বাইক রাইডিং এর ক্ষেত্রে ১০ টি মারাত্মক সেফটি টিপস
This page was last updated on 04-Jul-2024 07:55am , By Shuvo Bangla
বর্তমান সময়ে বাইক রাইডিং একটা প্যাশন এবং অনেকের ক্ষেত্রে এটা একটা নেশায় পরিণিত হয়েছে । কিন্তু আমরা সবাই'ই জানি যে বাইক রাইডিং এ অনেক রিস্ক রয়েছে এবং সেগুলো মোকাবেলা করেই বাইক রাইড করতে হয় । না হলে আপনি বা যেকোন রাইডারই এক্সিডেন্টের সম্মুখীন হতে পারে এবং বাইক এক্সিডেন্টের ফলে প্রতিদিনই অনেক মানুষ আহত হচ্ছে এমনকী অনেকে মারাও যাচ্ছে । তাই রাইডিং এর আগে কীভাবে সেফলি বাইক রাইড করা যায় সে বিষয়ে আমাদের জানা উচিৎ । আর এটাই আমাদের আজকের আলোচনার বিষয । আজ আমি আপনাদের বাইক রাইডিং এর কিছু সেফটি টিপস দিব যেগুলো আশা করি আপনাদের কাজে লাগবে ।
বাইক রাইডিং এর ক্ষেত্রে ১০ টি মারাত্মক সেফটি টিপস বিস্তারিত
হেলমেট:
আমরা সবাই জানি যে হেলমেট এর মত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস রাইডিং রে ক্ষেত্রে আর হয় না । এটা রাইডারের মাথার সেফটি দিয়ে থাকে এবং বেশীরভাগ এক্সিডেন্টে রাইডারের মাথাই ইনজুরি হয়ে থাকে । তাই , রাইডিং এর আগে সব রাইডারের একটা ভাল এবং তার সাথে ফিট একটা হেলমেট চয়েজ করা দরকার । এটা খুব টাইট বা খুব লুস হবার কোন দরকার নেই । এটা যেন আপনার মাথার সাথে পারফেক্টলি ফিট হয় । আর এটা কেনার সময় ডিজাইন বা স্টাইল না দেখে এটার সেফটি পাওয়ার দেখে কেনাই ভাল ।
মনোযোগীতা:
রাইডং এর সময় বাইকারের এটেশন সবসময় রোডের দিকে থাকাই ভাল । না হলে অনাকাঙ্খিত দূর্ঘটনা ঘটতে পারে । আপনার চোখ সবসময় রোডের উপর রাখুন । অন্যমনস্ক ভাবে রাইডিং এক্সিডেন্টের অন্যতম প্রধান কারণ । আর আপনার সামনে বা পেছনে কোন বাইক বা অন্য কোন যানবাহন আছে কীনা সেটার দিকে লক্ষ্য রাখুন । টার্ণিং এর সময় পুরো রোডের দিকে ভালভাবে খেয়াল করে টার্ণ করুন । রাস্তার ট্রাফিকের বিষয়টা এক্ষেত্রে মাথায় রাখুন ।
প্যাসেঞ্জার:
রোডে সিঙ্গেল রাইড করছেন এমন পাবলিক খুব কমই দেখা যায় ।সবসময়ই বাইকের পেছনে একজন সহ রাইডিং এর বিষয়টা বেশী নজরে পড়ে । রাইডিং এর ক্ষেত্রে প্যাসেঞ্জারও একটা ভাইটাল রোল প্লে করে । রাইডিং এর আগে আপনার পেছনের যাত্রী ঠিকমত বসতে পেরেছে কীনা সেটা লক্ষ্য রাখুন । অনেক সময় পেছনে বসা কারোর নড়াচড়া বা অনাকাঙ্খিত মুভমেন্টের কারণেও বিপদ ঘটে থাকে । আর আপনি একজন প্যাসেঞ্জার নিয়ে রাইড করতে কতটা অভিজ্ঞ সেটাও একটা বিষয় । আপনাকে সবসময় মাথায় রাখতে হবে যে আপনার পেছনে একজন বসে আছে এবং সেই অনুসারে রাইড করা উচিৎ ।
আবহাওয়া:
খারাপ আবহাওয়াতে আপনার রাইডিং এ না যাওয়াই ভাল । কারণ বৃষ্টির সময় রোড ভেজা থাকার কারণে আপনার বাইকের চাকা খুব সহজেই স্লিপ করতে পারে । খুব ইমারজেন্সি কোন দরকার ছাড়া বৃষ্টির সময় আপনার বাইক নিয়ে না বের হওয়াই ভাল । যদিও আপনি অভিজ্ঞ এবং ভাল রাইডার হন , তারপরও বৃষ্টির সময় রিস্ক না নেওয়াটাই বেটার । আর বৃষ্টির সময় রাইডিং এ গেলে অবশ্যই বাইক খুব আস্তে রাইড করবেন এবং ব্রেকিং এর সময় হার্ড ব্রেকিং থেকে বিরত থাকবেন ।
টেকনোলজি:
বর্তমানে নতুন টেকনোলজির এন্টি লক ব্রেকিং সিস্টেমের ফলে ব্রেকিং সিস্টেম একটা অন্যরকম উচ্চতায় চলে গেছে । কিন্তু , এটা বর্তমানে বেশীরভাগ রাইডারের কাছেই নতুন একটা বিষয় এবং বেশিরভাগ রাইডার এটা সম্পর্কে ভালভাবে বুঝে উঠতে পারেননি । এটা যখন আপনার চাকাকে লক করে দেয় তখন নতুন রাইডার হলে ভয়ে বা অন্য যেকোন কারণে আপনি বাইকের কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলতে পারেন । তাই , নতুন কোন টেকনোলজি ভালভাবে প্রাকটিস করে ইউজ শুরু করুন ।
হেডফোন বন্ধ রাখুন:
রাইডিং এর সময় এটেনশন যে একটা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্ট সেটা আগেও বলেছি । যেকোন প্রকার অমনোযোগীতা আপনার বিপদ ডেকে আনতে পারে । তাই , রাইডিং এর সময় কানে হেডফোন দিয়ে গান শোনা বা কথা বলা থেকে বিরত থাকুন । কারণ , এটা একই সাথে আপনাকে অমনোযোগী করে দেয় এবং আশেপাশের কোন যানবাহনের হর্ন আপনি শুনতে পাবেন না কানে হেডফোন থাকলে ।
স্কিল:
মোটরসাইকেল রাইডিং অবশ্যই একটা স্কিল এর বিষয় , এবং আপনি কত ভালভাবে মোটরসাইকেল রাইড করতে পারেন সেটা আপনার স্কিলের উপর ডিপেন্ড করে । আর এক্ষেত্রে সবার নিজের স্কিল ফলো করাই উচিৎ । কোনসময়্ই আপনার স্কিলের সাথে অন্য কারও স্কিল তুলনা করবেন না , কারণ , আপনি যার রাইডিং স্টাইল নল করতে চাইছেন তার স্কিল আপনার মত নাও হতে পারে । তাই , এটা একটা বোকামী । রাইডিং এর মাধ্যমে আপনার নিজের স্কিল ডেভলপ করুন । সেটাই সবথেকে ভাল ।
এ্যাপিয়ারেন্স:
রাইডারের এপিয়ারেন্স রাইডিং এর ক্ষেত্রে সবসময় ভাল হওয়া উচিৎ । আপনার উচিৎ রাইডিং এর সময় একটা ভাল বুট পড়ে রাইড করা । এটা আপনার গিয়ার শিফটিং এর সময় সহায়তা করা সহ যেকোন দূর্ঘটনা থেকে আপনার পা কে সুরক্ষা দেয় । রাইডিং এর সময় ইন্জিনের তাপে আপনার পা পুড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে । একটা ভাল রাইডিং বুট আপনাকে এটা থেকেও নিরাপত্তা দিতে পারে । আর আপনার জুতার সোল সবসময় একটু অমসৃণ হওয়া উচিৎ , কারণ , সোল নরম ও মসৃন হলে আপনার পা স্লিপ করতে পারে ।
বাইকারের ড্রেস:
খুব টাইট বা ঢিলাঢোলা ড্রেসআপ কোন রাইডারের জন্যই ভাল না । কারণ এটা আপনাকে ভাল নিরাপত্তা দিতে পারে না । আপনার ড্রেস হিসেবে লেদার একটা প্রথম চয়েজ হতে পারে কারণ আপনি বাইক থেকে পড়ে গেলে এটা আপনার বডিকে ইনজুরি থেকে রক্ষা করে । আর এমন ড্রেস চয়েজ করবেন না যেটা বাতাসের বাধা সৃষ্টি করতে পারে । কারণ , হাই স্পীডে বাতাসেরবাধার কারণে অনেক সময় মারাত্মক সমস্যা হয়ে থাকে ।
আইন সম্পর্কে জানুন:
একজন রাইডারের জন্য ফাইনাল টিপস হল রাইডারের উচিৎ একটা মোটরসাইকেল সেফটি কোর্স করা । মোটরসাইকেলের লাইসেন্স করার সময় আপনাকে এই কোর্সের জন্য পরীক্ষা করে নেওয়া হয় । এই সময় আপনি আপনার দেশের ট্রাফিক সেফটি আইন সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং কীভাবে ইমারজেন্সী সিচুয়েশনে বাইক কন্ট্রোল করতে হয় সেই বিষয়েও জানতে পারবেন । এই সময় ইনস্ট্রাকটর আপনাকে মোটরসাইকেল মেইনটেইন্স এবং আনসেফ সিচুয়েশন কীভাবে হ্যান্ডেল করতে হয় সে বিষয়েও টিপস দিবে । মোটামোটি আপনি এই সময় মোটরসাইকেলের সেফটি বিষয়ে অনেক কিছু জানতে পারবেন ।