Shares 2
Lifan KPT 150 মালিকানা রিভিউ - এবি ইশতিয়াক
Last updated on 08-Jul-2024 , By Saleh Bangla
হ্যালো বাইকার্স আমি এ.বি.ইসতিয়াক, আমার বয়স ৩৩ এবং আমি ঢাকাতে থাকি। ছোটবেলা থেকে আমি বাইকের প্রতি আমার আকর্ষন সীমাহীন এবং স্বপ্ন দেখতাম আমার একদিন নিজের একাটা বাইক হবে। যেহেতু আমার বাবা একজন বাইকার ছিলেন তাই আমার বাইকের প্রতি আকর্ষন এর শুরু এখান থেকে। আমার প্রথম বাইক ছিল Honda AME100, এটি একটি চাইনিজ বাইক। এরপর থেকে আমি প্রায় ১৫০ সি সি ইন্ডিয়ান সব ব্রান্ডের বাইক রাইড করেছি এবং আর কোন চাইনিজ বাইক কেনার চিন্তা করিনি। কিন্তু BikeBd.com থেকে প্রকাশিত রিভিউ দেখে এবং নিজে টেস্ট রাইড করে আমি আবার চাইনিজ বাইক কেনার সিদ্ধান্ত নেই। আমার ইমিডিয়েট শেষ বাইক ছিল Lifan KPR 150 এবং এই বাইকটি নিয়ে আমি সম্পূর্ন সন্তুষ্ট। ভালোবাসা এবং নেশা আমাকে বাইকার হতে সাহায়্য করেছে, এবং আমার এ্যাডভেঞ্চার সিরিজের বাইকের প্র্তি আকর্ষন অনেক। অবশেষে আমার স্বপ্ন সত্যি হয়েছে আকর্ষনীয় Lifan King Powered Touring (KPT) এর মাধ্যমে। আজকে আমি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমার Lifan KPT 150 অভিজ্ঞতা শেয়ার করব।
Lifan KPT 150 মালিকানা রিভিউ
Lifan KPT 150 এর ফার্স্ট ইমপ্রেশন ভিডিও
কেন Lifan KPT 150 ? যেহেতু আমি একজন বাইকার তাই আমি ট্যুর করতে ভালবাসি। আমি সব সময় চেষ্টা করি মাসের মধ্যে কমপক্ষে ২ টা ট্যুর দিতে। এছাড়া আমার অফিস আমার বাসা থেকে প্রায় ২০কিঃ মিঃ দূরে। দিনের অনেকটা সময় আমার আমার যাতায়াতে চলে যায় প্রতিদিন। সেজন্য আমার একটি আরামদায়ক বাইকের প্রয়োজন, আরামের প্রশ্নে আমি এক কথায় বলতে পারি যে এই বাইকটি বাংলাদেশে মার্কেটে পাওয়া অন্যান্য যেকোন বাইকের চেয়ে আরামদায়ক। এছাড়া এর আছে আকর্ষনীয় লুক, প্যাডেল ডিস্ক ব্রেক, USD সাসপেনশন, ডুয়েল স্পোর্টস টায়ার, সাধ্যের মধ্যে দাম এবং শেষে এর শক্তিশালী ইঞ্জিন।
Lifan KPT 150 নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা: আমি আমার Grey রংয়ের Lifan KPT 150 গত নভেম্বর ২০১৭ এ কিনি যেটা এর মধ্যে ২ মাস পার করেছে এবং প্রায় ২০০০+ কিঃ মিঃ পার করেছি। তাই আমি আমার Lifan KPT 150 সম্পর্কে ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি।
Also Read: Lifan KPR150 মালিকানা রিভিউ
Lifan KPT 150 – লুকস: আমারমতে এই বাইকের লুক খুবই আকর্ষনীয় এবং এ্যাগ্রেসিভ। এর হেডলাইট এবং সামনের লুক দেকলে মনে হয় রাগন্তিত কোবরা আপনাকে ধরার জন্য সবসময় তৈরি। পারফেক্ট শেইপ এবং ১০০% প্লাষ্টিক ফুয়েল ট্যাঙ্ক, এর পিছনের টেল লাইট এল.ই.ডি. ছোট কিন্তু স্মার্ট এবং এর মাডগার্ডটি খুব ভাল ভবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে ধুলাবালি থেকে সুরক্ষা করে।
Lifan KPT 150 – রাইডিং কন্ট্রোল: এই বাইকের আর একটি সবচেয়ে ভাল দিক হচ্ছে এর সুপিরিয়র কন্ট্রোলিং। এটি রাস্তায় খুব ভালভাবে আকরে থাকবে তাতে স্পিড ৫০ কিঃ মিঃ/ঘঃ অথবা ১০০ কিঃ মিঃ /ঘঃ হোক। এর টায়ার শহরের রাস্তার জন্য খুব ভাল কিন্তু গ্রামের রাস্তার জন্য আর একটু গ্রিপের প্রয়োজন। এর সিটিং পজিশন খুব ভাল তবে লং রাউডে আমি পিছনে একটু ব্যাথা অনুভব করছি। সর্বোপরি আমি এই বাইকের আরাম নিয়ে সন্তুষ্ট।
Lifan KPT 150 – ব্রেকিং: Lifan KPT150 এর আছে প্যাডেল ডিস্ক ব্রেক এবং এর ব্রেক ক্যালিপার ডিজাইন করা হয়েছে সিংঙ্গেল ফিংঙ্গার ব্রেক এর কথা মাথায় রেখে। সাধারণত একটি বাইকের মেজর ব্রেকিং থাকে সামনের চাকায়, কিন্তু KPT এর মেজর ব্রেকিং হচ্ছে পিছনের চাকায়।
সাসপেনশনঃ বাইকটির ফ্রন্ট সাসপেনশন হচ্ছে ইউএসডি সাসপেনশন। কিন্তু রেয়ার সাসপেনশন হচ্ছে মনো-শক। তবে রেয়ার সাসপেশন কিছুটা উন্নত করা সম্ভব ছিল। তাতে করে বাইকের এডভেঞ্চার একটু বেরে যেতো।
ইঞ্জিনঃ লিফান কেপিটি ১৫০ বাইকের ইঞ্জিন হচ্ছে ১৫০সিসির সিঙ্গেল সিলিন্ডার সিলিন্ডার ৪ স্ট্রোক, ওয়াটার কুল ইঞ্জিন। কেপিটি ১৫০সিসি এর হুইল বেস ১৩৪০, ১০০/৮০-১৭/১৭৫-২০০ ফ্রন্ট টায়ার এবং ১৩০/৭০-১৭/২০০-২২৫ রেয়ার টায়ার। ইঞ্জিন ওয়েল ক্যাপাসিটি ১.২ লিটার আর রিকমেন্ডেড ইঞ্জিন ওয়েল হচ্ছে 15w/40-SF। এছাড়া বাইকটিতে ফুয়েল নেয়া যায় প্রায় ১২ লিটারের মত। কেপিটির এই ইঞ্জিন থেকে ১২.৫ কিলোওয়াট এবং ১৬.৫ টর্ক উতপন্ন করে। ইঞ্জিনের সাউন্ড কোয়ালিটি স্মুথ এবং ভাইব্রেশন। তবে সবচেয়ে বেশি অবাক করা বিষয় হচ্ছে এর এক্সেলারেশন। এর সর্বোচ্চ গতি পেয়েছি ১১৯কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়। আমি সিটিতে ৪৫ কিলো এবং ৪৭ কিলো প্রতি লিটার হাইওয়েতে মাইলেজ পেয়েছি। লিফান কেপিটি নিয়ে ট্যুর আমি বাইকটি নিয়ে ৪টি ট্যুর করেছি। ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-কুমিল্লা, ঢাকা-খাগড়াছড়ি-সাজেক-ঢাকা, এবং ঢাকা-সিলেট-সাতছড়ি-ঢাকা। তবে লিফান কেপিটি ১৫০ বাইকটি হাইওয়েতে রাইডের জন্য একদম পারফেক্ট একটি বাইক।
ভাল দিকঃ
- স্টাইলিশ লুকস
- ডুয়েল পেটাল ডিস্ক
- ইউএসডি সাসপেনশন
- সুপার এক্সেলারেশন
- রিলায়েলব ইঞ্জিন
- বাজেট ফ্রেন্ডলি
- আফটার সেলস সার্ভিস
খারাপ দিকঃ
- পেইন্ট কোয়ালিটি খারাপ
- ডিস্ক ব্রেক প্যাড
- রেয়ার মনোশক
- ছোট টেল লাইট
যদিও লিফান চাইনিজ বাইক, তবুও এই বাজেটে অনেক ইন্ডিয়ান বাইকের চেয়ে এই চাইনিজ বাইকটি ভালো। তাই আমি চার মাস অপেক্ষা করেছি এই বাইকটির জন্য। এখন প্রশ্ন হতে পারে বাইকটির দীর্ঘস্থায়ীত্ব কত দিন? তবে এটা নির্ভর করে রাইডার ও মেইন্টেনেন্স করার উপর। তবে সকল বাইকারদের প্রতি একটাই এডভাইজ থাকবে যে সব চাইনিজ বাইক এক নয়। যদি আপনি চাইনিজ বাইক কিনতে চাইলে আগে ভাল ভাবে খুজে দেখুন বাইকটি। আশা করি আপনাদের লিফান কেপিটি ১৫০সিসি রিভিউটি ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন। আর সব সময় হেলমেট পরে রাইড করুন।
T
Published by Saleh Bangla