আজ আমি রিভিও করতে যাচ্ছি বাংলাদেশে অনুমোদিত ইম্পোর্টেড লঞ্চ হওয়া সবচাইতে আন্ডাররেটেড একটা বাইক নিয়ে।বাইকটির নাম হলো Aprilia FX 150 । বাইকটির নাম শুনেই অনেকের মাথায় হয়তো চলে আসবে পার্টস নাই, ইটালিয়ান ব্রান্ড হলেও এটা চায়নার জাংশনে ম্যানুফ্রেকচার হয় ।
বাইক ভালোনা , সেলস ভ্যালু কম আরো অনেক যুক্তি । আমি একজন জ্ঞ্যান পিপাসু মানুষ, বাংলাদেশে লঞ্চ হওয়া সব বাইক সম্পর্কে আমার নুন্যতম ধারনা আছে। আমি সকল গুজব, মানুষের কথাবার্তার উর্ধে গিয়ে কিনে আনলাম Aprilia FX 150।
আমি বাইকটা কিনেছিলাম টাঙ্গাইলের রানার শোরুম থেকে । বাঙালী পালসার , আ্যপাচি , হোন্ডায় বিশ্বাসী । তো আমি গতানুগতিক রীতির বাইরে গিয়ে সবার চেয়ে আনকমন কখনো কাওকে চালাতে না দেখা মেশিনটা কিনে বাড়িতে আনলাম।
Also read: Aprilia RS150 ফিচার রিভিউ – স্পোর্টস মেশিন । বাইকবিডি
নানান মানুষের নানান কমেন্ট শুনলাম , এবং তাদের কিছু জবাব ও দিলাম , আমি বাইকটি চালিয়েছি ২৫০০ কিলোমিটার । এই বাইক আমার চালানো আগের কমিউটার বাইকগুলার থেকে স্মুথ , মানে চালিয়ে মজা পাইছি ( নিজের বাইক বলে বলছি না ) সিটিং পজিশন হ্যান্ডেল সবকিছু মিলিয়েই বলছি।
Aprilia FX 150 বাইকের কিছু ফিচার বলা যাক -
- বাইকটি কমিউটার হলেও স্পোর্টি লুক রয়েছে
- বাইকটির মজবুত শক্তি বেশ !
- টেকশই মেটালের ১৮ লি. ফুয়েল ট্যাংকটা আমার খুব পছন্দের
- বেশ শক্ত মজবুত প্লাস্টিক বডি
- এটার ইঞ্জিন লুক ম্যাসিভ!
- প্রয়োজন অনুযায়ী পাওয়ার ডেলিভারি করে।
- বাইকের আনকমন ড্যাসিং একটা লুক রয়েছে
- ইঞ্জন সাওন্ড অসাধারণ
- বাইক কন্ট্রোলিং , চমৎকার ব্যালেন্স আছে বাইকটাতে
ব্যাক্তিগত কিছু কথা আমি যখনি বাইকটাতে উঠি আমি কম্ফোর্ট অনুভব করি, আমি আমার বাইক নিরাপদে রাইড করি, আমার বয়সি ছেলেরা হয়তো একটু উগ্র রাইডে অভ্যস্ত তবে আমি সব সময় ইন্টারন্যাশনাল রাইডিং টেকনিক ফলো করার চেষ্টা করি।
আমার মাঝে মাঝে ক্লাসে যেতে দেড়ি হয় তবুও আমি তাড়াহুড়ো করি না কারণ আজ হয়তো ১০ মিনিট পরে গেলাম । কিন্তু যদি আর জীবনে কলেজে না যেতে পারি? তখন কি হবে ! আমি হেলমেট ছাড়া কখনো বাইকে উঠি না হোক সেটা ২ কিলোমিটার রাস্তা।
আমি আমার মেশিনটাকে ভালোবাসি এর যত্ন করি , এটাও আমাকে হতাস করে না। আমি মোডিফাই করে একটি লেগ গার্ড বা বাম্পার লাগিয়েছি সেটার খরচ ৬০০ টাকা ।
সুবিধার কথা তো হলো কোন বাইকই স্বয়ংসম্পূর্ণ না অসুবিধার কথা বলি বাইকের পার্টস আসলেই লোকালে পাওয়া যাবে না । তবে আমি মনে করি লোকালে লাগানো উচিত না, শোরুমে পেয়ে যাবেন । সামনের অলয়েজ হেডলাইড অন প্রযুক্তির কারণে অন্যান্য মানুষ অশ্লিল ভাবে হাত নাড়িয়ে বলবে লাইট জ্বলে। এবি এস নাই , পেছনে ড্রাম ব্রেক। FI ইঞ্জিন ভালো মানের তেল নিতে হবে । কিক নাই , ডিজিটাল আর পি এম মিটার নাই ।
বাইকটি প্রথমবার চালানোর কথা বললে বলবো মাখনের মতো সুন্দর সাউন্ড স্মুথ এক্সিলারেশন। খুব নরম সিট তাই কম্ফোর্ট পাচ্ছিলাম খুব বাইকের ফিচার বাইকবিডি ওয়েবসাইটে দেওয়াই আছে তারপর আরো কিছু বলি । সামনে ৩ টা হেডলাইট উপরে ছোট একটা তারপর হাই বিম, লো বিম, বাইকের মিটারে ফুয়েল, গিয়ার, কিলোমিটার ইন্ডিকেটর আছে, আর পি এম মিটার আলাদা, সাস্পেনশনটা দেখার মতো ।
বাইকে কোন কিক স্টার্ট মেথড নেই। এক সেল্ফেই স্টার্ট । বাইকটিতে রয়েছে পার্কিং মুড , এই মুডে বাইকের সামনের উপরের লাইটটা জ্বলে পেছনেও এবং লক অবস্থায় থাকে।
আমি বাইক কেনার মূল উদ্দেশ্য কলেজ যাওয়া আসা ৩০ - ৩৫ কিলোমিটার এবং কম্পিউটার ক্লাস করাতে হয় , প্রাইভেট সব মিলিয়ে সময় কম কাজ বেশি , নানান দিকে হাত প্রসস্ত করতে অর্থাৎ জীবনে গতি আনতে বাইক নেওয়া।
বাইকটা ৫০০ কিলোমিটারে টাঙ্গাইলের রানার শোরুম থেকে সার্ভিসিং করিয়েছি পরবর্তী সার্ভিস তারাতারিই করাবো । বাইকটি নিয়ে সবার উদ্দেশ্য যা বলতে চাই তা হলো আমার কথায় কেও কষ্ট পাবেন না। মূল কথা হলো আপনাদের রুচিতে পরিবর্তন আনুন, অন্যান্য দেশে এপ্রিলিয়া কিন্তু একটা এক্সপেন্সিভ বাইক, তাই নিজের দেশেও যদি মানুষ এটা ব্যাবহার শুরু করে তাহলে কিছুদিন পর সব দোকানেই পার্টস পাওয়া যাবে ।
ব্যাবহার করা শুরু করুন সবই এভেল এভেল হবে। এরকম কম্পানির দেশের বাইক রাইডিং কে অন্য পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে সবই আপনাদের হাতে, শুধু সুযোগ দেওয়ার পালা। রানার তাদের প্রোডাক্ট এর মার্কেটিং করে বেড়ায়,
Aprilia Bike কোম্পানি মার্কেটিং করেই নাই, তাদের বাজে মার্কেটিং এর কারণে আজ আপনারা বাইকটার সাথে অপরিচিত।
পরিচিত হোন। সবার প্রতি ভালোবাসা রইলো আমার মতামতকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ। ধন্যবাদ টিম বাইকবিডিকে এরকম, সুন্দর একটি প্ল্যাটফর্ম গঠনের জন্য । ধন্যবাদ ।