ঝড়ো আবহাওয়ায় কিভাবে রাইড করতে হয়

This page was last updated on 11-Jul-2024 04:28am , By Saleh Bangla

শুভেচ্ছা সবাইকে। আমরা সবাই মোটরসাইকেল চালাতে জানি, এবং আমাদের মধ্যে অনেকেই খুবই এক্সপার্ট রাইডার। তবে, একটা কথা নিশ্চিত, যে আমরা সকলেই ঝড়ো আবহাওয়ায় রাইড করতে হিমশিম খাই। তাই আজ আমরা আলোচনা করবো কিছু টিপস নিয়ে, যেগুলো ঝড়ো আবহাওয়ায় রাইড করতে আমাদের সাহায্য করবে।

ঝড়ো আবহাওয়ায় কিভাবে রাইড করতে হয়

আমাদের মধ্যে অনেকেই এমন যাছেন, যারা ঝড়ো আবহাওয়ায় বা বৃষ্টির মাঝে রাইড করেনই না। এবং, আরো অনেকে আছেন যারা ঝড়বৃষ্টির দিনে বাইকের বদলে অন্য যানবাহন ব্যবহার করেন। ঝড়বৃষ্টি একজন বাইকার এর সবচাইতে বড় শত্রুর মধ্যে একটি, এবং বর্তমান মৌসুমে আমরা প্রতিনিয়তই তীব্র ঝড় এবং বৃষ্টির সম্মুখীন হচ্ছি।

বাংলা বছর শুরু মানেই হচ্ছে প্রচুর ঝড় হবার সম্ভাবনা। মনে করুন আপনি প্রখর রোদ্রের মধ্যে দিয়ে বাইক রাইড করে যাচ্ছে, এবং হটাত করেই কালো মেঘ এসে রোদ ঢেকে দিলো এবং তীব্র ধূলিঝড় এবং ভারী বর্ষন শুরু হয়ে গেলো – এমন অবস্থায় আপনার কি করা উচিত?

যখনই আপনি দেখবেন যে তীব্র বাতাস আপনার দিকে ধেয়ে আসছে, তখনই আপনার প্রথম কাজ হবে বাইকটি থামিয়ে একটি নিরাপদ জায়গায় পার্ক করা, এবং নিজে একটি নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়া। সাধারনত এরকম তীব্র বাতাসের সাথে প্রচুর ধূলো উড়ে আসে, কাজেই সেগুলো সম্পর্কে সাবধানে থাকুন এবং হেলমেট এর ভাইজর নামিয়ে রাখতে ভুলবেন না!

ঝড়ের মাঝে রাইড করা খুবই খারাপ একটি আইডিয়া। বাতাসের প্রচন্ড চাপ, ভারী বর্ষন, এবং ধূলো – সবকিছু মিলিয়ে ঝড়ের মাঝে বাইক রাইড করলে দুর্ঘটনা ঘটার বিশাল সম্ভাবনা থাকে। তাই একজন সচেতন রাইডার এর উচিত ঝড়ের মাঝে রাইড করা থেকে বিরত থাকা, এবং ঝড় থেমে গেলে তারপরে আবার রাইডিং শুরু করা।

ঝড়ো আবহাওয়ায় রাইডিং টিপস

আমরা সবাই হয়তো জানি, যে চাইলেও অনেকসময় আমরা থেমে ঝড় শেষ হবার অপেক্ষা করতে পারবো না। অনেকক্ষেত্রেই ঝড়ে থেমে থাকার মতো সময় আমাদের হাতে থাকে না, এবং অনিচ্ছাসত্ত্বেও আমাদের ঝড়ের মাঝে বাইক রাইডিং করতে হয়। এরকম পরিস্থিতিতে নিজের টিপসগুলো মেনে চললে কিছুটা হলেও সুবিধা পাওয়া যাবেঃ

টায়ার প্রেশার নূন্যতম রাখাঃ ঝড়-বৃষ্টির মৌসুমে বাইকের টায়ার প্রেশার রেকমেন্ডেড এর নূন্যতম প্রেশারে রাখুন। ঝড়ের মৌসুমে হটাত করেই ঝড় এবং বৃষ্টির আবির্ভাব ঘটে, এবং তখন টায়ার প্রেশার কমানো সম্ভব না কাজেই, আপনি যদি আগে থেকেই টায়ার প্রেশার মিনিমাম লেভেলে রাখেন, তবে ধূলোযুক্ত অথবা বৃষ্টির সময় রাস্তায় আপনি বেটার গ্রিপ পাবেন।

ধীরগতিতে রাইড করুনঃ যখনই ঝড় শুরু হবে, আপনার বাইকের গতি কমিয়ে আনুন, এবং ধীরে রাইড করুন। কারন ঝড়ো বাতাসে এবং বৃষ্টিভেজা রাস্তায় আপনার বাইক খুব সহজেই নিয়ন্ত্রন হারাতে পারে বা স্লিপ করতে পারে। কাজেই, ঝড়ের সময় খুবই কম গতিতে বাইক রাইড করুন, এবং যেকোন ঝূকিপূর্ন ওভারটেক এবং লেন পরিবর্তন থেকে বিরত থাকুন।

ধীরে ব্রেক করুনঃ ঝড়ো আবহাওয়ায় খুবই ধীরে ব্রেক করুন। যেহেতু রাস্তা বৃষ্টিতে ভিজে খুবই পিচ্ছিল হয়ে পড়ে, হটাত করে ব্রেক করা হলে বাইকের টায়ার পর্যাপ্ত গ্রিপ দিতে পারে না এবং বাইকার দুর্ঘটনার শিকার হয়। কাজেই, বৃষ্টি এবং ঝড়ের সময় ধীরগতিতে ব্রেক করুন যাতে টায়ারে অধিক প্রেশার না পড়ে।

বাতাসের দিকে লক্ষ্য রাখুনঃ অধিকাংশ সময়েই বৃষ্টি বা ধূলো নয়, বরং ঝড়ো বাতাস রাইডারকে বিপদে ফেলে দেয়। সাধারনত ঝড়ের সময় প্রচন্ড জোরে বাতাস বয়, এবং ঝড়ো বাতাসের গতিবিধি পরিবর্তন হয়। কাজেই, বাতাসের গতিবধি লক্ষ্য রাখুন যাতে করে সামনে/পেছনে/পাশ থেকে হটাত করে ঝড়ো বাতাস এসে বাইকের কন্ট্রোলিং এর কোনপ্রকার প্রভাব না ফেলে।

সর্বদা রেইনকোট ব্যবহার করুনঃ এটা খুব সম্ভবত বৃষ্টির মৌসুমে রাইডারদের শোনা সবচাইতে কমন টিপস – তবে, এটা খুবই উপকারী একটি পরামর্শ! যেহেতু এই মৌসুমটি খুবই অনিশ্চয়তায় ভরপুর এবং খা খা রোদের দুপুরেও হটাত করে তীব্র ঝড় শুরু হয়ে যেতে পারে, আপনার উচিত নিজেকে যেকোন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রাখা। কাজেই, সর্বদা রেইনকোট বহন করুন। যেকোন ঝড়ের পরিস্থিতিতে এটা আপনাকে শুকনো রাখবে, এবং ধূলিঝড় এর ক্ষেত্রে আপনাকে ধূলোবালি থেকে সুরক্ষা দেবে।

সর্বদা ফুল ফেস হেলমেট ব্যবহার করুনঃ একজন বাইকার এর প্রথম প্রায়োরিটি হওয়া উচিত একটি ফুল ফেস হেলমেট। একটি ফুল ফেস হেলমেট শুধুমাত্র দুর্ঘটনা থেকেই সুরক্ষা দেয় না, বরং তীব্র বাতাস, ধূলোবালি, এবং বৃষ্টি থেকেও রাইডারকে রক্ষা করে। হাফ ফেস হেলমেট এর ক্ষেত্রে বিশাল সম্ভাবনা আছে যে হেলমেট এর ভেতরে ধূলোবালি এবং বৃষ্টির পানি প্রবেশ করবে, তবে একটি ফুল ফেস হেলমেট  এসবকিছু থেকেই রাইডারকে সম্পূর্ন সুরক্ষা দেয়।

শেষকথা হচ্ছে, এমনকি একজন অভিজ্ঞ রাইডারও বৃষ্টিতে রাইড করার সময় সমস্যায় পড়তে পারে, কাজেই ঝড়ো আবহাওয়ায় রাইড করা থেকে বিরত থাকাই সেরা সিদ্ধান্ত। তবে, যদি একান্তই কেউ ঝড়ো আবহাওয়াতে রাইড করতে বাধ্য হয়, তবে অবশ্যই উপরের বর্নিত পরামর্শগুলো অনুসরন করার অনুরোধ রইলো। সর্বদা সেফলি রাইড করুন, এবং অবশ্যই সর্বদা হেলমেট পড়ে বাইক রাইড করুন।