ইয়ামাহা আর১৫ ভি২ নিয়ে রিভিউ– মিঠুন মৃধা
This page was last updated on 03-Jul-2024 06:31pm , By Shuvo Bangla
বাইকবিডি-র সকল পাঠককে শুভেচ্ছা । আমি মিঠুন মৃধা। আমি একটি ইয়ামাহা আর১৫ ভি২ এর গর্বিত মালিক এবং আজ আমি বাইকবিডি-র সকল পাঠকের কাছে আমার ইয়ামাহা আর১৫ ভি২ সম্পর্কে একটি পর্যালোচনা তুলে ধরব । আপনারা হয়ত হান্ট রাইডার্স (HAUNT RIDERZ ) এর নাম শুনেছেন, আমি এই স্টান্ট দলটির প্রতিষ্ঠাতা । ইয়ামাহা আর১৫ ভি২ সম্পর্কে আমার মতামত হল বাইক ভক্তদের জন্য বাংলাদেশের বাজারে বিদ্যমান সেরা বাইক হল এটি।
ইয়ামাহা আর১৫ ভি২ নিয়ে রিভিউ– মিঠুন মৃধা
আমার প্রথম বাইক হল পালসার ১৫০ স্টান্ট করার শখের কারনে যেটা আমি এখনও চালায়। আমি ঢাকায় থাকি এবং আমি আমার বাইক সাধারণত শহরের মধ্যে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ব্যবহার করি । আমার মতে ঢাকার মত ব্যস্ত ও ভিড়যুক্ত শহরের জন্য বাইকই হল সেরা বাহন । বাইকিং এর প্রতি আমার ভালবাসা ছোটবেলা থেকেই । এটা আমার বয়সের সাথে সাথে বাড়তে থাকে । পরিবর্তীতে আমার নিজের বাইক কেনার পর আমি স্টান্ট করা শুরু করি যেটা এখন পর্যন্ত মোটরসাইকেলের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর খেলা হিসেবে পরিচিত ।
বাইকের ক্ষেত্রে প্রথমেই আমি যেটা দেখি সেটা হল এর স্থায়িত্ব । আমি কতদিন এটা ব্যবহার করবো সেটা কোন ব্যাপার নয় । আমি পাঁচ বছর ধরে পালসার ব্যবহার করছি এবং এটা এখনও যথেষ্ট শক্তিশালী । দ্বিতীয়ত আমি যেটা দেখি সেটা হল ডিজাইন । আমি ইয়ামাহা আর১৫ ভি২ বাইকটি কিনেছি মূলত এর ডিজাইন দেখে । যদিও এর স্থায়িত্বও অনেক ভাল ।
আমার প্রথম পছন্দের বাইক ছিল পালসার ১৫০ কিন্তু এই বাইকটিও আমার খুবই পছন্দের এবং আমার মনের সাথে খুবই ঘনিষ্ঠ । আমার কাছে এটা হল সকল সন্তুষ্টির প্রতীক । আমি বাইকটি কিনেছিলাম কর্ণফুলী মোটরস থেকে এবং সকল কাগজপত্রসহ আমার প্রায় ৫,০৫,০০০ টাকা খরচ হয়েছিল । আমার এই বাইকটির জন্য দীর্ঘ ১ মাস অপেক্ষা করতে হয়েছিল ।
আমি এই বাইকটির জন্য একটি অর্ডার করি এবং তারা আমাকে বাইকটি সরবরাহ করে ২২ শে সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে । এটা যেন স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মত । আমি কখনো আশা করিনি যে আমার একটি বাইক থাকার পাশাপাশি আমি আরও একটি বাইক ইয়ামাহা আর১৫ ভি২ কিনতে পারব । এটা ছিল আমার চিন্তারও বাইরে যে আমি আমার প্রিয় বাইকের মালিক হব ।
বাইকটি সম্পর্কে আমি প্রথমেই যে জিনিসটি লক্ষ্য করেছি সেটা হল এটা একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বাইক । এটি ছিল একদম বিস্ময়কর একটি বাইক । বাইকটির পারফর্মেন্স অসাধারন এবং এটি রাস্তায় এমনভাবে চলে যেন বোতল হতে পানি পড়ছে । কিন্তু বাইকটির সেরা অংশ হল এর লেইড ব্রেকিং সিস্টেম । যখন আমি প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১২০ কিলোমিটার বা ১৩০ কিলোমিটারের উপরে চালায় তখন ব্রেক লিভারের উপর হালকা একটি চাপ বাইকটিকে একটি ধাক্কা দেয় মনে হয় যেন একটি শক্তিশালী চুম্বক বাইকটির গতিকে ধীরে ধীরে কমিয়ে দিচ্ছে ।
বাইকটি পিছনের টায়ারের আকার হল ১৩০/৮০-১৭ যেটা একটি বাইকের জন্য খুবই দারুন এবং আগের ভার্সনগুলো থেকে এটা অনেক ভালো । এর কসমেটিকস পরিবর্তনের কারণে এ সিরিজের অন্য সকল বাইকের থেকে এটিকে সুন্দর দেখায় ।
আমি আমার বাইকের প্রথম সার্ভিসিং করিয়েছি কর্ণফুলী মোটরস হতে এবং আমি তাদের সার্ভিসে সন্তুষ্ট। এটা আমাকে প্রতি লিটারে ২৮ কিলোমিটার পর্যন্ত মাইলেজ দেয় । আমি এটাতে সন্তুষ্ট । আমি বাইকটি চালানোর পূর্বে ইঞ্জিনকে কিছুটা গরম করে নেয়ার চেষ্টা করি । এটা ইঞ্জিনকে ভালোভাবে তেল ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে এবং অন্তত ১০ মিনিট ৫০ কিলোমিটার গতির নিচে চালায় ।
আমি ইয়ামাহার তৈরী ইয়ামাহালুব ব্যবহার করি কারণ তাদের ব্রসিউরে এটা ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। এর দাম আনুমানিক ৫০০ টাকা । আমি মনে করি এই বাইকের জন্য কোন পরিবর্তন দরকার নেই । এটা সম্পূর্ণভাবে একটি “নিখুঁত প্যাকেজ” ।
আমি এটা প্রতি ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার বেগে চালিয়েছি কিন্তু আমি মনে করি ভালো রাস্তা ও ভালো আবহাওয়াতে আরও বেশী গতি তোলা সম্ভব । আমি যদিও কোন খারাপ দিক খুঁজে পায়নি কিন্তু অনেক বাইক চালকের মতে এটি নিয়ন্ত্রণ করা অনেক কঠিন ।
সাধারনভাবে, আমি আমার বাইকটি চালায় এর পারফর্মেন্সের কারণে । এ বাইকটি হল প্রযুক্তি, পারফর্মেন্স, নিয়ন্ত্রণ ও লুকের দারুন সমন্বয়ের একটি উদাহরণ ।
তাই আমি আশা করি ইয়ামাহা আর১৫ ভি২ সম্পর্কে আমার এই লেখাটি বাইকবিডি-র পাঠকদের এ বাইকটি সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা দেবে ।
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com - এই ইমেইল এড্রেসে।