টন ফ্লোটিং ক্যালিপার ব্যবহার করা হয়েছে। ডুয়াল চ্যানেল Continental এবিএস ব্যবহার করা হয়েছে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির জন্য। তাই বুঝতেই পারছেন বাইকের ব্রেকিং সিস্টেম কতটা উন্নত।
সাসপেনশন সিস্টেম: বাইকটির সামনে ৩৭মি.মি এর আপসাইড ডাউন ফর্ক (USD) ও পিছনে মাল্টি এডজাস্টেবল মনোশক অ্যাবজর্বার ব্যাবহার করা হয়েছে যা রাইডিং আরামদায়ক করবে বলে ধারণা করা যায়।
মাইলেজঃ ১২ লিটারের ফুয়েল ক্যাপাসিটির সাথে প্রতি লিটার জ্বালানী তেলে বাইকটি ৩৫ কিলোমিটারের মাইলেজ দিতে সক্ষম। হায়ার সিসি বিবেচনায় এটি যথেষ্ট ভাল মাইলেজ, কেননা অনেক ১৫০-১৬৫ সিসির বাইক ও এর কাছাকাছি বা এর থেকে কম মাইলেজ দিয়ে থাকে। তবে বলা বাহুল্য, মাইলেজ নির্ভর করে জ্বালানীর মান এবং রাইডিং স্টাইলের উপরে।
এই ছিল এক নজরে CF Moto 250SR এর এক নজরে বিস্তারিত। হায়ার সিসির বাইকের মধ্যে একের পর এক যেমন আসছে, তেমনই স্পোর্টস সেগমেন্টেও স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী ভাল একটা প্রতিদ্বন্দীতা বাইকটি করতে পারবে। আশা করা যায় বাইকটি লঞ্চ হওয়ার সাথে সাথে বাইকারদের অন্যতম পছন্দের হায়ার সিসি এর স্পোর্টস বাইক হবে, পাশাপাশি CF Moto বাংলাদেশ বাইকটি বাইকারদের কথা মাথায় রেখে রিজনেবল মূল্য ও স্প্যেয়ার পার্টস এর পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করবে।
বাইকের লঞ্চিং, মূল্য ও প্রি বুকিং, বিষয়ক তথ্য সবার আগে পেতে বাইকবিডির সাথেই থাকুন।