বাইক রাইডে শরীরের যে সব বিষয়ে আপনি মনোযোগ দেন না
This page was last updated on 06-Jul-2024 08:18pm , By Shuvo Bangla
সবাই তো সেফটি গার্ড নিয়ে রাইড করতে বলে। কিন্তু এর বাইরেও আরও কিছু ভয়ঙ্কর কথা অগোচরেই থাকে। আমি তার অল্প কিছু এখানে বলছি:
বাইক রাইডে শরীরের যে সব বিষয়ে আপনি মনোযোগ দেন না
১. কোলন সমস্যা: অনেকে আছে মলত্যাগের চাপ নিয়ে বেরিয়ে পরে। বন্ধু ফোন দিয়েছে, এখনই যেতে হবে। এরকম মোটামুটি সবাই করি। কিন্তু এটা অনেক বিপদজনক ব্যাপার। ধরুন হঠাৎ কোন স্পিড ব্রেকারে ঝাকি খেলেন, আপনার কোলন(পায়ু পথের যে থলিতে মল থাকে) ফেটে যেতে পারে, অথবা ভেতরে রক্তখরন হতে পারে, ইনফেকশান হতে পারে। খুব কমন যেটা হয়, ২-৩ দিন পায়ুপথের ভেতরে সামান্য চাপ অনুভূত হয়। তারপর সেরে যায়। আর ইনফেকশান হলে তো জ্বর, শরীর ম্যাজম্যাজ করবেই। পাইলসের রুগিরা হাড়ে হাড়ে টের পায় মল ত্যাগের চাপ নিয়ে বের হলে কি হয়। তাই বন্ধুরা, ৫ মিনিট দেরি হলেও চাপ ক্লিয়ার করে রাস্তায় বের হও। যদি লং ড্রাইভে থাক, তাহলে কলা খেতে ভুল না, আর চাপ আসার সাথে সাথে হাইওয়েতে অনেক ফিলিং স্টেশান থাকে, কাজটা আগে সেরে নাও।
২. ইউরিন ইনফেকশান: অনেকেই সফট ড্রিঙ্কস খাই, চা খাই রাইড করার ফাকে ফাকে। তারউপর ড্রি-হাইড্রেশন চলতেই থাকে। আবার টার্গেট থাকে যে, ওমুক স্পটের আগে থামব না। ভাই প্রসাবের চাপ রিলিজ করতে মাত্র ১ মিনিট লাগে। কিন্তু তুমি হয়ত ১ ঘন্টা ধরে চেপে রেখে অস্বস্তিু নিয়ে বাইক চালাবে। তার উপর কথা হল, ইউরিনে ইনফেকশান হতে পারে, প্রসাবের সময় জ্বালাপোরা হবে, কিডনির ১৪ টা না বাজলেও ১২ টা বাজবে। আর চাপ থাকা অবস্থায় যদি এক্সিডেন্ট করেন, তাইলে তা কথাই নাই। আগে ঐটা রিলিজ করে নিজের অজান্তেই প্যান্ট ভেজাবে। কাজেই আগে হাল্কা হও, পরে রাইড কর।
৩. ব্যাকবোন পেইন: অনেকেই স্টাইল করে বসে চালায়। যেমন, দুহাত টান টান করে কমর ঘাড় টান টান করে চালায়। এতে যেটা হয়, সামনের ঝাকি হাত দিয়ে মেরুদন্ডে যায়, ঠিক একই সময় পেছনের চাকার ঝাকি নিতম্ব দিয়ে মেরুদন্ডে যায়। আমি প্রায়ই শুনি, মাজা ব্যথা, ঘাড় ব্যথা। একই বাইক একই হাইটের দুজন রাইডার দুরকম ফিডব্যাক দেয়। একজন বলে কোন ব্যাথা নাই। অন্য জন সে বাইকের ত্যানা চেড়ে। তাই বন্ধুদের উচিত, হাতটা ফ্লেক্সিবল রাখ, কুনুইয়ের কাছে হালকা ভাজ রাখ, যাতে কিছুটা ঝাকি যেন কনুই কাভার করে ফেলে। ডেস্কে বসার মত রিলাক্স হয়ে বস। নিশ্চয় ক্লাস করার সময় তোমরা পিঠ টান টান করে থাক না। কারও যদি হেন্ডেলের ধরতে সমস্যা হয়, থ্রি পার্টস বা অন্য ফ্লেক্সিবল হেন্ডেল লাগিয়ে নাও। মনেরেখ মেরুদন্ড গেল তো You will be then a alive doll.
৪. প্রােস্টেট গ্লান্ড: ছেলে হলে ভাই এই দুটা কদর সবচেয়ে বেশি। টাইট আন্ডার গাউন বা জিনস পরে বের হওয়া একদমই উচিত না। আর সেটা যদি নোংরা হয় তাহলে তো সেরের উপর সোয়া সের। বাংলাদেশের যে রাস্তা, কোথায় স্পিড ব্রেকার, কোথায় ৬ ইঞ্চি গর্ত আর কোথায় রাস্তার পিচ দলা পাকিয়ে উঁচু হয়ে আছে শতভাগ অনিশ্চিত। একটা সঠিক ঝাকি বাবা হবার স্বপ্ন শেষ করে দিতে পারে। তাছাড়া টাইট প্যান্ট পড়ে চালানটা অস্বস্তিকর। ঘন্টাখানিক পরেই পায়ের ভাজে বা পাছার ভাজে ব্যথা হবে। আর এটা তো সাইন্টিফিকেলি প্রুভ যে, টাইট আন্ডার গাউন বা প্যান্টের জন্যে ছেলের স্পার্ম দিন দিন কমতে থাকে। কাজেই বন্ধুরা Be careful.
৫. চোখ: অনেকেই আছি যে হেলমেট পরি কিন্তু সামনের সেড টা তুলে রাখি। চোখে পোকা পড়ে, ধুলা ঢোকে, খচ খচ করে, অনেকের পানিও ঝরে। পাত্তা দেই না। চোখের উপরি ভাগ পরিস্কার বাতাস থেকে অক্সিজেন নেয়। আর চোখের পানি ন্যাচারাল এন্টিবায়োটিকের কাজ করে। কিন্তু তারও একটা সীমা আছে। একটু চিন্তা কর, তুমি ২০কিমি স্পিডে দৌড়াতে পার, কিন্তু বাইক চালাও ১০০কিমি স্পিডে। তাহলে কত অল্প সময়ে কি পরিমান ডাস্ট খোলা চোখে যাচ্ছে। লং ড্রাইভে যারা যায়, চোখে কোন ময়লা/পোকা পড়লে পুরো যাত্রাই বাতিল হয়ে যেতে পারে। কাজেই অস্বস্তি হলেও সেড নামিয়ে চালানোর অভ্যাস করা দরকার। আবার রাতের বেলায় কড়া আলোর ঝলকানি দিয়ে আমার বাইক চালাই। রোডটা ক্লিয়ার দেখার জন্যে। সেফটির প্রশ্নে এটা ঠিক। কিন্তু অপজিট সাইড থেকে যে আসে তার তো চোখের বারটা বাজে । সেটা ধর তুমি নিজে। তাই দিন হোক রাত হোক সেড নামিয়ে চালানোটাই ভাল। কিছুদিন আগে, ক্যামেরার ফ্লাসে এক বাচ্চা অন্ধ হয়ে গেছে। আবার সাভারে অতিরিক্ত আলোর ঝলকানিতে চোখে অন্ধকার দেখছিল। তার পরপরই সে রাইডার এক্সিডেন্ট করে।
আজ আপাদত এই। ভাল থেক বন্ধুরা।
লিখেছেনঃ Azadul Haque