TVS Metro Plus মালিকানা রিভিউ লিখেছেন তন্ময়
This page was last updated on 13-Jul-2024 01:29pm , By Saleh Bangla
আমি তন্ময়। আমি ব্যবসা করি, আমার বয়স ২২,আমি বাইক চালানো শিখেছি প্রায় ৯ বছর আগে বাবার বাইক দিয়ে। বাইক হচ্ছে অনেক টা নেশার মত, বাইক না চালাতে পারলে যেন কোনো কিছুই ভালো লাগে না, আমি এখন যে বাইকটি ব্যবহার করছি সেটা মুলত বাবা আমাকে গিফট করেছিল,কোনো এক সন্ধ্যায় । আমার বাইক এর নাম TVS Metro Plus ।
আপনারা হয়ত অনেকেই জানেন যে TVS Metro Plus আগের বাইকটি যেমন মাইলেজ দিত এটিও অনেকটা তেমন মাইলেজ দেয় । যাইহোক এই বাইক দিয়ে রাইড শেয়ারিং এর জন্য ভালই। আমি আমার কাজের ফাকে ফাকে রাইড শেয়ারিং করে থাকি। আমার খুব বেশি একটা প্রব্লেম হয় না। বাজারে এত বাইক থাকতে কেন এটা নিলাম তাই হয়ত ভাবছেন। কম দামে স্টাইলিশ বাইক এবং সাথে কন্ট্রোলিং ভালো। কেননা বাইক কিনবার আগে অনেক এর কাছেই বাইকের বিষয় এ শুনেছি একটা বাইক ভালো চলবে কি চলবে না তা নির্ভর করে আপনার চালানোর উপর।
বাইক চালানোর নিয়ম কানুন ট্রাফিক আইন মেনে চলা। বাইক এর ২৫০০ কি মি পার হওয়া পর্যন্ত আমি নিয়ম মেনে বাইক চালিয়েছি । ৬০/৭০ এভারেজ স্পিড ছিল। যতই দিন যাচ্ছে বাইক এর স্মুথনেস যেন আরো বেড়েই চলেছে । TVS Metro Plus বাইকের বয়স ৮ মাস হয়েছে, বাইকের প্রথম ৬০০ কি মি আমি ৪০+ আপ করিনি এবং ৭০০ কিমি তে আমি মবিল চেঞ্জ করি। এছাড়া আমি ১ মাস পর পর বাইক সার্ভিস করাই। প্রতি সপ্তাহে একবার করে বাইক ওয়াশ করাই । বাইক ১০০০ কিমি পার হবার পরই আমি কেবল একবার ৯৬ কিমি প্রতি ঘন্টা স্পিডে চালিয়েছি ।
বাইক এ ৮ সেকেন্ড এ ৬০ কিমি পর্যন্ত স্পিড আপ করা যায় । বাইকের মাইলেজ ৫৬/৫৭ ঢাকার মধ্যে ঢাকার বাইরে ৬৬+ কোম্পানি মতে ৮০+ । বাইকের ভাইব্রেশন ৮৫+ হলে পরে কিছুটা ভাইব্রেটিং করে । তবে ১০০+ হলে সেটা বেশি বুঝা জায় । ফুয়েল সাপ্লাই সিস্টেম কারবুরেটর। ফুয়েল ট্যাংক প্রায় ১0 লিটার তেল নেয়া যায় । বাইকের সাস্পেনশন এর ক্ষেত্রে ফ্রন্ট সাসপেনশন হচ্ছে অয়েল ডাম্পেড টেলিস্কোপিক ফ্রন্ট সাস্পেনশন এবং রেয়ার সাসপেনশ হচ্ছে ৫ স্টেপ হাইড্রলিক । মেট্রো প্লাস এর টায়ার সাইজ হচ্ছে ফ্রন্ট টায়ার ২.৭৫/১৭ এবং রেয়ার টায়ার ৩.০০/১৭ । উভয় টায়ার টিউবলেস । বাইকটি ফ্রন্ট ব্রেক হচ্ছে হাইড্রলিক ১৩০ মিমি এবং রেয়ার এ হচ্ছে ড্রাম ব্রেক ।
TVS Metro Plus এর ইঞ্জিন হচ্ছে ৪ স্ট্রোক ২ ভালব বিশিষ্ট । এই ইঞ্জিন হতে ম্যাক্সিমাম পাওয়ার ৮.৩ বিএইচপি @ 7000 RPM এবং ম্যাক্সিমাম টর্ক হচ্ছে ৮.৭ বিএইচপি @5000 RPM শক্তি উৎপন্ন হয় । বাইকটীর ফিচার্স এর মধ্যে রয়েছে লাইটিং । লাইটিং ৩৫W লাইট ব্যাবহার করে হয়েছে। এর ব্যাটারি হচ্ছে ১২ ভোল্ট সম্পন্ন । বাইকের ওজন ১০৯ কেজি। কিন্তু বাইক যখন পিলিয়ন সহ চালানো হয় তখন মনে হয় না যে বাইক টা এতটাই হাল্কা ।
TVS Motorcycles At Dhaka Bike Show 2019
https://www.youtube.com/watch?v=Nb4AaLeqrKc ক্লাস টাইপ হচ্ছে ওয়েট মাল্টিপ্লেট । এর ইঞ্জিনের সাথে ৪ টী গিয়ার যুক্ত করা হয়েছে । বাইকটীর স্টার্টিং মেথড হচ্ছে কিক এবং ইলেক্ট্রিক দুটোই । আর এ জন্য আপনাকে কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই বাইকটী রাইড করা যাবে । বাইকে ২ রকম স্টার্টিং সিস্টেম থাকায় যখন সেল্ফ কাজ না করবে তখন আপনি কিক দিয়ে বাইক স্ট্রাট করতে পারবেন। বাইকের ইন্ডিকেটর ও টেইল লাইট হচ্ছে বাল্ব ।
TVS Metro Plus বাইকের সুবিধা হচ্ছেঃ
- বাইকের ইঞ্জিন বেশ ভালো
- সিটিং পজিশন অনেক কমফোর্টেবল
- ইঞ্জিন এ সাউন্ড স্মুথ
- কোনো রকম ব্যাক পেইন অনুভব হয়না
- ভালো মাইলেজ
- বাইকের গতি ১১০ কিন্তু বাইক ৯০+ আপ করার পর ভাইব্রেশন হয় তার আগে নয়।
- আপনি চাইলে এই বাইক নিয়ে হাইওয়েতে রাইড দিতে পারবেন
এবার আসি অসুবিধা তেঃ বাইকের সিসি অনুযায়ী বাইকের মাইলেজ ৭০ হলে ভালো হত। বাইকটির লাইটিং সিস্টেম খুব একটা ভালো নয় । এই আলো নিয়ে হাইওয়েতে রাইড করা বিপদজনক । বাইকের সাস্পেনশন আরো ভালো করা উচিৎ ছিল। ভাংঙ্গা রাস্তায় সাস্পেনশন খুব ভালো ফিডব্যাক দেয় না । অবশেষে বলব সাধ্যের ভিতর সবটুকু সুখ পাওয়া সম্ভব এই বাইকে । কেননা বাইকের ফুয়েল ট্যাংক এর স্টাইল নান্দনিক । ব্রেকিং সুন্দর । মাইলেজও অসাধারণ। সকল কে অনুরোধ করবো যারা বাইক কিনবেন তারা দেখে শুনে বুঝে কিনবেন, কেননা কোনো বাইক ই খারাপ নয়। হেলমেট পরে বাইক রাইড করবেন। ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ তন্ময়
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।