বাইক কেনার সময় যেসব বিষয় খেয়াল রেখে কেনা উচিত-বিস্তারিত
This page was last updated on 28-Jul-2024 01:46pm , By Saleh Bangla
পরিবেশ, জনসংখ্যা, ট্রাফিক জ্যাম, রাস্তার অবস্থা ও কম খরচে মেইনটেন্স এর দিক দিয়ে দেশের প্রতিটা মানুষের স্বপ্ন মোটরসাইকেল কেনা । বর্তমানে কিছু বছর ধরে, ট্রাফিক জ্যাম ও প্রাইভেট কার এর দাম বেশি হওয়ায় মানুষেরা বাইক কেনার জন্য খুব উৎসাহী হয়ে উঠেছে। বাইক কারো জন্য খুব ইচ্ছার বিষয় আবার কারো জন্য এটা সম্পদ । তাই বাইক কেনার সময় ভেবেশুনে কেনা উচিত যাতে আপনি আপনার স্বপ্নের জিনিস ব্যবহার করে স্বস্তি পান।
বাইক কেনার সময় যেসব বিষয় খেয়াল রাখা উচিত
বাইক কেনার সময় আপনারা এই বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে পারেনঃবাজেট এর প্রস্তুতিঃ এমন বাইকের স্বপ্ন দেখবেন না যেটা আপনার কেনার সাধ্যের বাহিরে। একটা নির্দিষ্ট বাজেট ঠিক করুন। আমার মতে, সব সময় ৫০০০ হাজার টাকা বেশি রাখবেন । ধরুন আপনি চিন্তা করছেন ২,০০,০০০ টাকার মধ্যে বাইক কিনবেন । তাহলে ২,০০,০০০ লাখ টাকার বদলে ২,০৫,০০০ করেন কারন বাইক কেনার পর আপনার ইচ্ছা হবে যে থেফট এল্যার্ম সিস্টেম লাগানোর, লক, কেয়ার আইটেমস, কভার, রেইন ক্লোথ, হেলমেট ইত্যাদি কেনার ইচ্ছা হবে।
ছোট একটা তালিকা করুন যেসব বাইক পাওয়া যায় মার্কেটেঃ আপনার বাজেট এর সাধ্যের মধ্যে একটা ছোট তালিকা করুন মোটরসাইকেলের যেগুলো বাংলাদেশের মার্কেটে পাওয়া যাবে। যদি তালিকাটা অনেক বড় হয়ে যায় তাহলে শুধু যেই বাইকগুলা আপনার পছন্দ সে হিসেবে একটা তালিকা করুন। শুধুমাত্র স্টাইলিশ লুকস এর উপর নির্ভর করে বাইক কিনবেন না।
>> বাইক কেনার আগে যেসব বিষয় খেয়াল রাখা উচিত <<
যাদের বাইক আছে তাদের কাছ থেকে সাজেশন নিনঃ আপনার আশে-পাশে আপনার যে কোন বন্ধুর, আত্মীয় বা প্রতিবেশীর এর মধ্যে কারো বাইক আছে। যাদের বাইক আছে তাদের কাছে আপনি বাইক সর্ম্পকে সঠিক প্রাকটিক্যাল ধারনা দেবে । আপনার পছন্দের বাইক সর্ম্পকে তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করুন। যদি আপনি আপনার তালিকায় এমন কোন বাইক রাখেন যেই বাইকটা আশে-পাশের কারো কাছে আছে তাহলে আপনি তার কাছে গিয়ে উনার রাইডিং, স্পেয়ার পার্টস এর দাম ও সার্ভিসিং পয়েন্ট এর সর্ম্পকে খোজ নিন ।
আপনার পচ্ছন্দের বাইকটার টেস্ট রাইড করে দেখুনঃ আমাদের বাংলাদেশে টেস্ট রাইড এর জন্য শো-রুম থেকে কোন সুযোগ দেওয়া হয় না । যদি আপনার পচ্ছন্দের বাইক কোন বন্ধু বা আত্মীয় এর কাছে থেকে থাকে তাহলে তাদের কাছে রিকুয়েস্ট করুন যাতে আপনি একবার বাইকটি রাইড করে দেখতে পারেন। টেস্ট রাইড বাইকটি সর্ম্পকে আপনাকে সঠিক ধারনা দেবে। একটা কথা মনে রাখুন যে, রাইডিং এক্সপেরিয়্যান্স আপনার মতামত এর পরিবর্তন ঘটাতে পারে । আপনার কি মাইলেজ এর বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিতঃ প্রশ্নের উত্তরটা নির্ভর করছে কি কারনে আপনি বাইক ব্যবহার করছেন আর ব্যবহারকারীর বয়স কত । যদি আপনি বাইক সর্ম্পকে প্রচুর আগ্রহী হন বা প্যাশন থেকে থাকে তাহলে আপনি মাইলেজ সর্ম্পকে ভাববেন না। যদি আপনি মাঝ বয়সী হন এবং শুধু মাত্র অফিস এ যাওয়া-আসা এর জন্য ব্যবহার করে থাকেন তাহলে মাইলেজ আপনার জন্য বড় বিষয়। মাইলেজ, মাঝ বয়সী ও অফিস যাওয়া-আসার জন্য বেশিরভাগই ৫০-১৩৫ সিসি বাইকগুলো খুব জনপ্রিয়। যদি আপনি ১৫০ সিসি এর বেশি বা ১৫০ সিসি এর বাইক কিনতে চান তাহলে মাইলেজ বিষয়ে না ভাবাটাই উত্তম । সব থেকে বেশি বিক্রিত মোটরসাইকেলটি বেছে নিনঃ মনে করুন আপনি একজন মোটরসাইকেল কোম্পানির মালিক এবং আপনার মোটরসাইকেলগুলো খুব ভাল দামে বিক্রি হচ্ছে। বেশি দামে এবং খুব ভাল বিক্রি হওয়ার জন্য আপনি ভাল লাভ পাচ্ছেন যার কারনে আপনি আপনার কোম্পানি এর মোটরসাইকেল এর আরো উন্নতি ও নতুন টেকনোলজি এর জন্য অনেক টাকা পাচ্ছেন । এই কথাগুলো বলার প্রধান কারন হচ্ছে যে সব থেকে বেশি বিক্রিত মোটরসাইকেল ও যেই মোটরসাইকেল ব্যবহার করে সবাই খুব খুশি ও ভাল বলেছে সেই বাইকটা আপনার তালিকায় রাখুন । ২০১১ সালে বাংলাদেশে বাজাজ পালসার ১৫০সিসি ছিল সব থেকে বেশি বিক্রিত মোটরসাইকেল । সার্ভিস স্টেশন সব জায়গায় পাওয়া যায়ঃ এমন বাইক পচ্ছন্দ করুন যেটার সার্ভিস স্টেশন আপনার আশে-পাশে রয়েছে। বাইক এই ভাল আছে আবার এখনই কোন না কোন সমস্যা দেখা দিতে পারে। ধরুন আপনার বাসা দিনাজপুর এ আর আপনার বাইকের সার্ভিস স্টেশন গাজীপুর এ প্রায় ৩০০ কি.মি. দূরে তাহলে এটা আপনার জন্য বিরাট বড় সমস্যার কারন হয়ে পরবে । স্পেয়ার পার্টস সব জায়গায় পাওয়া যায়ঃ আমার এক বন্ধুর হোন্ডা সিবি ৬৫০ মোটরসাইকেল আছে। বাইকটার কিছু ইঞ্জিন পার্টস নষ্ট হওয়ার পর বাইকটা লেজেন্ডেরি বাইক থেকে ভাঙ্গা বাইকে পরিনত হয়েছিল। বাংলাদেশে এই বাইকের স্পেয়ার পার্টস পাওয়া যায় । তাই যেসব বাইকের স্পেয়ার পার্টস ও দাম কম এবং বাংলাদেশে পাওয়া যায় এমন বাইক ভেবে কিনবেন । বাইক এর সাথে বডির ও খেয়াল রাখাঃ ধরুন আপনার উচ্চতা ৬” ফিট এবং আপনি হোন্ডা ৫০সিসি বাইক চালান । মনে হবে যেন ইদুরের উপর হাতি চড়ছে । তাই এমন একটা বাইক এর চিন্তা-ভাবনা করবেন যেটা আপনার উচ্চতার সাথে খাপ খায় । আপনার পচ্ছন্দ অনুযায়ী বাইক নেনঃ সব সময় আপনার মন যা বলে সেটা করুন । বাজেট এর দিকে খেয়াল রেখেই শুধু বাইক কিনবেন না। আমার মতে কিছুটা সময় ধৈর্য ধরুন, কিছুটা টাকা জমান তারপর আপনার পছন্দের বাইকটা কিনুন । যদি বাজেট এর উপর খেয়াল করে আপনি আপনার পছন্দের বাইকটি না কিনে থাকেন তাহলে আপনি বাইক চালিয়ে মজা পাবেন না । আপনি অবশ্যই তখন এই বাইকটি বিক্রি করে আপনার পছন্দের বাইকটি কিনবেন। এই বাইকটা কেনার ফলে আপনি বিরাট বড় অংকের টাকা লস করবেন । তাই আপনি আপনার চয়েস এর উপর অটল থাকেন । এই গুলো ছিল বাংলাদেশে বাইক কেনার সময় খেয়াল করার বিষয়গুলো । সব থেকে প্রধান কথাটা আমি বলব যে আপনি আপনার চয়েস অনু্যায়ী বাইক কেনেন এবং ভাল ও নিরাপদভাবে বাইক চালাবেন । তো কেমন হল টিপসগুলো ? যদি আপনার মাথায় কোন নতুন আইডিয়া থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট এর মাধ্যমে আমাদের জানাবেন । ধন্যবাদ সবাইকে ।