বাংলাদেশের হিলট্র্যাকে বাইক রাইডিং
This page was last updated on 06-Jul-2024 12:00pm , By Shuvo Bangla
বাংলাদেশের হিলট্র্যাকে বাইক রাইডিং ঢাকা খাগড়াছড়ি রাঙামাটি কাপ্তাই বান্দারবান থাঞ্ছি তারপর আবার ঢাকা। হটাৎ করেই ঠিক করলাম বাংলাদেশের হিলট্র্যাকে একটা ট্যুর দিবো ঢাকা খাগড়াছড়ি সাজেক রাঙামাটি কাপ্তাই বান্দারবান থাঞ্ছি থেকে নাফাকুম তারপর আবার ঢাকা ব্যাক করবো। দিলাম ফেসবুকে স্ট্যাটাস আর সময় দিলাম মাত্র এক সপ্তাহ। জানি এক সপ্তাহ খুব কম সময় কিন্তু এটাও জানতাম যাদের প্রচণ্ড ইচ্ছা থাকবে তারাই সুধু এর ট্যুরে আসবে। পাহাড়ি রাস্তায় বাইক চালানোর কথা ভেবে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত আমি ঠিকমতো ঘুমাতে পারিনি পরে শুনি অন্যদের একই অবস্থ।
বাংলাদেশের হিলট্র্যাকে বাইক রাইডিং
যাইহোক সবাইকে ২৩ তারিখ ভোর বেলা হানিফ ফ্লাইওভারে আসতে বলেছিলাম ভোর ৫টায় ঠিক করেছিলাম ৫:২০ পর্যন্ত ওয়েট করবো তারপর চলে যাবো কিন্তু আমাদের মাঝে একজন আসতে দেরী হওয়ায় রওনা দিলাম ৬ টার পরে। যে দেরী করেছিলো তাকে রেখেই চলে যেতে ইচ্ছা করছিলো কিন্তু পারিনি কারন শুধুমাত্র এই ট্যুরে যাওয়ার জন্য সে নুতুন একটা বাইক কিনেছিল কারন আমার শর্ত ছিল বাইক লাগবে ১৫০ সিসির উপরে কারন আমাদের প্রায় হাজার কিলোমিটার এর মতো চালাতে হবে যার বেশীরভাগ পাহাড়ি রাস্তা।
এরপর শুরু করলাম যাত্রা খাগড়াছড়ির উদ্দেশে ১২ জন যাওয়ার কথা থাকলেও শেষপর্যন্ত রওনা হলাম ৯ জন। রোদ বাড়ার সাথে সাথে আমাদের স্পীড বাড়তে থাকলো। দুই একটা ছোট বিরতি আর বিখ্যাত কুমিল্লার জ্যাম এর পর ব্রেকফাস্টের জন্য দাঁড়ালাম চোদ্দগ্রাম এর এক হাইওয়ে হোটেলে। এখনে বসেই ঠিক করলাম এবার আর সাজেক যেতে পারবোনা অলরেডি অনেক দেরী হয়ে গেছে আমরা সোজা যাবো খাগড়াছড়ি।
আবার শুরু হল যাত্রা নেক্সট স্টপেজ বারইআরহাট। আমার দেখা সবচাইতে খারাপ রাস্তা এটা। রাস্তা তো নয় মনে হচ্ছিলো পীচের সমুদ্র ফ্রিজ হয়ে আছে এক লেনে থাকা যায়না অটোমেটিক অন্য লেনে চলে যাই। আর এই রাস্তা দিয়ে ২৫ তারিখ রাতে যখন ব্যাক করছিলাম তখন মনে হচ্ছিলো পিছের চাকায় মনেহয় হাওয়া নাই তাই একে বেকে চলছি। একবার হাওয়া দেওয়ার জন্য থেমে দেখি হাওয়া ঠিক আছে।
এরপর বারইআরহাট এসে একটা টি ব্রেক নিলাম তারপর রওনা দিলাম খাগড়াছড়ির দিকে। কিছুদূর যাওয়ার পর দেখলাম পাহাড়ের মধ্যে চা বাগান ব্যাস আবার ব্রেক। আসলে আমাদের টিমের ৯ জনের মধ্যে ৬ জনের পাহাড়ে চড়ার অভিজ্ঞতা ছিলনা তাই একটু বেশী ব্রেক নিচ্ছিলাম আর আমার নিজের এই রাস্তায় বাইক নিয়ে প্রথম যাওয়া। খাগড়াছড়ি ঢোকার আগে হাতের বামে দেখলাম পাহাড়ের উপর দেখলাম একটা আর্মি ক্যাম্প ইট বিছানো রাস্তা সোজা পাহাড়ে উঠে গেছে। যেহেতু আমাদের টিমের ৯ জনের মধ্যে ৬ জনের পাহাড়ে চড়ার অভিজ্ঞতা ছিলনা তাই চিন্তা করলাম একটু পরীক্ষা নেওয়া যাক কারন আগামীকাল রাস্তা অনেক কঠিন হবে।
সবাই ঠিকমতো পরীক্ষায় পাশ করলো কিন্তু নামার সময় একজন পাশ করতে পারলনা। যদিও তেমন কিছুই হইনি তার এবং তার বাইকের কিন্তু লাভ হল আমার কারন টিমের সবাই আরও সাবধান হয়ে গেলো। এর পর গেলাম খাগড়াছড়ির বিখ্যাত রেস্টুরেন্ট সিস্টেমে। যারা খাগড়াছড়ি যাবেন তারা যদি সিস্টেমে না যান তাহলে আমি বলবো খাগড়াছড়ি যাওয়াই বৃথা। দুপুরে আমাদের মেন্যুতে ছিল চিকন চালের সাদা ভাত, শুঁটকি, মাশরুম, ভর্তা, সালাদ, বেগুন, কাঁঠাল,মাছ ভাজি আর কচি বাঁশ। ৯ জন ফাটায় খেয়ে বিল করলাম ১৭৪০ টাকা যার মধ্যে ২৪০ টাকা ডিসকাউন্ত তাই টোটাল বিল ১৫০০ টাকা।
খাওয়াদাওয়া শেষ এরপর রওনা রাঙামাটির দিকে ওখানে রাতে থাকবো আর ওই রাস্তায় নাকি একটু পাহাড়ি ঝামেলা আছে তাই প্রয়োজন এর চাইতে বেশী স্পীড দিলাম সবাই। এর পর রাঙামাটি এলাম সন্ধ্যার একটু আগে রাঙামাটি এসে আমি সত্যি অবাক কতো সুন্দর জায়গা আর আমি আগে আসিনাই। যাইহোক পর্যটনে আমাদের রুম বুক করা ছিল ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে পড়লাম মবিল পাল্টানো আর টুকটাক কাজ করার জন্য কারন কাল আমাদের পাড়ি দিতে হবে বাংলাদেশের সবচাইতে ভয়ংকর রাস্তা বান্দারবান টু থাঞ্ছি। যাদের কাজ ছিল গারেজে তারা কাজ করতে থাকলো আর আমরা কয়েকজন চলে গেলাম আগামীকাল যে রাস্তা দিয়ে যাবো ওটা দেখার জন্য কারন আমরা অনেক ভোরে রওনা দিবো তখন রাস্তায় লোকজন না থাকার সম্ভাবানা বেশী।
২৪ অক্টোবর শুরু হল। সবাইকে বলেছিলাম ভোর পাঁচটায় রওনা হবো কারন কাপ্তাই লিচুবাগানে আমাদের ফেরী ধরতে হবে ছয়টার সময় শুরু করলাম রাঙামাটি থেকে কাপ্তাই লিচুবাগান ফেরিঘাট। এটা ছিল আমাদের ট্যুরের সবচাইতে আরামদায়ক জার্নি কারন মেঘের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় খুব ভালো লাগছিলো আর এই অভিজ্ঞতা আমাদের সবারই প্রথম। অবশ্য মেঘের কারনে বারবার হেলমেট ভিজে যাচ্ছিলো কিন্তু খারাপ লাগছিলোনা একফোঁটা।
ঠিক সময়ে ফেরী পারহয়ে নাস্তা করে আবার জার্নি শুরু বান্দারবানের দিকে ওখানে আমাদের দুইজন গাইড অপেক্ষা করছিলো আর এই দুইজন গাইডকে দিলাম আমাদের দুই এক্সপার্ট রাইডারের পিছনে। পাহাড়ি রাস্তায় বাইকের পিলিওন নিয়ে যাওয়া খুব কষ্টের ব্যাপার যেটা ওই দুইজন করেছিলো। অনেক ধন্যবাদ তাদের।
নীলগিরিতে দিলাম ব্রেক যারা যারা নীলগিরি যায়নাই তারা চলে গেলো নীলগিরি দেখতে আমরা নীচে কফি খেলাম কেউ আবার কমলা পেঁপে এইসব নিয়ে বসেগেল। এর পর শুরু হল ৯টা বাইক ৯ জন দুঃসাহসী রাইডার ... এর পরীক্ষা ... জার্নি শুরু করার একমিনিটের মাথায় আমাদের মধ্যে একজন বালিতে স্লিপ করে পড়ে গেলো ... কিন্তু আল্লাহ্র রহমতে কিছুই হলনা ...... তবে এটা হয়ে ভালোই হয়েছিলো সবাই খুব সতর্ক হয়ে গিয়েছিলো ......... নীলগিরি থেকে থাঞ্ছি ....... যারা গেছেন তারাই সুধু জানেন রাস্তাটা কেমন ভয়ংকর সুন্দর এই উপরে উঠছি এই নীচে নামছি ... কখনো আবার জিলাপির মতো বাক আবার বেইলি ব্রিজ আবার স্পীডব্রেকার। টিমের লোকজন পাগল হয়ে গেলো এতো সুন্দর জায়গা দেখে যে যেখানে পারে ফটোশুট করতে থাকলো। কি আর করা আমি এইফাকে বাসায় একটু কথা বলেনিলাম কারন পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা থাকবো নেটওয়ার্ক এর বাহিরে।
থাঞ্ছি ব্রিজ পার হয়ে ডেড এন্ড আর পীচঢালা রাস্তা নাই। তাই সবাই বাইক লক করে রওনা দিলাম রেমাক্রির দিকে। সাঙ্গুর বুক চিরে উজানের রেমাক্রিবাজার পর্যন্ত পাড়ি দিলাম নৈকায়। কোথাও কোথাও পানি এত কম যেন পাথর চিরেই পাড়ি দিতে হল আর মাঝে মাঝে পায়ে হেটে যেতে হল। সাঙ্গুর স্বচ্ছ হিমেল পানি, নৌকা ঠেলে পাহাড় অভিযান ,সবমিলেই রোমাঞ্চকর এক অভিজ্ঞতা।
রেমাক্রিবাজার আসার পর উঠলাম এখানকার একমাত্র রিসোর্ট যেটা পেট্রো এভিয়েসন এর। এখানে আর একটা কথা না বললেই নয় থাঞ্ছি থেকে রেমাক্রি থেকে আবার থাঞ্ছি আমাদের দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছিলো পেট্রো এভিয়েসন আর তাদের সুযোগ্য মানেজার সাইফুল। অসধারন একজন মানুষ আর সবচাইতে মজার ব্যাপার হল যে সে হল আমার ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেলের ব্যাচমেট। এই পরিচয় পাওয়ার পর ওকে আরও বেশী কষ্ট করতে হয়েছে। অনেক অনেক ধন্যবাদ তাকে।
যাইহোক রেমাক্রিবাজার আসার পর পেট্রো এভিয়েসন এর রিসোর্টে চেক ইন করে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়লো রেমাক্রির ঝর্নায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত পানিতে থাকার পর দুইটা পাহাড় আর হাঁটু পানি খরস্রোতা নদী পার হয়ে ঘোর অমাবস্যার মধ্যে গেলাম রেমাক্রি বাজারে কিছু খাওয়ার জন্য।
খাওয়া শেষ করে ডিনার এর জন্য অপেক্ষা। পাহাড়ের উপর রিসোর্টের বারান্দায় গল্প করতে করতে দেখি মেঘ আমাদের ঘিরে রেখেছে সে অন্যরকম অভিজ্ঞতা। রাতের খাওয়ার মেন্যু ছিল ভাত মুরগী ডাল ভর্তা আর অন্যরকম একটা কাচামরিচ। এমন ঝাল কাচামরিচ আমি জীবনে খাইনাই। রাতের ঘুম যা হয়েছিলোনা সেইরাতে সেটা নাই বা বললাম।
এর পর এলো ২৫ অক্টোবর কাউকে কিছু বলা হয়নাই সবাই দেখি ভোরে উঠে মেঘ দেখছে আর সব সময় ব্যাকগ্রাউন্দ মিউজিক হিসেবে ঝর্ণার শদতো আছেই। যাই হোক নৌকায় করে এলাম থাঞ্ছি।
এরপর লাঞ্চ ব্রেক দিলাম মিলনছড়িতে খাওয়াদাওয়া সবিই ভালো কিন্তু ভাব মারে প্রচুর কারন ফরেন গেস্ট দিয়ে ভরা থাকে বেশীরভাগ সময়। ১০ জনে ২৭০০টাকার লাঞ্চ এর পর চা চাইলাম কিন্তু দিলোনা। এর আগে একবার এমন করেছিলো তখন ওদের ওনার কে ফোন দিয়েছিলাম তারপর ভিআইপি ট্রিটমেন্ট এইবার সময় এর অভাবে ফোন দিতে পারিনাই। এরা মনেকরে ফরেন টুরিস্ট হল টুরিস্ট আর দেশী টুরিস্ট ডাল ভাত।
বিকেল বেলা রওনা দিলাম বান্দারবান থেকে ঢাকার দিকে। চট্টগ্রাম এসে জ্যামের মধ্যে হারিয়ে গেলাম সবাই আবার এক হয়ে রওনাদিলাম ঢাকার দিকে। এর মধ্যে আমাদের একজন বাইক নিয়ে পড়ে গেলো কাদার মধ্যে আল্লাহর রহমতে কিছু হলনা... বাইক আর রাইডার কাদায় মাখামাখি। যাইহোক কুমিল্লা এসে ডিনার এরপর ঢাকা।
কিছু সেফটি টিপস
গ্রুপরাইডিং আর হিলট্র্যাকস এর জন্য এবার কিছু সেফটি টিপস শেয়ার করছি আশাকরি আপনারা যারা যেতে চান তাদের ভালো লাগবে। হেলমেট আর সেফটি গিয়ার অবশ্যই নিতে হবে।
সবার প্রথমে একটা সিরিয়াল করে নিন যেটা আপনারা সবাই ফলো করবেন গোটা ট্যুরে। আপনাদের মধ্যে যিনি রাস্তা চিনেন আর খুব সেফ ড্রাইভ করেন তাকে সবার সামনে দিন। যিনি সবার সামনে থাকবেন তাকে বলবেন দিনের বেলাতেও বাইকের হেডলাইট অন করে রাখতে। এতে অপর সাইড থেকে আসা যানবাহন আর মানুষজন আপনাদের দেখতে পাবে। আর গ্রুপের সবার পিছনে রাখবেন আর একজন খুব ভালো রাইডার এবং তাকেও বলবেন হেডলাইট দিনের বেলাতে হেডলাইট অন রাখতে যাতে মাঝের অন্য সব রাইডাররা রিয়ারভিউ মীররে আলো দেখলেই বুঝতে পারে সব ঠিক আছে।
সব রাইডারদের কাজ হবে শুধু সামনের রাইডারদের ফলো করা শুধু একরাইডার যাতে অন্য রাইডারকে ওভারটেক না করে তাহলেই রাস্তার অনেক রিস্ক কমে যাবে আর জার্নি অনেক আরামদায়ক হবে। অনেক দুরের রাস্তায় একঘণ্টা পর পর ব্রেক দিয়ে যাবেন এবং ব্রেকের সময় কিছু ব্যায়াম করে নিলে ভালো আড্ডার ফাকে ফাকে। দরকারের চাইতে একটু বেশী করে পানি খেয়ে নিবেন আর সাথে অবশ্যই শুকনা খাবার অথবা চকলেট রাখবেন।
একটা কথা বলতে ভুলে গেছি সবসময় বাইকের একটা এক্সট্রা এক্সিলেটর ক্যাবল আর ক্লাচ ক্যাবল সাথে রাখবেন। মবিল আর এক্সট্রা প্লাগ রাখলে ভালো। জার্নির শুরুতে সব বাইকের হাওয়া চেক করে নেওয়া দরকার। বাইকের চেইন কভারে দেওয়া থাকে কি পরিমান হাওয়া দরকার আপনার বাইকের জন্য। যা দেওয়া থাকে তার চাইতে একটু কম হাওয়া ভরলে বাইকে ব্রেকটা একটু ভালো কাজ করবে তবে স্পীড একটু কমে যাওয়ার সম্ভাবানা আছে।
পাহাড়ি রাস্তায় অনেক বাঁক থাকে তাই সবসময় রাস্তার বামদিকে থাকা উচিৎ আর যেকোনো বাঁক এবং মোড়ে হর্ন বাজিয়ে স্পীড নিজের কন্ট্রোলে নিয়ে যাওয়া উচিৎ। গ্রুপট্যুরে রাত সুধুমাত্র রেস্ট নেওয়ার জন্য রাখা উচিৎ আর দিনের বেলা রাইড। পাহাড়ে উঠার সময় লক্ষ্য রাখবেন কোন গিয়ারে আপনার বাইক স্মুথলি চলছে ঠিক সেভাবেই বাইক রাইড করবেন। আর পাহাড় থেকে নামার সময় অবশ্যই সাবধান কারন আপনার বাইক এখানে অটোম্যাটিকলি এক্সটা স্পীড পাবে তাই সবসময় বাইক কন্ট্রোলে রাখা উচিৎ।
অনেকে পাহাড় থেকে নামার সময় তেল বাঁচানো অথবা মজা করার জন্য বাইকের ইঞ্জিন অফ করেন সেটা একদম ঠিক নয়। সবসময় মনেরাখবেন শুধু মাত্র আপনার একটু ভুল আর খামখেয়ালীর কারনে গোটা ট্যুরটা নষ্ট হয়ে যেতে পারে আর ভবিষ্যতের কথা ভেবে অবশ্যই একটু সাবধানে বাইক রাইড করবেন।
-জুন সাদিকুল্লাহ
০১৭৯১৭১৯৪২৬
shadiq.bfhl@gmail.com