Shares 2

Suzuki Gixxer 155 SD প্রথমে বাইকের বিষয়ে একটু উদাসীন থাকলেও পরে যত্নশীল হয়েছি-মাজহারুল

Last updated on 18-Jul-2024 , By Raihan Opu Bangla

আমি মাজহারুল ইসলাম, বাসা গাজিপুর চৌরাস্তা। বর্তমানে আমি Suzuki Gixxer 155 SD বাইকটি ব্যবহার করছি। বাইকটি মোট ৩৩ হাজার কিলোমিটার রাইড করা হয়েছে। এখন আমি আমার এই Suzuki Gixxer 155 SD বাইকটি নিয়ে আমার কিছু রাইডিং অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি।

Suzuki Gixxer 155 SD প্রথমে বাইকের বিষয়ে একটু উদাসীন থাকলেও পরে যত্নশীল হয়েছি-মাজহারুল

suzuki gixxer 155 sdআমার বাসা গাজিপুর চৌরাস্তা ৷ উত্তরা ইউনিভার্সিটি তে টেক্সটাইল ডিপার্টমেন্টে পড়াশোনা করছি। মুলত প্রতিদিন ইউনিভার্সিটিতে যাতায়াতের জন্যই Suzuki Gixxer 155 SD বাইকটি কিনেছি। কম সময়ে যাওয়া এবং যানযটের বিরক্তিকর পরিস্থিতি থেকে বাচার জন্যই বাইক কেনা। তবে বাইক নিয়ে ঘুরতে খুব ভালোবাসি। ছোট বেলা থেকেই বাইকের প্রতি অন্যরকম একটা আগ্রহ ছিল।


ছোট ছোট অনেক গুলো ট্যুর দিলেও ফ্যামিলি থেকে লং ট্যুরের অনুমতি দেয়নি তাই এখন ওইরকম ভাবে লং ট্যুরে যেতে পারিনি। তবে প্রথম ইচ্ছা আছে বাইক নিয়ে সাজেক যাওয়ার। আমার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর বিভিন্ন কারণে প্রায় ঔইখানে যাওয়া দরকার হয় । বাইক চালানো শিখেছি যখন ক্লাস ৮ পড়ি । তবে নিজের জন্য প্রথম Suzuki Gixxer 155 SD বাইকটি কিনলাম ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে । 


যেহেতু জীবনের প্রথম বাইক সেক্ষেত্রে ভালোবাসা অন্যরকম। Suzuki Gixxer 155 SD কখনো আমাকে অসন্তুষ্ট করে নাই। বাইকের লুকিং আমার বেশ ভাল লেগেছে, তারপর এর কুইক এক্সিলারেশন বেশ ভালো। যখন আমি বাইকটি কিনি তখন এর দাম ছিল ২ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা। আমি চাঁদপুর থেকে ক্রয় করি এবং চাঁদপুর এর নাম্বার করেছি। যেদিন আমি বাইক কিনেছিলাম সেদিন আমার জন্য খুব স্পেশাল দিন ছিল এবং আমার সাথে গিয়েছিল আমার কাকা ও তার ছেলে,  তারা আমার থেকে ও বেশি খুশি হয়েছিল।


Suzuki Gixxer 155 Test Ride Review In Bangla – Team BikeBD


যখন আমি বাইক ক্রয় করি তার আগে কখনো Suzuki Gixxer 155 SD রাইড করে দেখিনি। প্রথম যখন টেস্ট রাইড দিলাম সেই অনুভূতি ছিল অন্যরকম। ফ্যামিলির সবাই বাইকের বিরুদ্ধে ছিল অনেক কষ্টে মা বাবাকে রাজি করছিলাম। আমার পছন্দ ছিল নীল কালার কিন্তু ওই কালার এর বাইক না থাকায় লাল কালার নিয়েছিলাম। বাইকটিতে রয়েছে আধুনিক গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং লুকিং সব কিছুই আমার ভালো লেগেছে ।suzuki gixxer 155 sd duel tone purple colour

ডিজিটাল স্পিডো মিটার, এই গুলো আমাকে বেশি মুগ্ধ করেছে। আমার যা যা চাহিদা ছিল সবকিছুই আমি এই বাইকটির মধ্যে পেয়েছি । প্রথমে আমি বাইকের বিষয়ে একটু উদাসীন থাকলেও পরে যত্নশীল হয়েছি। প্রথমে Suzuki Service Center থেকেই সার্ভিসিং করেছি। এখন বাসার পাশে হওয়ায় লোকাল সার্ভিস সেন্টারেই সার্ভিসিং করি। বড় কোন সমস্যা না হলে অফিসিয়াল সার্ভিস সেন্টারে যাই না।


২৫০০ কিলোমিটার আগে আমার Suzuki Gixxer 155 SD বাইকের মাইলেজ পেতাম ৩৫+ । এখন মাইলেজ প্রায় ৪০+ সিটি তে, হাইওয়ে তে এখন প্রায় ৪৫+। মাইলেজ নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। বাইকের চেইন লুব করা এবং ওয়াস নিজেই করি মাঝে মাঝে বাইরে থেকে ফোম ওয়াস এবং পলিশ করাই। বাইকের নিয়মিত স্পার্ক প্লাগ, ওয়েল ফিল্টার এবং এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার করে থাকি।


মডিফাই বলতে টায়ার গার্ড, ট্যাংক প্যাড আর কিছু স্টিকার লাগাইছি আর ফর্ক রড গুলেতে লাল কালার স্টিকার লাগিয়েছি । বাইকের টায়ার সাইজ প্রসস্থ হওয়ায় (সামনে 100/80-17 পিছনে 140/60-17) কর্নারিং করতে ভাল কনফিডেন্স পাওয়া যায়। বাইকের সামনে টেলিস্কোপিক ও পিছন মনোশক সাসপেনশন থাকায় অন রোডে এবং অফ রোডে অনেক কমফোর্টেবল ভাবে রাইড করা যায়।


আমি প্রথমে ইঞ্জিন অয়েল হিসাবে Shell advance 20W40 ব্যবহার করতাম কিন্তু এখন Motul 5100 10W40 ব্যবহার করি। Motul এর পারফরম্যান্স একটু ভাল মনে হয়েছে shell এর থেকে। তাই আমি রেগুলার Motul 5100 10W40 ইঞ্জিন অয়েলটি ব্যবহার করতেছি । Shell এর মূল্য ছিল ৪২০ টাকা, আর Motul এর মূল্য ৫০০ টাকা । আমি ৮০০-১০০০ কিলোমিটার পর পর আমার বাইকের ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি ।


এখনপর্যন্তবাইকেযাযাপরিবর্তনকরেছি-

  • বল রেসার
  • ব্রেক প্যাড
  • ব্রেক সু
  • স্পার্ক প্লাগ
  • ব্যাক চেসিস বুশ
  • ৩০,০০০ কিমি তে উভয় টায়ার পরিবর্তন করেছি
  • ফর্ক ওয়েল সিল
  • চেইন সেট
  • হেডলাইটের আলোয় ভাল সাপোর্ট না পাওয়ায় ভাল মানের LED  লাইট ইন্সটল করেছি


বাইকটির পার্টস মোটামুটি সব জায়গাতেই পাওয়া যায়।


ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়েতে টপ স্পিড ১০৭ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা পর্যন্ত পেয়েছি। বৃষ্টি ছিল তাই এর বেশি তোলার সাহস পাইনি। আমি টপ স্পিড নিয়ে তেমন আগ্রহী না সাধারণত ৬০-৮০ কিমি এর মধ্যেই চালাই। স্পিড ১০০+ হলেও তেমন ভাইব্রেশন ফিল করিনি। সব সময় হেলমেট পরে এবং ট্যুরে গেলে সেফটি গিয়ার পরিধান করি। আমার মাথায় সব সময় থাকে আমাকে সুস্থ শরীরে বাসায় ফিরতে হবে। কখনো রেসিং মনোভাব নিয়ে ড্রাইভিং করিনা।suzuki gixxer 155 sd meter

Suzuki Gixxer 155 SD বাইকের কিছু ভাল দিক-

  • এর লুক আমার বেশি ভালো লাগে
  • মাইলেজ যথেষ্ট ভাল
  • ব্রেকিং অসাধারণ, খুব দ্রুতই কন্ট্রোল করা যায়
  • যথেষ্ট কম্ফোর্টেবল
  • রেডি পিকাপ ভাল
  • লং রাইডে ব্যাকপেইন হয় না


Suzuki Gixxer 155 SD বাইকের কিছু খারাপ দিক-

  • এর পিলিয়ন সিট খুব আনকম্ফোর্টেবল
  • স্টক হেডলাইট এর আলো যথেষ্ট নয় হাইওয়েতে
  • গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স কম পিলিয়ন নিয়ে চালালে উচু স্প্রিড ব্রেকারে বেধে যায় তবে সিংগেল রাইডে কোন রকম সমস্যা হয়না
  • কাদা লেগে থাকলে একটু জং ধরে, সময়মতো ওয়াস না করলে
  • গিয়ার লিভার একটু শক্ত অন্য বাইকের তুলনায়


লং রাইড বলতে একদিনে গাজীপুর থেকে চাঁদপুর যাওয়া আসা করেছি প্রায় ২৫০ কিলোমিটার ভাল পারফরম্যান্স পেয়েছি কোন রকম পাওয়ার লস করেনি। Suzuki Gixxer 155 SD বাইকটি পাওয়ারফুল ইঞ্জিন হওয়াতে ওভারটেকিং এর সময় বেশ ভালো সাপোর্ট পাওয়া যায়। আমার বাইক নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট ধন্যবাদ সুজুকি বাংলাদেশকে। সব সময় ভালো মানের ফুলফেস হেলমেট ব্যবহার করবেন। হ্যাপি রাইডিং। ধন্যবাদ।


লিখেছেনঃ  মাজহারুল



আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Published by Raihan Opu Bangla