TVS Apache RTR 160 ১৬,০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - সাদিকুল

This page was last updated on 30-Jul-2024 03:58pm , By Shuvo Bangla

আমি মোঃসাদিকুল ইসলাম। আমার বাসা যশোর জেলা অভয়নগর থানা। পেশায় আমি একজন ছাত্র । আমি ২০২০ সালে আগস্ট মাসের ১৫ তারিখ একটা TVS Apache RTR 160 বাইক ক্রয় করি যেটা আমার জীবন বলতে গেলে অন্যতম কঠিন একটা স্বপ্ন পূরণ ছিলো। 

tvs apache rtr 160 blue 

বর্তমানে আমার বাইকটি ১৬ হাজার কিলোমিটার চলেছে আর এর মধ্যে তার সাথে জড়িয়ে আছে আমার অনেক ভালো মন্দের স্মৃতি।  আমি আমার TVS Apache RTR 160 বাইকটিকে অনেক ভালোবাসি যার কারণ বলে শেষ করা সম্ভব নয়।

আমার বাইক এর লুকস এই সেগমেন্ট এর সব বাইক থেকে সেরা বলে আমি মনে করি। রেডি পিকআপ যা আমার বাইকটিকে ভালোবাসার অন্যতম কারণ, ️আর এই ভালোবাসা থেকেই আমি আমার বাইকটা ক্রয় করার জন্য পছিন্দ করেছিলাম। আমি যখন বাইকটি ক্রয় করেছিলাম তখন এর বাজার মৃল্য ছিলো ১,৭১,০০০ টাকা, আমার বাইকটি নওয়াপাড়া টিভিএস গ্যালারি থেকে ক্রয় করা  হয়েছিলো। বাইকটি কিনতে যাওয়ার আগে ছিলো অনেক ঘটনা যা সব ছেলেরাই করে যেহেতু আমার বয়স ১৯বছর পড়াশোনা করি বাসা থেকে বাইক দিবেনা এটাই বাস্তবতা কিন্তু আমি প্রতিদিন অনুরোধ করতাম বাইক কিনে দেওয়ার জন্য, এভাবে বলতে বলতে হঠাৎ একদিন সবাই রাজি হয়ে গেলো।

আমার বাইক কিনে দেওয়ার সাথে অনেক গুলো শর্ত ছিল, যা আমি মানার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাইক ক্রয় করতে যাই । বাবার সাথে বাইক কিনতে যাওয়ার দিনটি আমার জীবনের সেরা দিন ছিলো। আমার বাইক ক্রয় করার জন্য যে আমাকে বেশি সাপোর্ট করেছিলো সে আমার খালামনি । তার কথা না বল্লেই নয়, খালামনি আমাকে অনেক সাহায্য করেছে বাইক কেনার জন্য, লাভ ইউ খালামনি । বাইক কিনে বাড়ি যাওয়ার পর হালকা হালকা বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির মধ্যে আমি আমার বোনকে বাইকে নিয়ে পুরো এলাকা ঘুরলাম । আবেগে বৃষ্টি দেখার সময় ছিলোনা ।

আমার বাবার বাইক আমি ২০১৫ সাল থেকে চালাই, তখন থেকেই বাইক এর প্রতি অন্যরকম একটা ভালোবাসা।  যখন নিজে বাইক কিনে প্রথম দিন চালাই তার অনুভূতি প্রকাশ করার মত নয়, তখন নিজেকে অনেক সুখী মানুষ মনে হচ্ছিলো। আমার বাইকটি মূলত ১৬০ সিসির টিভিএস কোম্পানির একটা বাইক। আমার বাইকটি নীল রং এর । পেছনের টায়ার ১১০ সেকশন এর আর সামনের টায়ার ৯০ সেকশন এর । ফুয়েল ট্যাংক ১৫ লিটার । ১৬০ সিসি পাওয়ারফুল ইঞ্জিন এর সাথে অসাধারন লুকস । সব দিক বিবেচনা করে বাইকটি আমার খুব পছন্দের। 

বাইকটি কেনার পর আমি নিয়মিত সার্ভিস গুলো করিয়েছি, ৪টা ফ্রি সার্ভিস করিয়েছি এবং সব সার্ভিস গুলা নওয়াপাড়া টিভিএস গ্যালারি থেকে করিয়েছি। ২৫০০ কিলোমিটার এর অগে মাইলেজ পেতাম ৩৫/৪০, ৩০০০ হাজার কিলোমিটার এর পর থেকে আমি ৪৫-৪৮ মাইলেজ পাচ্ছি । মাইলেজ এর ব্যাপারে আমি অনেক সন্তুষ্ট। আমি বাইক নিয়মিত ওয়াশ করি চেইন পরিষ্কার করে লুব দেই । বাইকটিতে আমি Castrol Active 10w30 গ্রেড এর ইঞ্জিন অয়েল ব্যাবহার করি । এই ইঞ্জিন অয়েল এর সার্ভিস আমার কাছে বেস্ট মনে হয়েছে। Castrol Active 10w30 ইঞ্জিন অয়েল এর বর্তমান বাজার মূল্য ৪৭০-৪৮০ টাকা । বাইকটি আমি এখন পর্যন্ত ১৬ হাজার কিলোমিটার চালিয়েছি । এর মধ্যে আমার বাইকে কোন গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হয়নি । এখন পর্যন্ত আমি বাইকটির চেইন স্পোকেট পরিবর্তন করেছি । সামনের হাইড্রলিক এর ব্রেক সু পরিবর্তন করছি । টাইমিং চেইন পরিবর্তন করছি । মডিফাই এর বিষয়টি হচ্ছে আমি দুই চাকার রিম কালার করছি এ ছাড়া কোন পরিবর্তন করি নাই। বাইক নিয়ে আমার সর্বোচ্চ স্পিড ছিলো ১২৬ । TVS Apache RTR 160 বাইকটির কিছু ভালো দিক-

  • মাইলেজ খুব ভালো
  • লুকস অনেক সুন্দর
  • রেডি পিকআপ খুব ভালো
  • পিলিয়ন সিটিং পজিশন খুব ভালো লেগেছে
  • এক্সস্ট সাউন্ড অনেক সুন্দর
  • সামনের ব্রেক আমার কাছে অন্য সকল বাইক থেকে ভালো মনে হয়েছে

TVS Apache RTR 160 বাইকের কিছু খারাপ দিক-

  • টায়ার গ্রিপ ভালো না
  • পেছনের ব্রেক করলে কমফোর্ট ফিল কম হয় একটু স্লিপ করার ভয় থাকে
  • টিভিএস কোম্পানির প্রতিটা পার্টস এর দাম বাজাজ এর তুলনায় অনেক বেশি
  • গাড়ি হাই স্পিড এ চললে ভাইব্রেট করে
  • রাতে হেডলাইট এর আলো হাইওয়েতে পর্যাপ্ত না
  • বাইক টা একটু বেশি হালকা মনে হয়েছে 

বাইক দিয়ে আমি অনেক জায়গায় ভ্রমন করেছি । খুলনা থেকে নড়াইল, সাতক্ষিরা, গোপালগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা  ইত্যাদি । হাইওয়েতে বাইকটির পার্ফরমেন্স খুব ভালো । হাইওয়েতে মাইলেজ প্রায় ৫৫ পেয়েছি। বাইকটি রাইড করতে বেশ কমফোর্ট তবে দীর্ঘ সময় চালালে কোমর ব্যাথা করে। ১০০ কিলোমিটার + চালালে বাইকটির ইঞ্জিন সাইন্ড কিছুটা পরিবর্তন হয় । তাই আমি ৫০ কিলোমিটার রাইড করার পর পর কিছু সময় বিরতি দেই ।

বাইক নিয়ে চুড়ান্ত মতামত হচ্ছে, TVS Apache RTR 160 বাইকটি খুব ভালো একটি বাইক ইঞ্জিন পার্ফরমেন্স , লুকস সব দিক মিলিয়ে বাইকটি যে কিনতে চাচ্ছেন কিনতে পারেন । আলহামদুলিল্লাহ ফ্যামেলি এর জন্য বেস্ট বাইক, পিলিয়ন নিয়ে কমফোর্ট। কষ্ট করে লেখাটা পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।   

লিখেছেনঃ মোঃসাদিকুল ইসলাম   

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।