বাংলাদেশে সুজুকি বাইক ইনস্টলমেন্টে কেনার সুযোগ
This page was last updated on 04-Jul-2024 08:11am , By Shuvo Bangla
বাংলাদেশে খুব কম মোটরসাইকেল কোম্পানীই তাদের কাষ্টমারদের জন্য ইনস্টলমেন্ট এ বাইক কেনার সুযোগ দিয়ে থাকে । তার ভেতর বেশীরভাগই চাইনিজ কোম্পানী এবং তাদের প্রোডাক্ট এর মানও খুব একটা ভাল হয় না । কারণ , চাইনিজ প্রোডাক্ট সম্পর্কে বাংলাদেশে বহুত কমপ্লেন আছে । কিন্তু খুশির সংবাদ হল এই যে বাংলাদেশের র্যানকন মোটরবাইক লিমিটেড যেটা বাংলাদেশে সুজুকি মোটরসাইকেলের ম্যানুফ্যাকচার করে থাকে এরা বাংলাদেশের সমস্ত মোটরসাইকেল কমিউনিটির জন্য ইনস্টলমেন্টে সুজুকি বাইক কেনার একটা অফার দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।
প্রথমে তাদের প্রোডাক্ট সম্পর্কে একটু জানা যাক । বাংলাদেশে সুজুকির ৫ টি মডেলের বাইক রয়েছে । তাদের নতুন বাইক সুজুকি জিক্সার যেটা বাংলাদেশে এসেই একটা হইচই ফেলে দিয়েছে , এবং এটা বাংলাদেশের গত ৩ মাসের সবথেকে বেশী বিক্রিত মোটরবাইক । বাইকটি যথেষ্ঠ স্টাইলিম এবং এটা রোডে ইয়ামাহা এফজেডএস কেউ হার মানাতে সক্ষম হয়েছে । আর সেই কারণে এর বিক্রিও সেই পরিমাণে ।
আমি কিছুদিন আগে আমার বন্ধুদের সাথে ঢাকার ধানমন্ডি লেকে গিয়েছিলাম এবং আপনারা হয়ত বিশ্বাস করবেন না যে সেখানে ২৫+ জিক্সার বাইক ছিল । হয়ত আমি একটা বাইক ২ বার দেখে থাকতে পারি , তারপরও এটার সংখ্য নেহাতই কম ছিল না । আপনি ঢাকাতে সব স্থানেই প্রচুর পরিমাণে জিক্সার বাইক দেখতে পাবেন । আর বাংলাদেশের যুব সমাজ এটাকে FZS এর একটা বিকল্প হিসেবে নিয়েছে কারণ এটা পাওয়ার এবং মাইলেজ উভয় দিক থেকেই FZS এর থেকে ভাল পারফরমেন্স দেয় ।
Suzuki Hayate হল বর্তমানে বাংলাদেশের ১০০-১২৫ সিসির বাইকের ভেতর অন্যতম ভাল পারফরমেন্সের একটা বাইক । এটা একটা ছোট বাইক কিন্তু এটার পাওয়ার ও মাইলেজ আপনাকে মুগ্ধ করবে । বাইকটি বেশ স্টাইলিশ এবং এটার একটা বেশ পাওয়ারফুল ১১৩ সিসির ইন্জিন রয়েছে এবং নাইট রাইডিং এর জন্য একটা খুবই শক্তিশালী হেডলাইট রয়েছে ।
Also Read: ২ লক্ষ টাকার মধ্যে সুজুকি বাইক এর দাম | বাইকবিডি September 2023
সুজুকি জিক্সারের যেমন একটা খুবই ভাল মার্কেট তৈরী হয়েছে বাংলাদেশে , ঠিক তার বিপরীত কাহিনী হ লসুজুকি স্লিংশট এর । সত্যি কথা বলতে আমি এখনও এই বাইকটা বাংলাদেশের রোডে লাইভ দেখিনি । বাইকটি অন্যান্য ১২৫ বাইকের তুলনায় খুবই কম পাওয়ারের এবং একারণে এটা অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশে মার্কেট পাচ্ছে না । এবং এটা কোনদিন বাংলাদেশে মার্কেট পাবে কীনা এটা নিয়ে যথেষ্ঠ সন্দেহ আছে ।
সুজুকির আরেকটা বেশ ভাল বাইক হল GS150R । এটা দেখতে বেশ বোরিং ও ওল্ড লুকের লাগতে পারে এবং আপনার মনে হতে পারে যে এই বাইকটা শুধুমাত্র ৪০+ বয়সের মানুষদের জন্যই । কিন্তু আমি নিজেই এটা নিয়ে ১১৫০ কিলোমিটার কভার করেছি একটানা এবং এটা একটানা একটা রাইড ছিল যেটা আগে শুধুমাত্র হোন্ডা ট্রিগার এবং লিফান কেপিআর নিয়েই কভার করা হয়েছে ।
বাইকটির পেছনের সাসপেনশনটা ছিল চরম আরামদায়ক । এই কারণে বেশ চিকন পেছনের চাকা ও আপনার পেছনে একটা বিশাল ওজন থাকলেও আপনি বাইকটি নিয়ে কখনও বোরিং ফিল করবেন না । অবশ্য বাইকটিতে কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে , কিন্তু ইন্জিনের দিক থেকে দেখলে আমি বলব যে এটার ইন্জিন জিক্সার থেকে অনেক বেশী রিফাইনড ।
সুজুকির অবশ্য একটা স্কুটারও রয়েছে যেটা সম্পর্কে আমরা খুব একটা বেশী টেষ্ট করিনি , তাই এটার সম্পর্কে খুব বেশী কিছু লিখতে পারলাম না ।
এখন , আসল প্রশ্নে আসুন , র্যানকন মোটরসাইকেল সুজুকি বাইক ইনস্টলমেন্টে কেনার সুযোগ দিচ্ছে । এজন্য কী কী লাগবে ?
প্রথমত আপনার ইষ্টার্ন ব্যাংকে একটা একাউন্ট লাগবে , আপনার অবশ্য ওই ব্যাকের ক্রেডিট কার্ডও থাকতে হবে । আপনাকে বাইক লোনের টার্ম ও কন্ডিশনগুলো মেনে একটা ফর্ম ফিল আপ করতে হবে এবং তারপরও আপনি ইষ্টার্ণ ব্যাংক এর মাধ্যমে ইনস্টলমেন্টে সুজুকি বাইক কেনার সুযোগটি গ্রহণ করতে পারবেন ।
ধরুন , আপনি একটা সুজুকি জিক্সার ইনস্টলমেন্টে কিনতে চাইছেন । যেটার দাম বাংলাদেশী টাকায় ২,৩৫,০০০ টাকা । আপনাকে ১০০০০০ টাকা প্রথমেই পে করতে হবে এবং বাকী ১৩৫০০০ টাকা আপনি ৩ , ৬ বা ৯ মাসের কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবেন । আর মাসিক কিস্তি নেবার আগে এটাও ভেবে রাখবে যে আপনি প্রতি মাসে আপনার কিস্রি টাকাটা ব্যাংকে রাখতে পারবেন যাতে করে ব্যাংক এটা আপনার একাউন্ট থেকে কেটে নিতে পারে ।
ইষ্টার্ন ব্যাংকের মাধ্যমে সুজুকির বাইক কেনার সবথেকে বড় সুবিধা হল এর জন্য আপনাকে কোন সুদ প্রদান করতে হবে না । শুধু মাত্র Hayate এবং Gixxer বাইকই ৯মাসের ইনস্টলমেন্টে কেনা যাবে । আর বাদবাকীগুলোর জন্য আপনাকে ৬ মাসের ইনস্টলমেন্টে কিনতে হবে । দুঃখের বিষয় হল GS150R এর জন্য কোন ইনস্টলমেন্ট সুবিধা নেই ।
নীচে সুজুকি মোটরসাইকেল কেনার জন্য প্রয়োজনীয় সব তথ্য ও হটলাইন দেওয়া হল :
আমার মনে হয় বাংলাদেশের বাইক এর জগতে এটা একটা যুগান্তকারী উদ্যোগ । অনেক মানুষই অনেকদিন ধরে একটা ভাল ম্যানুফ্যাকচার কোম্পানীর এই ইনস্টলমেন্টে সুবিধার সাথে বাইক বাজারে ছাড়ার অপেক্ষায় ছিলেন । এবং অবশেষে তাদের আশা সত্যি হতে চলেছে ।
আমি আশা করি অন্য ম্যানুফ্যাকচার কোম্পানীগুলোও বাইকারদের জন্য এই ইনস্টলমেন্টে বাইক কেনার একটা সুযোগ করে বাংলাদেশের বাইকিং খুতকে আরও উন্নত করে তুলবেন । বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়ে কোনদিনই আগ্রহী ছিল না , তাই বাইক ম্যানুফ্যাকচার কোম্পানী গুলোকেই এই বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে ।
লেখকঃ ওয়াসিফ আনোয়ার