হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর ভার্স হোন্ডা এক্সব্লেড ফিচার কম্পারিজন
This page was last updated on 14-Jul-2024 01:02am , By Ashik Mahmud Bangla
বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেড সম্প্রতি তাদের প্রডাক্টলাইনে নতুন হোন্ডা এক্সব্লেড মডেলটি যোগ করেছে। পাশাপাশি হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর মডেলটিও স্বাড়ম্বরে রাস্তায় চলমান। দুটি মোটরসাইকেলই মোটামুটি একই ক্যাটাগরীভুক্ত হওয়ায় আমরা তাদের মধ্যেকার বৈশিষ্ট্যগুলো তুলনা করে আলোচনা করার প্রয়োজন অনুভব করছি। আর তাই আমরা আজ হাজির হয়েছি হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর ভার্স হোন্ডা এক্সব্লেড ফিচার কম্পারিজন আলোচনা নিয়ে।
প্রথমত বলা যায়, হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর ভার্স হোন্ডা এক্সব্লেড উভয়ই মোটামুটি একই শ্রেণিভুক্ত মোটরসাইকেল। উভয় মেশিনই একই ফ্রেম, ডাইমেনশন এবং একই ধরনের ইঞ্জিনযুক্ত। এই সাধারন মিলগুলো বাদ দিলে একটি বিষয় পরিস্কার যে, উভয়ই মোটরসাইকেলই ডিজাইন, লুক ও পারফর্মেন্সের ভিত্তিতে সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটি মডেল। এমনকি তাদের সাদৃশ্যের ক্ষেত্রগুলিও ইউনিক আইডেনটিটি দেওয়ার জন্য পুরোটাই আলাদাভাবে ডিজাইন করা।
হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর ভার্স এক্সব্লেড ফিচার কম্পারিজন আলোচনা
হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর ভার্স হোন্ডা এক্সব্লেড স্পেসিফিকেশন কম্পারিজন
আমরা উভয় মোটরসাইকেলেরই বৈশিষ্ট্যগুলি পর্যালোচনা করে বেশ লক্ষনীয় কিছু পার্থক্য পেয়েছি। তাদের ভিন্নতাগুলি আলোকপাত করায় খুব পরিস্কারভাবেই তাদের আলাদা আইডেনটিটি ও প্রফাইল প্রতীয়মান হয়। তবে সেই আলোচনায় প্রবেশের আগেই আমরা এখানে হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর ভার্স হোন্ডা এক্সব্লেড স্পেসিফিকেশন টেবিলটি সাজিয়েছি। এখান থেকে সহজেই আপনারা বাইকদুটির সাধারন সাদৃশ্যগুলোর সাথে সাথে প্রযুক্তিগত বৈশাদৃশ্যগুলিও দেখে নিতে পারবেন।
Specification | Honda CB Hornet 160R | Honda XBlade | |
Engine | Air Cooled, 4 Stroke, 2-Valve, SI BS-IV Engine | Single Cylinder, Four Stroke, Air Cooled, SI Engine | |
Displacement | 162.71 cc | 162.71cc | |
Bore x Stroke | 57.30mm x 63.09mm | 57.30mm x 63.09mm | |
Compression Ratio | 10.0:1 | 10.0:1 | |
Valve System | 2-Valve SOHC | 2-Valve SOHC | |
Maximum Power | 15.3PS (15.1BHP)@8,500RPM | 14.13PS (13.9BHP)@8,500RPM | |
Maximum Torque | 14.76 Nm@6,500RPM | 13.9Nm@6,000RPM | |
Fuel Supply | Carburetor | Carburetor | |
Ignition | CDI | CDI | |
Clutch Type | Wet Type Multi-Plate Clutch | Wet Type Multi-Plate Clutch | |
Starting Method | Electric & Kick Start | Kick & Electric | |
Air Filter Type | Paper Air Filter | Viscous Paper Air Filter | |
Transmission | 5 Speed, Pattern 1-N-2-3-4-5 | 5 Speed, Pattern 1-N-2-3-4-5 | |
Dimension | |||
Frame Type | Diamond Frame | Diamond Frame | |
Dimension (LxWxH) | 2,041mm x 783mm x 1,067mm | 2,013mm x 786mm x 1,115mm | |
Wheel Base | 1,345mm | 1,347mm | |
Ground Clearance | 164mm | 160mm | |
Saddle Height | Not Found | Not Found | |
Kerb Weight | 138Kg (STD) / 140Kg (CBS) | 141kg | |
Fuel Capacity: | 12 Liters | 12 Liters | |
Wheel, Brake, Suspension | |||
The Suspension (Front/Rear) | Telescopic Fork / Mono Shock Absorber | Telescopic Fork / Mono Shock Absorber | |
Brake system (Front/Rear) | Front 276mm Disc with ABS; 220mm Disk / 130mm Drum | Front: 276mm Disk Rear: 130mm Drum | |
Tire size (Front / Rear) | Front: 100/80-17; Rear: 140/70-17 Both Tubeless | Front: 80/100-17 46P Rear: 130/70-17 62P Both Tubeless | |
Battery | 12V, 4.0AH (MF) | 12V, 4.0AH (MF) | |
Headlamp | Bulb | Double Pit LED with LED DRL | |
Speedometer | Fully Digital | Fully Digital | |
*All the specifications are subject to change upon company rules, policy, offer & promotion. BikeBD is not liable for the changes.
হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর ভার্স হোন্ডা এক্সব্লেড ফিচার কম্পারিজন
হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর ভার্স হোন্ডা এক্সব্লেড উভয় বাইকই সাধারনভাবে স্ট্রিট-কমিউটার ক্যাটাগরীভুক্ত। তবে সংযুক্ত স্পোর্টি ফিচার ও ইরগনোমিক্স তাদের পুরোপুরি নেকেড স্ট্রিটফাইটার প্রোফাইল দিয়েছে।
ফলে দুটি বাইকই বৈশিষ্ট্যে সাধারন গতানুগতিক কমিউটারের চেয়ে অবশ্যই বাড়তি কিছু। ফলত: দুটি বাইকই বলা যায় তরুণদের জন্যে আধুনিক স্ট্রিট-স্পোর্টস-উইপন এর মতো। যাহোক, দুটো মোটরসাইকেলেরই সংযুক্ত ফিচারগুলো নীচে আলোচিত হলো।
আইডেনটিক্যাল ডিজাইন, লুকস এন্ড এ্যাপিয়ারেন্স
হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর ভার্স হোন্ডা এক্সব্লেড মোটরসাইকেল দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন ডিজাইন বহন করে। উভয় মেশিনই তাদের ব্যাজ অনুসারে আইডেনটিক্যাল লুকস ও এ্যাপিয়ারেন্স নিয়ে এসেছে। তদানুসারে, তাদের বডি প্যানেল, এক্সটেরিয়র, কালার, শেড সবকিছুই সম্পূর্ণ আলাদা ও আলাদা পরিচয় প্রকাশ করে।
এখানে সিবি হর্নেট ১৬০আর এর এক্সটেরিয়র বেশ ফোলানো ও স্থুলাকার। ম্যাট ও গ্লোসি দুধরনের প্যানেল সমন্বিত করেই এর ফাঁপানো কিন্তু ধারালো ডিজাইনকে প্রকাশ করা হয়েছে। আর সেইভাবেই এ্যাগ্রেসিভ ও কুল এ্যাটিট্যুডের মিশেলে এর বাহ্যিক রূপ দেয়া হয়েছে। ফলে এর ডিজা্নটি মোটামুটি সবার কাছেই বেশ সাদর গ্রহনযোগ্যতা পেয়েছে।
আর অপরদিকে, হোন্ডা এক্সব্লেড বেশ ধারালো একটি এক্সটেরিয়র প্রোফাইল নিয়ে এসেছে। এটির টপ-টু-বটম ও হেড-টু-টেইল চকচকে ধারালো ব্লেডের মতোই বেশ শার্প ও স্লিক ডিজাইনের। এই বাইকটির বডি প্যানেলেও ম্যাট ও গ্লোসি প্যানেলের সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। তবে এই বাইকটির বডি ডিজাইন বেশ কম্প্যাক্ট আর তা বেশ আগ্রাসী পরিচয়ই প্রকাশ করে।
ইউনিক এন্ড আনম্যাচড ডিজাইন
হরনেট ১৬০আর ও এক্সব্লেড, উভয় বাইকই একই টাইপের স্টিল ডায়মন্ড ফ্রেম ধারন করে মোটামুটি একই ক্যাটাগরীর পরিচয় বহন করে। তবে ইউনিক ও আনম্যাচড বডি ডিজাইন দুটি বাইককে সম্পূর্ণ আলাদা বৈশিষ্ট্য ও রাইডিং ক্যারেক্টারিস্টিকস দিয়েছে। ফলে দুটি বাইক সম্পূর্নই স্বাতন্ত্র দুটি মডেল।
এখানে বাইকদুটির বডি-প্যানেলের কোন অংশই কোন সাদৃশ্য বহন করে না। তাদের হেডল্যাম্প, টেলল্যাম্প, ফুয়েল-ট্যাঙ্ক, সাইড প্যানেল, সিট, এক্সজস্ট, মাডগার্ডস সহ সবই আলাদা ও ইউনিক ডিজাইনের। আর লং-হর্ন হেডল্যাম্প অ্যাসেমব্লি, আন্ডারবেলি প্যান, রিয়ার-হুইল হাগার, ডাবল-হোল এক্সস্টাস্ট হোন্ডা এক্সব্লেডে বাড়তি ফিচার হিসেবে সংযুক্ত হয়েছে।
গ্যাজেট এন্ড ইলেকট্রনিক ফিচার
হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর ভার্স হোন্ডা এক্সব্লেড উভয় মেশিনই সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরণের গ্যাজেট এবং ইলেকট্রনিক ফিচারযুক্ত। মোটরসাইকেলদুটির সমস্ত ইলেকট্রনিক সেটআপ, ডিসপ্লে, ও কন্ট্রোলিং গ্যাজেট সবকিছুই তাদের আলাদা বৈশিষ্ট্য দেবার জন্যেই ভিন্নভাবে ডিজাইন করা।
বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে থাকা হোন্ডা সিবি হর্নেটের হেডল্যাম্প এ্যাসেমব্লিতে রয়েছে সম্পূর্ন বাল্ব হেডল্যাম্প সেটআপ। এতে রয়েছে দুটি পাইলট ল্যাম্প এবং একটি শক্তিশালী হেডল্যাম্প। আর বাইকটির পেছনে রয়েছে বেশ এ্যাগ্রেসিভ ডিজাইনের এক্স-শেপের অল-এলইডি টেইলল্যাম্প সেটআপ।
এছাড়াও হর্নেটে রয়েছে সাধারন বাল্বযুক্ত ক্লিয়ার-লেন্স ইন্ডিকেটর সেটআপ। বাইকটির ওডোপ্যানেলটি বেশ স্লিক ডিজাইনের আর তাতে রয়েছে অরেন্জ শেড ব্যাকলিট। আর সেইসাথে এর অডোটিতে সমস্ত সাধারন গজ যুক্ত করা হয়েছে। তাতে বাইকের প্রয়োজনীয় সকল কন্ট্রেলিং প্যারামিটারগুলো সন্নিবেশিত হয়েছে।
অপরদিকে এক্সব্লেডে সম্পূর্ণ ভিন্নধরনের কন্ট্রোলিং গ্যাজেট এবং ইলেকট্রনিক সেটআপের সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। এর হেডল্যাম্পটি ফোর-পিট এলইডি হেডল্যাম্পসহ চিন-মাউন্টেড এলইডি-ডিআরএল যুক্ত। আর এর সামনের ইন্ডিকেটর দুটো আলাদা পার্ট হিসেবে থাকলেও পেছনেরগুলো অ্যাঙ্কর-হেড এলইডি টেলল্যাম্পের সাথে মাউন্ট করা।
এক্সব্লেডের ওডো-প্যানেলটি সম্পূর্ণ নতুন একটি ইউনিট, যা ইন্দো সিবিআর ১৫০আর থেকে সমন্বয় করা। এটি সিবিআর এর মতোই সেই একই সকল গ্যাজেট এবং প্যারামিটারসমূহ প্রদর্শন করে। আর এছাড়াও এক্সব্লেডে রয়েছে হ্যাজার্ড সুইচ সেটআপ। এটি লো-ভিজিবিলিটি কন্ডিশনে সব ইন্ডিকেটরগুলিকে একসাথে ফ্ল্যাশ করতে সাহায্য করে। আর এইভাবে এটি রাস্তায় বাইকের নিরাপদ অবস্থান নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
ডিফারেন্ট হুইল সেটআপ
হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর ভার্স হোন্ডা এক্সব্লেড উভয় মোটরসাইকেলেরই চাকা, ব্রেক, এবং সাসপেনশন সিস্টেমে বেশ কিছু সাদৃশ্য ও ভিন্নতা রয়েছে। দুটো মডেলেই এ্যালয়-রিম ও টিউবলেসটাইপ টায়ারযুক্ত চাকা রয়েছে। তবে তাদের চাকার রিম ডিজাইন এক নয়। হর্নেটেরয়েছে দশ-স্পোকযুক্ত এ্যালয়-রিম ও এক্সব্লেডে রয়েছে পাঁচ-স্পোকযুক্ত এ্যালয়-রিম।
এছাড়াও বাইকদুটির চাকার ডাইমেনশন ও এক নয়। সিবি হর্নেট, এক্সব্লেডের চেয়ে ওয়াইডার-প্রোফাইলের হুইল সেটআপ ধারণ করে। হর্নেটে রয়েছে সামনে ও পিছনে যথাক্রমে 100 / 80-17 এবং 140 / 70-17 সা্ইজ চাকা আর এক্সব্লেডে এটি 80 / 100-17 এবং 130 / 70-17 সাইজ। তবে ব্রেকিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে উভয় মোটরসাইকেলই একই ধরণের ব্রেকিং সিস্টেম যুক্ত। তাদের উভয় চাকাতেই রয়েছে হাইড্রোলিক ডিস্ক টাইপ ব্রেকিং সিষ্টেম এবং অপশনাল রিয়ার-ড্রাম ব্রেক।
ইঞ্জিন ও পার্ফমেন্স
হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর ভার্স হোন্ডা এক্সব্লেড বাইকদুটো মূলত: একই সিঙ্গেল-সিলিন্ডার, ফোর-স্ট্রোক, এয়ারকুলড, এসওএইচসি ২-ভালভযুক্ত এইচইটি ইঞ্জিন। একই বোর এবং স্ট্রোক নিয়ে, এটি একই 162.71 সিসির ইঞ্জিন, যাতে একই 10: 1 কম্প্রেশন রেশিও রয়েছে।
তবে একই কার্বুরেটর ফিডিং সেটআপসহ হলেও বাইকদুটির ইঞ্জিন টিউনিং এবং ট্যুইকিং এক নয়। হর্নেট ১৬০আর ইঞ্জিনের পাওয়ার রেটিং 15.3PS এবং টর্ক 14.76NM। আর অপরদিকে এক্সব্লেডে এটি 14.13PS পাওয়ার ও 13.9NM টর্কে সমন্বয় করা।
এছাড়া দুটো বাইকেই রয়েছে ফাইভ-স্পিড গিয়ার, কিক ও ইলেকট্রিক স্টার্টিং সিষ্টেম। তবে একটি বিষয় অবশ্যই লক্ষ্যনীয় যে ইঞ্জিন পাওয়ার এবং টর্ক রেটিং মূলত: প্রতিটি মোটরসাইকেলের ডাইমেনশন, এ্যারোডাইনামিক্স, এবং ডিজাইনের সাথেই সমন্বয় করেই নির্ধারন করা হয়। আর এছাড়াও ভিন্ন ফিচার, কাষ্টমার টেষ্ট, ও ফুয়েল ইকনমিও বিবেচ্য বিষয়তো বটেই।
হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর ভার্স হোন্ডা এক্সব্লেড
তো বন্ধুরা, মোটামুটি এই ছিলো হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর ভার্স হোন্ডা এক্সব্লেড ফিচার কম্পারিজন এর ব্রেকআপ। আশা করি আপনারা প্রতিটি বাইকের মোটামুটি বিশদ স্কেচই পেয়েছেন। উভয় বাইকেরই বেশ কিছু ফিচারে সাদৃশ্য রয়েছে। তবে অবশ্যই উভয় মডেলই বিভিন্ন ধরণের এবং ভিন্ন স্বাদের রাইডারদের প্রয়োজনের কথা বিবেচনায় রেখেই ডিজাইন করা হয়েছে। তো নি:সন্দেহে পছন্দের কাজটি আপনার। বেছে নিন আপনার হোন্ডা সিবি হর্নেট অথবা ধারালো এক্সব্লেড। ধন্যবাদ।