বগা লেকঃ একটি দুঃসাহসী মোটরবাইক অভিযাত্রা
This page was last updated on 06-Jul-2024 04:50am , By Ashik Mahmud Bangla
লাস্ট টুর বাংলা বান্দা 0 মেনিয়ার পর অনেক দিন ধরেই কোথাও যাওয়া হচ্ছিল না |সবাই একটা টুর এর জন্য উদগ্রীব হয়ে ছিল, কিন্ত নানা বাধায় তা আর হচ্ছিল না |17-02-15 হটাৎ একটা ফোন ওপাশ থেকে-"ভাই 20, 21 বন্ধ কোথাও যেতে চাই যাবেন",ডেসটিনেশন না শুনেই হ্যাঁ করে দিলাম, পরে শুনলাম ডেসটিনেশন বগা চ্যালেঞ্জে | শুরু হল স্টাডি, আমাদের আগে যারা গিয়েছে তাদের গল্প পড়ে চোখ কপালে উঠল,কিন্তু এখন আর পেছনে যাওয়ার সুযোগ নেই |
শুরু হল প্রস্তুতি , 19-02-15 যথারীতি আবার ফোন এল ওপাশ থেকে -"ভেসে এল অল সেট " , হুম , "ইনশাআল্লাহ, উই উইল রোল টুমোরো মর্নিং" |
মুঠোফোনের ওপাশে ছিল আমার দেখা সবচেয়ে ঠান্ডা ও সেফ রাইডার, যার মূল মন্ত্র -"সেফটি ফার্স্ট " তিনি হলেন # মারুফ আল রশীদ |
# দুই এ আমি অসীম নাফিস আদর
# তৃতীয় তে ছিল আমাদের শহিদুল হক জনি
ডেসটিনেশন : বগা লেক, রুমা, বান্দরবান
রুট : ঢাকা-কুমিল্লা-চিটাগং-লিচু বাগান-বান্দরবান-রুমা-বগা লেক
রাইডার : মারুফ ভাই, আদর আর জনি জয়েন করবে বান্দরবান থেকে
বাইক : এফ জি, ফেজার
শুরু হল যাত্রা
20 তারিখ সকালের ছোট একটা ঝামেলা বেধে গেল | মারুফ ভাই আমাকে ছাড়াই রওনা দিয়ে দিল, আমি পরে হাইওয়ে ইন (কুমিল্লা) গিয়ে তার সাথে যুক্ত হলাম, হালকা নাস্তা সেরে সকাল 11 টায় চিটাগাং এর উদ্দেশ্য রওনা দিলাম।
বেলা 1:30 এ চিটাগাং সিটি গেট, আগেই সময় নষ্ট করে ফেলেছি বিধায় আর ব্রেক নিলাম না | চিটাগাং থেকে ট্যাংক লোড করে, কাপ্তাই রোড এর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে দিলাম, কাপ্তাই রোড এর মাঝ পথে একটা ফেসবুকিং বিরতি |
এর মধ্যেই চকলেট, বিস্কুট, পানি আর ব্লাক কফি দিয়ে সেরে নিলাম, কারণ সময় ক্ষেপণ করা যাবে না, এবার লিচুবাগান দিয়ে যেতে হলে ছোট একটা ফেরি পার হতে হয় | ফেরি ঘাটে সাথে সাথে ফেরি পেয়ে গেলাম, বাইক পার্ক করে একটা ছবি তুলতেই নদী টা পার হয়ে গেলাম।
এবার একটু ব্রেক না দিলেই নয় | কারণ সামনে পাহাড়ী রোড। যাতে প্রচুর মনোযোগ দরকার একটু ব্যাঘাত ঘটলেই ঘটে যাবে দুর্ঘটনা | ব্রেক এর সময় রীতিমতো ভির, সবাই মারুফ ভাই কে দেখতে ব্যস্ত, এমন ফুল প্যাকেজ সেফটি গিয়ারস্ সহ বাইক রাইডার তারা আগে আর দেখেনি |
এর মধ্যেই ফোন , ওপাশ থেকে -"ভাই আমি তো এসে হাজির, আপনারা কই? "| জনি ভাই চকরিয়া থেকে বান্দরবান টাউন এসে হাজির , অতএব , আর দেরি না করে আবার শুরু, কিন্তু একটু এগোতেই একটা বিশাল ঢাল 4th গিয়ারের 75 কিমি গতি মুমুহুর্তে 22 কিমি হয়ে গেল, বুঝতে পারলাম বান্দরবান এর রোড|
মোহ টা কেটে গেল, সিরিয়াস হয়ে উঠলাম, চোখের দৃষ্টি শুধু রোড এর দিকে , হঠাৎ শুনি গোলাগুলির শব্দ , একি ভাই পাহাড়ে ও হরতাল এ ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে? ??? আর দেখি আগুন আগুন আগুন! ! ! ঝটপট পরিস্থিতি বুঝতে বাইক সাইড , এখন দেখি ককটেল নয় জুম চাষের জন্য আগুন লাগানো হয়েছে, আর সেই আগুনে বাঁশ পুরে বাঁশ ফুটছে যা ককটেল এর থেকেও বিকট শব্দ ,
পাহাড়ের গা বেয়ে কর্ণারিং করতে করতে 4:30 বিকাল এ বান্দরবান জনি ভাই এর বাড়ির সামনে , কোন সময় নষ্ট নয় জনি ভাই কে আমার পিলিওন, আর মারুফ ভাইয়ের বাইক কে মাল টানার ট্রাক বানিয়ে রুমা অভিমুখে যাত্রা।
রুমার পথে
বান্দরবান থেকে রুমা যাওয়ার পথে Y জংশন পর্যন্ত খুবই সুন্দর রোড, এর পর থেকে যত ভয়াবহতার শুরু , ছোট বড় মিলিয়ে মোট 41 টি ব্রীজ এই 29 কিমি তে, স্টিল, পাকা আর কাঠের ব্রিজ তাও পঁচা, আর কাঠের ব্রিজের সেনাপতি বড় বড় তারকাটা বা গজাল, এই বুঝি টায়ার গেল মনে করে ব্রিজ গুলো পার হতে হয়, তবে স্স্টিল এর গুলো খুবই সুন্দর.
এর পর থেকেই পথ আমাদের সহায় হচ্ছিল না, হটাৎ টার্নিং এর ব্রিজ , পাহাড় ধস নানা কারণে গতি কমিয়ে আনতে হল , মাঝপথে মাগরীবের আজানের জন্য 15 মিনট বিরতি না নিলেই নয়, তবে পার্কিং এর প্লেস টা ছিল ভয়ানক, বাইক থেকে নামার পর অনুভব করলাম পায়ের নিচে মাটি নরম, নিচে তাকিয়ে পুরো গা শিউরে উঠল , আমাদের বাইক পাহাড়ের একটা কোনায় দাড়িয়ে আছে, কিন্ত কিছু করার নেই, বিপরীত দিক থেকে ট্রাক আসছিল, শিহরণ আরো বেড়ে গেল, কিন্তু আল্লাহর রহমত ট্রাক টা অন্য পথে চলে গেল একটা গ্রামের দিকে,
এবার আরো একটা রোমাঞ্চকর পরিস্থিতি পাহাড়ে নাইট রাইড , হলফ করে বলতে পারি এমন কোন রাইডার নেই যে এর রোমাঞ্চ উপভোগ করবেন না, কিন্ত রোমাঞ্চ টা ছিল কিছু ক্ষণের, ঐ যে কপালের লিখন যায় না খন্ডন , বগা লেক যাওয়ার জন্য কিছু টেস্ট এক্সাম দিতে হবে, আর মাত্র তিন কিমি বাকি রুমা বাজার যেতো।
এই গেলাম গেলাম পরিস্থিতি সামাল দিতে দিতে পৌঁছে গেলাম রুমা বাজার এ, বরাবরের মতোই স্থানীয় দের ব্যপক ভির, আগে থেকেই রুম বুকিং দেয়া ছিল , চার জনের শোবার জন্য ডাবল বেড 1000 টাকা , অনেক ভাল এতটা ভাল আশা করি নি, বিদ্যুৎ প্রথমে না থাকলেও পরে সব ঠিকঠাক।
হোটেল আরণ্যক রিসর্ট , হোটেল এ উঠে ফ্রেশ হয়ে এবার একটু রুমা বাজার চষে বেড়ালাম, স্থানীয় বাজারের হোটেলে খেতে বসলাম * মেনু গরুর নলি , নদীর রুই, বাধা কপি ভাজি, ভাত, পরটা আর আকালি (কাঁচা মরিচ ) , তিজন ভাতের উপর ঝাপিয়ে পরলাম, হোটেলে ফিরে রুমা যাবার কিছু নিয়মের কথা শুনলাম , গাইড ছাড়া যেতে দিবে না আর্মি, বরাবরের মতই জনি ভাই এর নেটওয়ার্ক এ ঝড়, জনি ভাই ইউনিসেফ এ চাকরি করতেন বিধায় স্থানীয় এক কর্মী কে বলে রাখলেন , এতপর কিছু প্ল্যানিং সেরে ঘুম ।
রুমা টু বগা লেক
21-02-15
ভোর রাত 05:30 টা কানে ভেসে আসে শ্লোগান -"গালিব তোমার রক্ত বৃথা যেতে দেব না " লাফিয়ে উঠে চিন্তা ভাবনা করতে লাগলো সবাই "গালিব" ভাষা আন্দোলনে কোন শহীদের নাম, পরে জানতে পারলাম গালিব অর্থ শহীদ, ভোর 6 টায় বগা লেক এর উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। মোট রাস্তা নাকি প্রায় 23 কিমি , কিন্তু শুরুতেই ধাক্কা চোখের সামনে রাস্তার কিছু অংশ ভেঙে পড়ে গেল।
কিন্তু 370 কিমি পথ পাড়ি দিয়ে এখন 23 কিমি এর জন্যে ভয় পেলে তো আর চলবে না, শুধু একটা কথাই মাথায় আসলো আজ ও কি সারা দিন ফার্স্ট গিয়ারে দিন কাটবে ? আল্লাহ র নাম নিয়ে আবারও সামনে এগিয়ে যাওয়া , ঢাকায় যখন হরতালের গরম আর মেঘের অবরোধ চলছিল তখন কে না চায় এমন একটা কুয়াশায় আচ্ছন্ন সকাল।
এই ব্রিজ এর পর থেকে অন্য পাড়া শুরু , ইটের রোড কিন্তু আমরা একটু এডভেন্চার এর জন্যে শর্টকাট নিলাম , আবারো পাহাড়ের গা বেয়ে কিন্তু এবার পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়ে দাঁড়ায়
এফ জি এর টপ স্পীড 14 কিমি এত ঢাল ছিল যে 2 ও 3 নাম্বার গিয়ার কি জিনিস ভুলে ইইই গেছিলাম , মজার ব্যাপার হলো এখানে প্রতিনিয়ত হর্ন দিয়ে চালাতে হয়, কোন মোড়ে যদি হর্ন বাজাতে ভুলে যান, আর আর্মিদের গাড়ি এসে পড়ে তাহলে ডিব্বা কাইত গুনতে হবে আর্থিক জরিমানা আর কায়িক শ্রম , এভাবে প্রায় 11 কিমি পাড়ি দিয়ে পৌছালাম টাম বাগানে, (টাম মানে কাজু বাদাম) ছোট একটা ব্রেক , কারণ গাইড বলল সামনে রোড নাকি ভালো না , ভয়ে একটা আস্ত স্নিকার্স চকলেট খেয়ে ফেললাম , এবার আরও সাবধানতা অবলম্বন করে যেতে থাকলাম, একটা কর্নার নিম্ন মুখি ঢাল এ এসে আওয়াজ পেলাম পিলিওন নামাতে হবে রোড ভালো না, টার্নিং টা নামতেই রোড দেখে গাইড কে জিজ্ঞেস করলাম , ভাই আশেপাশে হাসপাতাল কই আছে? গাইড -"কেন? " বললেন রোড ভালো না, আরে ভাই রোড কই?
প্রায় 1 কিমি দীর্ঘ ঢাল নামতে সময় লাগলো 30 মিনিট, মাঝপথে হঠাৎ মারুফ ভাই স্লিপ করল হালকা উপর বাম্পার এর উপর দিয়ে গেল , কমপাস এ মেপে দেখি 46 ডিগ্রি , এই ঢাল শেষেই কমলা বাগান গ্রাম.
একটা ব্রেক না নিলে আর হচ্ছে না , ঐ 1 কিমি নির্বোধ পাহাড়ের অফ রোড রাস্তা আমাদের ঘামিয়ে পুরো গোসল করিয়ে ফেলেছে , এককাপ চায়ের অভাব দূর করলাম, আবারো রীতিমতো সবাই মারুফ ভাই কে দেখতে ভিড় , কিন্তু এই বার বাচ্চাদের ভীড় সামলাতে সাথে থাকা সব গুলো স্নিকার্স শেষ করতে হল, আর আমি ব্যাস্ত হয়ে পরলাম কিছু স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে যারা আমাকে ঘিরে ধরেছিল কিছু এনড্রয়েড এপস দিয়ে যেতে হবে, দেখতে ভালোই লাগে যে এমন দুর্গম এলাকার বাসিন্দারা পুরো দমে স্মার্ট ফোন এর মজা লুটছেন।
আবার ও যাত্রা শুরুর প্রস্তুতি নিয়ে রওনা দিলাম, এবং করে ফেললাম আমাদের টুরিং জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল, আমাদের পানির বোতল খালি ছিল, পানি ভরতে খেয়াল ছিল না , এরপরে আরও একটা বাজার, জিজ্ঞেস করলাম বাইক নিয়ে যাওয়া যাবে , এক জন বলল যাবে, রাস্তা আছে, সামনে যেয়ে দেখলাম রাস্তা আছে ঠিক, কিন্তু এটা কি রাস্তা , প্রায় 50 ডিগ্রি ঢাল বেয়ে উপরে উঠতে হবে, আমি সবসময়ই মারুফ ভাই কে ফলো করে রাইড করি, কিন্তু হঠাৎ একটি ঢালে এসে সবাই হতবাক, কিন্তু বাইকের মোমেন্টাম যাতে নষ্ট না হয়ে যায়, তাই সোজাসুজি চোখ বন্ধ করে টান, ফ্রন্ট ব্রেক ছাড়াই বার্ন আউট হয়ে চলেছে কিন্তু এফ জি এর টায়ার হাল ছেড়ে দেয় ঐ ঢালের v টার্নিং এ আর সাথে সাথে বাইক নিয়ে গড়িয়ে পরলাম প্রায় 7 ফিট দূরত্ব, বুঝতে পারলাম টেকনিক বদলাতে হবে।
এবার মাঝ দিয়ে নয়, সাইড বেয়ে উঠে চললাম, অফ রোড এডভেন্চার এর শেষ কোথায় , এভাবে করে পৌছালাম ডেথ জোন এ উপরে তাকিয়ে আগেই মনে পড়ল বগা লেক এ হাসপাতাল নেই।
কিন্তু এর শেষ কোথায় জানতাম না, 72 ডিগ্রি ঢাল আর 500 ফিট লম্বা, আর পাশে 1000 ফিট খাই তে দাড়িয়ে অটিটিউড এর কারণে যখন কান বন্ধ তখন ঢোক গেলার মত আর কিছু বাকি নেই ঐ যে আগেই একটি ভুল করে ফেলেছি, কিন্তু যার কেউ নেই তার উপরে আল্লাহ আর নিচে গুগল আছে , ভাই এখানে গুগল ও নেই, আমি অনেক আগে ছিলাম , মারুফ ভাই একটু পেছনে ছিল, তাই আর অপেক্ষা না করে, একাই , আমি যখন ঢালের 50 উপরে 10500 আর পি এম এ বার্ন আউট এর সাথে যুদ্ধ করছি , তখন মারুফ ভাই বাম পাশ দিয়ে উঠতে উঠতে দু জনের বাইক ই হাল ছেড়ে দিল,
যখন শরীরের শক্তি আর মনের জোরে বাইক উঠাতে লাগলাম তখনই ঘটে গেল আমাদের সবচেয়ে ভয়ের ঘটনা , নিচ থেকে একটি ট্রাক উপরে যাবে দার্জিলিং আদা আনতে, আর উপর থেকে একটি আর্মির জীপ নিচে নামবে , মাঝপথে আটকে আমরা সেন্ডুইচ , আর্মি র জীপ নিয়ে টেনশন ছিল না, একটি হর্নে থেমে গেল.
পাহাড়ের একটি মজার ব্যাপার হলো দূর থেকে কোন যানবাহন আসলে বুঝতে পারবেন , কিন্তু ট্রাক টা কে থামাতে বেশ বেগ পেতে হলো, ট্রাক টা কে জায়গা দিতে আমাকে আরও 100 ফুট উঠে সাইড করতে হবে, উপরে একটু চওড়া, কিন্তু প্রায় 50 ফুট 62 ডিগ্রি ঢাল বেয়ে উঠে আমার শরীরে শেষ শক্তি টুকু হারিয়ে ফেলেছি , কোন মতে ট্রাক টাকে সাইড দিয়ে আমি রীতিমতো শুয়ে পরলাম।
বেশ কয়েকটি সমস্যা ঘটে গেল ঐ যে বলেছিলাম টুরিং লাইফ এর সবচেয়ে বড় ভুল, সাথে থাকা পানি শেষ . মুখে মাটি আর অটিটিউড এর কারণে কান বন্ধ কিন্তু ঢোক ও গেলা যাচ্ছে না ট্রাক কে সাইড দিয়ে রীতিমতো পাহাড়ের ধারে শুয়ে পড়লাম . একটু রেস্ট এর পর আবারও শুরু করে দিলাম সব ধরনের চেষ্টা করার পর একটা উপায় কাজে লাগলো, একজন বাইক এক্সালেরেট করবে আর একজন গ্রেব রেইল ধরে মাটির দিকে পুশ করবে ট্রেকশন দেবার জন্য কিন্তু চালিয়ে কম ঠেলে বাইক উঠলাম বেশি অতপর ডেথ জোন পার করার পর খুশী আর কে দেখে কিন্তু পায়ের ব্যাথায় অনেক কিছু ম্লান হয়ে গেল . বগাতে উঠে একটা লেক এর চেহারা দেখে মন ভরে গেল, বাইক কোনো মতে সাইড করে অঙ্গান এর মত শুয়ে পড়লাম.
কিছু সময় পর আসল সৌন্দর্য টা উপভোগ করতে পারলাম, সব কস্ট ভুলে গেলাম পাহাড়ের উপরে এমন সৌন্দর্য আর এই বিশাল,
লেক না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন, এরপর শুরু হলো পেঁপে , আখ আর সাথে নেমে আসার বিষয়ে প্ল্যানিং, কিন্তু মারুফ ভাইয়ের ডিহাইড্রেশন আর আমার পায়ে ব্যথার কথাটা চিন্তা করে আর অন্য কোন সিদ্ধান্ত না নিয়ে আমারা 4WD তে নামার সিদ্ধান্ত নিলাম , গাড়ি কল করে, এবার দুপুরে খাওয়ার জন্য প্রস্তুতি বরাবরের মতই সিয়াম দিদি কে বলতেই গ্রীন সিগন্যাল ।
এই ফাকে গোসল টা না করলে বগা লেকে সব কস্ট ব্যার্থ, তিন জন ই নেমে পরলাম নীল পানিতে।
এক ঘন্টার মধ্যে খাবার রেডি ভাত, ডিম ভাজি, শুটকি , করলা ভাজি , ডাল আর স্পেশাল শুকনো মরিচ ভর্তা, সবাই ভাত এর বোল এ ঝাপিয়ে পড়লাম , খাওয়া শেষ করে পুরো বগা লেক এলাকা ঘুরে ফোন পেলাম গাড়ি আসতে আরও সময় লাগবে , এই সুযোগে একটু পাওয়ার ন্যাপ আর ফটোগ্রাফির উপর দিয়ে কাটালাম ।
এর মধ্যে গাড়ি এসে হাজির, বাইক গাড়িতে প্যাক করে সবার থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসার সময়।
অনেক গুলো সৃত্নি পেছনে ফেলে চলে আসলাম রুমা বাজার , রুমা বাজার থেকে বান্দরবান এসে নাইট হোল্ড আর আমাদের বিশিষ্ট জনি ভাই কে বিদায় দিয়ে রাতের খাবার সেরে ঘুম, পর দিন খুব সকালে উঠে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা .............................
লেখকঃ অসীম নাফিস আদর