রাতে বাইক রাইডিং এর কিছু উপকারী টিপস........
This page was last updated on 07-Jul-2024 12:05pm , By Shuvo Bangla
রাতে বাইক রাইডিং বেশীরভাগ সময়েই বিপদজনক হয়ে থাকে এবং এটা যদি আপনি এনজয় করেও থাকেন ও আপনার কাছে সব সেফটি টুলস থেকেও থাকে তারপরও সেখানে বিপদের ঝুকি থেকে যায় । বেশীরভাগ রাইডাররাই রাতের বেলায় রাইডিং বাদ দিয়ে থাকেন । এর কারণ হল লো লাইট কন্ডিশন , বিভিন্ন রাস্তার ভাঙাচোরা যেগুলো রাতের বেলায় ভাল দেখা যায় না , অন্যান্য অবজেক্ট যেগুলো রাতে খুব ভাল দেখা না যাবার কারণে এক্সিডেন্টের সম্ভাবনা থেকে যায় ।
রাতে বাইক রাইডিং এর কিছু উপকারী টিপস
রাতের বেলায় রাইডিং এর সময় বাইকের কোন সমস্যা হলে বা আপনি কোন সমস্যায় পড়লে সেখানেও আপনার পরিত্রাণ পাওয়াটা অনেক কঠিন হয়ে যায় । এতসব অসুবিধার পরেও অনেকে রাতের বেলায় রাইডিং এর পরামর্শ দেন । কারণ , রাতে আবহাওয়া অনেক ভাল থাকে , রাস্তায় জ্যাম থাকে না , ইন্জিন কম গরম হয় , কম সময়ে বেশী পথ যাওয়া যায় প্রভৃতি ।
এখন , রাতে রাইডিংটা হল রাইডারের জাস্ট পারসোনাল একটা মতামত । এখানে কেউ কাউকে জোর করতে পারে না । এখন , রাতে কীভাবে সেফলি বাইক রাইড করা যায় সে বিষয়ে আমরা আজ কিছূ জানব ।
অন্ধকারের মধ্যে ভাল ভিউ পাওয়া :
রাতে রাইডিং এর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল রাস্তাকে ভালভাবে দেখা , যার জন্য আপনাকে রাস্তাকে ভালভাবে আলোকিত করতে হবে । এখন আমরা ধরে নিলাম , আপনার চোখের দৃষ্টিশক্তি যথেষ্ঠ ভাল , তাহলে এখন বাকী কাজ হল মোটরবাইকের হেডলাইটের যেটা রাস্তাকে আলোকিত করার কাজটা করে থাকে । বেশীরভাগ মডার্ণ ট্যুরিং বাইকের হেডলাইট রাস্তাকে আলোকিত করার জন্য বেশ ভালভাবে সেটআপ করাই থাকে । এই বাইকগুলোর হেডলাইট খুবই পাওয়ারফুল থাকে এবং রাস্তার একটা খুবই ভাল ভিউ পাওয়া যায় ।
Also Read: ১০ টা রাইডিং টিপস যেগুলো আপনি হয়ত জানেন না
কিন্তু , আমরা যদি স্পোর্টস বাইক বা যে সব লো কনফিগারেশন এর বাইক রাস্তায় চলে এদের কথা চিন্তা করি , তাহলে আমাকে বলতে হবে যে এই বাইকগুলোর হেডলাইট রাতে ভ্রমণের জন্য মোটেও পারফেক্ট নয় । এখন এই বাইক গুলোর ক্ষেত্রে আমরা বাইকের হেডলাইট আপগ্রেড করে বড় লাইটিং জেনারেটর দ্বারা আরও বড় বা উজ্জ্বল হেডলাইট বসিয়ে নিতে পারি । এটা বাইক কেনার পরও সেট আপ করে নেওয়া যায় । কিন্তু এই আপগ্রেডিং এর সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন কোনমতেই কোন ইলেকট্রিক ত্রুটির কারণে হেডরলাইট এর ইউনিট বা তার পুড়ে না যায় বা কোন ক্ষতি না হয় ।
এখন আরেকটি চিন্তার বিষয় হল আমরা সব সময়ই হেডলাইটকে রাস্তা আলোকিত করার জন্য বিবেচনা করি । কিন্তু , এটাও মনে রাখা দরকার , হেডলাইটের আলো “লো বিম” যেটা একটা প্রশস্ত ও অল্প এলাকা জুড়ে আলোকিত করে এটা আপনার অপজিট থেকে আসা রাইডারদের চোখে তেমন লাগে না । কিন্তু , “হাই বিম” একটা চিকন এলাকা ও অনেক দূরের বস্তু দেখার জন্য ব্যাবহৃত হয় যেটা অনেক সময় আপনার দিকে আসা রাইডারদেরকে অন্ধ করে একটা বিপদ ঘটাতে পারে ।
তাই , এই ফাংশনটার সঠিক ইউজ সবারই রাইডিং এর সময় করা উচিৎ । হাই বিম অনেক সময় হেডলাইটের ইউনিট কে অতিরিক্ত গরমও করে দেয় । তাই , যখন যে ফাংশনটার প্রয়োজন , তখন সেটা ইউজ করাই সবথেকে ভাল ।
অন্যদের কাছে ভিজিবল হওয়া :
ধরে নিলাম আপনার লাইট সেটিংস শেষ এবং আপনার লাইট সেটিং নাইট টাইম রাইডিং এর জন্য পারফেক্ট । এরপরও একটা বিষয় থেকে যায় যেটা হল অন্যান্য রাইডারদের কাছে নিজেকে ভিজিবল করা । অন্যান্য যানের চালকরা যাতে আপনাকে দেখতে পেয়ে উপযুক্ত ব্যাবস্থা নেয় সেটাও আপনাকে মাথায় রাখতে হবে । এর জন্য সাধারণত বাইকে LED লাইট , auxiliary লাইট , নিয়ন স্টিক প্রভৃতি ইউজ করা হয় । সবথেকে ভাল হয় যদি অন্যান্য চারকরা সরাসরি আপনাকে দেখতে পায় সেটাই ।
হয়ত আপনি চাইবেন রাতের বেলায় একটু ডার্ক কালারের ডেস আপ করতে , কিন্তু সেটা রোডে আপনার জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে । সবথেকে ভাল হয় auxiliary লাইট ইউজ করা যেটা অন্যান্য চালকদের কাছে আপনাকে মোটরসাকেলিস্ট হিসেবে সো করবে এবং এই লাইটটি সবার চোখে পড়ে দ্রুত , ফলে অন্যান্য চালকরা আপনার উপস্থিতি বুঝতে পেরে তাদের যানবাহন যথেষ্ঠ পরিমাণে স্লো করতে পারে । এটা আপনি একটু কম খরচের মধ্যে করতে চাইলে আপনি বিভিন্ন লাইট রিফ্লেক্টিভ টেপ ইউজ করতে পারেন ।
এই টেপ লাগানোর জন্য একটা নির্দিষ্ট কালার কোডিং রয়েছে যেটা বাইকে ইউজ করা হয় । যেমন যেছনের দিকে লাল , সামনে সাদা , সাইডে অম্ব্যার । আপনি যদি এগুলো মিক্স করে ইউজ করতে চান তাহলে সেটা মোটেও ভাল হবে না । কারণ , এই মিক্স আপের ফলে অন্যান্য রা অনেক সময় বুঝতে পারে না আপনার বাইকটি স্থির না চলমান ।
শেষ প্রস্তুতি :
এবার আসি একদম শেষের দিকের কথায় । নাইট টাইম রাইডিং এর সময় আপনার উচিৎ দিনের মতই প্রিপারেশন নেওয়া । সাথে একটা সুন্দর হেলমেট যার গ্লাসটা খুবই ক্লিয়ার হতে হবে । গ্লাস পরিষ্কার করার জন্য আপনি আপনার কাছে সবসময়ই একটা ভাল কাপড় জাতীয় কিছু রাখতে পারেন । আপনি এজন্য মাইক্রো ফাইবার এর কাপড় নিতে পারেন । অথবা আপনি এটার জন্য সাধারণ পানিও ইউজ করতে পারেন । উপরের সবকিছু ঠিকঠাক থাকার পরও রাস্তার কিছু অংশ আপনি দেখতে নাও পেতে পারেন , যেটা হতে পারে একটা গর্ত বা স্পীড ব্রেকার অথবা কোন মোড়ে হয়তবা কোন খারাপ রাস্তা বা কোন জীব জন্তু থাকতে পারে । এসবের দিকেও আপনাকে ভালভাবে নজর দিতে হবে ।
সবসময় মনে রাখবেন , কিছু কিছু ড্রাইভার আছে যারা দিনের বেলাতেই রেকলেস ড্রাইভিং করে থাকে , আর রাতের বেলায় তারা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে আপনার জন্য । তাই , নাইট রাইডিং এর সময় সবসময় অন্যান্য যানবাহন থেকে নির্দিষ্ট দুরত্ব বজায় রেখে বাইক রাইড করাটাই সেফ । তারপর আপনি যদি রাইডিং এর কোন পর্যায়ে ক্লান্ত হয়ে যান , তাহলে বেশী রিস্ক না নিয়ে একটু বিশ্রাম নেওয়াটাই সেফ হবে । কারণ , ক্লান্ত অবস্থায় আপনি বাইকটি নিজের মত করে রাইড করতে পারবেন না ।
Also Read: বাংলাদেশের সেরা পাচটি 150cc এয়ার কুলড বাইক
শেষে এই টাই বলব যে , সম্পূর্ণ ভাল শারীরিক ও মানসিক ফিটনেস থাকলে এবং উপরের বিষয়গুলো সব যতটুকু পারা যায় ঠিকঠাক থাকলে নাইট রাইডিং ডে টাইম রাইডিং এর থেকে অনেক মজার হতে পারে । আর নাইট রাইডিং এর সবথেকে ২ টি বড় সুবিধা হল
১. গরমকালে একটা সুন্দর ঠান্ডা ও অনুকূল আবহাওয়া পাওয়া যায় ।
২. রোড অনেক ফাকা থাকে ফলে রাইডিংটা আরও মজার হযে থাকে।
** তবে রাতে বাংলাদেশের রাস্তার নিরাপত্তা অনেক বড় একটি বিষয়। আমরা সবসময় বলে থাকি যদি রাতে বাইক চালানো এড়ানো সম্ভব হয় তাহলে অবশ্যই তা এড়িয়ে চলুন। **
তাই , রাতে বাইক রাইডিং এর ক্ষেত্রে কোনকিছু ভাগ্যেরে উপর ছেড়ে না দিয়ে নিজেকে ও বাইককে যথেষ্ঠ পরিমাণে নাইট রাইডিং এর উপযুক্ত করে তুলুন ও নিজের ফিটনেস বুঝে বেড়িয়ে পড়ুন ।