TVS Raider 125 বাইক নিয়ে ৭০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - খাদিমুল
This page was last updated on 01-Aug-2024 03:57am , By Shuvo Bangla
আমি মোহাম্মদ খাদিমুল ইসলাম , সর্ব উত্তরের জেলা এবং হিমালয় কন্যা পঞ্চগড় এর উপজেলা দেবিগঞ্জ থেকে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো TVS Raider 125 বাইকের মালিকানা রিভিউ । আমি এখন আমার জীবনের প্রথম বাইকের অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো।
আমার জীবনের প্রথম বাইক চালানোর অভিজ্ঞতা হয় রাইডার ১২৫ দিয়ে যেটা ছিলো আমার আব্বুর কাছ থেকে একটি গিফট। বাইকটা আমি যখন অনলাইনে দেখি ইন্ডিয়াতে তখন আমার বাইকটা দেখে অনেক পছন্দ হয় তারপর ইচ্ছা হয়েছিল যখন আসবে বাংলাদেশে তখনই আমি এই বাইকটা কিনব ,আব্বুর কাছ থেকে সবচেয়ে বড় পাওয়া।
অবশেষে 2022 সালের ১৭ এপ্রিল টিভিএস এর শোরুম থেকে আমার জীবনের প্রথম বাইকটি কিনতে সক্ষম হয়ই , বাইকটি লাল রঙ এর ,যেহেতু বাইকটি সে সময় মার্কেটে নতুন, দাম নিছিলো ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা, বাইকটি কিনতে আমি আমার ভাই আমার আব্বু, এবং চাচ্চু সহ আব্বুর কর্মস্হলের একজন আংকেল যাই । আমার বাসা থেকে শোরুম ৮ কিলোমিটার দূরে পাশের যায়গা ডোমার থেকে বাইকটি নেই ।
প্রথম দিন নতুন গাড়ি হিসেবে তেমন চালাইনি তবুও ৩০ কিলোমিটার রাইড করি । সত্যি বলতে আমার স্বপ্ন টাকে যখন আমি বাস্তবে চালাচ্ছিলাম মনের ভেতরে এতো শান্তি পাইছি বলে বুঝানোর মতো না, বাইকের প্রথম ৪-৫ হাজার কিলোমিটার আমি ব্রেক ইন পিরিয়ড মেইনটেইন করি খুব সুন্দর ভাবে (৬ বার ইঞ্জিন অয়েল+ ফিল্টার চেঞ্জ করি ৪০০০ আর পি এম রেখে)।
ব্রেক ইন পিরিয়ড এর সময় ৪৫ মাইলেজ পাই কিন্তু তার পরে ৫০+ এখন বাইকে ৭০০০ কিলোমিটার এখনো সেইম পারফর্মেন্স পাচ্ছি। বাইকের ব্রেকিং, কর্নারিং,স্মুথনেস সেরা , অবাক করার মতো। বাইক নিয়ে বড় ট্যুর দেইনি তবুও একবার গিয়েছিলাম ২০০ কিলোমিটার ডে লং এ । আর লং ড্রাইভে এখনো যাওয়া হয় নাই ইনশাল্লাহ খুব তাড়াতাড়ি যাব ইচ্ছা আছে ৬৪ জেলা ঘুরে বেড়ানোর , বাইকের কন্ডিশন এতো ভালো পাইছি একটু ও কষ্ট হয়নি , বাইকটি আসলেই অনেক সুন্দর।
সিটি তে সর্বদা ৫০+ মাইলেজ পাই হাইওয়েতে ৫৫+। বাইকের টপ স্পিড চেক করছিলাম ১২১ আমি সিঙ্গেল থাকা অবস্থায় পাইছি । আরো উঠতো ১১৬ হওয়ায় বুকের মধ্যে একটি ভেমরুল কামড় দেয় সে জন্য আর করতে পারিনি ইভেন এখন পাই ১১৬-১১৭+। বাইকে এই পর্যন্ত নতুন লাগিয়েছি ইমারজেন্সি সুইস , কিছু স্টিকার মডিফাইড করেছি , আল্লাহর রহমতে কোনো এক্সিডেন্ট হয়নি ,আসলে কন্ট্রোলিং অনেক ভালো, যখন বাইক নিয়ে বের হই তখন সেলফ দিয়ে ইঞ্জিন ৪-৫ মিনিট হিট করে রাখি তার পর রোডে বের হই ।
বাইকের পারফরম্যান্স দিন দিন আমাকে মুগ্ধ করেই যাচ্ছে, আমার বাইকটি নিয়ে ইচ্ছা আছে ৬৪ জেলা ঘুরে বেড়াবো একদিন ইনশাল্লাহ বাইকে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রব্লেম পাইনি , বাইকে বৃষ্টি কাদা লাগলে তখনই ধুয়ে ফেলি, সব সময় অকেটেন ব্যাবহার করি, আর ইঞ্জিন অয়েল লিকুই মলি ব্যাবহার করি 10w40 গ্রেডের মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল যার দাম ৬২০ টাকা । ১০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ব্যবহার করি বাইকে অফিসিয়াল ভাবে ৫ বার সার্ভিস করানো হয়েছে । বাইক রাইড করার সময় সার্টিফাইড হেলমেট ব্যাবহার করি যেটা নিজের সেফটির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
TVS Raider 125 বাইকের কিছু ভালো দিক -
- যাবতীয় সকল কাজে ব্যবহার করা যায়।
- লুকিং গ্লাস ও হ্যান্ডেল বার অনেক সুন্দর।
- বাইকের ব্রেকিং সিস্টেম টা চমৎকার।
- ইঞ্জিন অনেক স্মুথ ।
- রেডি পিকাপ ,থ্রটল রেস্পন্স ভালো ।
TVS Raider 125 বাইকের কিছু খারাপ দিক -
- লং রাইডে ব্যক পেইন হয়।
- বাইকটি সিংগেল ডিক্স হওয়ার কারনে ড্রাম ব্রেক এ তেমন কনফিডেন্স পাইনা তবুও যা পাই আলহামদুলিল্লাহ।
- হেডলাইট টা তেমন সুবিধার না লাইট অনেক কম আর একটু বেশি হলে ভালো হতো
- বাইক এ মাইলেজ টা মাঝে সাঝে কম পাই।
- বাইকটির সামনের চাকাটা একটু চিকন মনে হয়েছে।
বাইক নিয়ে এখন পর্যন্ত বেশি দূরে যেতে পারিনি কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি যাব । আসলে বাইক নিয়ে বলতে গেলে শেষ হবে না যদি কেউ বাইক নেওয়ার চিন্তা ভাবনা থাকে তাহলে অবশ্যই সাজেস্ট করবো রাইডার 125 টিভিএস কোম্পানির বাইক নিতে কারন এর পারফরম্যান্স অতুলনীয়, বাজেট হিসেবে আমার কাছে একটু বেশি মনে হয়েছে কিন্তু তবু ও অনেক ভালো বললে শেষ করা যাবে না,শেষ মুহুর্তে কিছু কথা না বললেই নয় কারন বাইক নিয়ে অবশ্যই সচেতন ভাবে রাইড দিতে হবে ওভার কনফিডেন্স নিয়ে বাইক চালানো যাবে না এবং সবসময় সেফটি গিয়ার পরিধান করে বাইক চালাতে হবে। ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ মোহাম্মদ খাদিমুল ইসলাম