ইয়ামাহা আর১৫ ভি৩ ইন্ডিয়ান ভার্স ইন্দোনেশিয়ান ভার্শন কম্পারিজন
This page was last updated on 14-Jul-2024 12:26am , By Ashik Mahmud Bangla
ইয়ামাহা আর১৫ ভি৩ ইন্ডিয়ান ভার্স ইন্দোনেশিয়ান ভার্শন কম্পারিজন। ইদানিং এই বিষয়টিতে অনেকেরই বেশ আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর সেকারনেই আজ আমরা নিয়ে এসেছি ইয়ামাহা আর১৫ ভি৩ ইন্ডিয়ান ভার্স ইন্দোনেশিয়ান ভার্শন এর উপর আলোচনা।
মূল বিষয় শুরু করার আগে আপনি যদি r15 v3 price in bangladesh এর সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক ফ্যান পেজ ঘুরে দেখুন। তাছাড়া বাইক সম্পর্কিত যেকোন তথ্য পাবেন আমাদের ওয়েবসাইটে।
আপনারা জানেন যে, Yamaha R15 V3 হলো Yamaha YZF-R15 এর থার্ড জেনারেশন বাইক। যা কিনা স্থানীয়ভাবে আর১৫-ভি৩ নামেই বেশি পরিচিত। নতুন এই ভার্শনটি মূলত: সর্বপ্রথম ইন্দোনেশিয়া থেকে ২০১৭ সালের জানুয়ারীতে রিলিজ হয়। আর তারপর ইয়ামাহা মোটর ইন্ডিয়া, এর ইন্ডিয়ান ভার্শন ২০১৮ সালে অটো-এক্সপো এর প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে ভারতের বাজারে ছাড়ে।
আর সেই সূত্রে, ২০১৯ সালের জন্যে ইয়ামাহা ইন্ডিয়া তাদের ভার্শনটি আরো কিছু নতুন ফিচার যোগ করে বাজারজাত করে। আর এখান থেকেই মূলত: Yamaha R15 V3 Indian Version ইন্দোনেশিয়ান ভার্শন এর পার্থক্যগুলো আরো বেশি আলোচনায় চলে আসে।
ইয়ামাহা আর১৫ ভি৩ ইন্ডিয়ান ভার্স ইন্দোনেশিয়ান ভার্শন কম্পারিজন
ইয়ামাহা আর১৫ ভি৩ ইন্ডিয়ান ভার্স ইন্দোনেশিয়ান ভার্শন মুলত: একই মোটরসাইকেল। দুটোই একই ইঞ্জিন, মুল-ফ্রেম, এক্সটেরিয়র ডিজাইন, আর বেসিক প্রফাইল নিয়ে গঠিত। তবে মৌলিক সাদৃশ্যগুলোর বাইরে ইন্ডিয়ান ভার্শনটিতে যোগ হয়েছে কিছু লোকালাইজ্ড ফিচার। সুতরাং অবধারিতভাবেই দুই ভার্শনে বেশ কিছু পার্থক্য দেখা যায়। আর এখানেই চলে আসে আমাদের আজকের আলোচনা।
কালার ও শেডের পার্থক্য
ইয়ামাহা আর১৫ ভি৩ ইন্ডিয়ান ভার্স ইন্দোনেশিয়ান ভার্শন এ প্রথম দর্শনেই যে পার্থক্য দেখা যায় তা হলো এর চেহাড়া। দুটো বাইকই একই এক্সটেরিয়র প্যানেল ধারন করলেও তাদের কালার ও শেড এক নয়। আলাদা আলাদা রং ও ষ্টিকার নিয়ে তারা একদম আলাদা চেহাড়ার ও আলাদা পরিচিতি প্রকাশ করে।
সামনের সাসপেনশনে পার্থক্য
এই দুই ভার্শনের বাইকের দ্বিতীয় যে বড় পার্থক্য দেখা যায়, তা হলো এর ফ্রন্ট সাসপেনশন এক নয়। ইন্ডিয়ান ভার্শনটিতে রয়েছে গতানুগতিক আপরাইট সাসপেনশন সিষ্টেম যেটা বেশী সংবেদনশীল প্রকৃতির। আর ইন্দোনেশিয়ান ভার্শনটিতে রয়েছে ইউএসডি-ইনভারটেড সাসপেনশন সিষ্টেম। সুতরাং এই পার্থ্যকটি মুলত: আলাদা আলাদা রোড কন্ডিশন ও লোকাল মেইনটেন্যান্স ইস্যুগুলি সমন্বয় করার জন্যেই করা হয়েছে।
সাবফ্রেমে পার্থক্য
ইয়ামাহা আর১৫ এর দুটো ভার্শনের মুল ফ্রেম আর সুইং-আর্ম একই হলেও তাদের সাবফ্রেমের ডাইমেনশন এক নয়। ইন্দোনেশিয়ান ভার্শনটির পিলিয়ন ফুটপেগ ও হ্যাঙ্গার মুলত: কাষ্ট-এ্যলয়ের তৈরী ও সাবফ্রেমের সাথে নাট দিয়ে লাগানো। আর ইন্ডিয়ান ভার্শনটিতে ফুটপেগ কাষ্ট-এ্যলয়ের হলেও হ্যাঙ্গারটি স্টিলের। আর তা ফ্রেমের সাথে সরাসরি ওয়েল্ড করা।
গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্সে পার্থক্য
আর১৫-ভি৩ এর দুটো ভার্শনের সামনের সাসপেনশন আর পেছনের সাবফ্রেম ডাইমেনশন এক নয়। সুতরাং তাদের সার্বিক ডাইমেনশনও এক নয়। বিধায় তাদের গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্সও এক নয়। ইন্ডিয়ান ভার্শনে এটা ১৭০মিমি আর ইন্দোনেশিয়ান ভার্শনে এটা ১৫৫মিমি।
ব্রেকিং এনহ্যাঞ্চমেন্ট আলাদা
আর১৫-ভি৩ এর দুটো ভার্শনে রয়েছে একই ধরনের একই মাপের হাইড্রলিক ডিস্ক-ব্রেকিং সিস্টেম। ব্রেক ক্লিপারের ধরন, ডিস্ক ডাইমেনশন সবই প্রায় একই। তবে ইন্ডিয়ান ভার্শনটিতে বাড়তি যোগ হয়েছে ডুয়াল চ্যানেল এবিএস সিষ্টেম, যা ইন্দোনেশিয়ান ভার্শনটিতে নেই।
ইঞ্জিনের টিউনিং আলাদা
ইয়ামাহা মোটর ইন্দোনেশিয়া আর১৫-ভি৩ মোটরসাইকেলটি এশিয়ান স্পোর্টসবাইক মার্কেট টার্গেট করে প্রথম বাজারজাত করে। আর তারপরই ইন্ডিয়া এই বাইকটিতে তাদের উপযোগী করে লোকালাইজ্ড ফিচার সমন্বয় করে তাদের মার্কেটে ছাড়ে।
আর সেইসাথে তারা তাদের দেশিও রাইডিং প্যাটার্ন ও আবহাওয়া অনুসারে ইঞ্জিন ট্যুইকিং করে নেয়। সেকারনেই ইন্ডিয়ান ভার্শনটিতে যুক্ত হয়েছে ইকোনমিক ফিচারের ইসিইউ। ফলে আর১৫-ভি৩ এর দু্টো ভার্শনের ইসিইউ ম্যাপিংই আলাদা। ফলত: দুটো বাইকেরই ইঞ্জিন পারফর্মেন্স ক্যারেক্টারিস্টিক্স আর রেসপন্স মোড আলাদা।
ব্যাটারিতে পার্থক্য
ইয়ামাহা আর১৫-ভি৩ এর দুটো ভার্শনের ইলেকট্রনিক্স ও ওয়্যারিংয়ে পার্থক্য থাকায় তাদের ব্যাটারিতেও রয়েছে কিছুটা পার্থক্য। মোটরসাইকেল দু্টোতেই রয়েছে মেইন্টেন্যান্স ফ্রি সিলড ব্যাটারিী। তবে ইন্ডিয়ান ভার্শনে রয়েছে 12V, 4.0Ah MF ETZ5V ব্যাটারী। আর ইন্দোনেশিয়ান ভার্শনে রয়েছে 12V, 3.0Ah MF ETZ4V ব্যাটারী।
বাড়তি ফিচারে পার্থক্য
ইয়ামাহা আর১৫-ভি৩ এর ইন্দোনেশিয়ান ভার্শনটি মুলত: সলিড স্পোর্টস প্রোফাইলের কম্প্যাক্ট ও স্পোর্টি একটি বাইক। তবে ইন্ডিয়ান ভার্শনটিতে কিছু বাড়তি লোকালাইজ্ড এক্সটেনশন রয়েছে। যেমন, এতে রয়েছে বিকিনি টায়ার গার্ড, শাড়ি-গার্ড ইত্যাদি। আর ইন্দোনেশিয়ান ভার্শনটিতে এসব বাড়তি কিছু নেই বরং তা পুরোপুরি নেকেড।
সার্বিক ওজনে পার্থক্য
আর ইয়ামাহা আর১৫-ভি৩ এর দুটো ভার্শনে আরেকটি বড় পার্থক্য হলো তাদের সার্বিক ওজনের পার্থক্য। ইন্ডিয়ান ভার্শনটি ইন্দোনেশিয়ান ভার্শন হতে সবমিলিয়ে ৫কেজি বেশি ভারী। যেখানে ইন্ডিয়ান ভার্শনটি ১৪২কেজি, সেখানে ইন্দোনেশিয়ান ভার্শনটি মাত্র ১৩৭কেজি ওজনের।
রাইডিং ও কন্ট্রোলিং মোডে পার্থক্য
আর সবশেষে, তেমন আহামরি না হলেও দুটো ভার্শনের রাইডিং ইরগনোমিক্স আর কন্ট্রোলিং মোডে বেশ পার্থক্য রয়েছে। মুলত: আলাদা ধরনের সাসপেনশন সেটআপ, হ্যান্ডেলবার হাইট, হ্যান্ডেলবার পজিশন, গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স এসব মিলেই দুটো বাইকের রাইডিং মোডে আলাদা বৈশিষ্ট্য যোগ হয়েছে। আর সব মিলিয়ে ৫ কেজি ওজনের পার্থক্যও এর কন্ট্রোলিং ও হ্যান্ডেলিং মোডে আলাদা বৈশিষ্ট্য এনে দিয়েছে।
তো বন্ধুরা, সবমিলিয়ে দেখা যায় যে, ইয়ামাহা আর১৫-ভি৩ এর দুটো ভার্শনই বেশ কিছুটা অলাদা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। তবে যেহেতু বাইকদুটিতে বেশিরভাগই একই OEM পার্টস ব্যবহার করা হয়েছে তাই তাদের মধ্যে মিলই বেশি। যেমন, দুটো বাইকই একই ধরনের ফোর-স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। দুটোতেই VVA ও Assist & Slipper clutch রয়েছে।
Also Read: ইয়ামাহা আর১৫ ভি৩ বাংলাদেশে অফিশিয়ালি লঞ্চ হতে যাচ্ছেঃ দাম এবং লঞ্চিং তারিখ
আর দুটোব বাইকই 14.2kW পাওয়ার আর 14.7NM টর্ক উৎপন্ন করে। তবে কেবল অল্প কিছু টেকনিক্যাল বিষয়ে দুটো বাইকে পার্থক্য রয়েছে যা আমরা আগেই আলোচনা করেছি। তো আজ এখানেই আমাদের আজকের ইয়ামাহা আর১৫ ভি৩ ইন্ডিয়ান ভার্স ইন্দোনেশিয়ান ভার্শন এর উপর আলোচনা শেষ করছি। সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।