TVS Apache RTR 160 4V ৯০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - প্রিতম

This page was last updated on 30-Jul-2024 08:31am , By Shuvo Bangla

আমি শরিফুল ইসলাম প্রিতম । আমি একটি TVS Apache RTR 160 4V বাইক ব্যবহার করি । আজ আপনাদের সাথে বাইকটি নিয়ে আমার কিছু রাইডিং অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।

tvs apache rtr 160 4v

বর্তমানে জ্বালানি তেলের মূল্যের যে পরিস্থিতি অনেকে হয়ত আমার মত ভালো নাও থাকতে পারেন। সে যাই হোক,বাইকার ইজ অলওয়েজ বাইকার, সময়ের সাথে মিলিয়ে চলতে হলে এখন বাইক ছাড়া চলাটা নিজেকে কেমন যেন একটু খারাপই লাগে।

তবে আমি এখনও একজন ছাত্র বর্তমানে অনার্স ফাইনাল ইয়ারে অধ্যয়ন করছি এবং বাবা বলে আমি নাকি বাইক চালানোর উপযুক্ত হয়নি। বলা বাহুল্য যে, আমার বাবা আমাকে যখন যে কথা দিয়েছেন তা তিনি রেখেছেন। তাই বাইকের আবদার নিয়েও তিনি আমাকে বলেছিলেন যে সময় হলে আমাকে কিনে দিবেন তাই এখানেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।

আমার পড়াশোনার ক্ষেত্রে যাতায়াতের জন্য প্রায় কিছু সমস্যা হত। তাই যাতায়াতের সুবিধার্তে বাবা আমাকে ১ বছর আগে এই বাইকটি কিনে দিয়েছেন। ২লক্ষ টাকার মধ্যে এই বাইকটি আমার পছন্দের তালিকায় ১ নম্বরে রেখেছিলাম,আমার অনেক স্বপ্ন ছিলো এই বাইকটা কিনব।

আলহামদুলিল্লাহ!! ইতিমধ্যে আমি প্রায় ৯,০০০+ কিলোমিটার পথ চালিয়েছি কোন সমস্যা ছাড়াই। সত্য বলতে আমি একাই এই বাইকটা ব্যবহার করি। আমার একটি কথা বলতে ভাল লাগছে যে, আমিসহ যারা যারা এই বাইকটা ব্যবহার করে তারা সবাই এই বাইকটির প্রশংসা করে।


বাইকটি চালিয়ে আমি অনেক ভালো অনুভূতি পাই। এর গ্রাফিক্যাল ডিজাইন গুলো দেখতে চমৎকার। বডির প্লাস্টিক গুলো এবং বিল্ড কোয়ালিটি বেশ মজবুত। এর সাসপেনশন গুলো আমাকে আরামদায়ক রাইডিং নিশ্চিত করে। আমি এত এগ্রেসিভ বাইক চালাতে পছন্দ করি না। হাই স্পীডে সর্বোচ্চ ৯০-১০০ গতিতে চালিয়ে দেখেছি এর কোন সমস্যা পাইনি।

এই বাইকের যে জিনিসটা আমাকে সবচেয়ে বেশী আকৃষ্ট করেছে সেটা হলো এর মিটার। মিটার নয় যেনো একটি মোবাইল ফোন, এই ফিচারটির জন্যই মূলত এটি নেওয়া। আমার মতে এটি অনেক কমফোর্টেবল বাইক, কোনো ব্যাক পেইন নেই, রাইডার এবং পিলিয়ন দুজনের জন্যেই কমফোর্টেবল।

tvs apache rtr 160 4v

এর সিটিং পজিশনের সাথে হ্যান্ডেলবারের কম্বিনেশন খুবই ভাল। সে জন্য দীর্ঘ পথ যাতায়াত করেও আমি তেমন ক্লান্ত হই না। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এই বাইকটি বেশি স্পীডে তোলা যায়।

TVS Apache RTR 160 4V বাইকের কিছু ভাল দিক -

  • গ্রাফিক্স ডিজাইন চমৎকার।
  • সাসপেনশন গুলো ভালো ফিডব্যাক দেয়।
  • মাইলেজ ভালো।
  • ইঞ্জিন পারফর্মেন্স চমৎকার।
  • ব্রেকিং সিস্টেম উন্নত মানের।
  • বাইকের সাথে ফোন কানেক্ট করে মিটারে আপনি ফোন কল,নেটওয়ার্ক,মেসেজ এবং কোনদিকে যাবেন,ডানে না বামে এইগুলা শো করে।
  • দীর্ঘ যাতায়াতে সমস্যা হয় না।
  • দামটাও সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে।

TVS Apache RTR 160 4V বাইকের কিছু খারাপ দিক -

  • প্রচন্ড রোদের বাইকের মিটারটি কালো হয়ে যায়, এটা সব ৪ভি বাইকের জাতীয় সমস্যা, তবে পরবর্তীতে সার্ভিস সেন্টারে জানানোর পর তারা ফ্রীতেই নতুন মিটার লাগিয়ে দিয়েছে, এখন আর এই সমস্যাটা নাই।
  • পিলিয়ন সিট অনেক উঁচু হওয়ায় পিলিয়নের বসতে কষ্ট হয় ।

tvs apache rtr 160 4v

বাইকটি পছন্দের কারণ - 
এই বাইকটি পছন্দের মূল কারণ হচ্ছে, এর আউটলুক অনেক সুন্দর এবং গ্রাফিক্স ডিজাইন গুলো চমৎকার। এর বডির প্লাস্টিক ও বিল্ড কোয়ালিটি বেশ মজবুত। রেডি পিকআপ,আর এর সকল ফিচার। সব মিলিয়ে বাইকটি দেখতে অনেক সুন্দর।
মাইলেজ সিটি ৪০ , হাইওয়েতে ৪২।

আমার ৪ভি বাইকের ইঞ্জিন পারফরমান্স এখনও অনেক ভাল। এখন পর্যন্ত আমি এর ইঞ্জিনে কোন সমস্যা পাইনি। এর ইঞ্জিনের শব্দটা অনেক স্মুথ। অনেক যত্ন করি বাইকটার। সে জন্য এখনও ভালো সার্ভিস দিচ্ছে ৪ভি বাইকের ট্যায়ারের গ্রিপ গুলো ভালো হওয়ায় হার্ড ব্রেক করলেও বাইকটি তেমন স্লিপ করে না।

কন্ট্রোল নিয়ে আমার কোন চিন্তা নেই। সাধ্যের মধ্যে এমন এইটি বাইক কিনতে পারায় আমি খুব খুশি। তাই আমি বলবো, এর ভাল দিকগুলো বিবেচনা করে টিভিএস এর এই বাইকটি আপনারাও ব্যবহার করতে পারেন। বাইকটি দেখতেও যেমন সুন্দর এটি ব্যবহার করেও অনেক ভালো অভিজ্ঞতা পাবেন। ধন্যবাদ।

 

লিখেছেনঃ শরিফুল ইসলাম প্রিতম
 
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।