Yamaha YZF R15 V2.0 - ২৩,০০০ কিমি মালিকানা রিভিউ লিখেছেন আরিফুল
This page was last updated on 18-Aug-2024 02:42am , By Shuvo Bangla
শুভেচ্ছা সবাইকে! আমি মোহাম্মদ আরিফুল হক নয়ন, ফেনীর নিবাসী। আমি এখন পর্যন্ত প্রায় ২৩টি বাইক ব্যবহার করেছি,আমার প্রথম বাইক Honda XL185, সেই ১৯৯৬ সালে। এর পর একে একে বাজাজ পালসার ১৫০, বাজাজ প্লাটিনা, ইয়ামাহা এসজেড আরআর , ইয়ামাহা এম-স্ল্যাজ সহ বহু বাইকই চালানো হয়েছে। ছোট বেলা থেকেই বাইক খুব পছন্দ করতাম। কারন, এটা আমার আব্বুর কাছথেকে পাওয়া। উনি নিজেও একজন বাইকার, এবং আমার চাচাও একজন বাইকার, সেই সূত্রে আমিও । আজ আমি আমার ২৩,০০০ কিলোমিটার চলা Yamaha YZF R15 নিয়ে বিস্তারিত লিখবো।
Yamaha YZF R15 V2.0 - ২৩,০০০ কিমি মালিকানা রিভিউ
মূল বিষয় শুরু করার আগে আপনি যদি r15 v3 price in bangladesh এর সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক ফ্যান পেজ ঘুরে দেখুন। তাছাড়া বাইক সম্পর্কিত যেকোন তথ্য পাবেন আমাদের ওয়েবসাইটে।
চাচার বাইক দিয়েই আমার বাইকে হাতেখড়ি। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ৬ তারিখ হঠাৎ একটি সুযোগ এলো। সাদা-লাল রং এর একটি Yamaha YZF R15 আমার খুব কাছের এক ছোট ভাই কিনলো, কিন্তু সে এই বাইকটি চালাতে পারেনি ওর ভিসা এসে যাওয়াতে। ঐ সময়ে টাকার প্রয়োজন ছিলো তাই মোটামুটি অনেক কমদামেই আমার প্রিয় বাইকটি আমি কিনতে পারি, তাও আবার নতুন! সাথে সাথে বন্ধু শাওন কে ও ছোট ভাই সুজন কে ফোন দিলাম, ওরা দুই জনে দুই লাখ টাকা দিল, বাকি টাকা আমি দিয়ে বাইকটা আমার করে নিলাম। সব মিলিয়ে ২ ঘন্টা সময় পেয়েছিলাম। বাইকের রেজিষ্ট্রেশন ফি আমাকে দিতে হয়েছে।
Yamaha YZF R15 ক্রয়ের কারনঃ
আমি অনেক বাইক টেস্ট রাইড দিয়েছি, কিন্তু আমার বন্ধু শাওনের ইয়ামাহা এফজিএস ছিলো, যা রাইড করার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, যখনই বাইক কিনবো, সেটা হবে ইয়ামাহা। কারন এই বাইক আরামদায়ক, ইঞ্জিনের শব্দ খুবই সুন্দর এবং নিয়ন্ত্রন চমৎকার। আমার কাজের প্রয়োজনে আমার বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে, এবং যদি বাইকটা হয় একটু স্টাইলিশ তাহলেতো কথাই নেই!
আমার বাইক ব্যবহার সময়কালীন বিবরন তুলে ধরছিঃ
- মোট রাইডঃ এখন পর্যন্ত ২৩,০০০ কিলোমিটার রাইড করেছি। আমি নিজেই রাইড করেছি, প্রয়োজন ছাড়া কাউকে কখনো দেইনি।
- ইঞ্জিন অয়েলঃ আমি প্রথমে ইয়ামালুব ২০ ডব্লিউ ৫০ এবং এখন ব্যবহার করি মটুল ৩০০ভি। আমার কাছে মটুলই ভালো লাগে।
- এয়ার ফিল্টারঃ ৫,০০০ কি.মি. পর পর এয়ার ফিল্টার পরিবর্তন করিয়েছি।
- পরিবর্তনঃ এক্সেলেটর কেবল, ক্লাচ কেবল ও ইরিডিয়াম স্পার্ক প্লাগ, লাগিয়েছি। এই ছাড়া অন্য কিছুই বদলাতে হয়নি।
- আরপিএমঃ বাইকের আরপিএম সবসময় ১.৫ সেট করে রাইড করি, স্টার্ট করতে কিংবা চালু অবস্থায় স্টার্ট বন্ধ হওয়ার মত সমস্যায় পরতে হয়নি।
- তেল খরচঃ আলহামদুলিল্লাহ্ বাইক ক্রয়ের সময় সিটিতে ৪০ এবং হাইওয়েতে ৪৭ কি.মি.মাইলেজ পেয়েছি। বর্তমানে সিটিতে ৩৬ -৩৮ এবং হাইওয়েতে ৪২ -৪৪ কি.মি. প্রতি লিটারে মাইলেজ পাচ্ছি। ক্রয় করার পর হতে এখন পর্যন্ত ২টি পাম্প হতে পেট্রোল নিচ্ছি (ট্যুরে থাকা অবস্থায় কখনও কখনও পেট্রোল না পেয়ে অকটেন নিয়েছি)।
- সার্ভিসিংঃ ৩ বার ফ্রী সার্ভসিং করা হয়েছিলো, ১ জন বাইক মেকানিকের হাতে ক্রয় পরবর্তী সার্ভসিং সহ টুকটাক কাজ করিয়েছি। প্রতি ৪০০০ কি.মি. পর পর সার্ভসিং করাচ্ছি।
- অতিরিক্ত পার্টসঃ বাইকে অতিরিক্ত ২ টি এল,ই,ডি লাইট অতিরিক্ত আলোর জন্য ব্যবহার করছি ও একটি সিকিউরিটি সিস্টেম ইন্সটল করা আছে।
- সর্বোচ্চ গতিঃ আমার বাইকের সর্বোচ্চ গতি ছিলো ১৪৭ কিমি/ঘন্টা, ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কে।
- ভ্রমনঃ আলহামদুলিল্লাহ্, এখন পর্যন্ত আমার পাগলা ঘোড়ায় চড়ে আমি ঘুরেছি খাগড়াছড়ি,রাংগামাটি,বান্দরবন, কক্সবাজার, চট্রগাম,ফেনী,নোয়াখালী,লক্ষীপুর,কুমিল্লা,ঢাকা,চাঁদপুর,চাটখিল, আর এই মুহুর্তে মনে পড়ছে না। বেশীর ভাগই পাহাড়ি রাস্তায়।
প্রতিটি বাইকের ভালো - খারাপ ২টি দিকই রয়েছে। ঠিক তেমনি আমার Yamaha YZF R15 V2.0 বাইক রাইড অভিজ্ঞতা থেকে কয়েকটি দিক তুলে ধরছি (সবার কাছে একই রকম নাও হতে পারে)।
Yamaha YZF R15 V2.0 ভাল দিকঃ
১। খুবই আরামদায়ক। লম্বা ভ্রমনের জন্য চমৎকার। ২। অসাধারন নিয়ন্ত্রন, হাইওয়েতে ট্যুরের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ। স্পিড ১২০/৩০ তোলার পরও কোন কম্পন সৃষ্টি করে না। ৩। বাহ্যিক চমৎকার সৌন্দর্য। সহজে এই বাইকে সবার চোখ পড়ে। ৪| আমি একদিনে ৪২৩ কিঃমিঃ পথ চালিয়েছি,তাতেও ইঞ্জিনের সাউন্ড এক্টুও বদলায়নি।
Yamaha YZF R15 V2.0 খারাপ দিকঃ
১| বাইক ঘুরাতে অনেক জায়গা লাগে। ২। গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স কম হওয়ায়, উচুঁ স্পিড ব্রেকারে লেগে যায়। ৩| একটানা অনেকক্ষন ড্রাইভ করলে কোমর ব্যথা হয়। ৪| গ্রামের রাস্তায় রাতের বেলায় লাইটিং এ সমস্যা হয়। পিলিওন নিয়ে লং ট্যুর না দেওয়াই ভালো।
এই ছিলো Yamaha YZF R15 বাইকটি নিয়ে আমার মতামত এবং অভিজ্ঞতা। এই ২৩ হাজার কিলোমিটারে এখন পর্যন্ত বাইকটি আমাকে কোন সমস্যায় ফেলেনি, এবং আশা করি কখনো ফেলবেও না। সবাই সর্বদা সাবধানে বাইক রাইড করুন, ও সর্বদা হেলমেট পড়ে বাইক রাইড করুন।
লিখেছেনঃ আরিফুল হক নয়ন
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com - এই ইমেইল এড্রেসে।