ইঞ্জিন পারফরমেন্স: বাইকটি আমি ০ থেকে ৪০,০০০ কিলোমিটার রাইড করি। এই দীর্ঘ রাইডে বাইকটির ইঞ্জিন পারফরমেন্স ছিল অসাধারণ।
ব্রেকইন-পিরিয়ড : বাইকটির ইন্জিন এ সময় অল্প রাইডেই প্রচুর গরম হয়ে যেত,যা প্রতিটি নতুন বাইকের বেলায় ই দেখা যায়,তাই এই বিষয় নিয়ে এতটা চিন্তা করতাম না।ব্রেক ইন পিরিয়ডে স্পিড লিমিট মানার চেষ্টা করেছি কিন্তু সম্পূর্ণ পারিনি । যাই হোক ১৫০০-২০০০ কিলোমিটার চালানোর পর বাইকের ইন্জিন তুলনামূলক কম গরম হতে লাগল এবং মাইলেজ ও কমফোর্ট আগের চেয়ে বেশি পেতে শুরু করলাম।
লুকস ও মোডিফিকেশন: পালসারের আউট লুকটিই আমার কাছে খুব ভাল লাগে। তাই এতে কোন প্রকার মোডিফিকেশন করিনি।
টপস্পিড: BAJAJ PULSAR দিয়ে পিলিয়ন সহ সর্বোচ্চ ১০৫ প্রতি ঘন্টা, তবে অারও স্পিড উঠত বলে মনে হয়েছে। তাছাড়া ৮০-৯০ প্রতি ঘন্টায় প্রায়ই চালানো হয় বেশি।
রেডি পিকঅাপ : এই বিষয়ে বলতে গেলে বলতে হয় BAJAJ PULSAR 150 এর রেডি পিকঅাপ একই সেগমেন্টের অন্য বাইক গুলো থেকে তুলনামূলক কম। ১০০ থেকে মার্কিং করলে দেখা যাবে পালসার পাবে ৮০ অন্য দিকে RTR পাবে 85.দুটো বাইক ই একই সাথে চালানাের কারনে অামার কাছে এমন টি মনে হয়েছে,যা অন্যদের সাথে না ও মিলতে পারে
ভাইব্রেশনঃ Bajaj Pulsar এ যেকোন গিয়ার পজিসনেই কোন ভাইব্রেশন অনুভূত হয়নি। টপ স্পিড এবং লো স্পিডে কম্পন অনুভুত হয়নি।
ইন্জিন লুবরিকেন্টস্: ব্রেকইন পিরিয়ডে প্রথম ৫০০ কিলো পর লুবরিকেন্টস পরিবর্তন করি। তার পর থেকে প্রতি ১০০০ কিলোমিটার পরপর পরিবর্তন করে অাসছি। লুবরিকেন্টস্ হিসেবে আমি MOBIL SUPPER 4T [ 20W 50] ব্যবহার করে অাসছি।
জ্বালানি: জ্বালানি হিসেবে অকটেন এবং পেট্রোল দুটোই ব্যবহার করেছি।তবে জ্বালানি পরিবর্তনে ইন্জিন পারফরমেন্স এর কোন পার্থক্য ধরতে পারিনি।
মাইলেজ: মাইলেজ মূলত চালকের চালানোর ধরন,সড়ক,পিলিয়ন/সিঙ্গেল ইত্যাদি বিষয়ের উপর নির্ভর করে।PULSAR 150 দিয়ে গড় মাইলেজ পাচ্ছি ৩৮-৪০ কিলো/লিটার,যা মহাসড়কে ৪২+ এবং ব্যস্ত নগরীতে ৩৭+
পার্টস রিপ্লেস: প্রথম ১৭০০০ কিলো বাইডের পর স্পার্ক প্লাগ এবং এয়ার ফিলটার পরিবর্তন করি যা পুনরায় আর পরিবর্তন না করলেও পরিষ্কার করা হয়েছে একাধিকবার। ২০,০০০ কিলো পর তেলের চাবি চেঞ্জ করতে হয়েছে তেল ঝরার কারণে।৩০০০০ কিলো সামনের টায়ার EUROGRIP পরিবর্তন করে MRF এবং ৩৫,০০০কিলো পর পিছননের EUROGRIP টায়ার পরিবর্তন করে MRF লাগাই।৩৩,০০০ কিলোমিটার পর প্রথম ক্লাসপ্লেট ও চেইন প্সাকেট পরিবর্তন করি।আর কোন প্রকার পার্টস এখনো পরিবর্তন করিনি। পরিবর্তিত পার্টের সর্বমোট মূল্য:৮,৪০০ টাকা।
বাজাজের সার্ভিস: বাজাজের সার্ভিস সেন্টার গুলো ঢাকায় উন্নত থাকলেও ঢাকার বাইরে তা নেই। তাই মানসম্মত সার্ভিস আমি কখনোই পাইনি।
বাইকের যত্ন: প্রতি মাসে গড়ে ১ দিন বাইক ধোয়া হয়। অন্য সময় সুতি কাপড় দিয়ে ধূলাবালি পরিস্কার করি। বাইকের ফুয়েল ট্যাংক, বডি কিট ধোয়ার জন্য আমি সেম্পু ইউজ করি এবং চাকা, টায়ার ও ইঞ্জিন পরিস্কার করতে ডিটারজেন্ট ইউজ করি। মাঝে মধ্যে পালিশ ও করি। নিজের ভালবাসার জায়গা থেকে দায়িত্ববোধের কারনেই সবসময় বাইকটি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখি।
BAJAJ PULSAR 150 এর ভাল দিকঃ
১. কন্ট্রোলিং খুবই ভাল; যার কারনে যেকোনো বয়সের মানুষ সহজেই বাইকটি রাইড করতে পারে।
২. লং লাইফ ইঞ্জিন পারফরমেন্স
৩. তুলনামূলক মাইলেজ বেশি ( এই সেগমেন্টের অন্যান্য বাইক থেকে)
৪. লং ট্যুরের জন্য অত্যন্ত উপযোগী
৫.কম্পন নেই।
BAJAJ PULSAR 150 এর খারাপ দিকঃ
১. ২০/২৫ কিলো রাইডের পর সাউন্ড ফেটে যায়। যা ৪০,০০০/৫০,০০০ কিলো পর খুবই ব্যাপক আকার ধারণ করে।
৩. নতুনদের জন্য গিয়ার সিফটিং এ সমস্যা হতে পারে ৷
৪. ডাবল ডিক্স অপসন নেই
৫. রেডি পিকআপ অপেক্ষাকৃত কম।
পরিশেষে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, BAJAJ PULSAR 150 বাংলাদেশের বাজারে ১৫০ সিসি সেগমেন্টের সর্বোচ্চ বিক্রিত বাইক যা ধীরেধীরে মানুষের অাস্থা অর্জন করতে সফল হয়েছে।#গতির সাথে সাথে নিয়ন্ত্রন,মাইলেজ,দীর্ঘ্যস্থায়ী ইন্জিন পারফরমেন্স এবং পার্সের সহজলভ্যতার কারনে বাইকটি একই সাথে দ্রুতগতির এবং ধীর গতির বাইকারের প্রথম পছন্দে পরিনত হয়েছে।
অামি মনেকরি,যারা প্রথম ১৫০ সিসি বাইকের কথা ভাবছেন তাদের জন্য Bajaj Pulsar 150 বেষ্ট হবে। সকলের জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা,সর্বদা হেলমেট পরে বাইক চালানোর চেষ্টা করবেন। সকলের কাছে আমি দোয়া প্রার্থী।