TVS Apache RTR 160 4V DD ১৫৫০০ কিলোমিটার রাইড - তানভীর
This page was last updated on 25-Jul-2024 05:36pm , By Raihan Opu Bangla
আমি তানভীর আহম্মেদ শাওন । বর্তমানে আমি যশোর এর কাশিমপুর থাকি । আমি একটি TVS Apache RTR 160 4V DD বাইক ব্যবহার করি । এখন আমি আামার শখের TVS Apache RTR 160 4V DD নিয়ে আমার একান্ত ব্যক্তিগত মতামত অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করব ।
TVS Apache RTR 160 4V DD ১৫৫০০ কি.মি. রাইড অভিজ্ঞতা
TVS Apache RTR 160 4V DD বাইক ও বাইকিং নিয়ে স্মৃতি
আব্বুর BAJAJ DISCOVER 135 বাইকে করেই আমার বাইকিং ক্যারিয়ার-এর যাত্রা আরম্ভ হয়। ২০১৭ সালে এস.এস.সি পাসের পর আামার বড় ভাইয়ার থেকে আমি বাইক চালানো প্রশিক্ষণ নেই।ছোট বেলা থেকেই খেলাধূলা,সাইকেল-এ আমি খুবই দুরন্ত স্বভাবের।
ভ্রমনের প্রতি আমার অন্যরকম একটা ভালোলাগা কাজ করে ছোটবেলা থেকেই। মাঝে মধ্যেই আব্বুর বাইক পেলেই বেরিয়ে পড়তাম প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যে ডুবে যেতে। এভাবেই বাইকিং এর শুরু হয়েছিলো। শুরুতে বাইক মূলত শখের জন্যই ব্যবহৃত হত। এখন বাইক আমার নিত্য দিনের সঙ্গী।
খুব কম সময়ে, ঝামেলা মুক্ত ,পাবলিক পরিবহন থেকে বিরত থেকে, জ্যাম এর ঝামেলা থেকে কিছুটা মুক্তি পেতে এবং কম খরচে দৈন্দিন জীবনেও কাজকর্ম সম্পাদন করার জন্য বাইক একটি ভালো মাধ্যম । বাইকে আমরা যতটা সহজ এবং আরামদায়ক ভাবে চলাফেরা করতে পারি তা অন্য কোনো বাহনে সম্ভব নয়।
বাইকে ইচ্ছামতো যাত্রা পথে বিরতি দেওয়া,যেখানে সেখানে দাড়ানো সম্ভব যা অন্য বাহনে অসম্ভব প্রায় । বাইক আমাদের যে স্বাধীনতা দেয় ঐ স্বাধীনতা অন্য কোনো বাহন আমাদের দিতে পারবেনা। এইচ.এস.সি পরীক্ষার পর ০৬-০৪-২০১৯ তারিখ আব্বু আমাকে আমার পছন্দের TVS Apache RTR 160 4V DD বাইকটি উপহার দেন।
অনেক খোজ-খবর,বড় ভাইদের পরামর্শ এবং সকল বাইকের স্পেসিফিকেশন কালেক্ট করার পর আমি নিজের জন্য TVS Apache RTR 160 4V বাইকটি বাছাই করি।
বাইক মূলত আমি ভ্রমণ, কলেজ, কোচিং ও একাডেমিতে যাওয়ার জন্যে ব্যবহার করি। বাইকের কারণে আমি গণ পরিবহন এড়াতে সক্ষম। বাইকটির তখন বাজারমূল্য ছিলো ২,০৪,৯০০ টাকা। বাইকটি যশোর রেল রোড TVS WING ডিলার পয়েন্ট থেকে ক্রয় করি।
নতুন বাইক কেনার পর সে যে কি এক আনন্দ, অনূভুতি তা ভাষায় প্রকাশ করার মত না । ২-৩ দিন পর খেয়াল করি মাইলেজ ২৫-৩০ এর বেশি পাচ্ছিনা। মাইলেজ নিয়ে খুবই হতাশ হয়ে পড়ি। আল্লাহর অশেষ রহমতে আার আমার যত্নে ৩,০০০ কিলোমিটার পর থেকে নিয়মিত ৪০-৪৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ পেতে শুরু করি ।
বাইকটির হেড লাইটের আলো রাতে রাইড করার জন্য যথেষ্ট না । বাইকটির গিয়ার সিফটিং শুরু থেকেই অনেক স্মুথ, ইঞ্জিন অনেক স্মুথ, এক্সহস্ট সাউন্ড খুব ভালো , এক্সেলারেশন এই সেগমেন্ট এর মধ্যে বেষ্ট মানতেই হবে। কন্ট্রোল ,ব্রেকিং ভালোই ।
অনেকেই বলে TVS Apache RTR এর ব্রেকিং ভালোনা আমি বলবো এটা রাইডার এর ওপর নির্ভর করে । তবে এবিএস এবং পেছনে ১৪০ সেশন টায়ার এবং স্টক টায়ার এর পরিবর্তে যদি এম আর এফ বা অন্য কোনো উন্নত মানের টায়ার ব্যবহার করত তাহলে বাইকের পারফরম্যান্স আরো অনেক গুন বৃদ্ধি পেতো আশাকরি।
Click To See Tvs Apache RTR 160 4v Test Ride Review In Bangla – Team BikeBD
এখন পযন্ত আমার বাইকটি ১৫৫০০+ কিলোমিটার রানিং। এর মধ্যে এই বাইকটি আমাকে কখনোই হতাশ করেনি । ১২০০০ কিলোমিটার পর এয়ার ফিল্টার এবং স্পার্ক প্লাগ পরিবর্তন করি । যদিও কোনো সমস্যা হয়নি তাও বেটার পার্ফরমেন্স এর জন্য পরিবর্তন করি ।
প্রতিবার ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তনের সাথে অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করি । নিয়মিত এসব জিনিষ এর প্রতি খেয়াল রাখলে ভালো মাইলেজ এবং পার্ফরমেন্স পাওয়া যাবে ।
TVS Apache RTR 160 4V DD এর জন্য MOTUl 10 w 40 ফুল সেন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি। ২৮০০-৩০০০ কিলোমিটার পরে ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি । ভালো পারফরম্যান্স এবং বাইকের যত্নের জন্য সময় ও প্রয়োজন মতো বাইটি সার্ভিসিং করাই। বাইকটিতে পিলিয়ন সহ ১২১ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা টপ স্পিড পেয়েছি । অনেকে আরো বেশি পায় ।
TVS Apache RTR 160 4V DD বাইকটিরকিছুভালোদিক -
- স্মুথ ইঞ্জিন
- স্মুথ গিয়ার সিফটিং
- এক্সেলারেশন
- মাইলেজ
- ১০০স্পিড পযন্ত কোনো ভাইব্রেশন পাইনি
- পিলিয়ন নিয়েও লং ট্যুরে অনেক কম্ফোর্ট
- পার্টস গুলো খুবই ভালো
- ফুয়েল ট্যাংক কাওয়েল টা যে কোনো বাইকারের নজর কারার জন্যে যথেষ্ট
TVS Spache RTR 160 4V DD এরকিছুখারাপদিক -
- সামনের এবং পেছনের টায়ার ১০ সেশন করে এক্সট্রা দিলে ভালো হতো
- রিমোরা টায়ার গ্রিপ সন্তুষ্ট হবার মতো না
- নতুন অবস্থায় অনেক কম মাইলেজ
- রিয়ার সাসপেনশন ভালো লাগেনি
- ১১৫ স্পিডের পর কনফিডেন্স লো হতে থাকে
- কন্ট্রোলিং আরো উন্নত করা দরকার
বাইকটি নিয়ে আমিএকদিনে সর্বোচ্চ ৬৯৫ কিলোমিটার রাইড করেছি পিলিয়ন নিয়ে (যশোর থেকে কালিগন্জ, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, মুজিবনগর, কুষ্টিয়া, নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ)। এছাড়াও আমার এখন পযন্ত নড়াইল, খুলনা,মাগুরা, ফরিদপুর, ভাঙ্গা, মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা, চিটাগং, গোপালগঞ্জ, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুয়াকাটা আরো কয়েকটি জায়গা ভ্রমণের সুযোগ হয়েছে ।
কিন্তু এখন পযন্ত কখনো টুরে বাইকের পার্ফরমেন্স এ কোনো সমস্যা করেনি ,আর ট্যুরে আমি CBR, V3 এর সাথে একত্রে থেকে রাইড করতে সক্ষম হই । হাইওয়েতে এর পার্ফরমেন্স অসাধারন । যদিও পৃথিবীতে কোনো কিছুই পারফেক্ট না তবু TVS Apache RTR আমাকে কখনোই হতাশ করেনি। ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ তানভীর আাহম্মেদ শাওন
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।