Bajaj Pulsar 150 টুইন ডিস্ক মালিকানা রিভিউ - মো মেহেদী আলম
This page was last updated on 28-Jul-2024 07:32pm , By Saleh Bangla
হুট করেই আমার ১০০ সিসি বাইক সেল করে দেই৷ কোন প্রিপারেশন ছিল না নতুন বাইক নেয়ার৷ টাকা ম্যানেজের চেষ্টা আর অন্য দিকে চিন্তা কোন বাইকটা নেওয়া যায় ৷ হাংক, পালসার, এপাচি ফোর ভি ৷ এই তিনটা ছিল টার্গেট ৷ টর্ক সার্ভিস সেন্টারের মালিক Nurshad E Najmul Islam ভাই এর মতামত, নিলে এপাচি ফোর ভি নেন নইলে Bajaj Pulsar 150 UG5 টুইন ডিস্ক নেন ৷ আর সাথে এটাও বললো পার্টস পাত্তির দাম পালসারের কম। আপনি যদি বাইক পরবর্তি খরচ কমাতে চান তাইলে পালসার বেস্ট অপশন ৷ কারণ ১৫০ সিসি সেগমেন্টে যত বাইক বাংলাদেশে আছে সবগুলার মধ্যে এটার পার্টসের দাম কম।
আমার টাকা রেডি৷ কিন্তু এপাচি ফোর ভি আজ আসবে কাল আসবে করে আর আসে না। এদিকে Bajaj Pulsar 150 টুইন ডিস্কও মনে ধরেছে ৷ শেষমেশ সিদ্ধান্ত নিলাম এটাই কিনবো ৷ অক্টোবরের ৪ তারিখ ঘরে নেই তারে ৷ বাইকের কাগজ পাই ২৪ দিন পর ৷ মোটামুটি নভেম্বর থেকে রাস্তায় নামলাম তারে নিয়া ৷ এখন পর্যন্ত ৫৬০০+ কিলো রানিং। এর মধ্যে ঢাকা-কুমিল্লা-ঢাকা দুইবার, ঢাকা-মহামায়া লেক- ঢাকা একবার, ঢাকা-গুলিয়াখালী-ঢাকা একবার। মোট চারটা হাই ওয়ে রাইড সেই সাথে সাভার, গাজীপুর এরিয়াতে প্রতি সপ্তাহে যাই৷
সব মিলিয়ে Bajaj Pulsar 150 UG5 টুইন ডিস্ক বাইকটা কেমন?
ব্রেকিংঃ প্রথমত Bajaj Pulsar 150 টুইন ডিস্কের ব্রেকিং পারফর্মেন্স এক কথায় অসাধারণ। আগের পালসার থেকে এটার ব্রেকিং পারফর্মেন্স অনেক অনেক ভালো ৷ চাকার হাওয়া প্রেশার সঠিক পরিমাণে রাখলে ব্রেকিং পারফর্ম অনেক ভালো পাওয়া যায়৷ রিসেন্ট আমি একটা বাসের পিছনে ১০৫ কিমি/ঘন্টা স্পিডে এ ড্রাইভ করতেছিলাম রাতের বেলায় ৷ বাস হার্ড ব্রেক করার পর আমি ভেবেছি হয়তো বাসে মেরেই দিব ৷ কিন্তু পরে দেখা গেল জায়গামত আমিও বাইক থামাতে পেরেছি। চাকা স্কীড করেনি ৷ আর আমার বাইক যে কয়জন টেস্ট রাইড দিয়েছে সবাই বলছে এটার ব্রেকিংটা জোস। জায়গায় জমানো যায়।
Also Read: Exclusive Motors Workshop in Armanitola, Padmalochon roa
সাসপেনশনঃ প্রথম এক হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত সাসপেনশন হার্ড ছিল অনেক। রেসপন্স কম ছিল। তবে এক হাজার কিলোমিটারের পর থেকেই বেশ স্মুথ কাজ করে রাস্তায়। ভাংগা রাস্তাতেও ভালো কাজ করে।
কমফোর্ট লেভেলঃ একদিনে ৩৯০+ কিলোমিটার রাইড করেও বিন্দুমাত্র ব্যাক পেইন হয়নি ৷ কোন ক্লান্তি আসেনি ৷ কমফোর্ট লেভেল হাংকের কাছাকাছি বলা যেতে পারে বসে মজা আছে ৷
Also Read: Akira Bajaj Motors in Main Road, Raipur, Lixmipur
এক্সিলারেশনঃ এখানে একটু কথা বলা লাগে ৷ কারণ যেহেতু ইঞ্জিন পাওয়ার একই রেখে বড় বডি সাথে মোটা চাকা দেওয়া হয়েছে এবং একই সাথে বিশাল মোটা ও রিং চেইনও দেওয়া হয়েছে। সেই দিক গুলা বিবেচনায় এক্সিলারেশন এর পার্থক্য সামান্য আছে। মানে আগের পালসারের থেকে এটার এক্সিলারেশন সামান্য কম। মানে ১৯/২০ পার্থক্য৷ যেটা কিনা অতটা বুঝার মত না ৷
মাইলেজঃ আমি নির্দিষ্ট কয়েকটা পাম্প থেকে ফুয়েল নেই ৷ মাইলেজ সিটিতে ৪০-৪৫ এর আশেপাশে পাচ্ছি আর হাই ওয়েতে সর্বোচ্চ ৫৩ মাইলেজ পেয়েছি ৷ তবে এভারেজ ৪৫-৪৮ পাওয়া যায় হাইওয়েতে ৷ মাইলেজ অনেক কিছু উপর নির্ভর করে। চালানোর ধরণ, যত্ন নেওয়ার ধরন, ফুয়েলের কোয়ালিটি ৷ তাই এটা নিয়ে সঠিক তথ্য দেওয়া সম্ভব না।
কিক নেই, সেলফে সমস্যা হলেঃ এখানেই সবার বড় কনফিউশন। এমনকি আমি নিজেও ভয়ে থাকি কখন জানি বাইক ঠেলা লাগে ৷ তবে ৫৬০০ কিলোর অভিজ্ঞতায় এরকম সিচুয়েশন একবারও হয়নি । শীতের সিজন প্রায় শেষের দিকে । সকাল বেলা প্রচুর ঠান্ডায়ও এক সেলফেই বাইক স্টার্ট নেয় ৷ মানে ব্যাটারি আর সেলফ মোটর এবং কার্বুরেটর টিউনিং ঠিকঠাক থাকলে কিক না থাকার ঝামেলায় পরতে হবে না ৷ তারপরেও একটা ভয় থাকবেই ৷ কারণ ধরেন রাস্তায় হুট করে আপনার সেলফের কার্বন চলে গেছে। তখন তো সেলফ নিবেই না। তখন ঠেলা লাগবে নয়তো ডাবল স্ট্যান্ড করে চাকা ঘুরায়ে বাইক স্টার্ট দেওয়া লাগবে।
যে সমস্যা গুলো পেয়েছি এই ৫৬০০ কিলো রাইড এঃ মাঝে মাঝেই আরপিএম দুই হাজারে আটকে থাকে ৷ তবে ম্যাকানিক দেখিয়ে সমাধান করছি ৷ ভেজা রাস্তায় চাকার গ্রিপ তেমন সুবিধার মনে হয়নি আমার কাছে। ভেজা রাস্তায় চালানোটা একটু রিস্কি লাগে আমার কাছে। কনফিডেন্ট লেভেল একটু কম লাগে। সেটা আমার কাছেই হতে পারে। অন্য কারো নাও হতে পারে৷ পিলিয়ন সিট কমফোর্টেবল না। পিলিয়ন শুধু গায়ের উপর এসে পরে। ছিট পিচ্ছিল। পিলিয়ন নিয়ে চালালে বাইকের শক্তি এমনিতেও কমে যায়। তবে এটায় একটু বেশিই কমে যায় মনে হইলো আমার কাছে। যদিও আমার পিলিয়নের ওজন ৮০-১০০ কেজির মধ্যে ছিল।
টপ স্পীডঃ ওভাবে টপ পাওয়ার জন্য ট্রাই করিনি । মানে শূন্য থেকে গিয়ার শিফট করে টপে যাবো এভাবে ট্রাই করা হয়নি ৷ বাইক রাইড এর মধ্যে রাস্তা ফাকা ৷ ওই অবস্থাতেই ট্রাই করেছিলাম কত উঠে ৷ সিংগেলে ১২০ কিমি/ঘন্টা । হয়ত ১২৫ কিমি/ঘন্টা পর্যন্ত সম্ভব। ১১৯ কিমি/ঘন্টা তে আরপিএম লিমিটের লাল লাইট ব্লিংক করছে ৷ ১১৭/১১৮ কিমি/ঘন্টা পর্যন্ত ব্লিংক করেনি ৷ আর পিলিয়ন নিয়ে ১১৪ কিমি/ঘন্টা পর্যন্ত উঠেছিল ৷ হয়তো আরো কিছু উঠবে।
ভাইব্রেশনঃ মোটামুটি ভাইব্রেশন নাই বললেই চলে৷ ১০০+ কিমি/ঘন্টা এ পায়ের দিকে সামান্য ভাইব্রেশন হয়৷ হাতে ভাইব্রেশন লাগে না ১১০ পর্যন্ত ৷ ১১০ এর পর চিন চিনে ভাইব্রেশন লাগে হাতে ৷ আর হাই স্পীডেও বাইক স্মুথ এবং স্টেবল থাকে ৷ কাপাকাপি করে না । ১২০ এও দেখি বাইকের কন্ট্রোল অনেক ভালো। হাই স্পীডে কন্ট্রোল লেভেল ভালো ৷ কনফিডেন্ট ভালো পাওয়া যায় ৷
2018 Bajaj Pulsar 150 Twin Disc
আরেকটা কথা, Bajaj Pulsar 150 টুইন ডিস্কের পিছনের ব্রেক প্রথম দিকে ভালো কাজ করে না। মানে ড্রাম ব্রেকের চাইতেও খারাপ ৷ তবে ১৪০০ কিলোর পর থেকে ব্রেক রেস্পন্স বেড়ে গেছে ৷ এখন মনে হয় ডিস্ক ব্রেক এর পারফর্ম একুরেট আছে ৷ সুতরাং এইটা বড় কোন সমস্যা না। ঠিক হয়ে যায় কিছুদিন পরে। তো সবাই ভালো থাকবেন বাইক চালানোর সময় সবসময় হেলমেট ব্যবহার করবেন এবং লং রাইড গুলোতে সেফটি গিয়ার ব্যবহার করবেন। ধন্যবাদ ।
বাজাজের এমন ইউজার রিভিউ এবং pulsar 150 price in bangladesh এর সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক ফ্যান পেজ ঘুরে দেখুন। তাছাড়া বাইক সম্পর্কিত যেকোন তথ্য পাবেন আমাদের ওয়েবসাইটে। আপনাদের মূল্যবান বক্তব্য এবং pulsar 150 ভালো বা খারাপ দিক আপনার কাছে কোনটা মনে হয় সেগুলো আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন ।
লিখেছেনঃ MD Mehedi Alam
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।