Yamaha R15 V3 Indo ৩০০০ কিলোমিটার রাইড - ইমরান হোসেন

This page was last updated on 28-Jul-2024 05:06am , By Raihan Opu Bangla

আমি ইমরান হোসেন । আমি যশোর এর নাভারন থাকি । বর্তমানে আমি একটি Yamaha R15 V3 বাইক ব্যবহার করছি । আজ আমি আমার এই R15 V3 নিয়ে ৩০০০ কিলোমিটার রাইডের কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।yamaha r15 v3 indo yellow color tour review

Yamaha R15 V3 Indo ৩০০০ কিলোমিটার রাইড - ইমরান হোসেন

Yamaha R15 v3 বাইকটি আমার ৪০তম বাইক । বাইকের প্রতি খুব বেশি আগ্রহ আর এই আগ্রহ থেকেই আজ আমি আমার ৪০ তম বাইক ব্যবহার করতেছি । আমার সব থেকে প্রিয় বাইক ছিল Lifan KPR । কয়েকটি কেপিয়ার বাইক ব্যবহার করেছি । 

Yamaha R15 V3 Indo কেনার পেছনে একটাই কারন ছিল সেটা হচ্ছে প্রিমিয়াম সেগমেন্ট এর একটি বাইক ব্যবহার করার ইচ্ছে ছিল অনেক দিন ধরে । আর এই ইচ্ছে থেকেই আমি আমার পছন্দের Yamaha R15 V3 Indo বাইকটি ক্রয় করি। 

বাইকটি কিনেছিলাম ঢাকা বাংলামটর আন অফিসিয়াল শো-রুম নাহার এন্টারপ্রাইজ থেকে। অফিশিয়াল বাইকের দাম  থেকে আন অফিশিয়াল বাইকের দাম এর অনেকটা পার্থক্য থাকে তাই আমি অতিরিক্ত টাকা দিয়ে অফিশিয়াল বাইক কেনার পক্ষে নই। আমি তখন আমার বাইকটি কিনেছিলাম ৫ লক্ষ ৫ হাজার টাকা দিয়ে । 

রেজিস্ট্রেশন খরচ ছাড়া, রেজিস্ট্রেশন করতে লেগেছে ১৭৫০০/- টাকা যেটা আমি নাহার এন্টারপ্রাইজ কে দিয়ে দেই তারা খুব দ্রুত আমাকে পেপার্স করে কুরিয়ার করে পাঠিয়ে দেয় । এ জন্য তারা প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।yamaha r15 v3 indo yellow grey side view

কারন বাইক কেনার পর সব থেকে বিরক্তিকর কাজ হচ্ছে বাইকের পেপার্স করা। কিন্তু আমার এ নিয়ে কোন ভোগান্তি হয়নি । নাহার এন্টারপ্রাইজ আমার সব ধরনের পেপার্স ইস্যু শেষ করে আমাকে কুরিয়ার এ বাইকের রেজিস্ট্রেশন পেপার্স পাঠিয়ে দেয় । বাইকটি কিনে আর যশোর যাওয়ার সময় ছিলনা । 

রাতে ঢাকা থেকে ভোর ৪ টায় আমি যশোর এর উদ্দেশ্যে রওনা করি । যেহেতু Yamaha R15 V3 Indo একটি প্রিমিয়াম সেগমেন্টের স্পোর্টস বাইক সেহেতু আমি এর ব্রেকইন এর ব্যাপারে খুব বেশি গুরুত্ব দেইনি । কারন আমি মনে করিনা এই বাইকের ব্রেকইন এর দরকার আছে ।

তবে হা ব্রেকিং মেনে ২০০০ কিলোমিটার রাইড করাই ভালো । বাইক কেনার পরের দিনই আমার লং রাইড ছিল ২০০+ কিলোমিটার । এই রাইডের মধ্যে আমি আমার বাইকের সম্পূর্ন পার্ফরমেন্স এর ফিল পাই । কারন আমার Yamaha R15 3 Indo নিয়ে যাত্রার শুরুটাই ছিল ঢাকা-মাওয়া-ভাংগা এক্সপ্রেস হাইওয়েতে। বাইকটির স্মুথনেস, রেডি পিকাপ, থ্রটল রেস্পন্স, টপ স্পিড আমাকে মুগ্ধ করেছে । 

সব থেকে বেশি ভালো লাগে এই বাইকের স্লিপার ক্লাচ এবং ভিভিএ টেকনোলজি। আমি যখন বাইকটি ১০০+ এ রাইড করি এবং ওভারটেক করার দরকার হয় । শুধু একটা ডাউন সিফট আসলে এই ফিল Yamaha R15 V3 Indo বাইক না চালালে বুঝা যায়না । কারন বাংলাদেশে একমাত্র Yamaha R15 V3 Indo তেই স্লিপার ক্লাচ এবং ভিভিএ টেকনোলজি দেওয়া আছে ।yamaha r15 v3 indo yellow color front side mujibnagor

 আমি মূলত ট্যুর করতে খুব ভালোবাসি । সুন্দর বাংলাদেশটা উপভোগ করতে পছন্দ করি । আর একমাত্র বাইক আমাকে স্বাধীন ভাবে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দ দিতে পারে । আর আমার বাইক ট্যুর করতে খুব ভালো লাগে । আমি ব্যবসা করি নিজের একটি প্রতিষ্ঠান আছে । তাই প্রতিদিন খুব বেশি বাইক চালানো হয়না তবে সুযোগ পেলে বেড়িয়ে পরি ট্যুর করতে । ইচ্ছে আছে এই বাইকটি নিয়ে বাংলাদেশ এর ৬৪ জেলা ঘুরে বেড়াবো । 

বাইকটি আমি আমার সহধর্মিণীর পছন্দে কিনেছিলাম। আমার অনেক দিনের এই স্বপ্ন পূরন করার পেছনে তার অনুপ্রেরনা এবং সাপোর্ট ছিল প্রশংসা করার মত। বাইক কেনার আগে কোন একটা কারণে অনেকটা মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পরেছিলাম । আমার সহধর্মিণীর অনুপ্রেরনা আমাকে বাইকটি কিনতে সাহায্য করে।

বাইকটিতে আমি এখন পর্যন্ত কোন সার্ভিস করিনি । আসলে সার্ভিস করার প্রয়োজন মনে হচ্ছেনা । তবুও নিয়মিত মেইন্টেনেন্স যেমন - ইঞ্জিন অয়েল সময় মত পরিবর্তন, চেইন এডজাস্টমেন্ট, চেইন লুব, ক্যাবল ক্লিন, হাওয়ার প্রেশার চেক, এয়ার ফিল্টার ক্লিন এগুলো সঠিক সময়ে সঠিক নিয়মে করে থাকি । আর আমি মনে করি এগুলো সঠিক সময়ে করা হলে আপনার বাইক আপনাকে সর্বোচ্চ পার্ফরমেন্স দিবে ।sports bike in bangladesh

 মাইলেজ নিয়ে আমার খুব বেশি আগ্রহ নেই। স্পোর্টস বাইকে মাইলেজ কম হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে Yamaha R15 V3 Indo বাইকের মাইলেজ আমাকে অবাক করেছে । সত্যই Yamaha R15 V3 Indo বাইকের মাইলেজ অবাক করার মত । এত বেশি থ্রটল রেস্পন্স, টপ স্পিড, রেডি পিকাপ এর পরেও বাইকটিতে আমি ৪০+ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ পেয়েছি। 

হাইওয়েতে ৪৫+ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ পেয়েছি। বাইকটিতে আমি মতুল এর ফুল সেন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি 10w40 গ্রেড এর । পার্ফরমেন্স খুব ভালো পাচ্ছি।

ইঞ্জিন অয়েল এর উপর একটা বাইকের পার্ফরমেন্স অনেকটাই ডিপেন্ড করে । তাই আমি সঠিক সময়ে আমার বাইকের ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি। Yamaha R15 V3 Indo ৮৫০ এমএল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করতে হয় । অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করলে ৯০০ এমএল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি । বাইকটির কোন পার্টস পরিবর্তন করতে হয়নি । তবে আমি অনেক কিছু মডিফাই করেছি । 

আরো ভালো পার্ফরমেন্স এর কারণে GearX এর O রিং চেইন লাগিয়েছি । যেটা আপনারা পিক গুলোতেই দেখতে পাচ্ছেন । আমি আমার বাইকটি খুব বেশি পছন্দ করি। তাই নিজের মত করে বাইকটি সাজাতে পছন্দ করি । তাই আমি আমার বাইকটি নিজের পছন্দ মত সাজিয়েছি । বাইকটি দিয়ে আমি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ স্পিড পেয়েছি ১৩৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা। আমার ওয়েট বেশি হওয়ার কারনে এর বেশি আর ট্রাই করিনি ।yamaha r15 v3 indo yellow color user review in bd front brake

বাইকটির কিছু ভালো দিক -

  • লুকস
  • মাইলেজ
  • রেডি পিকাপ
  • স্লিপার ক্লাচ
  • ব্যালেন্স

বাইকটির কিছু খারাপ দিক -

  • লং রাইডে ব্যাক পেইন
  • হেডলাইটের আলো কম
  • ভাংগা রাস্তায় সামনের USD সাসপেনশন এর ফিডব্যাক ভালো না
  • টার্নিং রেডিয়াস
  • আফটার মার্কেট পার্টস এর দাম অনেক বেশি

বাইকটি নিয়ে আমি এখন পর্যন্ত কয়েকটি লং ট্যুর দিয়েছি। এর মধ্যে সব থেক বড় ট্যুর ছিল । যশোর থেকে ঢাকা - কিশোরগঞ্জ - ঢাকা । প্রায় ৮০০ কিলোমিটার এর ট্যুর ছিল। বেশ ভালো পার্ফরমেন্স পেয়েছি। স্মরনীয় একটি ট্যুর ছিল। মূলত ট্যুর করে বাংলাদেশটা ঘুরে দেখার জন্যই বাইক কেনা। তাই সব থেকে বেশি বাইক ট্যুর করা হয় । Yamaha R15 V3 Indo বাইকটি হচ্ছে একটি ফুল স্পোর্টস বাইক। 

প্রতিদিন ১০-১৫ কিলোমিটার রাইড করার জন্য পার্ফেক্ট কিন্তু ১০০-১৫০ কিলোমিটার চালানোর জন্য এই বাইক নয় । বাংলাদেশের রোড কন্ডিশন ফুল স্পোর্টস বাইকের জন্য খুব বেশি পার্ফেক্ট না । কিন্তু শখ বলে কথা । ট্যুর ও করার ইচ্ছে আবার স্পোর্টস বাইক ও চালানোর ইচ্ছে তাই কিছুটা কম্প্রমাইস তো করতেই হবে । বাইকটির ব্যাক পেইন লং টাইম চালানোর জন্য ক্ষতিকর বলে মনে হচ্ছে । এবং ভ্যাট ট্যাক্স কমিয়ে দাম কিছুটা কমালে ভালো হত । সব দিক মিলিয়ে আমি বাইকটি নিয়ে সন্তুষ্ট । ধন্যবাদ।

লিখেছনঃ ইমরান হোসেন

আশা করি ইমরান ভাই এর ইউজার রিভিউটি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লেগেছে।  ইয়ামাহার এমন ইউজার রিভিউ এবং r15 v3 price in bangladesh এর সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক গ্রুপ ঘুরে দেখুন। তাছাড়া বাইক সম্পর্কিত যেকোন তথ্য পাবেন আমাদের ওয়েবসাইটে। আপনাদের মূল্যবান বক্তব্য এবং  r15 v3 ভালো বা খারাপ দিক আপনার কাছে কোনটা মনে হয় সেগুলো আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন ।

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।