আমার ড্র্যাগ রেস মডিফাইড Yamaha Fazer V1 : আরমান
This page was last updated on 18-Jan-2025 07:45pm , By Shuvo Bangla
আমার ড্র্যাগ রেস মডিফাইড Yamaha Fazer V1
বরাবরই একটু অসাধারন লুক এর প্রতি আমার দূর্বলতা, সেটা যাই হোক না কেন। আর তা যদি একটি মোটর বাইক তাহলে তো কথাই নেই। এটি ২০১৩ মডেলের একটি ইয়ামাহা ফেজার। কেনার পর থেকে গত দেড় বছরে একটু একটু অনেকটা ভিন্নমাত্রায় নিয়ে এসেছি।
সর্ব প্রথম বাইক টি তে সুইং আর্ম এক্সটেনশন / ড্র্যাগ মড করেছি পাশাপাশি আর১৫ ভি২ এর লাইসেন্স প্লেট হোল্ডার এবং চেইন স্প্রোকেট আন্ডার গেয়ার রেশিও তে ইন্সটল করেছি যা বাংলাদেশে আাগে কখনো আমার চোখে পড়েনি।
আর এতে পিছনের চাকা ৬" থেকে ৮" পর্যন্ত পিছনে চলে এসেছে। এই ড্র্যাগ মডের সুবিধা হলো সোজাসুজি টানলে একই সেগমেন্ট এর অন্যান্য বাইকের আগে পৌছানো যায় এবং হার্ড ব্রেক ও কখনোই স্কিড করবে না। আর অসুবিধা হল ইউটার্ন নিতে আগের চেয়ে একটু বেশী জায়গা লাগে। তারপর পারফরমেন্স বৃদ্ধির জন্য কে এন্ড এন স্টক এয়ার ফিল্টার ও ডেটোনা ডেগরেক্স ফ্রি ফ্লো এক্সজস্ট সিস্টেম ইন্সটল করেছি।
Also Read: ACI Motors Gave a Yamaha R15s To BikeBD For Longterm
এক্সজস্ট মানেই অনেকে মনে করেন বিরক্তিকর শব্দ দূষন কিন্তু এটা মোটেও এমন নয়। লো আর পি এম এ কোন শব্দ নেই। ৩য় গেয়ার থেকে বাইকের গতি তুলনামূলক বৃদ্ধি পায় কিন্তু ইনপুট ও আউটপুট দুটোই ফ্রি ফ্লো সেহেতু আগের ফুয়েল সাপ্লাই পর্যাপ্ত ছিল না, এই জন্য কার্বুরেটর এর ১১২.৫ মাপের এর মেইন জেট বদল করে ১২০ মাপের মেইন জেট ইন্সটল করি। এতে মাইলএজ কিছুটা কমলেও বি এইস পি ২ এর মত বেরেছে।
Also Read: Yamaha Bike Showroom in Comilla: M/S Delwae Machineries
এরপর আসি ব্রেকিং এ। Fazer বাইকে কমপ্লিট যে ব্রেকিং সিস্টেম আছে তা আমার মতে অসাধারন, কিন্তু আমার বাইক যেহেতু ড্র্যাগ মড করা এবং দ্রুত গতিবেগ উঠানো যায় অন্যান্য বাইকের চেয়ে সেহেতু পিছনের চাকায় স্থায়ী ভাবে ডিস্ক ব্রেকিং সিস্টেম রিম বদল না করে কি করে করা যায় তা নিয়ে একটু গবেষনা করলাম এবং অবশেষে সার্থক ও হলাম। বহির্বিশ্বে প্লাগ এন্ড প্লে ডিস্ক ব্রেক সিস্টেম কিনতে পাওয়া গেলেও বাংলাদেশে স্টক রিমে ডিস্ক ব্রেকিং করতে আগে কখনো দেখিনি। আর এই ডিস্ক ব্রেকিং এর পারফরমেন্স বাংলাদেশের অন্যান্য যেকোন ডুয়েল ডিস্কের বাইকের চেয়ে আলাদা যা সম্পুর্ন আশাতীত।
এরপর আসি আউটলুক এর বেপারে বর্তমান লুকের আগে যদিও কিছুদিন কাস্টম মেড বডি কিট ইউজ করেছিলাম শখের বশে কিন্তু এয়ার কুল্ড ইন্জিন হওয়ার কারনে শখটাকে দ্বীর্ঘায়িত করিনি। পরবর্তীতে এক সেট ফুল বডি কিট নিয়ে তা পেইন্ট করি। আামার অনেক আগে থেকেই ব্যাটল গ্রীন এর লিমিটেড এডিশন ফেজার এর প্রতি দুর্বলতা ছিল, সহজলভ্য না হওয়ার কারনে তা আর ব্যাবহার করা হয়নি। আর যেহেতু বাংলাদেশে পার্মানেন্ট ম্যাট ব্ল্যাক পেইন্ট পাওয়া যায়না সেহেতু আমি ম্যাজিক পার্ল ব্ল্যাক ও পার্ল ব্যাটল গ্রীন কম্বিনেশনে পেইন্ট করি। আর বাইসন এর গ্রাফিক্স বাংলাদেশে না পাওয়ার দরুন নিজেই বানিয়ে নিয়েছি। এতে যোগ হয়েছে ভিন্নমাত্রা ও নতুনত্ব।
এছাড়াও এল ই ডি প্রজেকশন হেডলাইট সহ ডি আর এল টিউব যা সিগনালের সাথে রং বদল হয়। ইরিডিয়াম প্লাগ থেকে শুরু করে ম্যানটেইনেন্স ফ্রি ব্যাটারি, এফ আই ভি-২ টায়ার গার্ড, রোল অন চেইন, চেইন টেনশনার ও ব্রেক লাইটিং সহ অনেক কিছুই করেছি এই বাইকে। এর টপ স্পিড ছিল ১২৭ কিমি/ঘন্টা এবং পিলিয়ন সহ ১১৫ কিমি/ঘন্টা। ইচ্ছা ও সুযোগ থাকলে হয়তো আরো বেশী উঠানো যেত। যদিও আমি টপ স্পীড তোলার জন্য মড করিনি, করেছি দ্রুত স্পীড তোলার জন্য।
আর এই ধরনের মডিফিকেশন দুয়েক দিনে বা কাগজে কলমে হিসেব করে করিনি। ছয় মাসের মত সময় লেগেছে এই পর্যায়ে আনতে আর শো রুম থেকে বের করা থেকে এই পর্যন্ত দেড় লাখ টাকার কাছাকাছি খরচ করেছি আর দিয়েছি অক্লান্ত পরিশ্রম। সবকিছুর প্লানিং ও কাজ আমি নিজে করলেও কয়েক জায়গায় আমার মডিফিকেশন টিম আমাকে সাহায্য করেছে এই জন্য আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। এবং আজ নিজেকে সার্থক মনে হয় যখন দেখি কেউ আমার মডিফাইড বাইক ঘুরে ঘুরে দেখে, ছবি তুলতে চায়, কোথা থেকে করেছি এবং কত খরচ পরল জানতে চায়।
-আরমান চৌধুরী
০১৯১১১১৫৭৭৬