Yamaha FZS Fi V2 ১৩,৫০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - সজীব সারোয়ার
This page was last updated on 18-Jul-2024 12:02pm , By Raihan Opu Bangla
আমি সজীব সারোয়ার। আজ আমি আপনাদের আমার Yamaha FZS Fi V2 বাইকটি নিয়ে ১৩৫০০ কিলোমিটার রাইডের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো। লক্ষীপুর জেলার রায়পুর উপজেলায় আমার বাড়ি। বর্তমানে সিলেট থাকি।
Yamaha FZS Fi V2 ১৩,৫০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - সজীব সারোয়ার
আমি Yamaha FZS Fi V2 বাইকটি দীর্ঘ ১ বছর যাবত ব্যাবহার করছি । বাইক রাইডিং খুব বেশি দিনের নয় । চাকুরীর কাজে এবং নিজের মনের তৃপ্তির জন্য রাইড করি । সিঙ্গেল এবং গ্রুপ রাইড দুটোই ইনজয় করি । কারন দুটার আনন্দ দু'রকম আমার কাছে । বাইকটি যখন আমি ঢাকা ইয়ামাহা 3S থেকে নিয়েছি তখন এটার দাম ছিল ২,৪৫,০০০/- টাকা। যেহেতু প্রথম বাইক এটা আমার, তাই প্রথম চালানোর অভিজ্ঞতা ছিলো বেশ রোমাঞ্চকর। ইয়ামাহা বাইকের কালার এবং ডিজাইন অসাধারন। যে কেউ দেখলেই প্রসংশা করবে। আমার বেলায়ও ব্যাতিক্রম হয়নি। তবে বাইকের ডুয়েল সিট এবং হেড লাইটটি আমার কাছে বেশি পছন্দের ।
বর্তমানে আমার বাইকটি ১৩,৫২০ কিলোমিটার রান করেছে । আমি প্রতিটা সার্ভিস সময় মত ইয়ামাহা সার্ভিস সেন্টার থেকে নিয়েছি । ইয়ামাহা সার্ভিস টিম অতন্ত্য নিঁখুত এবং যত্ন নিয়ে বাইকের সার্ভিস করে থাকে । দেশের নাম্বার ওয়ান সার্ভিস টিম ইয়ামাহা । আমি দেশের অনেক গুলো ইয়ামাহার সার্ভিস সেন্টার থেকে সার্ভিস নিয়েছি । আমি সব সময় চেষ্টা করি ইয়ামাহার জেনুইন পার্টস এবং ইঞ্জিন অয়েল ইয়ামালুব ব্যবহার করতে । ইয়ামাহা বাইক এর একটা পজেটিভ দিক হলো, ভালো ভাবে রাইড করতে পারলে খুব বেশি পার্টস রিপ্লেসমেন্ট করতে হয় না । আমি এই ১৩,৫০০ কিলোমিটার রাইড করে লুব অয়েল, অয়েল ফিল্টার, এয়ার ফিল্টার , ব্রেক সু , ক্ল্যাচ ক্যাবল পরিবর্তন করিয়েছি । যেহেতু আমি ইয়ামাহার জেনুইন পার্টস ব্যবহার করি , তাই সব গুলোর ডিউরেশনও অনেক বেশি থাকে ।
ছোট এই জার্নিতে আমি যতটুকু বুঝলাম। একটা বাইকের সর্ব প্রথম যেটা থাকা দরকার, সেটা হলো ভালো ব্রেকিং প্রক্রিয়া। যেটা ইয়ামাহা বাইকে আমি পেয়েছি। এই যাবত মেজর কোন দুর্ঘটনার স্বীকার হইনি।
আমি যেহেতু লং রোড রাইডার, তাই বাইকের মাইজেল খুব ভালো পাচ্ছি ৪৮-৫২ কিলোমিটার প্রতি লিটার, এটা ইয়ামাহার বাইকের একটা ভালো দিক। অনেক রাইডার আছে, যারা ফুয়েল ইকোনোমির দিকে বেশি নজর দেয়, তাই তারা ইয়ামাহাকে বেশি পছন্দ করে থাকে। অনেক সময় ধরে রাইড করার পরও আমি হাতে কিংবা পিঠে ব্যথা অনুভব করিনি। এটা একটা বাইকারের জন্য খুবই জরুরি। যারা প্রতিনিয়ত লং রোডে রাইড করে, তারা এই জিনিসটা মাথায় রেখে বাইক কিনে। বাইকের সাসপেসনটা নিয়ে খুব বেশি সেটিসফাই আমি। ছোট বড় গর্ত এবং স্পিড ব্রেকারের সয়ম এটা ভালো কাজ করে।
Yamaha FZS Fi V2 বাইকের কিছু ভালো দিকঃ
- ব্রেকিং সিস্টেম খুব ভালো
- ১৫০ সিসি সেগমেন্ট এ বেশ ভালো মাইলেজ পাচ্ছি
- যথেষ্ট কম্ফোর্ট
- বাইকের সাসপেসনটা নিয়ে খুব বেশি সেটিসফাই আমি
- ইঞ্জিন কন্ডিশন গুড এবং ঘন ঘন সার্ভিস খরচ হয় না । এটার রি-সেলস বেশি পাওয়া যায়।
Yamaha FZS Fi V2 বাইকের কিছু খারাপ দিকঃ
- বাইকের সিট টা অনেক শক্ত, বেশি সময় রাইড করলে ব্যথা অনুভব হয়
- হেড লাইটের আলো অনেকটাই কম । রাতে প্রব্লেম হয় ।
- মাঝে মাঝে টপ স্পিড ড্রপ করে
- গিয়ার শিফটিং অনেক হার্ড
- পিছনে ড্রাম ব্রেক হওয়ায় ঘন ঘন ব্রেক এডজাস্টমেন্ট করতে হয়
Yamaha FZS Fi V2 রাইডিং এক্সপ্রিয়েন্স নিয়ে কিছু কথা অনেকই মনে করে টপ স্পিড কিংবা মাইলেজ নির্নয় বাইকের জন্য খুব বেশি প্রয়োজন । আসলে টপ স্পিড এবং মাইলেজ দুটাই নির্ভর করে রাইডিং স্কিল এবং বাইক সার্ভিসের উপর । অনেকেই ভাল মাইলেজ পেয়ে থাকেন, আমি কেন পাচ্ছি না? এটার উত্তর একটাই, নিয়ম অনুসারে বাইক রাইড এবং সার্ভিস নিতে হবে নিয়মিত। যে যে বিষয় গুলোর উপর টপ স্পিড এবং মাইলেজ নির্ভর করে, সেগুলোর উপর নজর দিতে হবে। একটা ডিপেন্ডেবল বাইক মানে হচ্ছে, রাইড করতে গেলে নিজেও কনফিডেন্ট থাকা যায় । কনফিডেন্ট অনেকাংশ আপনাকে সহায়তা করে রাস্তায় ভালো রাইড করার জন্য । তবে ওভার কনফিডেন্টের জন্য অনেক সময় দুর্ঘটনাও হয় । আমার কাছে মনে হয় ইয়ামাহা একটি আস্থার নাম । যে বাইক রাইড করলে আমি অনেক বেশি কনফিডেন্ট থাকি ।
আমি এখন পর্যন্ত হাইওয়েতে একদিনে সর্বচ্চো ৪৩৫ কিলোমিটার রাইড করেছি । বাইকটিতে সর্বোচ্চ গতি উঠিয়েছি ১১৮ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা, এর বেশি উঠানোর সাহস বা আগ্রহ ছিল না । সবাইকে ভালো মানের হেলমেট এবং সেফটি কিট ব্যবহার করে বাইক রাইড করার অনুরোধ রইলো। দুটা জিনিস এড়িয়ে চলুন অনিয়ন্ত্রিত গতি এবং অতিরিক্ত কনফিডেন্ট। ধন্যবাদ সবাইকে।
লিখেছেনঃ সজীব সারোয়ার