মোটরসাইকেল কেন ব্যবহার করবেন - সুবিধাগুলো কি কি?

This page was last updated on 29-Nov-2023 01:58pm , By Saleh Bangla

একটি মোটরসাইকেল স্পষ্টতই যেকোনো তিন-চাকার বা চার-চাকার বা অন্য যেকোনো মোটরগাড়ির তুলনায় একটি চটপটে, দ্রুত, এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য একটি বাহন। একটি মোটরসাইকেল চালিয়ে যেকেউ যেকোনো সময়, প্রায় যেকোনো জায়গায়তেই সহজে চলে যেতে পারে। মোটরসাইকেলের এই অতীব সহজ ব্যবহারযোগ্যতা আসলেই অতুলনীয় এবং এর উপযোগীতার পরিধিও বেশ বিস্তৃত, যা অন্য কোনো মোটরগাড়ি দিতে পারেনা। আর একারণেই মোটরসাইকেল সারাবিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয় বাহন এবং সেইসূত্রে আজ আমরা এক নজরে দেখে নেবো, মোটরসাইকেল কেন ব্যবহার করবেন আর এটি ব্যবহারের সুবিধাগুলো কি কি?

 

মোটরসাইকেল কেন ব্যবহার করবেন - সুবিধাগুলো কি কি?

>> মোটরসাইকেল ব্যবহারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এই বাহনটির অতীব সহজ ব্যবহারযোগ্যতা। কেননা, এটি একজন রাইডারকে মোটামুটি সবস্থানেই নিয়ে যেতে পারে। রাস্তার অবস্থা, আবহাওয়া পরিস্থিতি, পরিবেশ প্রতিকুলতা, অন-রোড অফ-রোড যাই হোকনা কেন, একজন রাইডার মোটরসাইকেল স্টার্ট করে চেষ্টা করলেই মোটামুটি যেকোন গন্তব্যে চলে যেতে পারে যেটি অন্য কোনো যানবাহন দিয়ে ততটা সহজে সম্ভব না।

>> একটি মোটরসাইকেল বাহন হিসেবে আকারে বেশ ছোট এবং এটি তিন চাকার বা চার চাকার যাই হোকনা কেন রাস্তায় চলা অন্য যেকোনো যানবাহনের তুলনায় ওজনেও অনেক হালকা। তাই একজন মোটরসাইকেল রাইডার রাস্তায় চলা অন্য যেকোনো যানবাহনের তুলনায় চলাচলে সবসময়েই বাড়তি সুবিধা পান। আর মোটরসাইকেল একটি সাধারন গাড়ির তুলনায় আকারে অর্ধেকেরও কম হওয়ায় এটিকে গ্যারেজে রাখা ও বাইরে পার্কিং করাও সহজ হয়।

>> প্রতিদিনের চলাচলে একটি মোটরসাইকেল বলা যায় এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে সাশ্রয়ী এবং উপযোগী বাহন। এটি ব্যস্ত শহরের ট্র্যাফিক সহজেই মোকাবেলা করতে পারে, প্রায় যেকোনো ধরণের রোড সারফেসে চলতে পারে, আবার প্রায় যেকোনো পরিবেশগত অবস্থায়ও ব্যবহার করা চলে। ফলে স্পষ্টতই, এটি দৈনন্দিন জীবনে যাতায়াতের জন্য সবচেয়ে উপযোগী বাহন যা আক্ষরিক অর্থেই একজন রাইডারের সময়ও বাঁ‍চায়। আর একারণেই মোটরসাইকেল যাতায়াতের ক্ষেত্রে এতটা জনপ্রিয়।

>> মোটরসাইকেল ব্যবহারের আরো একটি সুবিধা হলো, এটি যেকোনো দিক থেকে তুলনামুলকভাবে সস্তা একটি বাহন। একটি মোটরসাইকেলের দাম একটি স্ট্যান্ডার্ড সেডান কারের অর্ধেকেরও কম। এছাড়া এটি তুলনামুলকভাবে কম জ্বালানী খরচ করে এবং প্রতি লিটারে বেশি পথ চলতে পারে। তাছাড়া, মোটরসাইকেলের নিবন্ধন, ট্যাক্স, রোড পারমিট এবং বীমার জন্যও তুলনামুলকভাবে কম খরচ হয়। সুতরাং একটি মোটরসাইকেল যথেষ্ট অর্থ সাশ্রয়ী একটি বাহন।

>> রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে, একটি মোটরসাইকেল রক্ষণাবেক্ষণ করাও সহজ, এবং এটি অন্যান্য মোটরগাড়ির তুলনায় অনেকবেশি অর্থ সাশ্রয় করে। কেবলমাত্র নিয়িমিত সাধারন রক্ষণাবেক্ষণই একটি মোটরসাইকেলকে হাজার হাজার মাইল মসৃণভাবে চলমান রাখার জন্য যথেষ্ট। উপরন্তু, মোটরসাইকেলের মেরামত এবং পার্টস বদলানো একটি সাধারণ গাড়ির তুলনায় অনেকটাই কম খরচের বিষয়।

>> ব্যক্তিগত মালিকানার ক্ষেত্রে মোটরসাইকেল মূলত: একটি অত্যন্ত ব্যক্তিগত বাহন, যা সাধারনত অন্য কারো সাথে শেয়ার করতে হয় না। এক্ষেত্রে একজন রাইডার তার মোটরসাইকেল ব্যবহারে পূর্ণ স্বাধীনতা উপভোগ করেন। এতে কেউই হস্তক্ষেপ করতে পারেনা যেমনটা পারে পাবলিক ট্রান্সপের্টের ক্ষেত্রে বা বড় গাড়ির ক্ষেত্রে।

>> উপরে আলোচিত মোটরসাইকেল ব্যবহারের সুবিধাগুলি এবং এর যাতায়াত-বান্ধব বৈশিষ্ট্যগুলি বিচারে একটি মোটরসাইকেল বিশ্বব্যাপী সেরা অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিং ভেহিকল হিসাবেও বিবেচিত। সেই কারণে অনেক রাইডার তাদের সাধারণ ভ্রমণ, অ্যাডভেঞ্চার ট্যুর, ক্রসকান্ট্রি ট্যুর, এমনকি ট্রান্সকন্টিনেন্টাল ট্যুর বা বিশ্বভ্রমণের জন্য মোটরসাইকেলই পছন্দ করেন, যা অন্যান্য ধরণের মোটরগাড়ি ব্যবহার করে সম্পাদন করা কঠিন ও অত্যন্ত ব্যববহুল।

>> মোটরস্পোর্টের ক্ষেত্রেও মোটরসাইকেল বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। ওয়ার্ল্ড মোটরস্পোর্টে খুবই জনপ্রিয় কয়েকটি ফর্ম ও রেগুলেশন রয়েছে যা মোটরসাইকেলের জন্যই ডেডিকেটেড। আর এসব মোটরস্পোর্টের জন্য বিশেষ ধরনের ও ফিচারের মোটরসাইকেলও বাজারে রয়েছে। সুতরাং একজন রাইডার চাইলে তার দক্ষতাভেদে কোন কোন মোটরস্পোর্টে অংশও নিতে পারেন।

>> মোটরসাইকেল তুলনামূলকভাবে অন্য যেকোনো মোটরগাড়ির চেয়ে বেশি পরিবেশবান্ধব। মোটরসাইকেল তুলনামুলকভাবে অল্পক্ষমতার ছোট ইঞ্জিন দিয়ে তৈরী হয়, যা হাই-অকটেন গ্যাসোলিন দিয়ে অনেকদুর পথ চলতে পারে এবং আধুনিক মোটরসাইকেলের ইমিশনও অত্যন্ত সীমিত। ফলে আধুনিক মোটরসাইকেলগুলি সাধারণ গাড়ির তুলনায় অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব ও জ্বালানী সাশ্রয়ী।

 

সবশেষে বলতে হয় বাহন হিসেবে একটি মোটরসাইকেল ব্যবহারের সুবিধা অনেক এবং এটি সর্বত্র ব্যবহারের জন্য অত্যন্ত উপযোগী একটি বাহন তাই সবাই মোটরসাইকেল ব্যবহার করে। আর এসব ছাড়াও একটি মোটরসাইকেল রাইড অনেকটাই স্বাধীনতা ও মানসিক প্রশান্তির ব্যাপার যেটি একজন রাইডার খুবই উপভোগ করেন। আর একটি ফ্রি-রাইড মানুষের মনকে যতটা উদ্দিপ্ত করে অন্য অনেক কিছুই বা অন্য কোনো যানবাহন তা দিতে পারে না। তাই এর সুবিধার সাথে সাথে বলা যায় মোটরসাইক্লিং একটি আবেগীয় ব্যাপারও বটে, যা একজন রাইডারের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বেশ ভালো প্রভাব ফেলে।