নতুন মোটরসাইকেল কেনার আগে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখা দরকার

This page was last updated on 06-Jul-2024 01:56pm , By Ashik Mahmud Bangla

বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ এবং বেশীরভাগ মানুষই মিডলক্লাস ফ্যামিলির । সো , বেশীরভাগ মানুষের অফিসে বা তার কর্মক্ষেত্রে যাওয়া আস বা অন্যান্য কাজের জন্য একটা বাইকের প্রয়োজন সবসময়ই আশা করে । যদি কারও অলরেডি একটা বাইক থেকে থাকে , তাহলে তার প্রবণতা থাকে আরেকটি নতুন বাইক টেস্ট করার । আর বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এখানে সেখানে ভ্রমণ বা যাওয়া আসা করা জন্য বাইকই সর্বশ্রেষ্ট মাধ্যম ।

নতুন মোটরসাইকেল কেনার আগে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখা দরকার

তো , বাইক সবসময়ই একটা মূল্যবান সম্পদ এবং অনেকের ক্ষেত্রে স্ট্যাটাসের ও একটা ব্যাপার হয়ে থাকে । তো , সাধারণত বাংলাদেশে যারা নিয়মিত ইউজের জন্য বাইক কেনে , তারা সর্বনিন্ম ৩ বছর এবং সবোর্চ্চ ১০ বা তারও বেশী বছর ধরে ইউজ করে । তাই , একটা মোটরসাইকেল কেনার আগে আমাদের সবসময়ই সতর্ক থাকতে হবে । আপনাকে অবশ্যই সবদিক বিবেচনা করে সতর্কতার সাথে বাইক চয়েজ করতে হবে। আপনার কোনটা দরকার,বা কোনটা না হলেও চলে , বা কেমন পারফরমেন্স দরকার , কেমন মাইলেজ দরকার এসব অনেক দিকে নজর রাখতে হয় বাইক কেনা আগে।

নতুন মোটরসাইকেল কেনার আগে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখা দরকার

তো , নির্দিষ্ট কিছূ নিয়ম কানুন অনুসরণ করে আপনি একটা আপনার জন্য পারফেক্ট ও ভাল বাইক কিনতে পারবেন । বাইক কেনাটাই এখানে অনেক বড় একটা ফ্যাক্ট বাংলাদেশের মিডলক্লাস ফ্যামিলির ক্ষেত্রে । সো , একটা বাইক কিনে যদি কেউ তার মনের আশা পূরণ করতে না পারে বা বাইকটির পারফরমেন্স তার মন বা আশা মত না হয় , তখন বিষয়টা আসলেই খারাপ হয় । তো , যে বিষয়গুঅে মাথায় রাখলে আপনি আপনার জন্য পারফেক্ট একটা বাইক কিনতে পারবেন সেগুলো নিচে তুলে ধরা হল :

আপনার বাজেট নির্ধারণ :

একটা বাইক কোর ক্ষেত্রে সর্বপ্রথমে আপনাকে আপনার বাজেট ঠিক করতে হবে । কারণ বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বাজেট অনেক বড় একটা জিনিস । আপনার বাজেটই বলে দেবে আপনার জন্য কেমন টাইপের বা কোন ব্রান্ডের হতে পারে । যেমন হতে পারে আপনার বাজেট হল ১২০০০০ থেকে ১৬০০০০ এ ভেতর । সো আপনাকে তখন খুজে বের করতে হবে এই বাজেটের ভেতর সবথেকে ভাল কোন বাইকগুলো রয়েছে বা কোন ব্রান্ডের কেমন বাইক রয়েছে । ফলে বাইক কেনার ক্ষেত্র্রে আপনার মেইন এবং প্রথম কাজ হল আপনার বাজেট নির্ধারণ করা ।

যে বাইক গুলো আপনি চান না সেগুলো বাদ দিন :

বাজেট নির্ধারণের পর আপনার কাজ হবে আপনি যে বাইকগুলো চান না সেগুলো বাদ দেওয়া । মানে , নিশ্চই আপনার বাজেটের ভেতর অনেকগুলো বাইক ই পড়বে । এর মধ্যে আপনি হয়ত চান না যে আপনার বাইকটাতে কোন নিদিষ্ট ফিচার না থাকুক । সেই বাইকগুলো বেছে বেছে বাদ দিন । বা হতে পারে কোন বাইকের কালার , বা লুক আপনার ভাল লাগেনি , বা কোনটার পারফরমেন্স ভাল লাগেনি । 

Also Read: বাংলাদেশে ১৬৫সিসি মোটরসাইকেল এর লঞ্চিং ডেট, বিক্রয়মূল্য ও বিস্তারিত

সেই বাইক গুলো বাদ দিন আপনার তালিকা থেকে । যেমন , ধরুণ আপনার বাজেট ২৫০০০০ এবং আপনি একটা রেসিং বাইক চাইবেন এবং ভাল কোয়ালিটির একটা চাইবেন । দেখা গেল আপনার বাজেটের ভেতর যে বাইকগুলো আছে তাদের ৩ টি বাদে কেউই ৪ সেকেন্ডের ভেতর ৬০ কি.মি/ঘন্টা স্পীড তুলতে পারে না । কিন্তু সেটা আপনার একটা চাহিদা যে আপনার বাইকটি ৪ সেকেন্ডের ভেতর ৬০ স্পিড তুলতে পারবে । সো , আপনার তালিকাকে সংক্ষিপ্ত করে ৩-৪ টি বাইকে নিয়ে আসুন।

শোরুমে গিয়ে একটা টেষ্ট ড্রাইভ দিন :

আপনার তালিকায় যে ৩-৪ টি বাইক রয়েছে সেগুলোর উপর একটা টেস্ট ড্রাইভ চালান । যদি বাইকগুলো আপনার বন্ধু বা রিলেটিভের ভেতর কারও না থাকে তাহলে সোরুমে চলে যান । কারণ , বাইক জিনিসটা একটা চরম ইমোশনের জিনিস । সো , সেটা কেনার আগে অবশ্যই কোন বাইকটি আপনার সাথে সবদিক থেকে প্রাকটিক্যালি যায় সেটা ফিল করে দিখুন । শোরুম এ অথরিটির সাথে বলুন যে আপনি সেখান থেকে ১ টা বাইক ১ সপ্তাহের ভেতর কিনবেই , কিন্তু তার জন্য ওই আপনি ৩-৪ টা বাইকের একটা টেস্ট ড্রাইভ দিতে চান । এভাবে আপনি আপনার জন্য যে বাইকটি সবথেকে বেশী ভাল যায় সেগুলো সিলেক্ট করুন । এবার আপনার তালিকাটা ২ টিতে নিয়ে আসুন।

বন্ধু-বান্ধবের পরামর্শ নিন :

যে বাইকটি কিনতে চাইছেন সম্পর্কে আপনার আসে পাশের লোকজন বা আত্মীয়স্বজনের অভিমত নিন । কেউ না কেউ আপনাকে কোন সদুপদেশ দিতে পারে । হয়ত দেখা যেতে পারে ওই বাইকটি তার আগে ছিল বা ওই বাইক লং টাইম রাইডিং এর এক্সপেরিয়েন্স তার আছে । সো , এই কাজা সেরে ফেলুন । 

মাইলেজের দিকে নজর একটু কমান :

সাধারণত দেখা যায় সব কোয়ালিটির মানুষই বাইক কেনার আগে মাইলেজের বিষয়টি অত্যধিক নজর দেন । কিন্তু এটা একটা ভুল ডিসিশন । ভাল মাইলেজ দিলেই যে বাইক এর কোয়ালিটিও ভাল হবে এমনটা সবসময় হয় না । হয়ত দেখা যাচ্ছে আপনার বাইকের মাইলেজ এমন যে আপনার ১ মাসে ২৫ লিটার জ্বালানী কেনা লাগে । তো দেখা গেল , একই দামের একটা বাইক , যার জন্য আপনার জ্বালানী কেনা লাগছে ২০ লিটার । কিন্তু বাইকটির রিসেইল প্রাইস কম । মানে , হয়ত ধরূন , যে দামে কিনেছেন তার অর্ধেক দামে বিক্রয় করতে হয় সাধারণত । তো , এক্ষেত্রে আপনি মাইলেজের দিকে নজর দিলে আপনার মনে হয় ক্ষতিই হবে । মাইলেজ কম হলেও ভাল ইন্জিনের বাইক কেনার চেষ্ট করুন যেটার রিসেইল প্রাইস বেশী , যেটা ব্রান্ডের বাইকের ক্ষেত্রে বেশী ঘটে থাকে ।হয়ত একারণেই ভাল ইন্জিনের কারণে জ্বালানী একটু বেশী খরচ হয় । আর যদি ভাবেন যে একটা বাইক আপনি সারা জীবন চালাবেন , তখন মাইলেজটাকেই মূখ্য হিসেবে ধরা উচিৎ। 

মার্কেটে সবথেকে ব্রান্ডের প্রচলিত বাইকগুলোর প্রতি নজর দিন :

মার্কেটে যে ব্রান্ডের বাইকগুলো সবথেকে বেশী সেল হয় আপনার লাস্ট তালিকায় যদি সে ব্রান্ডের কোন বাইক থাকে তাহলে সেটাকে বেশী গুরুত্ব দিন । কারণ , প্রোডাক্ট বেশী বিক্রয় হলে , কোম্পানীর লাভও বেশী হয় এবং তারা ভাল মানের বাইক তৈরী করার সুযোগ পায় । আর , যে বাইকগুলো বেশীরভাগ পাবলিক কিনে সেগুলো স্বাভাবিকভাবেই ভাল হয় । কারণ না হলে বাইক গুলোর ফিডব্যাক যদি খারাপ হত তাহলে এর সেল অনেক কমে যেত।

যেটা আপনি পছন্দ করেন সেটা কিনুন :

আপনার পছন্দের দিকে সবসময়ই বেশী প্রাধান্য দিন । কারণ , বাইকটি আপনার অনেক আদরের একটা জিনিস । সো , বাইকটার সাথে আপনি কসফোর্ট ফিল করেন সেটাই নিয়ে নিন । সামান্য বের্শ দাম বা বেশী মাইলেজের দিকে না তাকিয়ে আপনার পছন্দের দিকেও একটু তাকান । কারণ , এটা একটা মেন্টাল স্যটিফ্যিাকশনের একটা বিষয় । সো , এই বিষয়ে কেয়ারফুল থাকুন । আপনার কেনা বাইক নিয়ে যেন আপনার কোন অনুতাপ না থাকে ।

যদি সম্ভব হয় , তাহলে মোটরসাইকেল কেনার আগে উপরের বিষয়গুলো মাথায় রাখার চেষ্টা করবেন । আর আপনার কাছে যদি কোন টিপস থাকে তবে সেটা শেয়ার করতে পারেন ।