Shares 2

ঢাকা-সাজেক-ঢাকা-কুয়াকাটা-খুলনা বাইকে

Last updated on 04-Jul-2024 , By Shuvo Bangla

অনেক পরিকল্পনা প্রতিক্ষার পর যাত্রা শুরু ৮ তারিখ সন্ধ্যায় ৫ টা বাইক ৭ জন বাইকার Mrk Sabuz ভাই, Shahin Alam GBz ভাই Md Forhad Hossainভাই Nahid Talukdar ভাই Salman Farshy Ayon ভাই । যথাসময়ে যাত্রা শুরু করে ১০:০০ এ পৌছলাম কুমিল্লায় তখন আমাদের সাথে সংযুক্ত হয় বড়লেখা রাইডারজ এর ৩ টা বাইক ৬ জন রাইডার sagar ahmed brz।

কুমিল্লা রাতের খাবার শেষে বারৈয়ার হাট অপেক্ষারত Rider Parves ভাইয়ের সাথে দেখা করি বারৈয়ার হাটে। তারপর ঐখান থেকে সাজেকের উদ্দেশ্যে ৯টা বাইক একসাথে যাত্রা শুরু করি। পাহাড়ি রাস্তা অনেক নিরাপত্তার ব্যাপার ছিল। তারপর সকাল নাগাদ আমররা দিঘীনালা চেকপোস্ট পৌছাই, আর্মি প্রটোকল সহ ১২:৪০ এর দিকে সাজেক পৌছাই। সাজেক থেকে ৩:১৫ আর্মি প্রটোকল ছাড়াই খাগড়াছড়ির উদ্দেশে রওনা দেই।

একটা বাইকের যান্ত্রীক গোলযোগের কারনে খাগড়াছড়ি থেকে আর হিলট্রেক করা সম্ভব হবে না, তাই ঐ বিকেলেই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হই ২ বাইক। আর বাকি বাইক & বাইকাররা হিলট্রেক সম্পন করেন। আমাদের পূর্ব পরিকল্পনা ছিল, কয়েকজন বাইকার সাজেক-কক্সবাজার টুর শেষ করে ১১ তারিখ ঢাকায় ফিরলে তাদের কয়েকজনকে সাথে নিয়ে আমরা কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে রওনা দিব।

আমাদের কুয়াকাটা টুরের আরোও ২/৩জন বাইকার যারা হিল ট্র্যাকে ছিলেন তাদের ফিরতে ১২ তারিখ হয়ে যাবে বলে আমি আর সোহেল ভাই সিদ্ধান্ত নেই আমরা রওনা দিব ১১ তারিখ। কিন্তু আমার সাথে এক বন্ধু যাওয়ার কথা থাকলেও সে একদিন আগে না করে দেয় পারিবারিক কাজের জন্য। ২ বাইক নিয়ে ৪ জন যাওয়া রিস্ক মনে হওয়ায় না বলা সত্ত্বেও নাহিদ ভাইকে শ্রীমঙ্গল থেকে আসতে বাধ্য করি।

১১জুন সোমবার নাহিদ ভাই শ্রীমঙ্গল থেকে রওনা দেয়। আমি তাকে নিয়ে দোলাইরপাড় অপেক্ষা করি সোহাগের জন্য। আমাদের গ্রুপের আরেক বাইকার জাবির তার হাঙ্ক নিয়ে উপস্থিত হয়, মাওয়া পর্যন্ত এগিয়ে দিবে বলে। ওইদিকে সোহেল ভাই কাঠালবাড়ী ঘাটে আমাদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। আমরা মাওয়া পৌছাই বিকাল ৪টায়, তখন জানতে পারি শরিয়তপুরের পরবর্তী ফেরি রাত ৮টায়। পরে কাওরাকান্দির ফেরিতে উঠে পরি। আমি গিয়েসিলাম তাদের বিদায় দিতে।

কিন্তু একপ্রকার জোড় করেই এক কাপড়ে ফেরিতে তুলে ফেলে তাদের সাথে যাওয়ার জন্য। ওইদিকে সোহেল ভাইকে জানিয়ে দেই আমরা কাওরাকান্দি যাচ্ছি। এই দিকে সোহাগের Dslr দিয়ে নদীর পাড়ের এবং নিজেদের ছবি তুলতে গিয়ে দেখি মেমোরি কার্ডটা ভূলে বাসায় রেখে আসছে। ঠিক করলাম শরিয়তপুর থেকে মেমোরি কার্ড কিনে ফেলবো। আমাদের ফেরি কাওরাকান্দি পৌছাতে ৭.১৫ বেজে যায়। পৌছে দেখি সোহেল ভাই ব্যাগ ছাড়া চলে আসছে, ভাবলাম বাসা হয়তোবা কাছে তাই ব্যাগ আনে নাই। তখন ২ বাইক আর আমরা ৪জন। সোহেল ভাইকে ফলো করা শুরু করলাম কারন আমরা রাস্তা চিনি না।

রাস্তা দেখি শেষই হয় না। এক পর্যায় জানতে পাড়ি ঘাট থেকে তার বাড়ি ৪৬ কিলো দুরে। যাইহোক, শরিয়তপুর শহরে প্রবেশ করে অনেক খোজাখুজি করে মেমোরি কার্ড ব্যবস্থা করলাম। সোহেল ভাই এর বোনের বাসায় নিয়ে গেল, খুবই সাজানো গোছানো একটা বাড়ি। আপা খুবই আন্তরিক ছিল, আমরা যাওয়ার পর হালকা নাস্তা করে আমরা বের হবো ঠিক করি। কিন্তু সোহেল ভাই রাতের খাবার খেয়ে বের হতে হবে বলেন। রাতের খাবার এত সুস্বাদু ছিল যে খেয়ে একেকজন নড়তে পারছিলাম না।

এর মধ্যে বৃস্টি শুরু, তখন বাজে রাত ১০. ৩০। আমরা ঠিক করি, রাত ১টায় রওনা দিবো। কিন্তু ওখানকার কিছু রাস্তা বেশি রাত হলে বিপদজনক হয়ে যায়। তাই আর রিস্ক নিলাম না। ভোর ৫ টায় উঠে ফ্রেশ হয়ে আমরা শরিয়তপুর শহরে নাস্তা করে বেরিয়ে পরি। বরিশাল প্রবেশের আগে আড়িয়াল খা ব্রিজে আমরা ১ম বিরতি দেই, দেখারমত একটা ব্রিজ। এরপর আমরা মূল সড়কে উঠে স্ট্যাটাস দেই গৌড়নদীর দই খেতে যাচ্ছি। কিছুক্ষন পর গৌড়নদির দই খেয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কিছু ছবি তুলে ঝালকাঠি জেলার উপরদিয়ে চলে যাই বরগুনা আমতলি।

সেখানে বৃস্টির কারনে কিছুক্ষন অপেক্ষা করে চলে যাই পটুয়াখালি প্রবেশ মুখে লেবুখালি ফেরি ঘাটে। ৫ মিনিটে পৌছে যাই ওপারে। সেখান থেকে আবার রওনা দেই কুয়াকাটার উদ্দ্যেশে। এরমধ্যে শাহিন ভাই ফোনে বলে ভাই আমি আসতেছি। আমরা অবাক হয়ে যাই। পড়ে বলি, ঠিক আছে আসেন। আমরা মাঝে বৃস্টির জন্য বিরতি দিলে, পথিমধ্যে দেখা হয়ে যায় Adventure Sports Club এর Tannha Xiesun ভাই এর সাথে, সে ঢাকা ফিরছিলো যতটুকু সময় পেয়েছে শে আন্তরিকতা দেখিয়েছে।

আল্লাহ্ তাআলার অশেষ রহমতে ১.৩০ এর মধ্যে কুয়াকাটা পৌছে যাই। এত এক্সাইটেড ছিলাম যে পুলিশের বাধা দেয়া সত্ত্বেও বাইক বিচে নামিয়ে দেই। আমাদের বেজ দেখে সবাই হা করে তাকিয়ে ছিলো। বিচে ছবি তুলে চলে যাই হোটেলে রুম নেয়ার জন্য। রুম নিয়ে কাপড় পরিবর্তন করে বিচে চলে আসি গোসলের জন্য। অনেক মজা করি বিচে।

দুখজন্ক ঘটনা হলো, ১মে নাহিদ ভাই কুয়াকাটা বিচে থাকা পাথরে পায়ে ব্যাথা পায়। পড়ে আমার মহা মূল্যবান চসমা সাগরে ভাসিয়ে দেই এবং সোহাগ কাচের ভাঙ্গা বোতলে পা কেটে ফেলে। কাছাকাছি ফার্মেসিতে এসে পা ড্রেসিং করে ব্যন্ডেজ করে রুমে চলে আসে। এসে ফ্রেস হয়ে খাবার খাওয়ার জন্য বের হই। দুপুরে খাবার খেতে গেসি বিকাল ৫টায়, সেখানে আরেক বিপত্তি। হঠাৎ ভাতের প্লেটে দেখ কালো পোকা মইরা আসে। উপরে তাকাইলাম, নাহ্ উপর থেকে পড়ে নাই। হোটেল বয়কে ডেকে খাবার পরিবর্তন করালাম। এবার নাহিদ ভাই এর প্লেটে পাখাসহ পোকা গইলা গেসে। এবার মোটামুটি বকাঝকা লাগাইলাম। যাক কোনরকম খেয়ে বের হলাম। বিচে বাইক চালিয়ে হোটেলে ফিরে এসে বিছানায় কাত হতে না হতেই কল আসলো শাহিন ভায়ের সে চলে আসছে।

আমরা তাড়াহুড়ো করে বিচে যাই। শাহিন ভায়ের চোখে সেকি আনন্দ। আমাদের সবাইকে একেক করে কোলে তুলে নিলো। উফ তার চেহারা দেখে বুঝার উপায় নেই যে এই লোক ১০ ঘন্টা এবং ৩০০ কিলো একা বাইক চালিয়ে এসেছে। যাই হোক শাহিন ভাইকে নিয়ে রাতের খাবার খেয়ে রুমে এসে পরেরদিনের পরিকল্পনা করি। অনেক মজা করি রাতে। সকালে উঠে ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে বেরিয়ে পরি। এর পর চলে আসি ঝালকাঠি শহরে। এখানে এসে সোহাগের বাইকের মবিল পরিবর্তন করি। এর মধ্যে আমার উপর এক মারাত্মক বিরল প্রজাতির পিপড়া হামলা দেয়। তাতেই জ্বর চলে আসে। ঝালকাঠি পৌছানোর সময় আমরা রাস্তায় দেখতে পাই Pulser Rs 200 পার্ক করা।

দাড়িয়ে যাই এবং জিজ্ঞেস করি বাইকটা কার? বেচারা মোটামুটি ভয় পাইছে মনে হয়। একটু পড় এসে বলে আমার। তার সাথে পরিচয় হই, নাহিদ ভাই এবং আমি টেস্ট ড্রাইভও দেয়। পড়ে আমরা ভেকুটিয়া ফেরি ঘাটে চলে আসি। এখানে আমাদের দুইটি বাইক ফেরিতে উঠলেও, সোহাগের বাইক তোলার আগেই ফেরি ছেড়ে দেয়। বাইক যে রাখবে তার জায়গাটাও ছিলো না। যাই হোক আল্লাহ্ এর নামে নামিয়ে দিলো, ১ সেকেন্ড দেরি হলে ও বাইকসহ নদিতে। আল্লাহ্ বাচাইছে, বাইক সবাই মিলে শক্ত করে ধরে ফেলায় বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি। ফেরি পাড় হয়ে পিরোজপুর পৌছে আবার বিরতি।

এর পর চলে আসলাম বাগেরহাট ষাটগম্বুজ মসজিদে। এখান থেকে খান জাহান আলী সেতু পাড়ি দেয়ে খুলনা প্রবেশ করলাম। খুলনায় দুপড়ের খাবার খেয়ে বাইকে সবাই তেল নিলাম। এরপর আবার রওনা হলাম গোপালগঞ্জের উদ্দ্যেশে। বাগেরহাট শহর হয়ে গোপালগঞ্জ প্রবেশ করছি আর মনে হচ্ছিলো, আমরা ইউরোপের কোন দেশে আছি। এত সুন্দর রাস্তা মনে হচ্ছিল বিমানের রানওয়ে। বাইকের গতি এভারেজ ছিল বাগেরহাট থেকে ১০৫। হঠাৎ রাস্তায় গোপালগঞ্জের ২জন বাইকারের সাথে পরিচয় হয়। তাদের সাথে গোপালগঞ্জে কিছুক্ষন আড্ডা দেই। আবার রওনা দিয়ে আমরা চলে আসি ফরিদপুর ভাঙ্গায়।

সামান্য বিরতির পর কাওরাকান্দি ঘাটে এসে সাহিন ভাইকে বিদায় দিয়ে ইলিশ দিয়ে ভাত খাওয়ার সাথে চলে আসি শরিয়তপুর। রাতে সোহেল ভাই এর বাসায় রাতে থাকি। ১৪ তারিখ সকালে শরিয়তপুর শহরে নাস্তা খাওয়ার জন্য পৌছালে ঝুম বৃস্টি শুরু হয়। নাস্তা শেষ করে হালকা বৃস্টিতেই রওনা দেই কাঠালবাড়ী ঘাটের উদ্দ্যেশে। দুইবার বৃস্টি বিরতির পর ১টা নাগাদ পৌছে যাই ঘাটে। ১ঘন্টা পর ফেরি আসলে সোহেল ভাইকে বিদায় দিয়ে আমি, সোহাগ আর নাহিদ ভাই ফেরিতে মাওয়ার উদ্দ্যেশে রওনা দেই। ২ ঘন্টা পর পৌছে যাই মাওয়া। মাওয়া থেকে সোজা ঢাকায়।

এইছিল আমাদের টুর। এই টুরের মাধ্যমে আমাদের গ্রুপ থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-কুমিল্লা-ফেনী-খাগড়াছড়ি হয়ে আবার ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ-মাদারিপুর-শরিয়তপুর-ফরিদপুর-বরিশাল-ঝালকাঠি-বরগুনা-পটুয়াখালী হয়ে আবার পিরোজপুর-বাগেরহাট-খুলনা-গোপালগঞ্জ হয়ে ঢাকা। এই ঈদের পর আমাদের গ্রুপ থেকে বাইকে মোট ১৬ জেলা টুর দেয়া হয়েছে।

লিখেছেন- Mohammed Mehedi Hasan Rasel

Published by Shuvo Bangla

Best Bikes

Honda CB Hornet 160R

Honda CB Hornet 160R

Price: 169800.00

Honda CB Hornet 160R ABS

Honda CB Hornet 160R ABS

Price: 255000.00

Honda CB Hornet 160R CBS

Honda CB Hornet 160R CBS

Price: 212000.00

View all Best Bikes

Latest Bikes

CFMoto 125NK

CFMoto 125NK

Price: 0.00

Liban Wind

Liban Wind

Price: 0.00

Liban Phoenix Plus

Liban Phoenix Plus

Price: 0.00

View all Sports Bikes

Upcoming Bikes

Liban Wind

Liban Wind

Price: 0.00

Liban Phoenix Plus

Liban Phoenix Plus

Price: 0.00

Liban Phoenix

Liban Phoenix

Price: 0.00

View all Upcoming Bikes