লিফান কেপিআর ১৬৫ কার্ব ৩৫০০ কিমি মালিকানা রিভিউ - আবরার অর্ক

This page was last updated on 13-Jul-2024 08:44am , By Ashik Mahmud Bangla

ছোটবেলা থেকেই বাইকের প্রতি আমার আলাদা ভালবাসা আছে । আমি বাইক বলতে অনেকটাই পাগল । আমি ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ার সময় বাইক রাইডিং শিখি । আমি রাইড করতে ভালবাসি, কারন বাইক রাইডিং আমাকে স্বাধীনতার অনুভূতি দেয় । ২০১৪ সাল থেকে বাইকে ট্যুর করে আসছি । আজ আমি আপনাদের আমরা লিফান কেপিআর ১৬৫ কার্ব বাইকটির গল্প শোনাব ।

লিফান কেপিআর ১৬৫ কার্ব বাইকটির গল্প শোনাব।  

lifan kpr 165 carb

 আগে চলুন জেনে নেই কিভাবে আমি লিফান কেপিআর এর প্রেমে পরলাম । যেহেতু আমি ট্যুর করতে ভালবাসি তাই আমার দরকার একটি দ্রুত গতি এবং সেই সাথে অনেক লং রাইড করা যাবে এমন একটি বাইক । আমার বাজেটের দিকে থেকে সকল ওয়েল কুল্ড বাইকের দাম অনেক বেশি । এরপর আমি জানতে পারি লিফান কেপিআর বাইকটি সম্পর্কে । আমার অনেক কাছের ভাই সাজ্জাদ সজীব ভাই তার কেপিআর ১৫০ ভার্সন ১ বাইকটি রাইড করতে দেন । আমি কেপিআর এর এক্সেলারেশন, ব্রেকিং ও ব্যালেন্স দেখে অনেক মুগ্ধ হই । তার পর দিন আমি কেপিআর ১৫০ ভার্সন ১ বাইকটি কিনে ফেলি, এটি ২০১৭ সালের ঘটনা । বাইকটি আমি প্রায় ২৮,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত রাইড করেছি । কেপিআর আমাকে কখনও হতাশ করেনি । যদিও আমাকে বাইকে অনেক চাপ দিয়েছি, তবুও এটা আমাকে হতাশ করেনি । কেপিআর সব কিছুর সাথেই যেন মানিয়ে নিয়েছে ।  lifan kpr 165 carb price in bangladesh লিফান কেপিআর ১৬৫ কার্ব

এরপর আসল  Lifan KPR 165 Fi । আমি কেপিআর ১৫০ ভার্সন ১ নিয়ে অনেক বেশি হ্যাপি ছিলাম । তাই সিদ্ধান্ত নিলাম আমি লিফান কেপিআর ১৬৫ এফআই বাইকটি কিনব । ২০১৯ সালের জানুয়ারির ১৭ তারিখ আমি কেপিআর ১৬৫ এফআই বাইকটি ক্রয় করি । বাইকটি আমি ৮,০০০ কিলোমিটার রাইড করেছি । আমি শুনতে পাই যে রাসেল ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেড লিফান কেপিআর ১৬৫ কার্ব ভার্সনের বাইকটি নিয়ে আসতে যাচ্ছে । বাইকটি সম্পূর্ন নতুন NBF 2 ইঞ্জিন এবং ১৩০ সেকশন রেয়ার টায়ার দেয়া হয়েছে । খবরটী পাওয়ার সাথে সাথে আমি আমার জন্য একটি বাইক বুকিং দিয়ে দেই । আমি প্রায় দুই মাস ২৩ দিন অপেক্ষার পর বাইকটি হাতে পেয়েছি ।  lifan kpr price in bangladesh

 এবার লিফান কেপিআর ১৬৫ কার্ব বাইকটি সম্পর্কে কিছু জানা যাক । বর্তমানে বাইকটি আমি রাইড করেছি ৩৫০০ কিলোমিটার । আমি বাইকটি সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত কিছু মতামত আপনাদের সাথে শেয়ার করছি । প্রথমবার যখন আমি বাইকটি চালু করেছি, বাইকের সাউন্ড আমার কাছে দারুন লেগেছে । যখন আমি প্রথম বার রাইড করা শুরু করলাম, বাইকের ইঞ্জিন আমাকে মুগ্ধ করেছে । কারন ইঞ্জিন আগের চেয়ে অনেক বেশি স্মুথ । ক্লাচ অনেক হালকা এবং গিয়ার শিফটিং ও স্মুথ ।

lifan kpr 165 user review in bangladesh

বাইকটি কিছু ভাল দিকঃ

  • বিল্ড কোয়ালিটি
  • প্রোজেকশন হেড-লাইট
  • ইঞ্জিন কুলিং সিস্টেম
  • ৩০০মিমি ফ্রন্ট ডিস্ক ব্রেক
  • লিকুইড কুল ইঞ্জিন সিস্টেম
  • স্প্লিট সিট
  • ব্যালেন্স
  • স্টাইল ও লুকস
  • ডিউরেবল স্পোর্টস কিটস
  • আফটার সেলস সার্ভিস

বাইকটির কিছু খারাপ দিকঃ

  • টার্নিং রেশিও বেশি
  • ওজনে কিছু বেশি
  • ইঞ্জিনের হিটিং একটু বেশি মনে হয়েছে
  • ব্যক্তিগত ভাবে টেইল লাইট আমার ভাল লাগেনি
  • বাইকটিতে প্রায় ১২০০মিলি ইঞ্জিন ওয়েল দরকার
  • রেয়ার মনো-শক এতটা ভাল নয়

kpr price in bangladesh

Lifan KPR 165 carburetor version:

  • নতুন গ্রাফিক্স
  • নতুন কালার
  • NBF 2 ইঞ্জিন
  • ইঞ্জিন ওয়েল ফিল্টার
  • ১৩০ সেকশন রেয়ার টায়ার

আমি আমার বাইকটি ১০০০ কিলোমিটার রাইডের পর সার্ভিস করাই । প্রথম ২৫০০ কিলো তে আমি মাইলেজ পেয়েছি ২২-২৭ কিলোমিটার প্রতি লিটার । তারপর আমি মাইলেজ পেয়েছি ৩০ কিলোমিটার প্রতি লিটার ।  lifan kpr 165 carb price in bd আমি ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার করেছি পেট্রোনাস মিনারেল 20W40 গ্রেড । আমি ইঞ্জিল ওয়েল পরিবর্তন করেছি ১০০, ৩০০, ৬০০, ১০০০ এবং ১৫০০ কিলো পর পর । এর পর আমি ইঞ্জিন ওয়েল সেমি সিন্থেটিক ব্যবহার করি একই ব্র্যান্ডের 10w40 গ্রেড । আমি বাইকটির ব্রেক আপগ্রেট করেছি, আমি কেপিটি এর পেটাল ডিস্ক ব্রেক লাগিয়েছি । স্টক টায়ার পরিবর্তন করে Timsun Domino 2 ব্যবহার করেছি ভাল ব্যালেন্স পাবার জন্য । স্টক মনো-শক পরিবর্তন করে ট্রিগারের মনো-শক লাগিয়েছি । লুকিং গ্লাস পরিবর্তন করে KP moto শর্ট গ্লাস লাগিয়ে নিয়েছি । আমি বাইকটিতে ১৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় স্পিড পেয়েছি ঢাকা ময়মনসিংহ হাইওয়েত। lifan kpr riding in bangladesh সবশেষে বলছি, আমি তৃতীয় কেপিআর রাইড করছি । আর কেপিআর হচ্ছে বাজেট ফ্রেন্ডলি একটি স্পোর্টস বাইক । এছাড়া রাসেল ইন্ডাস্ট্রিজ এর আফটার সেলস সার্ভিস ও দারুন । যদি আপনি কম দামের মধ্যে একটি স্পোর্টস বাইক কিনতে চান তবে লিফান কেপিআর আপনার সেই স্বপ্ন পূরন করবে ।