টিভিএস এপাচি আরটিআর ৪ভি ডুয়েল ডিস্ক ইউজার রিভিউ - সাব্বির হাসান
This page was last updated on 13-Jul-2024 09:35pm , By Ashik Mahmud Bangla
আমি সাব্বির হাসান। নিজের নিত্যদিনের প্রয়োজনের তাগিদে এবং ঘুরাঘুরির স্বপ্নগুলো পূরণ করতে আমি বাইক ব্যবহার করে থাকি। একেক জনের কাছে একেক বাইক পছন্দের, মানুষ একটি বাইক কিনে নানা দিক বিবেচনা করে, আর আমার কাছে যে কোন বাইকের রেডি পিকাপ এবং লুক্স বেশি গুরুত্ব পায় । আর সেজন্য এই আমি এখন রাইড করছি টিভিএস এপাচি আরটিআর ৪ভি ডুয়েল ডিক্স ।
আমার বাইক রাইডিংটা শুরু হয়েছিলো টিভিএস এপাচি আরটিআর ১৫০ সিসি বাইক দিয়ে। আমার পছন্দের রঙ নীল তাই বাইকটিও ছিলো নীল রঙের। বাইকটি আমি অনেকটা সময় ব্যবহার করেছি, তেমন কোন সমস্যা হয়নি আমার। এরপর হাতে পেলাম টিভিএস এপাচি আরটিআর ১৬০ ৪ভি ডুয়েল ডিস্ক । এবারে ও নিয়েছিলাম পছন্দের নীল কালারটা,যদিও এতে সাদার মিশ্রণ আছে ।
প্রায় ৮৫০০+ কিলো চালিয়ে আজ আপনাদের কাছে বাইকটার ইউজার রিভিউ নিয়ে এলাম । এই ৮৫০০+ কি.মি এর মধ্যে ছিলো বেশ কিছু হাইওয়ে রাইড এবং সিটি রাইড । আজ আমি আমার রিভিউ তে বাইক্টির ভালো এবং খারাপ দিক তুলে ধরবো ।
এপাচি আরটিআর ৪ভি ডুয়েল ডিস্ক
ডিজাইনঃ কালারের ব্যাপারটা ছাড়া বাইকের ডিজাইন আমার কাছে এক কথায় অসাধারন লেগেছে। অন্যান্য বাইক থেকে সম্পুর্ন ব্যতিক্রম এই বাইকের ডিজাইন । একটু ডান দিকে ঢাকনাযুক্ত উচুঁ ফুয়েল ট্যাংক বাইকটিকে নতুন একটি লুকস প্রদান করেছে। বাইকটির ডিজাইনগত কারনে বাইকটি খুব সহজে যে কারো মনে জায়গা করে নিবে। তবে অনেকের কাছে সাইডে তেলের ক্যাপটা নাও ভালো ও লাগতে পারে। সেই সাথে রয়েছে আরামদায়ক পাইপ হ্যান্ডেলবার। এর ফলে আমি সিটি এবং হাইওয়ে রাইডে দারুণ কম্ফোর্ট ফিল করি।
কালারঃ টিভিএস এপাচি আরটিআর ১৬০ ৪ভি বাইটি লাল, নীল আর কালো – এই তিনটি কালারে পাওয়া যায়। যেহেতু আমার আগের বাইকটি আরটিআরের ম্যাট নীল রঙের সিঙ্গেল ডিস্ক ছিল, তাই এবার আমার পছন্দ নীল রঙের আরটিআর ৪ভি ডাবল ডিস্ক বাইকটি বেছে নিয়েছি । অনেকের কাছে গ্লোসি নীল ভালো লাগে,আবার অনেকে কাছে ম্যাট নীল ভালো লাগে। তবে আমার পছন্দ গ্লোসি নীল। কিন্তু একই বাইকে নীল-সাদা-এ্যাস কম্বিনেশনটি আমার ভালো লাগেনি।
ব্রেকিংঃ আরটি আর বাইকের ব্রেকিং নিয়ে আছে নানা রকম বিতর্ক। বাইকটি নেয়ার আগে অনেকেই আমাকে সাবধান করেছিলেন শুধু মাত্র এর ব্রেকিং এর জন্য । তবে আমি সবার সাথে একমত না কারন এর পেছনের ডিস্ক ব্রেক টি এক কথায় অসাধারণ। চাকা আগের থেকে প্রসস্থ হওয়ায় পিছের ব্রেকটি যে কোন পরিস্থিতিতেই অসাধারণ সাপোর্ট দেয়।
কিন্তু এর সমনের ডিস্ক ব্রেক টি আমাকে হতাশ করেছে। আমার কাছে মনে হয়েছে ব্রেকটি আগের আর টি আর গুলোর মতন, এতে নতুন কোন সংস্কার করা হয় নি। হাইস্পীডে ব্রেক করতে গেলে ব্রেকটি হুট করে লক হয়ে যায়। তবে দুটি ব্রেক সমতালে প্রেস করলে ভালো ফোল পাওয়া যায়। বাইকের গতির সাথে তাল মিলিয়ে এর সমনের ব্রেক টি আরো ভালো করার দরকার ছিল।
ফিচারঃ বাইকটিতে যুক্ত করা হয়েছে সম্পূর্ণ নতুন ডিজাইনের স্পীড মিটার, যাতে রয়েছে এবিএস ইন্ডিকেটর , টপ স্পিড রেকর্ডার,০-৬০ স্পিড রেকর্ডার, ট্রাপেজিয়াম হ্যালোজেন হেডলাইট সহ আরো কিছু ফিচার। সব মিলিয়ে এর ফিচারগুলো আমাকে স্পোর্টস বাইকের সম্পূর্ণ ফিল দেয়। কিন্তু গিয়ার সংকেত না থাকায় নতুনদের বেশ সমস্যা হতে পারে।
মাইলেজঃ এর মাইলেজ টা একটু মনে হয়ছে। কিন্তু যখন রেডি পিকাপের দিকে লক্ষ করি তখন এই সামান্য কম মাইলেজ আমার কাছে তেমন কোন বড় ব্যাপার মনে হয় না।
স্পীডঃ বাইকের গতিটা আমি খুব পছন্দ করি,আর সেই দিক থেকে আমি খুব সন্তুষ্ট। বাইকটির রেডি পিকাপ অসাধারণ, যা সিটি এবং হাইওয়ে রাইডে আমাকে অন্যরকম আত্নবিশ্বাসী করে তোলে। মাত্র কয়েক সেকেন্ডে খুব স্মুথলি ০-১০০ উঠে যায় এটা আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। সবচেয়ে অবাক করা যে ব্যাপারটি আমার কাছে লেগেছে সেটা হচ্ছে এর টপ,বাইকটি ডাবল স্টান্ডে আমি ১৪৯ টপ স্পীড পেয়েছি।
TVS Apache RTR 160 4V Review By Team BikeBD
সিটিং পজিশনঃ বাইকটির সিট বেশ লম্বা এবং চওড়া,যার ফলে রাইডিং এর সময়ে অন্য রকম কম্ফোর্ট পাওয়া যায়। পিলিয়ন সিটটি বেশ চওড়া হওয়ার খুব সহজেই যে কোন স্বাস্থের মানুষ এতে রিলাক্সে বসতে পারবে। তবে যাদের হাইট একটূ কিমি. তাদের জন্য চওড়া সিট সমস্যার কারন হয়ে দাঁড়ায়। তবে যদি বাজেট স্পীড এবং অন্য সব দিক বিবেচনা করা হয় তাহলে এটা অবশ্যই সেরা একটি বাইক। তবে আমার কাছে মনে হয় যারা আরটিআর এর ব্রেক সম্পকে ধারনা রাখেন না তাদের জন্য এই বাইক না নেয়ায় উত্তম।
তবে টিভিএস এপাচি আরটিআর ৪ভি এর আগে তাদের অন্য একটি ১৬০সিসি এর মোটরসাইকেল ছিল । বাইকটির লুকস ডিজাইন এবং স্টাইল হচ্ছে টিভিএস আরটিআর ১৫০ এর মত । বাইকটি হচ্ছে টিভিএস আরটিআর ১৬০ । আমি আমার এপাচি আরটিআর ৪ভি ডুয়েল ডিস্ক বাইক বাইকটির পারফর্মেন্স নিয়ে অনেক হ্যাপি । আপনি যদি এই বাজেটে লুকস, ডিজাইন ও স্টাইলিশ বাইক কিনতে চান তবে এপাচি আরটিআর ৪ভি নিতে পারেন । ধন্যবাদ সবাইকে ।
লিখেছেনঃ সাব্বির হাসান
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন।
মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।