Bajaj Pulsar UG4 - মালিকানা রিভিউ | আশিক মাহমুদ | বাইকবিডি

This page was last updated on 07-Jan-2025 01:00pm , By Ashik Mahmud Bangla

বাজাজ পালসার আমাদের দেশের অন্যতম জনপ্রিয় একটি মোটরসাইকেল মডেল । ছোট বেলা থেকে পালসার বাইক দেখতে দেখতে বড় হওয়া, তখন পালসারে ছিলো গোল হেডলাইট এবং স্পোকেট রিম । নিজের অজান্তেই পালসার বাইকটি আমার স্বপ্নের বাইকে পরিনত হয় । আমি আশিক মাহমুদ Bajaj Pulsar UG4 বাইকটি ব্যবহার করেছি প্রায় ৩০ হাজার কি.মি,যার মধ্যে ছিলো হাইওয়ে রাইড,সিটি রাইড,অফরোডিং সহ আরো অনেক অভিজ্ঞতা । আজ আমি এই অভিজ্ঞতার গল্প গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরবো ।

Also Read: Bajaj Pulsar UG4 - মালিকানা রিভিউ

অবশেষে সেই স্বপ্ন বাস্তবাতায় রূপ নিলো, নিয়ে নিলাম Bajaj Pulsar UG4 লাল কালো বাইকটি । এর আগে আমি হিরো হোন্ডা হাংক ডুয়েল ডিস্ক বাইকটি ব্যবহার করতাম । হাংক থেকে পালসারে আসা তাই শুরুতে বাইকটির হাইট আমার কিছুটা কম মনে হয়েছিলো । পালসারের একটা বিশেষ গুণ হলো এটি নিজের ইচ্ছা মতোন মডিফাই করে নেয়া যায়, আর আমি বাইক মডিফাই খুব পছন্দ করি ।

Bajaj Pulsar UG4 - ফিচার এবং বিস্তারিত

ডিজাইনঃ 

বাজাজ পালসারের ডিজাইন আমার সব সময় ভালো লাগে। এর পিছনে অন্যতম একটি কারন হচ্ছে বাইকটি যে কোন বয়সী মানুষের সাথেই মানায়। পালসারের যে ডিজাইনের মধ্যে আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে পালসারের ফ্রন্ট লুকস। এছাড়াও কাটা হ্যান্ডেলটি আমার খুব পছন্দের। সব মিলিয়ে ডিজাইন আমার কাছে ভালোই লাগতো। কিন্তু একটা ব্যাপার খুব বাজে লাগতো সেটা হচ্ছে পালসার তাদের UG সিরিজের ডিজাইনে তেমন কোন পরিবর্তন আনতো না।

Also Read: Discount Offer On Bajaj Discover Motorcycle In Bangladesh

কন্ট্রোলিংঃ 

বাজাজ পালসারের কন্ট্রোলিং এক কথায় অসাধারন। আমার আগের বাইকটি ডুয়েল ডিস্ক ছিলো,কিন্তু এটি সিংগেল ডিস্ক তবুও বাইকটি কন্ট্রোল করতে আমার একটুও কষ্ট হতো না। আর বাইকের ব্যালেন্স ছিলো অসাধারন। হাইওয়ে রাইডের সময় হাইস্পীডেও বাইকটি কখনো হাল্কা মনে হয়নি। পালসারের যে ব্যাপারটি আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে সেটি হচ্ছে বাইকটি রাস্তার সাথে আটকে থাকে অহেতুক লাফালাফি করে না। ব্যাপারটি আমি আমার মতো করে বললাম, ইউজাররা আশাকরি বুঝতে পারবেন।বাইকটির সামনের ব্রেকিং অসাধারণ। হাইস্পীডে ও বাইকটির ব্রেক যথেষ্ট ভালো কাজ করে।

হাইওয়েতে বাইক রাইডিং এর ক্ষেত্রে যেসকল সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে

বিল্ড কোয়ালিটিঃ

 বাইকটির বিল্ড কোয়ালিটি অসাধারন। বাজাজ তাদের বিল্ড কোয়ালিটি সব সময় সেরা দেয়ার চেষ্টা করে, পালসারেও তাই দিয়েছে। বাইকটি নিয়ে একবার আরিচা সড়কে বেশ বড় রকমের এক্সিডেন্টের সম্মুখীন হই । সুস্থ হওয়ার পর বাইকটি চেক করতে গিয়ে দেখি বাইকে তেমন কোন ক্ষতি হয়নি যতটা আমি ভেবেছিলাম । এই এক্সিডেন্টের পর পালসারের বিল্ড কোয়ালিটি নিয়ে হাল্কা যে সন্দেহ ছিলো সেটাও দূর হয়ে যায় । 

ইঞ্জিনঃ 

বাজাজ পালসারে ব্যবহার করা হয়েছে ১৫০ সিসির ইঞ্জিন,আর ইঞ্জিনটি আমার কাছে যথেষ্ট শক্তিশালী মনে হয়েছে। হাইওয়ে রাইড অফরোডিং সব সময় বাইকটির ইঞ্জিন আমাকে সেরা সাপোর্ট দিয়েছে। আর এই প্রায় ৩০ হাজার কি.মি এর সফরে বাইকটির ইঞ্জিনে কোন প্রকারের কোন কাজ আমার করাতে হয়নি। আমার মনে হয় পালসারের ইঞ্জিন যতো গরম হয় ততোই ইঞ্জিন থেকে আমি ভালো ফিডব্যাক পেতে শুরু করি। পালসারের ইঞ্জিন নিয়ে আমি ১০০% সন্তুষ্ট। 

Also Read: Bajaj Bike showroom in Khulna: Nandi Trading Corporation

সাউন্ডঃ 

পালসার বাইকের সাউন্ডকে ভালোবাসেন এমন বাইকারের সংখ্যা অনেক। আমিও তাদের মধ্যে একজন। পালসারের বাঁশির ন্যায় সাউন্ডটি আমার কাছে অসাধারন লাগে। তবে একটানা রাইড করলে সাউন্ডটা কিছুটা চেঞ্জ হয়ে যায়,তখন সাউন্ড শুনতে খুব বাজে লাগে আমার কাছে।

সিটিং পজিশনঃ 

পালসারে ব্যবহার করা হয়েছে লম্বা সিট। যেটি ফ্যামিলি রাইডের জন্য উপযুক্ত। আর এই সিট আপনাকে বেশ ভালো কম্ফোর্ট দিবে সিটি এবং হাইওয়েতে। পালসারের পিলিয়ন সিটটা বেশ আরামদায়ক। যে কোন ধরনের পিলিয়ন বাইকটিতে খুব আরামেই বসতে পারবে। 

Also Read: Bajaj Bike showroom in Dhaka : Bajaj Gold

সাসপেনশনঃ 

পালসার বাইকের পিছে ব্যবহার করা হয়েছে ডুয়েল শখ সাসপেনশন। যেটি ভাংগা রাস্তায় দারুন সাপোর্ট দিয়ে থাকে। বেশি ওজনের পিলিয়ন নিয়ে রাইড করলেও বাইকটিতে কোন প্রকারের সমস্যা অনুভব করতে হয় না।বাইকটি নিয়ে আমি অনেকবার পাহাড়ি রাস্তায় রাইড করেছি আর এই সাসপেনশন আমাকে দারুন সাপোর্ট দিয়েছে। 

রিম এবং টায়ারঃ 

পালসারের সব কিছুই আমার কাছে ভালো লাগে শুধুমাত্র টায়ার সাইজ বাদ দিয়ে। আমার মনে হয় টায়ারগুলো আরো মোটা দেয়া উচিৎ ছিলো। কিন্তু টায়ারের গ্রিপ অসাধারণ।

Also Read: Bajaj Giving Away Free Driving License Fee On Bajaj Motorcycles!

যদিও আমি বাইকটিতে সামনে ৯০ সাইজের টিউবলেস টায়ার এবং পিছনে ১২০ সাইজের টিউবলেস টায়ার লাগিয়ে নিয়েছি। এতে বাইকের মাইলেজ এবং স্পীডে তেমন কোন প্রভাব ফেলে নি। 

মাইলেজঃ 

বাইকটি থেকে আমি ৪০-৪৫ কি.মি মাইলেজ পাই। আমার কাছে এই মাইলেজ যথেষ্ট, তবে অনেকের পালসার বাইকে নাকি ৫০ কি.মি মাইলেজ পাওয়া যায়। পালসার বাইকের হেডলাইটের আলো আমার কাছে ভালো লাগেনি । সিটি রাইডে তেমন কোন সমস্যা না হলেও হাইওয়েতে অনেক সমস্যা মনে হয়েছে আমার কাছে । তবে পালসারের ব্যাক লাইট আমার কাছে দারুন লাগে । অন্য কোন বাইকে এই ডিজাইনের ব্যাক লাইট দেখা যায় না ।

সিটি রাইডে দুর্ঘটনা এড়াতে যেসকল সতর্কতা মেনে চলতে হবে

পালসারের কালার নিয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই বাইকটির কালায় কোয়ালিটি আমার কাছে ভালো লেগেছে । তবে আমার পালসার বাইকটিতে আমি একটি মারাত্নক সমস্যার সম্মুখীন হতাম মাঝে মাঝেই সেটা হচ্ছে সামনের হাইড্রোলিক লিভারের বকেট নষ্ট হওয়া, এর ফলে আমি কয়েকবার ছোট ছোট এক্সিডেন্টের সম্মুখীন হয়েছি।

Also Read: Bajaj Pulsar 150 AS Review,Expected Price In Bangladesh

বাজাজ পালসারের সার্ভিস সেন্টারে আমি একবার গিয়েছিলাম, কিন্তু তাদের ব্যবহার এবং কাজ আমার পছন্দ হয়নি, এজন্য পরে আর যায়নি। পরিশেষে বলতে চাই আমি বাইকটি নিয়ে খুব সন্তুষ্ট । একটি বাইক থেকে আমি যা যা আশা করেছি সব কিছু আমি পেয়েছি পালসার বাইক থেকে । হেলমেট ব্যবহার করে নিরাপদে বাইক রাইড করুন । 

ধন্যবাদ ।  

 লিখেছেনঃ আশিক মাহমুদ    

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।