Shares 2
ফ্রিডম রানার রয়াল প্লাস ১১০ - মালিকানা রিভিউ লিখেছেন অভি
Last updated on 13-Jul-2024 , By Shuvo Bangla
হ্যালো রাইডার্স... আমি শতদ্রু গুপ্ত অভি, বয়স ২৯, সিলেট সদরে থাকি । আমি একটি বেসরকারি ডেন্টাল কলেজের প্রভাষক, পাশাপাশি একটা বেসরকারি হাসপাতালের প্যাথলজি ল্যাবের দায়িত্বে আছি। আমার বাইকটি হচ্ছে ফ্রিডম রানার রয়াল প্লাস ১১০। যে কথাটা না বললেই নয়, বাইকবিডি মোটরসাইকেল ব্লগটি আমার বাইক কেনার সময় অনেক সাহায্য করেছে। আমি এই ব্লগের নিয়মিত পাঠক। এই ব্লগের বাইক চালানো ও মেইনটেইন্যান্সের টিপসগুলোর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। তাই সেই দায়বদ্ধতা থেকে আমারও এই ব্লগকে কিছু দিতে ইচ্ছা করলো। বিশেষ করে আমি যে বাইকটি চালাচ্ছি, ফ্রিডম রানার রয়াল প্লাস নিয়ে রিভিউ তেমন একটা চোখে পড়ে না। তাই রিভিউ লিখতে বসলাম।
আমি প্রথম বাইক চালাতে শিখি ক্লাস সেভেনে থাকতে, ১৯৯৯ সালে বাবার হোন্ডা ৫০ সিসি দিয়ে। হোন্ডা ৫০ বাইক চালানো শেখার জন্য আদর্শ। সেই বাইক দিয়ে আমার কৈশোর কেটেছে। তারপর অনেক দিন বাইক চালানো হয়নি। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বন্ধুর ওয়ালটন ফিউশন ১১০ কয়েকদিন চালিয়েছি। হোন্ডা ৫০ এর পর সেটাই আমার প্রথম বড় বাইক চালানো। তারপর সিলেটে চলে আসার পর অনেক দিন বাইক ধরা হয় নি। চাকরিতে ঢুকার পর প্রথম তিন বছর সিএনজি ও রিকশাতে অফিসে যাওয়া আসা করতাম। কিন্তু দ্বিতীয় চাকরিতে জয়েন করার পর টাইমিং একটা ইস্যু হয়ে দাঁড়ালো। বিশেষ করে অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করার পরেও যখন রিকশা / সিএনজি পাওয়া যায় না। যাতায়াত খরচও একটা ইস্যু হয়ে দাঁড়ালো। তখনই নিয়ত করে ফেললাম বাইক একটা লাগবেই। সেই থেকে প্রতিমাসে টাকা জমানো শুরু করলাম। এমন একটা অবস্থা দাঁড়িয়েছিল, পারলে সেকেন্ড হ্যান্ড একটা কিনে ফেলি।
অনেকে পরামর্শ দিলো সেকেন্ড হ্যান্ড না কিনতে, নতুন বাইক নাকি নতুন বাইকই। কথাটা মনে ধরলো। তাছাড়া বাইকের সব কাগজপত্র নিজের নামে থাকার মজাটাই আলাদা। তাই বেতন বোনাসের টাকা জমিয়ে কিনেই ফেললাম নতুন বাইক। নিজের একটা বাইক চালানো আমার অনেক দিনের শখ। বাসা থেকে অবশ্য বাইক কেনার ব্যাপারে প্রবল আপত্তি ছিল। কিন্তু বাবা-মায়ের সব কথা কি আর মান্য করে চলা সম্ভব! এখন অবশ্য ওদের কাছে বিষয়টা স্বাভাবিক হয়ে গেছে। বাইক কেনার অনেক দিন আগে থেকেই আমি অনলাইনে সেকেন্ড হ্যান্ড বাইক দেখা শুরু করি। পরে সিদ্ধান্ত পাল্টাই।
এক বড় ভাই পরামর্শ দিলেন হিরো ব্র্যান্ডের প্যাশন প্রো ১০০ কিনতে। কিস্তিতে নাকি কেনার সুবিধা আছে। চাচাতো বড় ভাই বললেন ব্যাংক থেকে লোন নেয়া যাবে, যদি টাকা শর্ট পড়ে। একদিন অফিস শেষে আসলাম বসুন্ধরা মোটরস, ইলেকট্রিক সাপ্লাই রোডে। মেঝো ভাইকে সেখানে আগেই পাঠিয়ে দিয়েছি বাইক দেখার জন্য। সেখানে গিয়ে শুনি সিলেটে নাকি কিস্তি সুবিধা নেই । পরে সেখান থেকে গেলাম নাইওরপুল নিটোল মোটরস এর শো রুমে। সেখানেও বলল কিস্তি সুবিধা নেই। হিরো প্যাশন প্রো ভালো বাইক, কিন্তু কাগজ সহ দাম পড়বে প্রায় ১৬১০০০ টাকা, এতো টাকা দিয়ে ১০০ সিসির বাইক কেনার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলাম। বাজেট একটা ফ্যাক্ট। আর ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বাইক কিনতে মন সায় দিচ্ছিল না।
বসুন্ধরা মোটরস এ রানারের বাইকগুলো দেখি। প্রথম দর্শনেই পছন্দ হয়ে যায়। দেশী ব্র্যান্ড, দাম হাতের নাগালের ভিতরে, লুক, সবকিছু মিলিয়ে তখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি রানারই কিনবো। দু'টো বাইক পছন্দ হয়, ফ্রিডম রানার রয়াল প্লাস ১১০ ও ডায়াং রানার বুলেট ১০০। মেঝো ভাই পছন্দ করলো ফ্রিডম রানার রয়াল প্লাস। বুলেটের ফুয়েল ট্যাংকে ডায়াং লেখাটি আমাদের পছন্দ হয় নি, কেমন জানি চাইনিজ চাইনিজ লাগে, ফ্রিডম নামটা তো সুন্দর! তাছাড়া বুলেটে পাসিং লাইট নেই, ডিজিটাল মিটার নেই, তাছাড়া সিসিও কম। অপর দিকে রয়াল প্লাসের সামনের টায়ার বুলেটের চেয়ে কম চওড়া, ওজনও কম, সব মিলিয়ে দো'টানায় পড়ে যাই। তখনও হাতে বাইক কেনার টাকা নেই, বাইক কেনার কথা সামনের মাসে তাই এক মাস ভেবে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম ফ্রিডম রানার রয়াল প্লাস বাইকটিই নিবো।
এর মাঝে হঠাৎ একদিন বসুন্ধরা মোটরস এর ম্যানেজারের ফোন পেলাম। তখন একটা অফার চলছিলো, রানারের বাইক কিনলে নিশ্চিত উপহার, এলসিডি টিভি/ক্রোকারিজ সেট/স্মার্ট ফোন যেকোনো একটা। আমি যদি অফার চলাকালীন সময়ে বুকিং দিয়ে ফেলি তাহলে অফার শেষ হয়ে যাবার পরেও নাকি অফারের আওতায় পড়বো। বসুন্ধরা মোটরসে গিয়ে দিয়ে ফেললাম ১০০০ টাকা দিয়ে বুকিং, আমার পছন্দ অনুযায়ী লাল রয়াল প্লাস এনে শোরুমে রাখা হলো। বসুন্ধরা মোটরসের ম্যানেজার খুবই অমায়িক। আমি মাঝে মাঝেই অফিস থেকে ফেরার পথে সেখানে ঢু মারতাম। কিছুই না, আমার বাইকটি দেখা। প্রতিদিন অফিস যাওয়া আসার পথে সিএনজির দরজা দিয়ে শোরুমের কাচের ভিতর আমার বাইকটিকে চেয়ে দেখতাম। সেই অনুভূতি বলে বুঝানোর মতো নয়!
অবশেষে এলো সেই বিশেষ মুহূর্ত। ২০১৬ অক্টোবরের চার তারিখ অফিস থেকে ফেরার পথে আমি বাইকটি কিনতে যাই। সাথে ছিল মেঝো ভাই। এই বাইকটি কিনতে আমার লেগেছে ১০১০০০ টাকা, রেজিস্ট্রেশন ও ইনসুর্যান্স বাবদ ১৬০০০ টাকা, মোট ১১৭০০০ টাকা। বাইকের সাথে পাই একটি হুয়াওয়ে স্মার্ট ফোন, একটি রেনকোট, একটি হেলমেট ও একটি টিশার্ট। টিশার্ট না হয়ে এক বছরের পেট্রোল বা মালয়েশিয়ার তিন দিনের ট্রিপও হতে পারতো, কেননা এটা ছিল স্ক্র্যাচ কার্ড ঘষে। যাই হোক, সব ফর্মালিটিস শেষ করে অবশেষে বাইক নিয়ে আমরা বাড়ির পথে রওয়ানা দিই। যেহেতু আমি প্রায় ৫ বছর বাইক চালাই নি, তাই পিলিয়ন নিয়ে শহরের ব্যস্ত রাস্তায় এখনই বাইক চালাতে ঠিক ভরসা পেলাম না। মেঝো ভাইকে চালাতে বললাম, মেঝো ভাই সিলেটের রাস্তায় বাইক সমানে চালায়, তাই।
পরদিন থেকেই আমার মিশন বাইক শুরু হলো। নিজের বাইক, নিজের টাকায় কেনা বাইক, অনুভূতি বলে বুঝানো যাবে না। শুরুর দিকে কিছুটা অস্বস্তি কাজ করতো, অনেক দিন গ্যাপ পড়েছে কিনা। আস্তে আস্তে বাইকটি আমার দৈনন্দিন জীবনের একটা অংশ হয়ে দাঁড়ালো। বাইক নিয়ে রাস্তায় নামার পর আস্তে আস্তে অনেক কিছুই খেয়াল করা শুরু করলাম যা আগে খেয়াল করি নি। সেটা হচ্ছে বাইক চালাতে কখনই বোরিং লাগে না। আসলে শহরের রাস্তায় বাইক চালানোটা একটা চ্যালেঞ্জ। অনেকটা কম্পিউটারের গেম খেলার মতো।
তবে কম্পিউটার গেমের মতো বাস্তবে অনেকগুলো লাইফ থাকে না এই আর কি! দু' বার অভারটেক করতে গিয়ে ভয়াবহ বিপদে পড়তে যাচ্ছিলাম, এখন অনেক সাবধান হয়ে গেছি। পাঁচ মিনিট সময় বাঁচানোর জন্য পাঁচ মাস হাসপাতালে পড়ে থাকার কি কোনো মানে হয়! আমি তাই সেইফ রাইডিং করি। শহরের রাস্তায় আমার অ্যাভারেজ স্পিড থাকে ৪০-৪৫ কিমি। আরেকটা জিনিস খেয়াল করলাম, রাস্তায় বাইকাররা কেউ কাউকে না চিনলেও সবার প্রতি সবার একটা সহানুভূতি কাজ করে, অনেকটা কাছের লোকের মতো মনে হয়। জ্যাম এড়াতে রাস্তার উলটো সাইড দিয়ে গেলে অন্য বাইকাররা কখনও রাগ করে না। এই ইউনিটিটা আমার কাছে সবচে ভালো লেগেছে।
বাইক প্রথম সার্ভিস করাই আমি ৫০০ কিমি হবার পর, দ্বিতীয় সার্ভিস করাই ৩০০০ কিমি হবার পর। ১০০০ কিমির ব্রেক ইন পিরিয়ড আমি খুব সাবধানে পার করেছি। এই বাইকের ইঞ্জিন ওয়ারেন্টি ৬ বছরের, প্রথম দু' বছর ফ্রি সার্ভিস। প্রথম দিকে আমি মাইলেজ পেয়েছি ৩০ কিমি এর মতো, ২০০০ কিমি হবার পর ৪০ কিমি। ৩০০০ কিমির পর দ্বিতীয় সার্ভিসের পর এখন মাইলেজ পাচ্ছি ৫০+ কিমি। আমি ব্রেক ইন পিরিয়ডে অকটেন ব্যবহার করেছি। পরে অকটেন ও পেট্রোল উভয়ই ব্যবহার করেছি। তেমন পার্থক্য বুঝতে পারি নি, তবে অকটেনে ইঞ্জিন গরম হয় একটু বেশি মনে হলো।
বাইক এখন পর্যন্ত ৩৫০০+ কিমি চালিয়েছি। এর মাঝে ইঞ্জিন ওয়েল পাল্টেছি চারবার। ৫০০ কিমির পর প্রথম সার্ভিসের সময় সার্ভো 20W-40 ইঞ্জিন ওয়েল ইঞ্জিনে নিই। তারপর এডিলফ 20W-50, পেট্রোন রেসিং 20W-50 ব্যাবহার করি। এই ইঞ্জিন ওয়েলগুলোর কিনতে লেগেছে ৪০০ টাকা। সর্বশেষ ব্যবহার করি ওমানওয়েল এর পাওয়ার 4T 20W-50 ইঞ্জিন ওয়েল, এর দামটা একটু বেশি, ৫০০ টাকা, তবে কোয়ালিটি নাকি ভালো। বাইকটি চালাচ্ছি ৬ মাস হয়ে গেলো। এখন পর্যন্ত তেমন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হই নি। সামনের চাকার ডিস্ক ব্রেক একটু জ্যাম ছিল, দ্বিতীয় সার্ভিসিং এর সময় সেটা ঠিক করে দেয়। তবে মাঝে একবার পেছনের চাকা পাংচার হয়েছিল পেরেক ঢুকে। বাইকের মোডিফিকেশন বলতে সিগনাল লাইটে ফ্লাশার লাগিয়েছি যাতে সিগনালে শব্দ করে।
মাঝে হেডলাইট পালটে এলইডি লাগিয়েছিলাম কিন্তু এতো বাজে পারফরম্যান্স যে স্টক বাল্বে আবার ফিরে এসেছি। সামনের চাকার পেছনে ইঞ্জিনের সামনে একটা মাডগার্ড লাগিয়েছি। বাইকের যত্ন বলতে মাসে একবার বাইকটি ধুই ও পালিশ করি। আর ১০০০ কিমির আশেপাশে হলেই ইঞ্জিন ওয়েলটা পালটে ফেলি। আর তেমন কোনো মেইনটেইন্যান্সের দরকার পড়ে না। সার্ভিস শিডিউলে বসুন্ধরা মোটরসে গেলে ওরা জামাই আদরে সার্ভিস করে দেয়। :) শহরের রাস্তায় মাইলেজ পাচ্ছি ৫০+ কিমি, তবে আমার ধারণা হাইওয়েতে আরো কিছুটা বাড়বে। হাইওয়েতে এখনও বাইক নিয়ে যাওয়া হয় নি, তাই টপ স্পিড কতো দেখা হয় নি। এমনিতে এয়ারপোর্ট রোডে আমি ৭২ কিমি উঠানোর পর আর ভরসা পাই নি তাই বাড়াই নি। মেঝো ভাই হাইওয়েতে ৮৫ কিমি উঠানোর পর আর সাহস পায় নি। তাই টপ স্পিড পরীক্ষা করে দেখা হয় নি।
কমিউটার বাইক হিসেবে বাইকটির লুক অনেক ভালো। এর ফুয়েল ট্যাংকটা অনেকটা ইউনিক , তাতে ১০ লিটারের মতো জ্বালানি ধরে। বসার সিট অনেক কমফোর্টেবল, তাতে অনায়াসে ৩ জন বসা যায়। এর সামনে রয়েছে ডিস্ক ব্রেক, পেছনে ড্রাম ব্রেক। ডিজিটাল মিটারে রয়েছে ফুয়েল ইনডিকেটর, গিয়ার ইনডিকেটর ও ওডোমিটার ও ট্রিপ মিটার। একটি মাত্র বাটন দিয়ে কিমি থেকে মাইলে কনভার্ট করা যায়। আরপিএম মিটারটি এনালগ। আর আছে ইনডিকেটর লাইট, পাসিং লাইট ও গিয়ার নিউট্রাল লাইট। বাইকের হুইল অ্যালয় হুইল, চেন কভার পুরোটা আবৃত। হেডলাইটের লুকটাও অসাধারণ। ডিজাইনের কথা বললে ১১০ সিসি সেগমেন্টে এই বাইকের ডিজাইন অনেকটাই ইউনিক।
ইঞ্জিন বাদে বাইকের সব কিছু দেশে উৎপাদিত, সেই হিসেব করলে বিল্ড কোয়ালিটি যথেষ্ট ভালো ও মজবুত। তবে প্লাস্টিকের কোয়ালিটি তেমন ভাল মনে হয় নি। বিশেষ করে কিট বক্সের ঢাকনাটি ভালো ভাবে কখনই লাগে না, এটা অন্য বাইকেও দেখেছি। বাইকটির সাইলেন্সার বেশ কিছুটা নিচে থাকায় গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স অনেক কম, স্পিড ব্রেকার কিছুটা উঁচু হলেই ঘষা লাগে। তাছাড়া টায়ারগুলো আরেকটু চওড়া হলে ভাল হতো। টায়ার চওড়া না হবার কারণে হঠাৎ ব্রেক করলে চাকা স্কিড করে। সবকিছু বিবেচনা করলে এই বাইকটির বিল্ড কোয়ালিটি মোটামুটি ভালই।
পারফরম্যান্সের কথা বললে, ফ্রিডম রানার রয়াল প্লাস ১১০ থেকে আপনি অনেক ভাল পারফরম্যান্স পাবেন। এর ১১০ সিসির হরাইজোন্টাল ইঞ্জিন আপনাকে দেবে স্মুথ এক্সেলারেশন। তবে এর রেডি পিকআপ ভাল নয়। ফাস্ট গিয়ারে ১৫ কিমির বেশি স্পিড উঠাতে গেলে ইঞ্জিনে বেশ ভালই চাপ পড়ে। সেকেন্ড গিয়ার থেকে আর চাপ পড়ে না। সেকেন্ড গিয়ারে ৪০ কিমি উঠিয়ে ফেললে থার্ড গিয়ারে অনায়াসে ৬০ কিমি উঠিয়ে ফেলা যায়। ফোর্থ গিয়ারে টপ স্পিড কতো দেখার সুযোগ হয় নি এখনও। তবে পিলিয়ন নিলে বাইকের এনার্জি অনেকটাই কমে যায়। এই বাইক থেকে অবশ্যই আপনি পালসার বা জিক্সারের পারফরম্যান্স পাবেন না। সব কিছু বিবেচনা করলে, কমিউটার বাইক হিসেবে আপনি এই বাইক থেকে ফার্স্ট ক্লাস সার্ভিস পাবেন।
বাইকটির কিছু ভাল দিকঃ
১) বাইকটির লুক অনেক সুন্দর ও ইউনিক, এই সেগমেন্টের কমিউটারগুলোর মাঝে ইউনিক, হেড লাইটের ডিজাইন যথেষ্ট এগ্রেসিভ। বিশেষ করে চাকরিজীবী যারা ৩০ এর নিচে তাদের জন্য বেস্ট। ২) বাইকটির মাইলেজ ভালো। আমি শহরে ৫০+ কিমি পাচ্ছি। ৩) এই দামের বাইকগুলোতে সাধারণত ডিস্ক ব্রেক থাকে না, কিন্তু রানার রয়াল প্লাস বাইকে ডিস্ক ব্রেক আছে যা শহরের ব্যস্ত রাস্তায় বেশ কার্যকরী। ৪) রানারের কাস্টমার সার্ভিস অনেক ভালো, তাছাড়া তাদের সার্ভিস শিডিউলও বেশ লম্বা। তাছাড়া ইঞ্জিন ওয়ারেন্টি ৬ বছরের যা অনেক সেইফ। ৫) বাইকটির ওয়্যারিং অনেক ভাল। আমি অনেক বার বাইকটি খুব ভাল করে ধুয়েছি তারপরেও স্টার্ট নিতে কোনো সমস্যা হয়নি। সারাদিন বৃষ্টিতে ভেজার পরেও স্টার্ট নিতে কোনো সমস্যা করে নি।
বাইকটির খারাপ দিকঃ
১) ফ্রিডম রানার রয়াল প্লাস বাইকটির সবচে খারাপ দিক হচ্ছে এর ব্রেকিং সিস্টেম। চিকন চাকা এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার স্কিড করেছে হার্ড ব্রেকে। ডিস্ক ব্রেকের কোয়ালিটি ভাল নয়। পিছনের ড্রাম ব্রেকের অবস্থা আরো খারাপ। চাকাগুলো বেশি চিকন। আরেকটু চওড়া ও টিউবলেস হলে ভাল হতো। ২) বাইকে ব্যবহৃত প্লাস্টিক নিম্ন মানের। বাইকের ফিনিশিং দায়সারা গোছের। ৩) বাইকের এনার্জি কম। শহরের রাস্তায় অন্য গাড়িকে অভারটেক করতে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ, কেননা ফোর্থ গিয়ারে এক্সালারেশন ভাল না। প্রয়োজনের সময় দ্রুত স্পিড উঠবে না। তাছাড়া রেডি পিকআপ ভাল নয় । ৪) বাইকটির ওজন ১১৪ কেজি। আরেকটু বেশি হলে ভাল হতো। ফুয়েল ক্যাপাসিটি মাত্র দশ লিটার । ৫) সাইলেন্সার পাইপ অনেক নিচুতে। উঁচু স্পিডব্রেকারে ঘষা লাগে।
সবকিছু বিবেচনা করলে আপনি যদি মধ্যম আয়ের চাকুরীজীবী হয়ে থাকেন এবং আপনার বাজেট যদি কম হয়ে থাকে তাহলে কমিউটার হিসেবে ফ্রিডম রানার রয়াল প্লাস ১১০ হবে আপনার জন্যে বেস্ট চয়েস। রাস্তায় সব সময়ে হেলমেট পড়ে বাইক চালাবেন। হ্যাপি রাইডিং ! লিখেছেন - শতদ্রু গুপ্ত অভি আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com - এই ইমেইল এড্রেসে।
T
Published by Shuvo Bangla