Yamaha MT15 টেস্ট রাইড রিভিউ - ৫০০০ কিলোমিটার রাইড

This page was last updated on 29-Jul-2024 03:54pm , By Raihan Opu Bangla

২০১৮ সালের শেষের দিকে এসে ইয়ামাহা তাদের ন্যাকেড স্পোর্টস বাইক Yamaha MT15 বাজারে লঞ্চ করে। এই বাইকটি Yamaha M Slaz এর বিকল্প হিসেবে এসেছে, বাইকটিতে Yamaha R15 V3 এর ইঞ্জিন ব্যবহার করায় এটি সব মিলিয়ে নিঃসন্দেহে একটি সেরা ন্যাকেড স্পোর্টস বাইক। Yamaha MT15 এর ইঞ্জিন, চ্যাসিস, সাসপেনশন সেটাপ Yamaha R15 V3 এর মতো। it’s like plastic surgery, you can’t change the skeleton & internal organs but you can change the flesh. এগ্রেসিভ এলইডি হেডলাইট এবং এলইডি ব্যাক লাইট থাকায় বাইকটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখতে বেশ আকর্ষণীয় লাগে। এলিয়েনের মুখের মতো প্রোজেকশন হেডলাই বাইক রাইডের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে দেয়, এবং এই বাইকের হেডলাইটের আলো সিটি রাইড এবং হাইওয়ে রাইডের জন্য ভালো। 

Yamaha MT15 টেস্ট রাইড রিভিউ

Yamaha MT15 টেস্ট রাইড রিভিউ

মূল বিষয় শুরু করার আগে আপনি যদি mt 15 price in bangladesh এর সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল  এবং ফেসবুক ফ্যান পেজ ঘুরে দেখুন।  তাছাড়া বাইক সম্পর্কিত যেকোন তথ্য পাবেন আমাদের ওয়েবসাইটে।

Yamaha R15 V3 বাইকটিতে ডুয়েল চ্যানেল এবিএস থাকলেও এই বাইকটি ব্যবহার করা হয়েছে সিংগেল চ্যানেল এবিএস। বাইকটিতে aluminum swing arm মিসিং রয়েছে। আপনি যদি বাইকটির পিছনে দাঁড়িয়ে এটির দিকে তাকান, তবে আপনি অনুভব করবেন যে এটি দেখতে সত্যিই আশ্চর্যজনক লাগে। এটি এমন একটি বাইক যা আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করবে, কারনটা যাই হোক না কেন। পাশের এয়ার স্কুপটি শুধুমাত্র দেখানোর জন্য দেয়া হয়নি। বাইকের ফিট ও ফিনিশিং খুব সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, প্লাস্টিকের মানও ভাল, তাই পেইন্টের মানও ভাল।

Also Read: Yamaha FZS V2 ২০,০০০ কিলোমিটার রাইড 

বাইকটিতে রোড হ্যান্ডেলবার ব্যবহার করার জন্য বাইকটির সিটিং পজিশন বেশ আপরাইড, এর ফলে বাইকটি নিয়ে আপনি হাইওয়েতে এবং সিটিতে রাইড করে বেশ কম্ফোর্ট ফিল করবেন। বাইকের ফুটরেস্ট কিছুটা পেছনের দিকে হওয়ার এটি আপনাকে স্পোর্টি ফিল দিবে । এই সিটিং পজিশনের জন্য বাইকটির গ্রাভিটির সেন্টার ও ঠিক থাকে। টার্নিং রেডিয়াসকে যে সেরা ঠিক তা না, তবে টার্নিং রেডিয়াস যা আছে তাতে আপনি শহরের জ্যাম কাটিয়ে খুব সহজে আপনার গন্তব্যে এগিয়ে যেতে পারবেন। 

বাইকটির সুইচ সিস্টেম অন্যান্য বাইকের মতো না, আপনি যদি অন্য কোন বাইক থেকে MT15 ব্যবহার করতে আসেন তাহলে আপনার ৩-৪ দিন লাগএ এই সুইচগুলোর সাথে অভ্যস্ত হতে। স্পীডো মিটার নিয়ে আলাদা ভাবে না বললেই না, এটা আপনাকে শুধুমাত্র স্পীড ই দেখাবে না, আরপিএম, গিয়ার নম্বর, এভারেজ স্পীড, এভারেজ মাইলেজ , সময় সহ অত্যাধুনিক সব ফিচার আপনি পাবেন। যেহেতু বাইকটিতে R15 V3 Indian এর ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে, তাই বাইকটি থেকে 19,1 BHP @ 10,000 RPM & 14.7 Nm of Torque @ 8,500 RPM উৎপন্ন হয়। তবে এখানে তারা ইসিইউ remapped করেছে, ইঞ্জিন মিড রেঞ্জে থাকাকালীন সময়ে যখন ইঞ্জিনে ভিভিএ এক্টিভ হয় তখন আপনি ইঞ্জিন থেকে কিছু একটা ফিল করতে পারবেন। 

Yamaha MT15 কিছুটা হাল্কা ওজনের বাইক, বাইকটির ওজন ১৩৮ কেজি, আপনি যখন বাইকটি হাই স্পীডে চালাবেন তখন আপনি কিছুটা ফিল করতে পারবেন। বাইকটির ইঞ্জিনে যখন ভিভিএ এক্টিভ হয়্বে যায় তখন আপনি ইঞ্জিন থেকে আলাদা শক্তি অনুভব করবেন এবং মিটারে ভিভিএ এর সংকেত দেয়। কিন্তু টপ ইন্ডে বাইকের গতি কিছুটা কম, হাইওয়ে রাইডের সময় আমরা বাইকটি থেকে ১৩৪ টপ স্পীড পেয়েছি। বাইকটি ১৩ সেকেন্ডের মধ্যে ০ থেকে ১০০ স্পীড তুলতে সক্ষম। যেহেতু এটি একটি হাই রেভিং ইঞ্জিন তাই বাইকটির ইঞ্জিন ১১০০০ আরপিএম পর্যন্ত উঠতে সক্ষম। 

Also Read: Yamaha FZ FI V3 ২৫০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ 

হাইওয়েতে যে কোন পরিস্থিতে আপনি বাইকটি নিয়ে খুব সহজেই ওভারটেকিং করতে পারবেন এবং সিটি রাইডের সময় আপনি জ্যামের মধ্যে কোন রকমের ঝামেলা অনুভব করবেন না। বাইকটির সামনে ব্যবহার করা হয়েছে টেলিস্কোপিক সাসপেনশন এবং পেছনে ব্যবহার করা হয়েছে মনোশক সাসপেনশন। বাইকটি টেস্ট করার সময় সাসপেশনগুলি ৩০০০ কি.মি পর্যন্ত বেশ শক্ত ছিলো। বাইকটির গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স বেশ ভালো, তাই পিলিয়ন সহ অথবা পিলিয়ন ছাড়া আপনি বাইকটি নিয়ে নরমাল স্পীড ব্রেকার বেশ ভালোভাবে অতিক্রম করতে পারবেন। প্রতি সার্ভিসিং এর সময় বাইকের ball racer এডজাস্ট করাতে হয়। 

সামনের সাসপেনশনের পাশাপাশি পেছনের সাসপেনশন খারাপ রাস্তাগুলিতে ভাল সাপোর্ট দেয়, তবে পেছনের সাসপেনশন পিলিয়ন নিলে ভালো সাপোর্ট দেয় না। উচ্চ গতি, কম গতি অথবা কম গতিতে কর্ণারিং এর সময় ১৪০ সেকশন রিয়ার টায়ারের সাথে বাইকের চ্যাসিসটি বাইকটিকে রাস্তার সাথে ভালোভাবে আটকে রাখতে সাহায্য করে। তবে আপনি যখন হাইস্পীড কর্ণারিং করবেন তখন বাইকের পিছনের অংশটি কিছুটা নড়ে যায় এটি বেশ বিপদজ্জনক। আপনি এই বাইকটি দিয়ে খুব সহজে অনেক মজা করতে পারবেন, বাইকটি ব্রেক করার সময় আপনি খুব সহজে বাইকটি দিয়ে স্কিডিং, প্রথম গিয়ারে হুইলি সহ আরও অনেক কিছু করতে পারবেন। 

তবে এই বাইকটি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে চাইলে আপনাকে ঠাণ্ডা মাথার হতে হবে। আমাদের টেস্টের সময় সামনের এবিএস থেকে আমরা ভালো ফিডব্যাক পেয়েছি , ভেজা রাস্তায় বাইকের পেছনের চাকা একদিকে স্লিপ করে, তবে এটি R15 ভি ৩ এর নেকেড হিসাবে বাইকটিতে ডুয়েল চ্যানেল এবিএস থাকতে পারতো। বর্তমান সেটআপ নিয়ে অভিযোগ করছি না তবে ইতিমধ্যে প্রযুক্তিটি রয়েছে। 

Read: Yamaha FZS Fi V2 ২০,০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ

এখন আসা যাক Yamaha MT15 বাইকটির এন্টিলক ব্রেকিং সিস্টেম(ABS) এর ব্যাপারে, সিংগেল চ্যালেন এবিএস কি কোন সমস্যা করে? উত্তর হচ্ছে না, বাইকটি ভেজা রাস্তায় হাই স্পীড ব্রেকিং এ ভালো সাপোর্ট দেয়, তবে পেছনের চাকা কিছুটা মুভ করে। কিন্তু আপনি বাইকটি চালাতে চালাতে অভ্যস্থ হয়ে যাবেন। আপরাইট সিটিং পজিশন হওয়ার জন্য আপনি এখন বাইকটির ইঞ্জিনের সাউন্ড আরও ভালোভাবে শুনতে পারবেন। পিলিয়ন সিট ছোট, যার ফলে দুইজন স্বাস্থ্যবান ব্যক্তির জন্য এই সিট উপযুক্ত না। 

আপনি যদি সলো রাইড করতে বের হন তাহলে ব্যাগ এবং অন্যান্য জিনিস বাধার জন্য পার্যাপ্ত জায়গা পাবেন না। Yamaha MT15 বাইকের সাসপেনশনগুলি কিছুটা শক্ত, তবে আমি মনে করি যে এটি একটি কারণ যা এই বাইকটিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে। সার্বিক গঠনের জন্য বাইকটি লো স্পীড কর্ণারিং এর সময় ভালো সাপোর্ট দেয়, কিন্তু হাই স্পীড কার্নারিং এর সময় ভালো সাপোর্ট দেয় না। 

পিলিয়ন নিয়ে লং রাইড করতে গেলে আপনি কিছুটা সমস্যা ফেস করবেন। তবে একা লং রাইড করার জন্য বাইকটি বেশ আরামদায়ক, কিন্তু যদি আপনি পিছনে কোন ব্যাগ বাধেন তাহলে ব্যাক লাইট অনেক সময় ঢেকে যায়, এর ফলে আপনার পেছন থেকে আপনার বাইকের ব্যাক লাইট খেয়াল করা কিছুটা কষ্টকর। টপ স্পীডঃ ১৩৪ কি.মি (বাইকের স্পীডোমিটার অনুসারে) মাইলেজঃ ৩৫-৩৮ কি.মি ঢাকা শহরের মধ্যে, ৪০-৪২ কি.মি হাইওয়েতে (স্পীডো মিটারের তথ্য অনুসারে )