ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থান । কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, খরচ বিস্তারিত

This page was last updated on 27-Jul-2024 03:26pm , By Raihan Opu Bangla

আজ আমরা ময়মনসিংহ জেলার দর্শনীয় স্থানগুলো নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো। ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থান এর মধ্যে আজ আমরা যেই জায়গাগুলো নিয়ে আলোচনা করবো এই জায়গাগুলোতে আপনি সকালে গিয়ে রাতে চলে আসতে পারবেন। কোথায় থাকবেন , কিভাবে যাবেন , কোথায় খাবেন এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থান । কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, খরচ বিস্তারিত

মুক্তাগাছার জমিদারবাড়ি

১- মুক্তাগাছার জমিদারবাড়িঃ (muktagacha jamidar bari)

ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থান এর মধ্যে মুক্তাগাছার জমিদারবাড়ি বাংলাদেশের প্রাচীন জমিদারবাড়িগুলোর একটি। এর অবস্থান ময়মনসিংহ থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে মুক্তাগাছায়। সর্বজনবিদিত হচ্ছে, শ্রীকৃষ্ণ আচার্য ১৭২৫ সালে এই জমিদারি শুরু করেন। জমিদারি শুরুর পর বিনোদবাড়ির নাম বদলে হয় মুক্তাগাছা।
মুক্তাগাছা জমিদারির ১৬ টি অংশ ১৬ জন জমিদার শাসন করতেন। মুক্তাগাছা জমিদার বাড়ির প্রবেশমুখে আছে বিশালাকার সিংহ দরজা। রাজবাড়ির ভেতরে আছে জমিদারের মায়ের ঘর, মন্দির, দরবার হল, কাচারিঘর, অতিথি ঘর, সিন্দুক ঘর এবং অন্যান্য ভবন। এছাড়াও এই রাজ বাড়িতে প্রায় ১০,০০০ বইয়ের একটি দূর্লভ লাইব্রেরি ছিল, যা বিভিন্ন সময়ে হুমকির সম্মুখীন হয়।

কিভাবে মুক্তাগাছা জমিদারবাড়ি যাওয়া যায়?

ঢাকা থেকে সবার প্রথমে আপনাকে ময়মনসিংহ যেতে হবে। ময়মনসিংহ থেকে মুক্তাগাছার দূরত্ব ১৭ কিলোমিটার। মুক্তাগাছা নেমে বাজারের ভেতর দিয়ে একটু আগালেই মুক্তাগাছা জমিদার বাড়িতে পৌঁছে যাবেন।

আপনি চাইলে ঢাকা থেকে সরাসরি ইসলাম পরিবহনের বাসে করে মুক্তাগাছা আসতে পারবেন।


Also Read: সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ । ২৭ টি মনোরম জায়গা । বাইকবিডি

 মুক্তাগাছা গিয়ে কোথায় থাকবেন?

মুক্তাগাছায় বেশ কিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। প্রয়োজনে সেগুলিতে থাকতে পারেন। কিংবা ময়মনসিংহ শহরে বিভিন্ন মানের হোটেল থেকে আপনার জন্য ভাল হোটেল বেছে নিতে পারেন।

কোথায় খাবেন?

মুক্তাগাছার বিখ্যাত মন্ডা খেতে ভুলবেন না। দেড়শ বছরের ঐতিহ্যবাহী গোঁপাল পালের মন্ডার দোকান রাজবাড়ী এর সামনেই। এই মন্ডা সুনাম সারা দেশের মানুষের কাছেই অতি সুপরিচিত। একমাত্র মুক্তাগাছাতেই পাবেন সেই আসল ও অকৃত্রিম একমাত্র মন্ডার দোকান। প্রতি পিস মন্ডার দাম ২২ টাকা, কেজি প্রতি ৪৪০ টাকা।

শশী লজ

২- শশী লজঃ (shashi lodge)

ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থান এর মধ্যে শশী লজ অন্যতম। এককালে বাড়িটি ছিল শহরের সেরা বাড়ি। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলেও এখনও রয়ে গেছে তাদের স্মৃতিবিজড়িত অনেক প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠান ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে যুগ যুগ ধরে।

ময়মনসিংহ শহরে বিভাগীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থিত বিশাল বাউন্ডারির ভেতরে এর অবস্থান। এক সময় এটি মহিলা টিচার্স ট্রেনিং সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এখন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইতিহাসের স্মৃতিবিজড়িত শশী লজ দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ভিড় করেন।

কিভাবে শশী লজ যাওয়া যায়?

ঢাকা থেকে আপনাকে ময়মনসিংহ যেতে হবে, সেখান থেকে মাসাকান্দা বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে আপনি শশী লজ থেকে ঘুরে আসতে পারেন।

শশী লজ গিয়ে কোথায় থাকবেনঃ

ময়মনসিংহ শহরে থাকার অনেক জায়গা আছে আপনি চাইলে সেখানে থাকতে পারেন।

কোথায় খাবেন?

এখানে আপনি খাবার অনেক হোটেল পাবেন, এখান থেকেই নিজের পছন্দের খাবার খেয়ে নিতে পারেন।

৩- সন্তোষপুর রাবার বাগানঃ (santoshpur rubber garden)

ঢাকা থেকে বেশি দূরে নয়, অথচ জানেন না অনেকেই।যেখানে হাজার হাজার গাছের দৃষ্টিনন্দন সৃজনে রাবার বাগান আর বন্য বানরের লুকোচুরি। ভালোলাগা এই বনটির অবস্থান ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া উপজেলার নাওগাঁও ইউনিয়নের সন্তোষপুরে।

শক্ত পাতার আবরণে লাল, হলুদ, সাদা, বেগুনি রঙের নানা ফুল ফুটে আছে। বিশাল এলাকা- প্রায় ২৬ একর জায়গাজুড়ে অর্কিড বাগান। আরও রয়েছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের বৃক্ষরাজি। বাগানজুড়ে পাখির কলতান। বেশ ভালোলাগার মতো একটা জায়গা।

সন্তোষপুর রাবার বাগানে প্রচুর বানর রয়েছে এদের দেখে অযথা ভয় পেয়ে আক্রমণ করবেন না। বানরগুলো আপনার কোলে ও কাঁধে উঠলেও আপনার কোন ক্ষতি করবে না এই বেপারে নিশ্চিত থাকুন। যথাসম্ভব বানরদের কিছু খাবার খেতে দিন।

কিভাবে সন্তোষপুর রাবার বাগান যাওয়া যায়?

ঢাকা থেকে আপনাকে ময়মনসিংহের আগে ফুলবাড়ীয়া বাসস্ট্যান্ড এর এইদিকে আসতে হবে। ফুলবাড়ীয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে সরাসরি আপনি সন্তোষপুর রাবার বাগান যেতে পারবেন। আর আপনি চাইলে আগে অর্কিড বাগান দেখতে যেতে পারেন।

সন্তোষপুর রাবার বাগান গিয়ে কোথায় থাকবেন?

এই জায়গাটি বাইক নিয়ে ডে লং ট্যুর দেয়ার জন্য সেরা। আপনি সকালে গিয়ে ঘুরে রাতে চলে আসতে পারবেন। কিন্তু আপনি যদি রাতে থাকতে চান তাহলে ময়মনসিংহ শহরে থাকতে পারেন।

কোথায় খাবেন?

সন্তোষপুর রাবার বাগান দেখতে যাবার সময় হালকা খাবার সাথে নিয়ে যেতে পারেন কিংবা স্থানীয় দোকান বা খাবার হোটেল থেকে সাময়িক খাবার খেতে পারেন। এছাড়া ময়মনসিংহ শহরে প্রেসক্লাব ক্যান্টিনের মোরগ পোলাওয়ের স্বাধ চেখে দেখতে পারেন। এছাড়া ভাল মানের খাবারের জন্য হোটেল ধানসিঁড়ি ও হোটেল সারিন্দার বেশ সুনাম রয়েছে।

৪- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ঃ (bangladesh agricultural university)

বাংলাদেশের কৃষি বিষয়ক একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি ময়মনসিংহ শহরে অবস্থিত। দেশের কৃষিশিক্ষা ও গবেষণার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়৷ কৃষিবিজ্ঞানের সকল শাখা এর আওতাভূক্ত। মানসম্পন্ন উচ্চতর কৃষিশিক্ষা ব্যবস্থার নিশ্চয়তা বিধানের মাধ্যমে দেশে কৃষি উন্নয়নের গুরুদায়িত্ব বহনে সক্ষম তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ কৃষিবিদ, প্রাণিবিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ ও কৃষি প্রকৌশলী তৈরি করাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান লক্ষ্য।

১৯৬১ সালে ভেটেরিনারি ও কৃষি অনুষদ নামে দু’টি অনুষদ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে এটি এখনও মানুষের মন কেড়ে নেয়। ময়মনসিংহ শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দক্ষিণে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম প্রান্তে প্রায় ১২০০ একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। রাজধানী ঢাকা থেকে ১২০ কিলোমিটার উত্তরে এ ক্যাম্পাসের অবস্থান।

কিভাবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়া যায়?

ঢাকা থেকে সবার প্রথমে আপনাকে ময়মনসিংহ যেতে হবে, ময়মনসিংহ শহরের ব্রীজ মোড় থেকে আপনি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় যেতে পারবেন।

৫- ময়না দ্বীপঃ (moina deep mymensingh)

ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থান এর মধ্যে ময়মনসিংহ শহরের অতি নিকটেই জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরত্বে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ মোড়ের দক্ষিণে গৌরীপুরের ভাংনামারি ইউনিয়নের অনন্তগঞ্জ বাজার সংলগ্ন স্থানে অবস্থিত ব্রহ্মপুত্রের দু'টি ধারা দু'দিকে বেশ কিছু দূর গিয়ে আবার একই ধারায় মিলিত হয়েছে। এর মাঝে তৈরি হয়েছে একটি বৃহৎ ব-দ্বীপের।এই দ্বীপটিকে সবাই ময়নার চর বলে বলে ডাকে।

কিভাবে ময়না দ্বীপ যাওয়া যায়?

সবার আগে আপনাকে ময়মনসিংহ যেতে হবে, সেখান থেকে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এর পাশেই এই ময়না দ্বীপটির অবস্থান। ঘাটে দাঁড়িয়ে দক্ষিণ দিকে তাকালেই চোখে পড়বে গাছ-গাছালি ঘেরা উঁচু টিলা ও জঙ্গলের মতো একটা কিছু। এটাই ময়না দ্বীপ। পানি না থাকলে চার-পাঁচ মিনিট হে্ঁটেই উঠে যাওয়া যাবে দ্বীপে।

ময়না দ্বীপ একেবারেই নির্জন স্থান। তেমন কোনো লোকজনের বিচরণ নেই। এখানে কোনো ছিনতাই বা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটার আশংকা কম। তবুও সতর্ক থাকাই ভালো। বেশ কয়েকজনের দল হয়ে গেলেই বেশি ভালো। খোলা চরের নানান বনজ গাছ-গাছালিতে ভরা ছায়া সুনিবিড় একটি স্থান।

ময়না দ্বীপে কোথায় থাকবেন?

এখানে কোনো যাত্রী ছাউনি বা কোনো বাড়িঘর নেই। থাকার ব্যবস্থাও নেই। ঢাকা বা দেশের যেকোনো স্থান থেকে বেড়াতে গেলে ময়মনসিংহ শহরের আবাসিক হোটেলগুলোতে থাকা যাবে। মান বেশ ভালো। ভাড়া হোটেল ও মানভেদে ২০০- তিন হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত।

কোথায় খাবেন?

ময়না দ্বীপের আশপাশে কোনো প্রকার খাবার দাবারের দোকান পাওয়া যাবে না। সারাদিন থাকতে চাইলে খাবার সঙ্গেই নিয়ে যেতে হবে। ঢাকা থেকে গেলে ময়মনসিংহ শহরে নেমে যেকোনো হোটেল বা রেস্টুরেন্টে খেয়ে নিতে পারেন।

৬- আঠারবাড়ী জমিদার বাড়িঃ (atharabari mymensingh)

ময়মনসিংহ জেলার অর্ন্তগত ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার একটি সমৃদ্ধ এলাকা আঠারো বাড়ী। ব্রিটিশ শাসন আমল থেকেই এলাকাটি ব্যবসা-ব্যাণিজ্যে ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় অগ্রসর। এমন একটি সমৃদ্ধ এলাকায় জমিদার প্রমোদ চন্দ্র রায়ের পরিত্যক্ত দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল জমিদার বাড়ি এখনও ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে নিরব দাড়িয়ে আছে। চমৎকার কারুকার্যময় এ রাজবাড়ীটির বয়স প্রায় আড়াই শত বছর। ময়মনসিংহ কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সদর থেকে ১৪ কিলোমিটার পূর্বে কিছু অগ্রসর হলেই চোখে পড়বে জমিদার বিশাল অট্টালিকা। ১৭৯৩ খ্রিষ্ঠাব্দ পর্যন্ত হোসেন শাহী পরগনা রাজশাহী কালেক্টরের অধিনে ছিল।

কিভাবে আঠারবাড়ী জমিদার বাড়ি যাওয়া যায়?

ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ আঠারোবাড়ী রেলস্টেশনে কাছে এসে সেখান থেকে আপনি আঠারবাড়ী জমিদার বাড়ি যেতে পারবেন।

৭- রামগোপালপুর জমিদার বাড়িঃ (ramgopalpur jamidar bari)

প্রায় ১৮৫০ শতকের দিকে এই জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে এই জমিদার বংশের মূল প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন তা ইতিহাস থেকে জানা যায়নি। তবে এই জমিদার বংশের বেশ কয়েকজন বিখ্যাত জমিদারের নাম ইতিহাসের পাতায় উল্লেখ রয়েছে। তাদের কর্মের কারণেই আজকে ইতিহাসের পাতায় তাদের নাম। কাশী কিশোর রায় চৌধুরী রায় ছিলেন এই জমিদার বংশের একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি। তার জমিদারী আমলে এই জমিদার বাড়ি অনেক উন্নত হয় ও জমিদার বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। তার মত তার ছেলে যোগেন্দ্র কিশোরা রায় চৌধুরীও একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন।

এই বাড়িতে ছিল বসবাসের জন্য ভবন, রঙ্গম, চিড়িয়াখানা, উপসনালয় বা মন্দির, বাগানবাড়ি, সাগরদীঘির কারুকার্যময় সান বাধাঁনো পুকুর ঘাট সহ ভেতর বাড়ির প্রবেশ পথে তিনতলা বিশিষ্ট প্রবেশদ্বার।

বাড়িটিতে বর্তমানে দুটি প্রবেশদ্বার, কয়েকটি ধ্বংসপ্রাপ্ত দেয়াল ও মন্দির ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। একটি প্রবেশদ্বার প্রায় ধ্বংসের মুখে আরেকটি কোনোরকম টিকে আছে। আর দেয়ালগুলো অধিকাংশই ধ্বংস হয়ে গেছে এবং লতাপাতায় জরাজীর্ণ হয়ে রয়েছে। তবে এখনো জমিদার বাড়ির মন্দির বেশ ভালো অবস্থায় আছে। মন্দিরে এখনো পূজোর অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।

কিভাবে রামগোপালপুর জমিদার বাড়ি যাওয়া যায়?

প্রথমে আপনাকে আসতে হবে ময়মনসিংহ,সেখান থেকে সেখান থেকে কিশোরগঞ্জ এর রোড শরে আসতে হবে রামগোপালপুর বাজার। রামগোপালপুর বাজারে এসে যে কারো কাছ থেকে শুনে আপনি রামগোপালপুর জমিদার বাড়ি চলে যেতে পারবেন।

৮- পানিহাটা-তারানি পাহাড়ঃ

শেরপুর জেলা শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে গারো পাহাড় সীমান্তবর্তী রামচন্দ্রকুড়া এলাকায় সারি সারি পাহাড় দিয়ে ঘেরা পানিহাটা ও তারানি গ্রামের অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত অঞ্চল পর্যটকদের কাছে পানিহাটা-তারানি পাহাড় (Panihata-Tarani Hill) হিসেবে সুপরিচিত। তারানি পাহাড়ের উত্তরে রয়েছে মেঘের আবছা আবরণে ঢাকা ভারতের তুরা পাহাড়। তুরা পাহাড়ের দূরের টিলাগুলো যেন মেঘের রাজ্যের সাথে মিতালি করে চারপাশে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশের সৃষ্টি করেছে।

কিভাবে পানিহাটা-তারানি পাহাড় যাওয়া যায়?

ঢাকা থেকে আপনাকে শেরপুরের নকলা উপজেলায় আসতে হবে,সেখান থেকে নালিতাবাড়ি হয়ে পানিহাটা-তারানি পাহাড় যাওয়া যায়।

পানিহাটা-তারানি পাহাড়ে কোথায় থাকবেন?

নালিতাবাড়ি বা শেরপুরের কয়েকটি আবাসিক হোটেল রয়েছে আপনি চাইলে এখানেই থাকতে পারেন।

কোথায় খাবেন?

নালিতাবাড়িতে হোটেল সেহের মল্লিক, ভেট্টো রেস্টুরেন্ট ও হোটেল সৌদিয়া নামের খাবার হোটেল রয়েছে। এছাড়া শেরপুরের নিউ মার্কেট এলাকায় বিভিন্ন মানের খাবারের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট পাবেন।

৯- রাজার পাহাড়ঃ

ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থান এর মধ্যে রাজার পাহাড়ের কাছে রয়েছে বিডিয়ার ক্যাম্প, ওয়ার্ল্ড ভিশন, বিট অফিস, কারিতাস এবং রাবার বাগান। রাজার পাহাড়ের উপর হতে দূরের ভারতের কিছুটা সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। শ্রীবরদী উপজেলা সদর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই রাজার পাহাড় এই অঞ্চলের মানুষের কাছে অন্যতম বিনোদন স্পট হিসাবে সুপরিচিত। অপরূপ প্রকৃতি ও বাবেলাকোনায় আদিবাসী জনপদের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও জীবনধারা এখানে আগত দর্শনার্থীদের সমানভাবে আকর্ষণ করে। এছাড়া এখানে বাবেলাকোনা কালচারাল একাডেমি, যাদুঘর, লাইব্রেরী, গীর্জা, মন্দির এবং অসংখ্য প্রাকৃতিক নির্দশন রয়েছে।

কিভাবে রাজার পাহাড় যাওয়া যায়?

রাজার পাহাড়ে যেতে হলে আপনাকে প্রথমে শেরপুর শহরে আসতে হবে। শেরপুর থেকে প্রায় ৩৪ কিলোমিটার দূরে রয়েছে শ্রীবরদী উপজেলার কর্ণঝোরা বাজার। এখান থেকে আপনি রাজার পাহাড় যেতে পারবেন।

রাজার পাহাড়ে কোথায় থাকবেন?

শেরপুর জেলায় ১৫০ থেকে ৫০০ টাকায় সাধারণ মানের গেষ্ট হাউজের পাশাপাশি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় হোটেল সম্পদ, কাকলী , বর্ণালী গেষ্ট হাউজ, ভবানী প্লাজা নামের বেশকিছু মাঝারি মানের হোটেল রয়েছে। আপনি চাইলে এই জায়গায় থাকতে পারেন। তবে ঢাকা থেকে সকালে গিয়ে ঘুরে আপনি রাতে ফিরে আসতে পারবেন।

কোথায় খাবেন?

খাবার খেতে শেরপুর চলে আসা সবচেয়ে ভাল হবে। শেরপুর শহরের নিউ মার্কেট এলাকায় অনেক হোটেল আছে এখান থেকে আপনি আপনার পছন্দের যে কোন হোটেলে খাবার খেতে পারেন।

মধুটিলাইকোপার্ক

১০- মধুটিলা ইকোপার্কঃ (modhutila eco park sherpur)

মধুটিলা ইকোপার্ক বাংলাদেশের শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত অন্যতম একটি পরিবেশ-উদ্যান। ১৯৯৯ সালে এই বনকে পরিবেশ-উদ্যান বা ইকোপার্ক ঘোষণা দেয়া হয়, এই পার্কের আয়তন ৩৮৩ একর। ঢাকা থেকে মধুটিলা ইকোপার্কের দূরত্ব প্রায় ২০০ কিলোমিটার। এই ইকোপার্কটি নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন পোড়াগাও এ অবস্থিত।

এখানে আছে সাইটভিট টাওয়ার, লেক, প্যাডেল বোট, স্টার ব্রিজ, মিনি চিড়িয়াখানা, শিশুপার্ক, রেস্টহাউসসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এছাড়াও আছে ঔষধি ও সৌন্দর্যবর্ধক প্রজাতির গাছ, মৌসুমি ফুলসহ বিভিন্ন রঙের গোলাপের বাগান। পার্কটিতে জীববৈচিত্র্য ও প্রাণীর সমাহারও চোখে পড়বে।

কিভাবে মধুটিলা ইকোপার্ক যাওয়া যায়?

মধুটিলা ইকোপার্ক যেতে হলে আপনার সবার প্রথমে শেরপুর যেতে হবে। শেরপুর থেকে আপনি মধুটিলা ইকোপার্ক যেতে পারবেন।

মধুটিলা

মধুটিলা ইকোপার্কে কোথায় থাকবেন?

শেরপুর জেলায় ১৫০ থেকে ৫০০ টাকায় সাধারণ মানের গেষ্ট হাউজের পাশাপাশি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় হোটেল সম্পদ, কাকলী , বর্ণালী গেষ্ট হাউজ, ভবানী প্লাজা নামের বেশকিছু মাঝারি মানের হোটেল রয়েছে। আপনি চাইলে এই জায়গায় থাকতে পারেন। তবে ঢাকা থেকে সকালে গিয়ে ঘুরে আপনি রাতে ফিরে আসতে পারবেন।

কোথায় খাবেন?

খাবার খেতে শেরপুর চলে আসা সবচেয়ে ভাল হবে। শেরপুর শহরের নিউ মার্কেট এলাকায় অনেক হোটেল আছে এখান থেকে আপনি আপনার পছন্দের যে কোন হোটেলে খাবার খেতে পারেন।

বিরিশিরি

১১- বিরিশিরিঃ (birishiri)

ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থান এর মধ্যে বিরিশিরি নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। বিরিশিরিতে চীনামাটির পাহাড়, নীল জলের হ্রদ এছাড়াও সোমেশ্বরী নদী, রানীখং গির্জা এবং কমলা রানীর দীঘি ভ্রমণের জন্য আদর্শ জায়গা। সোমেশ্বরী নদীর তীরে কাশবন আর দূরের গারো পাহাড়ের সৌন্দর্য্য বিরিশিরিতে আসা সকল ভ্রমণকারীদের মুগ্ধ করে।

বিরিশিরির বিজয়পুরে আকর্ষনীয় চীনামাটির পাহাড় ও নীল পানির হ্রদ রয়েছে। বিজয়পুরের এই চীনামাটির পাহাড় এবং সমভূমি দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৬ কিলোমিটার ও প্রস্থে ৬০০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। হ্রদের নীল জল নিমিশেই সমস্ত ক্লান্তি ও অবসাদ দূর করে দেয়।

কিভাবে বিরিশিরি যাওয়া যায়?

ঢাকা থেকে সবার প্রথমে আপনাকে দুর্গাপুর যেতে হবে। সুখনগরী থেকে নৌকায় করে একটা ছোট নদী পার হয়ে আপনি যেতে পারবেন বিরিশিরি।

বিরিশিরি কোথায় থাকবেন?

সুসং দুর্গাপুরে রাত্রিযাপনের জন্য জেলা পরিষদ ডাক বাংলো, বেশকিছু গেস্ট হাউস এবং মধ্যম মানের আবাসিক হোটেল আছে। প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন – জেলা পরিষদ ডাক বাংলো , ইয়ুথ মেন খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন বা ওয়াইএমসিএ-এর রেস্ট হাউস, YWCA গেষ্ট হাউজ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কালচারাল একাডেমী গেষ্ট হাউজ

দুর্গাপুরে মধ্যম মানের হোটেলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো – স্বর্ণা গেস্ট হাউস, হোটেল সুসং , হোটেল গুলশান, হোটেল জবা, নদীবাংলা গেষ্ট হাউজ ।

কোথায় খাবেন?

বিরিশিরিতে ঘুরার সময় হালকা খাবার সাথে রাখতে পারেন কারণ যত্রতত্র খাবারের কিছু পাওয়া যায় না। এখানে মধ্যম মানের কিছু খাবার হোটেল বা রেস্টুরেন্ট রয়েছে যেখানে ভাত, ডাল, মাছ, মাংসের পাশাপাশি বকের মাংসও পাওয়া যায়। দূর্গাপুর বাজারে নেত্রকোণার বিখ্যাত বালিশ মিষ্টির স্বাধ নিতে ভুল করবেন না।

সোমেশ্বরী নদী

১২- সোমেশ্বরী নদীঃ (someshwari river)

ভারতের মেঘালয় রাজ্যের গারো পাহাড়ের বিঞ্চুরীছড়া, বাঙাছড়া প্রভৃতি ঝরনাধারা ও পশ্চিম দিক থেকে রমফা নদীর স্রোতধারা একত্রিত হয়ে সোমেশ্বরীর সৃষ্টি। দুর্গাপুর উপজেলার বিজয়পুর ও ভবানীপুর গ্রামের ভেতর দিয়ে নদীটি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। রাণীখং পাহাড়ের পাশ দিয়ে দক্ষিণ দিকে শিবগঞ্জ বাজারের কাছে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয় এটি।

পাহাড়ের গা ঘেঁষে বয়ে চলা সোমেশ্বরীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য স্বচ্ছ পানি। হাঁটু পানি বা এর চেয়ে বেশি পানিতে অনায়াসে নিচের বালি দেখা যায়। নৌকা নিয়ে মাঝিরা নদীতে ঘুরে বেড়ায়। কেউ মাছ শিকার করে। কেউবা ঘুরে ঘুরে পর্যটকদের নদীর সৌন্দর্য দেখায়। কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও কম। পাহাড়ের ঢাল থেকে বয়ে আসা ঝরনার পানিই এই নদীর মূল উৎস। ঝরনার পানি হওয়ায় এর পানি অতি স্বচ্ছ ও ঠান্ডা। দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজ ছাড়াও নানাভাবে এই নদীকে ব্যবহার করে স্থানীয়রা।

সোমেশ্বরীনদী

কিভাবে সোমেশ্বরী নদী যাওয়া যায়?

সোমেশ্বরী নদী দেখতে চাইলে আপনাকে সবার প্রথমে দুর্গাপুর আসতে হবে। আপনি বাইকে আসলে ঢাকা থেকে সরাসরি এখানে চলে আসতে পারবেন।

১৩- কমলা রাণী দীঘিঃ (komola ranir dighi)

নেত্রকোনার দুর্গাপুরের কমলা রাণী দীঘির কাহিনী অনেক প্রাচীন। জনশ্র“তি আছে সুসং দুর্গাপুরের রানী কমলা খটখটে শুকনো দীঘির মাঝখানে গিয়ে পূজা দেয়ার সময় বজ্রপাতে দীঘির তলার মাটি ফেটে পানিতে ভরে যায়। এতে সলিল সমাধি হয় রানীর। কালের আবর্তনে আজ ধ্বংস হয়ে গেছে সেই কমলা রাণীর দীঘি।
কথিত আছে, ১৫ শতকের শেষ দিকে সুসং দুর্গাপুরের রাজা জানকী নাথ বিয়ে করেন কমলা দেবীকে। ষোড়শ শতাব্দীর প্রথম ভাগে প্রজাদের পানির অভাব মিটানোর জন্য একটি বিশাল দীঘি খনন করেন তিনি।

ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থান অনেক আছে, এর মধ্যে থেকে জনপ্রিয় স্থানগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো। আর এই জায়গাগুলোতে বাইক নিয়ে গেলে আপনি সকালে ফিয়ে রাতে আবার ঢাকা ফিরে আসতে পারবেন।

তথ্য সূত্রঃ উইকিপিডিয়া, কালের কন্ঠ, ভ্রমণ গাইড , একুশে টিভি, যুগান্তর  , প্রথম আলো