আপনার বাইক পরিষ্কার করুন ঘরে বসেই, বাইক পরিষ্কারের সম্পূর্ণ গাইডলাইন
This page was last updated on 04-Jul-2024 07:58am , By Shuvo Bangla
আমরা বাংলাদেশে এমন একটা পরিবেশে বাস করি যে যার চারিদিকে শুধু প্রচুর ধূলাবালি আর কাদামাটি। এগুলো শুধুমাত্র বাইকের ক্ষেত্রে না , যেকোন মানুষ ও প্রাণীর পক্ষেই ক্ষতিকর। তাই , বাইক ভাল রাখার জন্য আমাদের বাইককে রেগুলার পরিষ্কার করা উচিৎ। না হলে বাইকের বিভিন্ন পার্টসে বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর ঢাকা শহরে যে কেউ বাইক রাইড করলে তাকে প্রতিদিনই বাইক পরিষ্কার করা উচিৎ ।
ধূলাবালি সাধারণত বাতাসে ভেসে বেড়ায় , যেকারণে বাইক রাইড করলেই অটোমেটিক কিছু ধুলাবালি বাইকের বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়ে । এই ময়লা আবর্জনা ও ধূলাবালি হল বাইকের সব পার্টস সহ বিশেষ করে ইন্জিনের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর । তা্ই , আজ আমরা বাইক কীভাবে ভালভাবে পরিষ্কার করা যায় এবং এটা সুস্থ রাখা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করব ।
অনেকে এটাকে একটা কঠিন কাজ হিসেবে দেখেন এবং এটা রেগুলার করতে চান না । এই টাইপের মানুষদের জন্যও আজ চমৎকার একটা সমাধান রয়েছে । নীচের প্রসিডিউরগুলো ফলো করলে আপনার বাইক আপনি কম সময়ের ভেতর খুব সুন্দরভাবে পরিষ্কার করতে পারবেন । এইব এই প্রসিডিউর গুলো কিছু প্রফেশনাল রেস টিমের কাছ থেকে সংগ্রহ করা ।
এই কাজের জন্য আমাদের প্রথমেই কী কী দরকার হবে সেগুলো সম্পর্কে জানতে হবে । নীচে এই কাজে ব্যাবহৃত সব ইকুইপমেন্ট সম্পর্কে বলা হল :
- শ্যাম্পুর পানি রাখার জন্য একটা বালতি
- শ্যাম্পু অথবা কোন ভাল ক্লিনার
- গ্লোভস
- বাগ এবং কার্বণ জাতীয় পদার্থ রিমুভার
- ইন্জিন ক্লিনার
- একটা টুথব্রাশ
- চাকা পরিষ্কারের জন্য একটা ব্রাশ
- হুইল ক্লিনার
- ১০০% কটন স্পঞ্জ
- বেশ নরম কটনের তোয়ালে বা কাপড় ।
- মোছার জন্য ভাল কোন কাপড় ।
এখন আমরা বাইক পরিষ্কার করার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো সম্পর্কে ভালভাবে জেনে গেছি । এবার কাজ শুরু করা যাক । আমরা বাইক পানি ও শ্যাম্পু দুটো দ্বারাই পরিষ্কার করতে পারি । এটা আপনার চয়েজ । আপনি অবশ্য পানি ও শ্যাম্পু একসাথে মিক্স করে নিতে পারেন । শুধু পানি নিলে সেটা হালকা গরম পানি হতে হবে ।
আমাদের সবসময়ই স্পঞ্জ টা রেডি রাখতে হবে এবং এটা এমন স্থানে রাখতে হবে যাতে করে এটা মাটির সংস্পর্শে না আসে । বাইকের বিভিন্ন স্থানে ময়লা পরিষ্কার করার জন্য আপনাকে বাগ এবং টার রিমুভার ইউজ করা উচিৎ । বাইক পরিষ্কার করার সময় এটা খেয়াল রাখুন যে আপনি স্পঞ্জটা খুব জোরে বাইকের কোন পার্টসের উপর চেপে ধরছেন না । এবং একই স্পঞ্জ ২ জায়গায় ইউজ না করাই ভাল ।বাইকে মুলত ২ ধরণের পার্টস থাকে । হার্ড পার্টস এবং সফট পার্টস । তাই , ২ ধরণের পার্টস ২ ভাবে পরিষ্কার করা উচিৎ । হার্ড পার্টস গুলো ক্ষেত্রে ডিগ্রেসর ইউজ করা যায় এবং এটা ইউজ করার পর সেই পার্টসগুলো জোরে ঘষা দেওয়া উচিৎ না কারণ এটা করলে বাইকের পেইন্ট উঠে যেতে পারে ।
আর বা্ইক পরিষ্কার করার জন্য মাইক্রোফাইবারের কোন প্রয়োজন পড়ে না কারণ একটুকরা নরম ছেড়া কাপড়ই এই কাজটা ভালভাবে করতে পারে । এক্সহাউস্ট পাইপের উপর থেকে বুটের দাগ দূর করার জন্য আপনাকে ক্লিনার ইউজ করা উচিৎ কারণ এই পাইপের উপর বুটের দাগ আসলেই বাজে দেখায় । আর বাইকের যে পার্টসগুলো হাত দিয়ে পরিষ্কার করা সম্ভব না , অর্থাৎ যে পর্যন্ত হাত পৌছায় না সেখানে পরিষ্কার করার জন্য টুথব্রাশ ইউজ করা হয় । বাইকের বিভিন্ন পার্টস থেকে তেলতেলে ভাব দূর করার জন্য আপনার ডিগ্রেসার ইউজ করাই উচিৎ । আর বাইকের চাকা পরিষ্কার করাই হল সবথেকে কঠিন কাজ । এই কাজের জন্য কোন লম্বা টুথব্রাশ দরকার হয় । এবং এই কাজের জন্য হুইল ক্লিনার ইউজ করা যায় । বাইকের পেইন্টেড পার্টসগুলো পরিষ্কার করার জন্য আপনার দরকার এক বালতি গরম সাবান মিশ্রিত পানি । এবং এই পার্টসগুলো পরিষ্কার করার জন্য আপনাকে স্পঞ্জ বা খুবই নরম কাপড় ইউজ করা উচিৎ ।
সাবান পানি বাইকের পেইন্টেড পার্টসগুলোর উপর দাগ ফেলতে পারে তাই আমরা ওই পার্টসগুলো পরিষ্কার করার আগে অবশ্যই পানিতে ভিজিয়ে নিব । এববং এই কাজের জন্য ১০০% কটন স্পঞ্জ ইউজ করতেই হবে । না হলে বাইকের বিভিন্ন স্থান থেকে রং উঠে যেতে পারে । এবং বাইকের বিভিন্ন পার্টস থেকে সাবান পানি দূর করার জন্য আমাদের আরেক বালতি গরম পানি লাগবে । এইসব কাজের আগে এটা নিশ্চিত করুন যে আপনার বাইকটি একটি ছায়াঢাকা কোন স্থানে আছে । আর বাইকটিকে শুকানের জন্য আমরা অবশ্যই নরম কোন কাপড় ইউজ করব ।
এটাই হল আমার জানামতে বাইক পরিষ্কার করার সব থেকে সহজ একটা পদ্ধতি । এর থেকে কম সময়সাপেক্ষ এবং সহজ পদ্ধতি আমার জানা নেই । আমার মনে হয় আপনাদের কাছেও বিষয়টা খুবই সহজ লাগবে এবং এটা বেশী সময় নিবে না । মোটরবাইক সাধারণত আমাদের কাছে ভালবাসার একটা জিনিস । তাই এটার যত্ন নিতে একটু সময় নিন এবং হালকা পরিশ্রম করুন । আমি আশা করি যে আমার এই পদ্ধতিটা আপনাদের কাজকে অনেক সহজ করে দিবে । আর নিজের বাইকের পরিচর্যা নিজের হাতে করা এবং বাইক রাইড করা একটা অন্যরকম মজার ব্যাপার ।