বাংলাদেশের প্রথম সারির ৫টি ক্রুজার মোটরসাইকেল
This page was last updated on 06-Jul-2024 01:26pm , By Shuvo Bangla
বিশ্বজুড়েই মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরাঘুরি জনপ্রিয় একটি ব্যাপার। আক্ষরিক অর্থে এটি স্বাধীনতার প্রতীক বা আরো ভালোভাবে বলতে গেলে স্বাধীনতাকে উপভোগের একটি উপায়। আর বাংলাদেশে দিন দিন এই প্রবণতা বেড়েই চলেছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে ক্রুজার মোটরসাইকেলের প্রয়োজনীয়তা। তাই আজকে আমরা বাংলাদেশের প্রথম সারির ৫টি ক্রুজার মোটরসাইকেলের সঙ্গে পরিচিত হবো।
কিওয়ে সুপারলাইট এর ভিডিও রিভিউ দেখতে এখানে ক্লিক করুন
https://www.youtube.com/watch?v=NxdWT0TEWR8
বাংলাদেশে ক্রুজার মোটরসাইকেল– কমান্ডো
বর্তমান বাংলাদেশে ক্রুজিং মোটরসাইকেলের কমান্ডে বা সবার আগে রয়েছে ইউএম রেনেগাড কমান্ডো। বাজারে প্রচলিত ক্রুজারের মধ্যে এটিই সবচেয়ে চওড়া ক্রুজার মোটরসাইকেল। বলতে গেলে, এর আর্মি গ্রিন রঙ ও ডিজাইনের জন্য এটি দেখতে আর্মি কমান্ডারের মতোই।
এটি বড়োসড়ো ম্যাট কোটেড মোটরসাইকেল। বাইকের কোথাও এমনকি এক্সজস্ট পাইপেও নিকেল বা ক্রোমের কাজ করা নেই। এটা মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার থিমেও ওপর ভিত্তি করে বানানো হয়েছে, যেটার সবটাতেই প্রথাগত ক্রুজারের বৈশিষ্ট্যই চোখে পড়বে। রেনেগাড কমান্ডোর বড়ো জ্বালানি ট্যাঙ্কসহ পুরো বডি প্যানেলই বেশ চওড়া। সঙ্গে রয়েছে গোলাকার হেডলাইট ও অডো মিটার।
আর প্যানেলগুলো ছাড়াও হুইল, রিম ও সাসপেনশন সিস্টেমও সাধারণ চপারগুলোর মতো করেই ডিজাইন করা। হুইলগুলোতে স্টিল রিমের সঙ্গে স্পোক লাগানো হয়েছে। আর টায়ারগুলোতে টিউব থাকলেও সেগুলো বেশ মোটা।
কমান্ডোর সামনের সাসপেনশন টেলিস্কোপিক ও পিছনেরগুলো স্প্রিং লোডেড ডাবল সাসপেনশন। আর সামনে ডিস্ক ও পিছনে রয়েছে ড্রাম ব্রেক। বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে যেতে পারেন।
ইউএম রেনেগাড কমান্ডো স্পেসিফিকেশন
বাংলাদেশে ক্রুজার মোটরসাইকেল– সুপারলাইট ১৫০
কিওয়ে মোটর কোম্পানির কিওয়ে সুপারলাইট ১৫০ বাজারে প্রচলিত আরেকটি ক্রুজার মোটরসাইকেল। স্পিডোজ লিমিটেড বাংলাদেশে কিওয়ে মোটরসাইকেল বাজারজাত করে।
প্রথম দর্শনে কিওয়ে সুপারলাইটকে অনেকটা ইউএম রেনেগাডের মতোই মনে হয়। তবে ভালো করে দেখলে বেশ বড়ো ধরনের পার্থক্য দৃষ্টিগোচর হবে। সুপারলাইট ডিজাইন করা হয়েছে ৮০ দশকের রকস্টার ফ্যাশনের অনুকরনে এবং এটা দেখতে আরো বেশি গোলাকার।
কিওয়ে সুপারলাইট ১৫০ ডিজাইনের দিক থেকে বেশ ছিমছাম। এটার সিট স্প্লিট না করে সোজা ও গোটা রাখা হয়েছে। রিমে স্পোক ব্যবহার করা হয়নি, বরং মেটাল দিয়ে তৈরি ও এর টায়ারগুলো অনেক চওড়া। এটাও আগেরটার মতোই টিউব টায়ারের চপার বাইক। আর এটার অডো প্যানেলে ডাবল পিট অ্যাসেম্বলি ব্যবহার করায় দেখতে বেশ আলাদা। আর সুপারলাইটের বডি প্যানেলে কিছু ক্রোমের কাজ করা আছে।
কিওয়ে সুপারলাইট ১৫০ এর স্পেসিফিকেশন
বাংলাদেশে ক্রুজার মোটরসাইকেল– রিগাল র্যাপ্টর ১২৫
বাংলাদেশের বাজারে প্রচলিত ক্রুজারগুলোর মধ্যে রিগাল র্যাপ্টর ১২৫ এর ডিজাইন বেশ ভেবেচিন্তে করা হয়েছে। এটাতে প্রশস্ত হুইলবেজ ও বড়ো হ্যান্ডেলবার রয়েছে। তাছাড়া এর ক্রোম কোটেড এক্সজস্ট পাইপ তরুণদের চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে।
কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশে রিগাল র্যাপ্টর ১২৫ পাওয়া গেলেও এখনো দেশে এই বাইকের কোনো প্রতিষ্ঠিত পরিবেশক বা ডিলার নেই। ব্যক্তিগত উদ্যোগে ঢাকার এক আমদানিকারক এই বাইক দেশে এনে বিক্রি করেন।
এই প্রতিষ্ঠানটিই বিক্রি ও বিক্রয়ত্তর সব সেবা দিচ্ছে এখন। আসলে যারা অনেকের মাঝে আলাদা করে নিজেকে চেনাতে চান বা বিশেষ ভাবে নিজের অস্তিত্ব ঘোষণা করতে চান তাদের জন্যই রিগাল র্যাপ্টর ১২৫। অবশ্য ডিজাইন ও দর্শনধারী ছাড়া এই বাইকের বিক্রয়োত্তর সেবা খুবই সীমিত ভাবে শুধু ঢাকায় পাওয়া যায়।
রিগাল র্যাপ্টর ১২৫ স্পেসিফিকেশন
বাংলাদেশে ক্রুজার মোটরসাইকেল– পেগাসাস
পেগাসাস বাজারে ছেড়েছে বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান যমুনা ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড অটোমোবাইলস লিমিটেড। তারাই পেগাসাস ফেবিও ১২৫ বাজারে ছেড়েছে। পেগাসাস তাদের নিজস্ব ব্র্যান্ড হলেও এটার ডিজাইন ও তৈরি করা হয়েছে চিনে।
প্রকৃতপক্ষে পেগাসাস ফেবিও ১২৫ হচ্ছে ১২৫ সিসির হালকা কমিউটার বাইক। এই স্বল্প পাল্লার কমিউটারটি ডিজাইন করা হয়েছে ক্রুজারের মতো করে। যদিও এটাকে ঠিক চপারের তালিকায় ফেলা যায় না, তবুও এটা নিয়ে সপ্তাহান্তে ক্রুজিংয়ে বের হওয়াই যায়।
তাই কোনো কমিউটার বাইক ব্যবহারকারী ক্রুজারের মজা নিতে চাইলে পেগাসাস নিয়ে দেখতে পারেন। এটা আরামে নিত্যকার শহুরে যাতায়াত ও হালকা ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত।
পেগাসাস ফেবিও ১২৫ স্পেসিফিকেশন
বাংলাদেশে ক্রুজার মোটরসাইকেল– হাওজু হিরো
সবশেষে যেটার কথা বলবো, সেটা হলো হাওজু’র আপকামিং বাইক হিরো। হাওজু টিআর১৫০ হচ্ছে সেই ক্রুজার বাইক। অতি শীঘ্রই কর্ণফুলী এটা বাজারজাত করবে।
জানা কথা, কর্ণফুলী এখন আর বাংলাদেশে ইয়ামাহা বাজারজাত করছে না। সম্প্রতি তারা হওজু মোটরসাইকেলের পরিবেশক হিসেবে কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যেই কর্ণফুলীর বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতে হাওজু বাইক বিক্রি শুরু হয়েছে। আর হাওজু টিআর১৫০ এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বাইক হিসেবে বাজারে আসার অপেক্ষায় রয়েছে। এটা হবে ১৫০ সিসির গর্জিয়াস একটি ক্রুজার। লম্বা পথে ভ্রমণের জন্য আরাম ও নিয়ন্ত্রণের দিকে সর্বাধিক নজর রেখেই এর ডিজাইন করা হয়েছে।
তাছাড়া তরুণ ক্রুজার প্রেমীদের মন জয় করতে এতে আধুনিক সব ফিচারই যোগ করা হয়েছে। যদিও কবে নাগাদ এটা বাজারে আসবে তা আমরা জানতে পারিনি। কিন্তু এটা যে ভ্রমণ পিপাসু বাইকারদের মনে নাড়া দিবে তা সহজেই অনুমান করতে পারছি।
পাঠক, এই হলো বাংলাদেশের প্রথম সারির পাঁচটি ক্রুজার। জানেনই তো, দিনকে দিন এদেশে বাইকিং ও বাইক নিয়ে লম্বা ভ্রমণ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে, সেজন্য ক্রুজারের চাহিদাও বেড়েই চলেছে। কিন্তু বাজারে মাত্র কয়েকটি মডেলের ক্রুজার পাওয়া যাচ্ছে।
আর আমরা সেগুলোর সম্পর্কেই আপনাদেরকে সংক্ষেপে জানানোর জন্য এই আয়োজন করেছিলাম। আপনাদের যদি বিস্তারিত জানার ইচ্ছা থাকে তবে আমাদের ওয়েব সাইটে, ফেসবুক পেজে বা গ্রুপে সরাসরি জিজ্ঞেস করতে পারেন। আমরা সবসময় আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে তৈরি থাকি। ধন্যবাদ সবাইকে।