Yamaha FZS Fi V2 ২০,০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - সুমন
This page was last updated on 13-Jul-2024 10:24pm , By Ashik Mahmud Bangla
আমার নাম সুমন কোতোয়াল। আমার বাসা পুরান ঢাকা আমি পূর্ব জুরাইন ঢাকা, কদমতলী থানা এলাকায় বসবাস করি। আমি আপনাদের সাথে আমার রাইড করা Yamaha FZS V2 বাইকটি নিয়ে কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।
Yamaha FZS Fi V2 ২০,০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ
বাইকের প্রতি ছোট বেলা থেকে ছিল অনেক বেশি আগ্রহ। কবে হবে এমন একটা বাইক । অপরিচিত কেউ বাইক নিয়ে আসলে কতক্ষনে বাইকের উপরে বসবো সেই চিন্তায় থাকতাম। এই ভাবে করতে করতে একদিন পরিচয় হলো একটা ছেলের সাথে, ওর ভাইয়ের বাইক ছিলো। এক্সেল বাইক তখন যানতাম না কিছু দিন পর নিয়ে আসলো বাইকটা ভালো একটা পরিচয় এরপর বন্ধুত্ত্ব। এরপর বাইক চালানো পর্ব শেষ হলো।
অনেক কষ্ট হয়েছে কারন প্রশিক্ষক ছিলো না। বন্ধুর পিছনে উঠে ফলো করতাম কি ভাবে কখন কি করতে হয়। আর ওকে বলতাম থামলে কি করতে হয়, আইলেন দেখলে কি করে ইত্যাদি ইত্যাদি । এর মধ্যে আরেক বন্ধু Yamaha RX 100 কিনলো তখন অনেক খুশি হয়েছিলাম। কারন বাইকটা নিয়ে কোথাও যেতে পারবো সাহস করে একদিন মাঠে নেমে গেলাম হয়ে গেলো বাইক চালানো শেখা। আমি পারছি খুব আনন্দ লাগছিলো তখন ।
তখন এক বন্ধুর বোনের বিয়ে নরসিংদী, সিলেটের রাস্তা কি ভাবে যাবো চিন্তা করছি। মনে হলো এক ভাইয়ের কথা সাহস করে চাইলাম ভাই তোমার বাইকটা দিবে একটা বিয়েতে যাবো, ভাই বললো নিয়ে যা নিলাম আর চলে গেলাম ।
আসল কথা হলো সাহস ছিলো ইচ্ছে ছিল বলে আমি পেরেছি। এরপর থেকে চিন্তা একটাই বাইক কিনতে হবে। অনেক কষ্ট করে আমার ভাই আর বোনকে বুঝালাম। ওদের কাছ থেকে কিছু টাকা আর আমার জমানো টাকা দিয়ে ২০০৪ সালে Bajaj Pulsar 150cc কিনলাম। অনেক ভালো করে যাত্রা শুরু হলো। বাইকটা দিয়ে অনেক ছুটাছুটি করছি । বেশ কিছুদিন চালানোর পরে ইয়ামাহা বাইক গুলো অনেক ভালো লাগতো পিছনের টায়ার অনেক মোটা দেখতেও ভালো । এরপর পালসার বিক্রি করে দিলাম। ইয়ামাহা ভি ওয়ান নিলাম মালিবাগ কর্নফুলী থেকে ২০০৬ সালে। এরপর থেকে ইয়ামাহার সাথে আছি ভালো লাগে বাইক নিয়ে ঘুরতে, মন খারাপ হলে বাইক নিয়ে বের হয়ে পরি।
Click To See Yamaha FZS FI V2 Review By Team BikeBD
এরপরে আমি Yamaha FZS Fi V2 বাইকটি কিনি। বাইকটি আমি ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছিলাম। বাইক কেনা হয় মধ্যবাড্ডা টর্কি মটরস থেকে, এসিআই প্রথম ইয়ামাহা শোরুম। প্রথমে এক লক্ষ টাকা দিয়ে বুকিং করি। পরে বাকি টাকাগুলো দিয়ে বাইক নিয়ে আসি। অনেক আনন্দ ছিল মনের মধ্যে যা বলে বা লিখে বুঝানো যাবে না ।
ভাতিজা কে নিয়ে বাইক কিনতে গিয়েছিলাম। কিছু তেল দিয়েছে তারা চলে আসার জন্য, কিন্তু আমি প্রথমে তেলের পাম্পে গিয়ে পুরো ট্যাংক তেল নিলাম। যত্ন নিয়ে চালাতে শুরু করলাম। এরপর বাইকটার কিছু মডিফাই করার জন্য বংশাল গেলাম। বাইক নিয়ে যখন এলাকায় আসলাম তখন বন্ধুরা আর কিছু ছোট ভাই গুলো অনেক প্রশংসা করলো, খুব ভালো লেগেছে ।
আর যে বাইক দিয়ে চালানো শিখা হয়েছে সেই বাইক থেকে তো নতুন বাইক অনেক ভালো। খুব ভালো লাগে আর সময় হলেই বের হই, কেউ ডাকদিলেই বাইক নিয়ে বের হইতাম। বাইকটাকে যত্ন সহকারে চালাই কখনো কোনো বিপদে পরি নাই আর কোনো দূর্ঘটনা ঘটে নাই আল্লাহ রহমত এখনো । Yamaha FZS Fi V2 বাইকটিতে আমি মটুল 7100 20w40 গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি।
এখন পর্যন্ত আমি বাইকের এয়ার ফিল্টার, ব্রেক-সু, ক্লাচ ক্যাবেল এগুলো পরিবর্তন করেছি। তবে আমার সামনে হেডলাইট ভালো লাগেনি। এখন পর্যন্ত আমার বাইকের সর্বোচ্চ স্পিড হলো ১২২ কিলোমিটার প্রতি লিটার। আর একটা কথা বাইক গুলো ছিলো আমার ভালো একটা বন্ধু। আমি বাইকে পছন্দ করি বাইক আমার বন্ধু। যেই পর্যন্ত বেঁচে আছি আল্লাহ রহমতে বাইক ছাড়তে পারবো না। দোয়া করবেন যেন ভালো ভাবে থাকতে পারি ।
আমার একটা কথা হলো একটু ভুলের জন্য তার পরিনাম যেন সারা জীবন আপনাকে বহন করতে না হয় সবসময় আমরা হেলমেট ব্যবহার করবেন। জরুরী কাগজ পত্র বাইকের সাথে রাখবেন । Yamaha FZS Fi V2 এমন ঠিক যেমন আমার চাওয়া ছিল। বাইকটির সব কিছু আমার পছন্দ হয়। কুয়াকাটা ট্যুর আমার জীবনে সব চাইতে ভালো এবং স্মরনীয় একটি ট্যুর ছিল। তার কারন হলো অনেক গুলো বাইকার ভাই এর সাথে পরিচয় হয়েছে । বাইক চালাতে আমি বেশি পছন্দ করি। সুযোগ পেলেই বের হয়ে যাই বাইক নিয়ে। আপনি যদি মাইলেজ কম্ফোর্ট এবং ভালো ব্রেকিং এর একটি বাইক চান তাহলে অবশ্যই এই বাইকটি নিতে পারেন। ধন্যবাদ।
লিখেছেনঃ সুমন
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।