বাইক নিয়ে মেঘের রাজ্য সাজেক ভ্রমন লিখেছেন - মহসিন । BikeBD
This page was last updated on 29-Jul-2024 03:11pm , By Ashik Mahmud Bangla
মেঘের রাজ্য সাজেক! অনেকেই বাইক নিয়ে সাজেক যাওয়ার জন্য ইচ্ছে পোষন করেন। কিন্তু যথাযথ সুযোগ ও তথ্য জ্ঞানের অভাবে সাজেক যাওয়া আর হয়ে উঠে না। ঢাকা বা বাংলাদেশের অন্যান্য স্থান থেকে যারা সাজেক ভ্যালির উদ্দ্যেশে যাত্রা করতে চান তাদের জন্যই আমার এই ভ্রমণ র্বাতা। রোড প্লানঃ ঢাকা- কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট-মহিপাল ফ্লাইওভার (ফেনী)- বারৈয়ারহাট- জালিয়াপাড়া-মাটিরাঙ্গা-খাগড়াছড়ি-দিঘীনালা-সাজেক।
বাইক নিয়ে মেঘের রাজ্য সাজেক ভ্রমন লিখেছেন - মহসিন
ঢাকা থেকে সাজেক যাওয়ার জন্য খুব ভোরে রওনা হতে হবে (ভোর ৫-৬টা হলে ভালো হয়)। যাত্রাবিরতি হিসেবে কুমিল্লার ক্যান্টনমেন্ট এসে সকালের নাস্তা সেরে নিয়ে আবার যাত্রা শুরু করতে পারেন। ফেনীর মহিপাল থেকে ৭ কিলো সামনেই বারৈয়ারহাট বাসস্ট্যান্ড। রোড সাইন দেখেই বুঝে যাবেন খাগড়াছড়ি যাওয়ার রাস্তা। বারৈয়ারহাট থেকে জলিয়াপাড়া, মাটিরাঙ্গা হয়ে খাগড়াছড়ি পৌছাতে পৌছাতে দুপুর হয়ে যাবে। এই রাস্তাটার প্রায় ৮০% পাহাড়ি রাস্তা।
যারা পাহাড়ি রাস্তায় বাইক চালিয়ে অভ্যস্থ নন তারা অবশ্যই রাস্তার বাম পাশ ধরে বাইক চালাবেন, সাথে প্রতিটা মোড়ে বাইকের হর্ণ বাজাবেন এবং সর্বদা হ্যান্ড ক্লাস ছেড়ে বাইক চালাবেন। পাহাড়ি রাস্তায় একটি বিশেষ অগ্রধীকার পাবেন যে ঢালু রাস্তা উঠবে তার। যে কোন পাহাড়ি ঢাল থেকে নামার সময় চাইলেই বাইকের ইঞ্জিন ব্রেক কাজে লাগাতে পারেন। তার জন্য নির্দিষ্ট গতি অনুসারে বাইকের গিয়ার সিফটিং ঠিক রেখে ক্লাস ছেড়ে রাখলেই ইঞ্জিন ব্রেক কাজ করা শুরু করবে।
খাগড়াছড়ি পৌছানোর পর বাইকের তেল নিয়ে নিবেন চাইলে দুপুরের খাবারও সেড়ে নিতে পারেন। খাগড়াছড়ি থেকে দুপুর ৩টার র্পূবে দিঘীনালা আর্মি ক্যাম্পে পৌছে রিপোটিং করতে হবে। নয়তোবা আপনি সাজেক ভ্যালী যাওয়ার অনুমতি পাবেন না। আর্মি এর প্রটোকল সকাল ১০.০০ টা এবং বিকাল ৩টায় দিঘীনালা আর্মি ক্যাম্প থেকে সাজেক ভ্যালীর উদ্দ্যেশে রওনা হয়।
সুতরাং যারা দুপুরের প্রটোকল মিস করবেন তারা অবশ্যই রাতটা খাগড়াছড়ি শহরে কাটিয়ে দিয়ে পরদিন সকালের প্রটোকল ধরতে পারবেন খুব সহজেই। আর্মির প্রটোকল এর সাথে সাজেক ভ্যালী পর্যন্ত যাবেন। বলে রাখা ভালো প্রটোকল ছাড়া কোন ক্রমেই সাজেক ভ্যালীতে একা যাতায়াত করবেন না, এতে পাহাড়ী অঞ্চলে আপনার যে কোন অনাকাঙ্খীত দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।সাজেকে পৌছানোর পর প্রথমেই রাতে থাকার জন্য সেখানে কটেজ বা রুম ভাড়া করে নিবেন। সাথে রাতে খাবারের জন্য অগ্রীম খাবার হোটেলে বলে রাখবেন। সাজেক যাওয়ার পর কিছুক্ষনের মাঝেই ফ্রেস হয়ে বের হয়ে পরুন সাজেকের সৌর্ন্দয্য উপভোগ করার জন্য। সন্ধ্যার সূর্যাস্ত পর্যন্ত সাজেকের প্রকৃতির রূপ আপনাকে মুগ্ধ করবে সেটা আমি নিশ্চিত। সন্ধ্যার পর হোটেলে চাইলেই বারবিকিউ পার্টি করতে পারেন। রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে তারাতারি ঘুমিয়ে পরুন । পরদিন খুব ভোর বলতে আযানের সাথে সাথে উঠে পরুন, পূর্ব আকাশে সূর্য্য উঠার র্পূবে হ্যালিপ্যাডে চলে যান, দূরে ভারতের মিজোরাম রাজ্যের পাহাড়ের পাদদেশ থেকে পূর্বের সূর্য্যদ্বয়ের অপরূপ সুন্দর্য্যে চাইলেই নিজে ও নিজের প্রিয় মানুষটির ছবি তুলে ফেলতে পারেন। তারপর সেখান থেকে কংলাক পাহাড়েও যেতে পারেন ।
সাজেকে মেঘ এর আনাগোনা আপনাকে দিতে পারে এক স্বর্গীয় মুগ্ধতার অভিজ্ঞতা। যা আপনাকে কল্পনার জগতে নিয়ে যাবে নিমিষেই। যেহেতু সাজেক কে মেঘের দেশ নামে ডাকা হয় সেহেতু মেঘ দেখতে হলে আপনাকে মে থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ভ্রমণ করতে হবে। ফিরতি আর্মি প্রটোকলেই আপনাকে ফিরতে হবে তার জন্য সকাল ০৯.০০ প্রটোকল বেস্ট হবে আপনার জন্য। দিঘীনালা আর্মি ক্যাম্প পর্যন্ত একসাথে আসার পর সরাসরি খাগড়াছড়ি চলে আসুন, সেখান থেকে দুপুরের খাবার শেষে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যান। এতে রাতের মাঝেই ঢাকা ফিরতে পারবেন ।
বাইক রাইড করার পূর্বে আপনি ও আপনার সফর সঙ্গীর সেফটি র্গাড, ফুল ফেইস হেলমেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, বাইকের সকল বৈধ কাগজপত্র নিশ্চিত করুন। প্রয়োজনে যে কোন বাইকিং গ্রুপের সাথে যোগ হয়ে সাজেক ভ্যালী ভ্রমণ করতে পারেন। নয়তোবা অভিজ্ঞ সম্পূর্ন রাইডার এর সাথে গ্রুপ করে রাইড করতে পারেন। সেহেতু এক সিরিয়ালে বাইক রাইড করবেন, কেউ কাউকে ওভারটেক করবেন না। আপনার যাত্রা শুভ হোক। বিঃদ্রঃ নিরাপত্তার তাগিদে রাত্রীকালীন রাইড পরিহার করার জন্য অনুরোধ করা হলো ।
লিখেছেনঃ আব্দুর রহমান মহসিন
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।