তেল পাম্প থেকে সাবধান!!

This page was last updated on 06-Jul-2024 03:27am , By Shuvo Bangla

পূবালী ব্যাংকের রিকভারি এজেন্ট মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ।প্রায় দশ বছর মোটর বাইক ড্রাইভ করেন তিনি। তার অভিযোগ নগরীর অধিকাংশ তেল পাম্প মাপে তেল কম দেয়। এছাড়া গ্রাহককে ভেজাল তেলও দেয়। তাই তিনি প্রতিনিয়তই নগরীর এলেনবাড়ী ট্রাস্ট ফিলিং স্টেশন থেকে পেট্রল কেনেন।রহমতুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, নগরীর প্রায় অধিকাংশ পেট্রল পাম্প ওজনে কম দেয়। কোনো পেট্রল পাম্পের ওজন বিশ্বাস হয় না। তিনি আরো বলেন, তেজগাঁও সিটি সিএনজি তেল পাম্প সবাইকে তেল কম দেয়। সরকারের উচিত ডিজিটাল নিজস্ব উদ্যোগে ডিজিটাল মিটার স্থাপন করা। যাতে করে পেট্রল পাম্পগুলো আমাদের না ঠকাতে পারে। এই পাম্পটি আমাকে প্রতিনিয়তই তেল কম দিয়েছে।’একই অভিযোগ করেন সঙ্গীত শিল্পী নির্মল রায়। তিনি প্রায় ৩৫ বছর যাবত মোটর সাইকেলে ড্রাইভ করেন। বসবাস করেন নগরীর গ্রিন রোডে।ওজনে তেল কম দেওয়া প্রসঙ্গে নির্মল রায় বলেন, কিছু দিন আগে আমাকে শেরাটন হোটেল সংলগ্নে পেট্রল পাম্প ঠকিয়েছে। আমার ইয়ামাহা মোটরবাইকে সাড়ে ৭ লিটার তেলের ট্যাঙ্কিতে ওরা ১২ লিটার তেল ভরেছে বলে দাবি করেছে। সেই সময় পেট্রল পাম্পের লোকজনের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক করেও কোনো লাভ হয়নি। সেই সময় আমাকে আশ পাশের কেউ সাপোর্টও দেয়নি।

 তেল পাম্প

অনেক দিন হয়ে গেলে শেরাটন সংলগ্ন পাম্পে তেল নেওয়া তো দূরের কথা, পাম্পটির দিকে ভুলেও আর তাকাই না।’সূত্র জানায়, নগরীর তেজগাঁও শিল্প এলাকার সিটি সিএনজি তেল পাম্প প্রতিনিয়ত ওজনে তেল কম দিচ্ছে। শুধু গ্রাহকের অভিযোগ নয়, মান নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট(বিএসটিআই) কয়েকবার জরিমানা করেছে পাম্পটিকে। অথচ বিএসটিআই এর জরিমানার কথা অস্বীকার করে পাম্প কর্তৃপক্ষ।তেল কম দেওয়ার প্রসঙ্গে পাম্পের ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজার উত্তম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা কাউকে তেল কম দেইনা। সব সময় আমরা সরকারি লোকের কাছে তেল বিক্রি করি। তেলে কম দিলে আমাদের কাছে ক্রেতা আসতো না। আর সরকারি লোকের কাছে তেল কম দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’ বিএসটিআই সূত্রে দেখা গেছে, ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে ওজনে তেল কম দেওয়ার কারণে দেশব্যাপী তেল পাম্পগুলোর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ১১১টি।

এছাড়া একই সময়ে ওজনে কম তেল দেওয়ার কারণে পাম্পগুলোকে জরিমানা গুণতে হয়েছে হয়েছে ৯ লাখ ১০ হাজার টাকা। অনেক পেট্রল পাম্প আবার ভেজাল তেল বিক্রি করে। নগরীর অনেক পাম্প আবার নির্ভেজাল ও ওজনে সঠিক দেয়। যেমন গ্রাহকেরা বলেন বিজয় সরণি মোড় এলেনবাড়ি সংলগ্ন ট্রাস্ট ফিলিং স্টেশন ওজনে তেল  সঠিক ও ভালো দেয়। এ পাম্পের নিয়মিত গ্রাহক সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি প্রতিনিয়তই এই পাম্প থেকে তেল সংগ্রহ করি। কারণ নগরীর অধিকাংশ পাম্প তেল কম দেওয়ার পাশাপাশি ভেজাল তেল দেয়। এই পাম্পে ৫০০ টাকার তেল নিয়ে প্রায় ৫দিন মটর বাইক ড্রাইভ দেওয়া যায়। আবার কিছু তেল পাম্প আছে ৫০০ টাকার তেল কিনলে ৪দিন মটর ড্রাইভ করা কঠিন হয়ে পড়ে।

এখন তেল পাম্পগুলোর ওপর বিশ্বাস কমে যাচ্ছে।’ তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে মোট ১ হাজার ৫৬৬টি তেল পাম্প রয়েছে। ওজন ও পরিমাপ অধ্যাদেশ, ১৯৮২ ও সংশোধনী, ২০০১ এর আওতায় বিএসটিআই এই জরিমানা করে। অধ্যাদেশে দেখা গেছে, ওজনে তেল কম দিলে অনূর্ধ্ব ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং পরবর্তী প্রতিটি অপরাধের জন্য অর্থদণ্ডসহ অনূর্ধ্ব ৩ বছরের কারাদণ্ড। চলতি অর্থবছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত বিএসটিআই মাত্র ২৫টি অভিযান পরিচালনা করে। এতে করে অভিযোগের উপর ভিত্তি করে ১৫০টি পেট্রল পাম্পে ৭ লাখ ২৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এবং প্রতিনিয়তই পেট্রল পাম্পগুলোর মধ্যে গ্রাহক ঠকানোর প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিএসটিআই এর মহাপরিচালক ইকরামুল হক বাংলানিউজকে বলেন, আমরা নিয়মিতভাবে তেল পাম্পগুলোতে অভিযান পরিচালনা করছি।যাতে করে গ্রাহকরা না ঠকেন। অনেক সময় যদি গ্রাহকরা আমাদের কাছে অভিযোগ দেন তবে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগের ভিত্তিতে তেল পাম্পে অভিযান চালাই এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করে থাকি এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেই।’ পেট্রল পাম্পগুলোর গ্রাহক ঠকানোর প্রবণতা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ইকরামুল হক বলেন, আমাদের ব্যবসায়ীক মনোভাব আগে পরিবর্তন করতে হবে।তারা(তেল পাম্প) যেমন গ্রাহক ঠকানো বৃদ্ধি করছে তেমনিভাবে আমরাও জরিমানার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছি। পেট্রল পাম্পগুলোতে অভিযান আরো কঠোর করার পরিকল্পনা রয়েছে।’

- Source: http://www.banglanews24.com/beta/fullnews/bn/342782.html#sthash.XisfzRRt.dpuf