Shares 2
বাংলাদেশে ট্যুর করার জন্য সেরা ৫ টি বাইক । জানুন বিস্তারিত
Last updated on 27-Jul-2024 , By Raihan Opu Bangla
বর্তমান সময়ে আমরা বাইকাররা বাইক নিয়ে ট্যুর করতে খুব পছন্দ করি। আজ আমরা ট্যুর করার জন্য সেরা ৫ টি বাইক নিয়ে আলোচনা করবো। ট্যুর করার জন্য আলাদা বা স্পেশাল কোন বাইকের প্রয়োজন হয় না, আমরা সবাই জানি যে কোন বাইক নিয়েই ট্যুর করা যায়। কিন্তু আজ আমারা ট্যুর করার জন্য সেরা ৫ টি বাইক এর বিস্তারিত আপনাদের সামনে তুলে ধরবো এবং কেনো এই বাইকগুলো ট্যুরের জন্য সেরা সেটা নিয়ে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
বাংলাদেশে ট্যুর করার জন্য সেরা ৫ টি বাইকঃ
১- Yamaha Fazer V2:
ট্যুরিং বাইকের কথা আসলে সবার আগে Yamaha Fazer তালিকার প্রথম স্থানে থাকে। কারন ইয়ায়ামাহা ফেজার বাংলাদেশের প্রথম ট্যুরিং বাইক। আর বাইকটি বাংলাদেশের অধিকাংশ বাইকারদের কাছে লং ট্যুরের জন্য বেশ জনপ্রিয়। Yamaha Fazer V1 দিয়ে বাংলাদেশে ট্যুরিং বাইকের যাত্রা শুরু হয়। যদিও এখন Yamaha Fazer V1 বাজারে পাওয়া যায় না, কিন্তু Yamaha Fazer V2 এখনো মার্কেটে পাওয়া যাচ্ছে। আর বাইকটি ট্যুর প্রেমী বাইকারদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তাও পেয়েছে। ইয়ামাহা ফেজার ভার্সন ২ কেনো ট্যুর করার জন্য সেরা এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
আরও পড়ুন >> ইয়ামাহার সকল বাইকের বর্তমান মূল্য
১- লং ট্যুর করার জন্য যে জিনিসটি একটা বাইকে থাকা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তা হচ্ছে কম্ফোর্টেবল সিটিং পজিশন। সিটিং পজিশন যদি কম্ফোর্টেবল না হয় তাহলে একটা লম্বা সময় পর আপনি লং ট্যুরে আর মজা পাবেন না। ইয়ামাহা ফেজার বাইকটিতে রয়েছে কম্ফোর্টেবল সিটিং পজিশন, যার হবে আপনি রিলাক্সে এই বাইকটি দিয়ে শত শত কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে পারবেন।
২- ট্যুর করার সময় ট্যুরিং বাইকটির সাসপেনশন ভালো থাকা খুব জরুরী,কারন আমাদের দেশের রাস্তার যে অবস্থা তাতে বাইকের সাসপেনশন যদি ভালো না হয় তাহলে পুরো ট্যুরের মজাটাই খারাপ হয়ে যেতে পারে। আমাদের দেশের বাইকাররা অনেকেই পাহাড়ে ট্যুরে যেতে পছন্দ করেন, আর ইয়ামাহা ফেজার বাইকটির সাসপেনশন হাইওয়ে এবং পাহাড়ি রাস্তায় আপনাকে দারুন সাপোর্ট দিবে।
৩- ট্যুর করার বাইকগুলোতে কন্ট্রোলিং ভালো থাকা খুব জরুরী, আর আমরা জানি ইয়ামাহা তাদের ব্রেকিং এবং কন্ট্রোলিং নিয়ে সব সময় খুব বেশি সচেতন। ইয়ামাহা ফেজার বাইকট হাইওয়েতে এবং পাহাড়ে বেশ ভালো কন্ট্রোলিং ফিডব্যাক দিয়ে থাকে। তবে একটা জিনিস সব সময় খেয়াল রাখবেন বাইকের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই রাইডারের হাতে থাকে।
৪- ইয়ায়ামাহা ফেজার বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে এরোডাইনামিক শেপ, এর ফলে আপনি হাইওয়েতে বাতাসকে উপেক্ষা করে খুব সহজেই আপনার গন্তব্যে এগিয়ে যেতে পারবেন। লং রাইডের সময় রাইডারের শরীরে বাতাস লাগলে রাইডার খুব সহজে ক্লান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু এই বাইকটিতে অন্যান্য বাইকের তুলনায় বাতাস কম লাগে।
৫-Yamaha Fazer V2 বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ফুয়েল ইনজেকশন ইঞ্জিন। এর ফলে আপনি ইঞ্জিন থেকে বেশ ভালো পারফরম্যান্স পাবেন হাইওয়ে এবং পাহাড়ে, পাশাপাশি এই ইঞ্জিন থেকে আপনি ভালো মাইলেজও পাবেন।
৬-Yamaha Fazer V2 বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ডুয়েল হেডলাইট, আর এর আলো রাতে বেলা বেশ ভালো সাপোর্ট দেয় রাইডারকে। যার ফলে এই বাইক নিয়ে ট্যুরে গেলে লাইট সংক্রান্ত কোন ঝামেলার সম্মুখীন আপনাকে হতে হবে না।
৭- ইয়ামাহা ফেজার বাইকটির পিলিয়ন সিট বেশ কম্ফোর্টেবল, তাই ট্যুরে আপনি চাইলে পিলিয়ন ও নিয়ে যেতে পারবেন।
২- Suzuki Gixxer SF Fi ABS:
ট্যুর করার জন্য সেরা ৫ টি বাইক এর আজকের তালিকায় ২য় অবস্থানে আছে Suzuki Gixxer SF Fi ABS। সুজুকির বাইকগুলো গতি প্রেমী বাইকারদের কাছে খুব জনপ্রিয়। Suzuki Gixxer SF Fi ABS বাইকটি কেনো ট্যুরের জন্য সেরা সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
আরও পড়ুন>> সুজুকির সকল বাইকের বর্তমান মূল্য
১- লং ট্যুরে রাইডারের নিরাপত্তা সবচেয়ে বড় ব্যাপার। Suzuki Gixxer SF Fi বাইকটিতে কন্ট্রোলিং এর পাশাপাশি ব্রেকিং এ ব্যবহার করা হয়েছে ABS সিস্টেম। যার ফলে ট্যুর করার সময় বাইকের গতি কিছুটা বেশি থাকলেও আপনি বাইকটি থেকে নিরাপদ ব্রেকিং পাবেন।
২- Suzuki Gixxer SF Fi ABS বাইকটির রেডি পিকাপ অন্যান্য বাইকের থেকে বেশ ভালো। আর আমরা সবাই জানি হাইওয়ে রাইড অথবা লং ট্যুরে রেডি পিকাপ ভালো থাকা কতটা জরুরী। এর ফলে আপনি এই বাইকটি দিয়ে ওভারটেকিং এর সময় আলাদা একটা মজা অনুভব করবেন।
৩- এই বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে এরোডাইনামিক শেপ,যার ফলে হাইওয়ের বাতাসকে উপেক্ষা করে এই বাইকটি খুব সহজে তার গতি তুলতে সক্ষম।
৪- সুজুকি বাইকের সাসপেনশন হাইওয়েতে এবং পাহাড়ি রাস্তায় আপনাকে বেশ ভালো সাপোর্ট দিবে। এর ফলে আপনি ট্যুরে বেশ ভালো কোম্ফোর্ট পাবেন। ট্যুরের বাইকগুলো থেকে কম্ফোর্ট পাওয়াটা খুব বেশি জরুরী।
৫-Suzuki Gixxer SF Fi ABS বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ফুয়েল ইনজেকশন ইঞ্জিন, যার ফলে ট্যুরের সময় আপনি এই বাইকটি থেকে বেশ ভালো পারফরম্যান্স এবং ভালো একটা মাইলেজ পাবেন। ৬- বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ত্রি পার্ট হ্যান্ডেল, যার ফলে হাইওয়েতে জ্যাম থাকলেও আপনি খুব সহজে বাইকটি মুভ করে আপনার ট্যুরের গন্তব্যে এগিয়ে যেতে পারবেন।
৩- Lifan KPT 150:
লিফান বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্রান্ডগুলোর মধ্যে একটি। বাংলাদেশে এডভেঞ্চার প্রেমী বাইকারদের কাছে Lifan KPT 150 খুব জনপ্রিয়। আমাদের দেশে এডভেঞ্চার বাইক খুব বেশি পাওয়া যায় না, তাই Lifan KPT 150 ট্যুর প্রেমী মানুষের কাছে অনেক প্রিয়। লিফান কেপিটি ১৫০ কেনো ট্যুরের জন্য সেরা আজ আমরা সে সম্পর্কে জানতে চলেছি।
১-Lifan KPT 150 যেহেতু একটি এডভেঞ্চার বাইক তাই সিটি রাইডের সময় বাইকটি থেকে খুব বেশি কম্ফোর্ট ফিল না করলেও হাইওয়ে রাইড এবং পাহাড়ি রাস্তায় বাইকটি চালিয়ে আপনি দারুন মজা পাবেন। এই বাইকটি ট্যুর করার জন্য বেশ ব্যতিক্রমী একটা চয়েজ হতে পারে। এই বাইকটির সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে আপনি যদি চান তাহলে এই বাইকটিতে রাসেল ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে মডিফাই করে আলাদা ব্যাগ হোল্ডার , ট্যুরিং বক্স সেটাপ করিয়ে নিতে পারবেন।
২- যেহেতু Lifan KPT 150 এডভেঞ্জার বাইক তাই এর ইঞ্জিন প্রচুর প্রেসার নিতে সক্ষম। পিলিয়ন নিয়ে অথবা ভারী জিনিসিপত্র নিয়ে ছুটে চলার সময় আপনি একই রকমের পারফরম্যান্স পাবেন,ইঞ্জিনের পাওয়ার কখনো কম মনে হবে না।
৩- বাইকটির গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স অন্যান্য বাইকের থেকে বেশ উঁচু, যার ফলে আপনি এই বাইকটি দিয়ে ভাংগা রাস্তার মধ্যেও খুব সহজে আপনার গন্তব্যে ছুটে যেতে পারবেন।
৪- বাইকটির হ্যান্ডেলবার অন্যান্য বাইকের থেকে কিছুটা উঁচু, তাই আপনি যখন হাইওয়েতে দূরের পথ অতিক্রম করবেন তখন আপনার হাতে কোন প্রকার প্রেসার পরবে না। এর ফলে নিজের অজান্তেই অনেকটা পথ ছুটে চলতে পারবেন।
৫- Lifan KPT 150 বাইকটির বিল্ড ইন ক্রাশ গার্ডটি খুব মজবুত, যার ফলে বাইকটি পরে গেলেও বাইকের তেমন কোন ক্ষতি হবে না। এর অর্থ আপনার বাইকটি সব সময় অন্য বাইকের চাইতে অনেকটাই বেশি সেফ থাকবে। ৬- বাইকটির উইনশিল্ড অন্যান বাইকের থেকে বেশ লম্বা, এর ফলে হাইওয়ে রাইডের সময় আপনার শরীরে তেমন একটা বাতাস লাগবে না। এটি একজন রাইডারকে সুস্থ রাখতে বেশ বড় ভূমিকা পালন করে।
৪- Aprilia Terra 150:
Aprilia বাইরের দেশগুলোতে বেশ জনপ্রিয়, কিন্তু আমাদের দেশে কিছুদিন আগেও Aprilia এর বাইকগুলো পাওয়া যেতো না। সম্প্রতি আমাদের দেশে Aprilia এর বাইকগুলো পাওয়া যাচ্ছে এবং তা বাইকারদের কাছে জনপ্রিয় হতে চলেছে। Aprilia Terra 150 মূলত একটি dual-purpose বাইক। তাই এটি ট্যুরের জন্য বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলে আমরা মনে করি। Aprilia Terra 150 কেনো ট্যুরের জন্য সেরা সেটা জেনে নেয়া যাক।
১- বাইকটির সিটিং পজিশন বেশ কম্ফোর্টেবল। সিটিং পজিশন কম্ফোর্টেবল হওয়ার কারনে আপনি অনেকটা পথ এই বাইক নিয়ে খুব সহজেই অতিক্রম করতে পারবেন।
২- বাইকটি যেহেতু এডভেঞ্জার বাইক তাই এই বাইকটিতে ব্যাগ বহন করার জন্য কেরিয়ারের ব্যব্যস্থা আছে। এতে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় ব্যাগগুলো খুব সহজেই বহন করতে পারবেন।
৩- বাইকটির গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স অন্যান্য বাইকের চেয়ে উচু,এর ফলে আপনি বাইকটি নিয়ে সব ধরণের রাস্তায় ছুটে চলতে পারবেন।
৪- বাইকটির ব্যালেন্স এবং কন্ট্রোলিং ভালো হওয়ার ফলে আপনি হাইওয়েতে আলাদা একটা কনফিডেন্স পাবেন।
৫- Haojue TR 150:
হাউজু একটি জনপ্রিয় চাইনিজ মোটরসাইকেল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। হাউজুর বাইকগুলো তাদের কোয়ালিটির জন্য চাইনাতে অনেক বেশি জনপ্রিয়। এটি মূলত একটি ক্রজার বাইক, কিন্তু Haojue TR 150 কেনো ট্যুরের জন্য সেরা সেটা জেনে নেয়া যাক।
১- এটি একটি ক্রজার বাইক, তাই বাইকটির সিটিং পজিশন বেশ কম্ফোর্টেবল। এর ফলে আপনি বাইকটি দিয়ে টানা অনেক পথ খুব সহজে অতিক্রম করতে পারবেন।
২- বাইকটির সাসপেনশন অনেক সফট, যার ফলে এটি আপনার লং রাইডের সময় বেশ ভালো সাপোর্ট দিবে আপনাকে।
৩- বাইকটির দুই পাশে দুটি বক্স যুক্ত করা আছে, এর ফলে আপনি আপনার ভ্রমণের সময় ছোট ছোট অনেক জিনিসগুলো এই বক্সে করে বহন করতে পারবেন, আপনার আলাদা কোন ব্যাগ সাথে নেয়ার প্রয়োজন নেই।
৪- বাইকটির সাথে থাকা টায়ারটির গ্রিপ অসাধারণ, এটি সব সময় আপনার বাইকটিকে রোডের সাথে খুব ভালোভাবে আটকে রাখতে সক্ষম। যার ফলে আপনি যখন বাইকটি নিয়ে কোন ট্যুরে যাবেন এই বাইকটি থেকে আপনি অন্যরকম একটা কনফিডেন্স পাবেন। ট্যুর করার জন্য আলাদা কোন বাইকের প্রয়োজন হয় না, কিন্তু এই বাইকগুলোর বিশেষ কিছু গুনের কারনে ট্যুর করার জন্য সেরা। যারা ট্যুরের জন্য বাইক খুজছেন এবং আপনাদের বাজেট কিছুটা বেশি তাদের জন্য এই বাইকগুলো সেরা অপশন হতে পারে।
T
Published by Raihan Opu Bangla