ওয়ালটন এক্সপ্লোর ১৪০ নিয়ে আমার রিভিউ- রানা
This page was last updated on 04-Jul-2024 04:40am , By Shuvo Bangla
হ্যালো বাইকবিডি –র পাঠকেরা । আমার নাম রমজান মিয়া রানা এবং আমি ওয়ালটন এক্সপ্লোর ১৪০ নিয়ে আমার পর্যালোচনা সম্পর্কে আপনাদের সাথে আলোচনা করতে যাচ্ছি। আমি গাজীপুরে থাকি। এটি বাইকবিডিতে আমার প্রথম পোস্ট। তাই দয়া করে আমার ভুল গুলো ক্ষমা করে দেবেন।
ওয়ালটন এক্সপ্লোর ১৪০ নিয়ে আমার রিভিউ
আমার বাইকটি ওয়ালটনের নতুন ওয়ালটন এক্সপ্লোর ১৪০সিসি। এটি আমার নিজের প্রথম বাইক। এটি খুব ভালো একটি বাইক। বাসা থেকে কলেজে সহজে যাওয়া আসা এবং বাইকে চড়ার ইচ্ছাও পূরণ করতে এটি আমি নিজের জন্য কিনেছিলাম। ছোটবেলা থেকে আমার বাবার মত আমিও বাইকে চড়তে চাইতাম এবং দ্রুত চলার সময় মুখে বাতাসের আলিঙ্গন আমি খুব উপভোগ করতাম।
প্রথম বাইক কেনা সবসময় কষ্টের, সঠিক ধরনের বাইক কেনার জন্য আমার তেমন কোনো নির্দেশনা ছিল না। আমি সবসময় একটি বড় বাইক চাইতাম অর্থাৎ একটি দ্রুতগতির ও শক্তিশালী বাইক। তাই আমি চিন্তা করেছিলাম পালসার অথবা হিরো হোন্ডা হাঙ্ক কিনতে। কিন্তু ওই সময় আমার হাতে বেশী টাকা ছিলো না। পরে আমার এক কাজিন আমাকে ওয়ালটন সিরিজের বাইক সম্পর্কে বললো। এই বাইকগুলো বাংলাদেশে তৈরী তাই আমদানীকৃত ভারতীয় বাইকগুলোর তুলনায় ওয়ালটন মোটরসাইকেলের দাম কম এবং ইঞ্জিনের মানও তাদের প্রায় সমান। তাই আমি একটা দেখার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমার বন্ধুর একটা ফিউশন ১১০সিসি ছিল এবং আমি ঠিক করলাম সেটা একবার চালিয়ে দেখব। যে মুহুর্ত হতে এটি আমি চলিয়েছি সে মুহূর্ত থেকে আমি এটিকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম । তারপর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম আমার নিজের জন্য সামান্য বেশী অশ্ব ক্ষমতার একটা কিনব।
ওয়ালটন এক্সপ্লোর ১৪০সিসি বাইকের রাজা। ১৩৮সিসি ইঞ্জিন এবং ৫ গিয়ার স্পীড সিস্টেমের এটি প্রিন্স শ্রেণীর একটি সুন্দর বাইক। বসার জায়গাটি যন্ত্রের একটি অকর্ষণীয় মসৃণ অংশ। বাইক চালককে সবসময় বাইকের যন্ত্রাংশ সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা প্রয়োজনীয় তাই আমি দেখেছিলাম ইঞ্জিনের সার্ভিস, হিটিং এবং সবকিছু। তারপর আমি বাইকটি কেনার উদ্দেশ্যে গেলাম।
আমি ছয় মাস আগে বাইকটি কিনেছিলাম। এই ছয় মাসে আমি বাইকটি সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছি। বাইকবিডি পাঠকদের সুবিধার্থে আমি এখন বাইকটি সম্পর্কে যা জেনেছি তা লিখব।
এর ইঞ্জিনটি ১৩৮সিসি স্টাটেন ইঞ্জিন সাথে ই৩ টেক। ই৩ বিষয়টা আমার কাছে ঠিক পরিষ্কার নয়। এটি চালু করার পদ্ধতি বিস্ময়কর,একে ইলেকট্রিক এবং কিক উভয়ের সাথে রিমোট কন্ট্রোল পদ্ধতিতেও চালু করা যায় যা অনন্য। ইঞ্জিন ব্লকটির আকারও সুন্দর যেহেতু ১৪০সিসি মোটরসাইকেল সাধারণ মোটরসাইকেলের সার্কিটের মত নয়। ইঞ্জিনটি এয়ার কুল্ড। এর গতির অনুপাতটিও ভালো আমি ৭ সেকেণ্ডে ০-৬০ কিলোমিটারে এ গিয়েছিলাম। এটি হয়তো আমার চালানোর কৌশল অথবা অন্যকিছু । এতে আমি বড় একটি ত্রুটি পেয়েছি আর তা হল এটি দ্রুত গরম হয়ে যায়। যখন আমি বলছি দ্রুত আমি বুঝাচ্ছি খুব দ্রুত। কিন্তু পরে দেখেছি এটি হয়েছিল কারণ আমি গিয়ার পরিবর্তন করছিলাম না এবং যার কারণে নিম্ন গিয়ারে ইঞ্জিন অধিক ঘুরছিল।
বাইকটির চাকাগুলো সুন্দর। এগুলোর কাঠামো রাস্তার সাথে মানানসই সম্ভবত সামনের চাকাটিও টিউব শূন্য যেটি আমার জন্য ইতিবাচক। এর চাকাগুলো এখন পর্যন্ত পাংচার হয়নি। চাকাগুলো অন্য বাইকের তুলনায় বড় ও মজবুত এবং এগুলো সুনির্দৃষ্টভাবে বাংলাদেশের রাস্তার উপযোগী করে তৈরী। চাকাগুলোর হালকা ওজনের অলংকৃত ধাতব কাঠামো একে একটি আকর্ষণীয় রূপ দিয়েছে।
একই সময়ের মধ্যে এর স্পীড পরিবর্তনের পদ্ধতি বা গিয়ার পদ্ধতিটি খুব ভালো। এই গিয়ার পরিবর্তনের ফল খুব দ্রুত সময়ে এবং আমার অন্যান্য কাজ শেষের আগেই পাওয়া যায়। এই পাঁচ স্পীড পদ্ধতিটি থাকায় এটি একটি দ্রুত এবং সুন্দর বাইকে পরিণত হয়েছে ।
এই বাইকের সবচেয়ে সুন্দর দিকটি হলো এর ডাবল ডিস্ক ব্রেক সিস্টেম । এর ফলে এতে সাময়িক কানফাটা শব্দ হয় এবং যদিও এটি বিদঘুটে কিন্তু এই সময়ের দুর্ঘটনার চাইতে এটি সম্ভবত ভালো। এই বাইকটির সামনে এবং পিছনে উভয় চাকায় ডিস্ক ব্রেক আছে। যেহেতু ইয়ামাহা আর১৫ ভি২(Yamaha R15 V.2) বাদে জনপ্রিয় ইয়ামাহা সিরিজে ডাবল ডিস্ক ব্রেক সিস্টেম নেই সেহেতু এটি আধুনিক ফ্যাশনের একটি অন্যতম অংশ।
জ্বালানির ট্যাঙ্কটি একটি বড় অংশ দখল করে, যদিও এর ধারণক্ষমতা ১৭ লিটার যা আরামদায়ক ভ্রমণ সৃষ্টি করতে পারে না। এই কারণে চালানোর সময় মনে হয় মেরুদণ্ডের সার্পোটের প্রয়োজন আছে।
এই বাইকে আছে প্রতি লিটারে ৩৫-৩৮ কিলোমিটারের সাধারণ মাইলেজ। প্রথম ২৫০০মাইলে এটি একটি এরকমই হওয়ার শর্ত রয়েছে যদিও আমার বাইকটি ২৫০০ মাইলের চিহ্ন অতিক্রম করেনি। আমার বাইকে আমি ভিসকো সিন্থ ইঞ্জিন অয়েল(visco synth engine oil) ব্যবহার করি যা আমার বাইকের ইঞ্জিনকে ঠাণ্ডা এবং সক্রিয় রাখে। আমার সর্ব্বোচ্চ স্পীড ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার ।
বিষয়টি শেয়ার করলাম কারণ কোনো ভালো পরামর্শ না পাওয়ায় আমি তখন অনেক দুর্ভোগে পড়েছিলাম। তাই এই ব্যাপারে আমি কিছু পরামর্শ দিতে চাইলাম। এই হলো ওয়ালটন এক্সপ্লোর ১৪০ নিয়ে আমার পর্যালোচনা এবং যদি চালকেরা আমার বাইক এবং এটি চালানো নিয়ে কমেন্ট করেন তবে তা আমার অভিজ্ঞতা বাড়াতে সাহায্য করবে ।
-রমজান মিয়া রানা
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com - এই ইমেইল এড্রেসে।