TVS Apache RTR 160 রিভিউঃ ২৫০০ কিলোমিটার টেস্ট রাইড

This page was last updated on 18-Jan-2025 10:03am , By Saleh Bangla

২০১৮ সালে টিভিএস অটো বাংলাদেশ বাংলাদেশে নতুন TVS Apache RTR 160 বাইকটি লঞ্চ করে। লঞ্চিং ইভেন্টেই তারা বাইকটি টীম বাইকবিডির হাতে তুলে দেয়। শহরে এবং হাইওয়েতে ২৫০০ কিলোমিটার টেস্ট করার পরে আজ আমরা টীম বাইকবিডি আপনাদের কাছে উপস্থিত হয়েছি TVS Apache RTR 160 এর টেস্ট রাইড রিভিউ নিয়ে।

TVS Apache RTR 160 রিভিউঃ ২৫০০ কিলোমিটার টেস্ট রাইড 

Also Read: TVS Discontinued Bikes in Bangladesh At A Glance | BikeBD

ইঞ্জিন এবং গিয়ারবক্স

TVS Apache RTR 160 এর ইঞ্জিনটি একটি সিঙ্গেল সিলিণ্ডার ২ ভালভ এয়ার কুলড ফোর স্ট্রোক ইঞ্জিন। ইঞ্জিনটি ১৫.২ ব্রেক হর্সপাওয়ার শক্তি এবং ১৩.১ নিউটন মিটার টর্ক উতপন্ন করে। ইঞ্জিনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে একটি ৫ স্পীড গিয়ারবক্স। কোম্পানি দাবী করে যে বাইকটিতে ০ থেকে ৬০ কিমি/ঘন্টা গতিবেগ ৫ সেকেন্ডেরও কম সময়ে উঠবে। বাইকটির ইঞ্জিনের শব্দ একটু বেশিই আক্রমনাত্মক।

TVS Apache RTR 160 Review: Top Speed Test

 

ডিজাইন এবং লুকস

এই ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে টিভিএস এপাচি আরটিআর ১৬০ নিঃসন্দেহে সফল। টিভিএস বাইকটিতে এগ্রেসিভ স্টাইলিং দিয়েছে এবং একইসাথে হেডলাইটের উপরে LED দিয়েছে যা দিনেরবেলাতেও জ্বলে থাকে এবং বাইকটিকে সর্বদাই একটি এগ্রেসিভ লুক দেয়। হেডলাইটটি একটি ৩৫ ওয়াটের হ্যালোজেন বাল্ব যাতে মাল্টি ফেস রিফ্লেক্টর রয়েছে।

Also Read: Tvs bike showroom in Naria: M/S Howlader Enterprise

Also Read: RJ TVS in A.M Hazi Market,Nischintopur

এছাড়াও বাইকটিতে একটি LED টেইললাইট ব্যবহার করা হয়েছে। বাইকটিতে ফুয়েল ট্যাংক এর দুইপাশে এক্সটেন্ডেড এয়ার স্কুপ রয়েছে।বাইকটিতে এনালগ রেভ কাউন্টার এর পাশাপাশি একটি ডিজিটাল স্পিডোমিটার রয়েছে। বাইকটির স্পিডোমিটারে ০-৬০ এক্সেলেরেশন টাইম দেখা যায়। বাইকটিতে ক্লিপ অন হ্যান্ডেলবার রয়েছে। বাইকটির সুইচ গিয়ারস এর বিল্ড কোয়ালিটি খুবই ভালো।

ব্যক্তিগতভাবে বাইকটির স্টাইলিং আমার খুবই পছন্দের। আমার মনে হয় বাইকটি ডিজাইন করার সময় ডিজাইনার চিতা থেকে ডিজাইন ইন্সপারেশন নিয়েছিলেন।

ডাইমেনশন

বাইকটির ওজন মাত্র ১৩৭ কেজি, যা ১৬০সিসি সেগমেন্টে সবচাইতে হালকা মোটরসাইকেল। এর স্যাডল হাইট ৭৯০ মিলিমিটার ফলে যারা উচু বাইক ব্যবহার করতে অস্বস্তি বোধ করেন তাদের জন্য বাইকটি রাইড করা সহজ হবে। বাইকটির ফুয়েল ট্যাংকে ১৬ লিটার পর্যন্ত তেল ধরে যা লং ডিসট্যান্স রাইড এর জন্য খুবই উপকারী।

Also Read: All TVS Motorcycle Ownership Review

চাকা, টায়ারস, ব্রেকস এবং সাসপেনশন

বাইকটিতে রয়েছে ১৭ ইঞ্চির এলয় রিম। বাইকটির সামনে রয়েছে ৯০ সাইজের টায়ার এবং পেছনে রয়েছে ১১০ সেকশন টায়ার। উভয় টিউবলেস টায়ার। বাইকটির সামনে ২৭০ মিলিমিটার এর পেটাল ডিস্ক ব্রেক এবং পেছনে ১৩০ মিলিমিটার সাইজের ড্রাম ব্রেক দেয়া হয়েছে।

বাইকটিতে রয়েছে ডাবল ক্রেডল ফ্রেম, এবং সামনে রয়েছে টেলিস্কোপিক ফর্ক। বাইকটির পেছনে গ্যাস ফিলড স্পিং সাসপেনশন রয়েছে।

Also Read: TVS Max Semi Trail 125: An off-road adventure awaits!

রাইডিং এক্সপেরিয়েন্স 

বাইকটির স্যাডল হাইট কম হবার কারনে যারা একটু লম্বায় খাটো তাদের জন্য বাইকটি রাইড করা খুবই আরামদায়ক হবে। বাইকটি তার আউটলুক এর দ্বারাই সকল এটেনশন গ্র্যাব করে। বাইকটির একমাত্র ইস্যু হচ্ছে এর ইঞ্জিন ভাইব্রেশন। ভাইব্রেশনটি ৫ হাজার আরপিএম থেকে শুরু হয় এবং ৭ হাজার আরপিএম পর্যন্ত চলতে থাকে। ৭ হাজার আরপিএম এর পরে ভাইব্রেশন রাইডার এর ফুটপেগ এ প্রসারিত হয়। যারা নিয়মিত বাইকটি ব্যবহার করবে তারা একসপ্তাহ রাইড করার পরে এতে অভ্যস্ত হয়ে যাবে।

 

বাইকটির রাইডিং কমফোর্ট খুবই কম মূলত বাইকটির ভাইব্রেশন এর জন্য। এর হ্যান্ডেল বার এগ্রেসিভ রাইডিং পজিশন দেয়। আমার কাছে বাইকটির সাসপেনশন ঠিকঠাক মনে হয়েছে। সামনের এবং পেছনের উভয় সাসপেনশনই ভালো ফিডব্যাক দিয়েছে এবং এর লো রাইড হাইটের কারনে অফরোডিং এর সময়েও ভালো কনফিডেন্স পাওয়া যায়। TVS Apache RTR 160 এর সেরা জিনিস হচ্ছে এর ইঞ্জিন। যদিও এটা সেগমেন্টের সবচাইতে রিফাইন্ড ইঞ্জিন না, তবে এটা রাইডারকে ভালো ফিডব্যাক দিবে।

  • এটা খুবই ভালো শব্দ করে।
  • ইঞ্জিনটি শক্তিশালি।
  • এতে ভালো রেডি পিকাপ রয়েছে, যা আমাদের জেনারেশনের বাইকাররা ভালোবাসে।
  • ইঞ্জিনটি খুবই রিলায়েবল।
  • ১৫০-১৬৫ সিসি সেগমেন্টের অন্যতম ফুয়েল এফিশিয়েন্ট ইঞ্জিন।

Also Read: Tvs bike showroom in Shothibari: Nishat Auto

রাইড এবং হ্যান্ডলিং এর কথা আসলে এটা যথেষ্ট পরিমানে ভালো পারফর্ম করে, তবে সেরা পারফর্ম করে না। পেছনের টায়ারটি শুকনো রাস্তায় ভালো ফিডব্যাক দিলেও ভেজা রাস্তায় খুব একটা অসাধারন পারফর্ম করে না। সামনের সাসপেনশনটি কিছুটা সফট যা অফ রোডিং এর জন্য ভালো হলেও হাই স্পীড কর্নারিং এর জন্য ভালো নয়।

 ব্রেকিং পারফর্মেন্স খুব বেশি ভালো নয়। ভালো হতো যদি কোম্পানি পেছনে রিয়ার ডিস্ক ব্রেক এবং ১২০ সাইজের টায়ার ব্যবহার করতো। এছাড়াও একটা জিনিস বাইকারদের সর্বদা মনে রাখা উচিত যে বাইকের টায়ারে সর্বদা কোম্পানি রেকমেন্ডেড সঠিক টায়ার প্রেশার রাখা উচিত যাতে করে তারা বাইক থেকে সর্বোচ্চ গ্রিপ পেতে পারে। শহরে রাইডিং এর জন্য বাইকটি যথেষ্ট কমফোর্টেবল। 

Also Read: TVS Apache RTR 150 VS Bajaj Pulsar 150 : Comparison Review

বাইক্টির টার্নিং রেডিয়াস কম হওয়াটা একটা ইস্যু হলেও ছোটখাটো সাইজের কারনে ছোট গ্যাপ দিয়েও বাইকটি চলে যেতে পারে। একটা জিনিস আমাদের সর্বদা মনে রাখা উচিত যে বাইকটির বেশিরভাগ ওজন এর সামনের চাকায় ডিস্ট্রিবিউট করা হয়েছে ফলে যদি আপনি ফুল ট্যাংক ফুয়েল নিয়ে রাইড করেন তবে লো স্পীড কর্নারিং এ সতর্ক থাকতে হবে।

Also Read: TVS Bike showroom in Feni: Tareq Motors

  বাইকটি নিয়ে আরেকটি অভিযোগ হচ্ছে এর হেডলাইট নিয়ে, যা এসি অপারেটেড এবং খুব শীঘ্রই এটা ঠিক করা দরকার। সবমিলিয়ে বাইকটির কালার কোয়ালিটি এর প্রতিযোগীদের থেকে ভালো হলেও ফিটিংস এবং ফিনিশিং নিয়ে আমি সন্তুষ্ট হতে পারিনি। আমাদেরকে যেই বাইকটি ডেলিভার করা হয়েছিলো সেটার ইন্ডিকেটরগুলো সব বিভিন্ন দিকে পয়েন্ট করছিলো, এবং এই সমস্যাটি আমি রাস্তার অন্যান্য বাইকেও দেখেছি।

<<<< TVS Apache RTR 160 Test Ride Review >>>>

বাইকটিতে একটি স্পীডোমিটার রয়েছে যেটাতে টপ স্পীড এবং ০-৬০ কিমি/ঘন্টা টাইমিং রেকর্ড হয়। আমরা যেই বাইকটি টেস্ট করেছি সেটা শো করছে যে আমি ১৩১ কিমি/ঘন্টা গতিবেগ তুলেছি, তবে আমার স্মৃতি অনুযায়ী আমি সর্বোচ্চ ১২৭ কিমি/ঘন্টা স্পীড তুলেছি। মাইলেজের ব্যাপারে বলতে গেলে, শহরে আমি পেয়েছি৪০-৪২ কিমি/লিটার এবং হাইওয়েতে পেয়েছি ৪৫কিমি/লিটার।


সারমর্ম

টিভিএস এপাচি আরটিআর ১৬০ এর ভালো দিকসমূহ

  • প্রতিযোগীদের তূলনায় ভালো প্রাইজিং
  • ইনফরমেটিভ স্পীডোমিটার, যাতে একোটি সার্ভিস ইন্ডিকেটরও রয়েছে।
  • ভালো কালার কোয়ালিটি
  • ইঞ্জিনটি স্পীড এবং মাইলেজ এর জন্য ভালো, এবং রিলায়েবল
  • ডিজাইন এবং লুকস এর দিক দিয়ে খুবই এগ্রেসিভ

টিভিএস এপাচি আরটিআর এর নেগেটিভ দিকগুলো

  • এসি অপারেটেড হেডলাইট
  • ব্রেকিং এর সময় আরো স্ট্যাবিলিটির দরকার
  • ইঞ্জিন ভাইব্রেশনটি এমন একটি জিনিস যেটা নিয়ে তাদের কাজ করা উচিত
  • সাইড বাম্পারগুলো খুবই ছোট
  • যদিও এতে একটি প্রিমিয়াম প্রাইজ ট্যাগ নেই তবে ফিটিংস এবং ফিনিশিং আরেকটু ভালো হবার দরকার ছিলো।

  

Also Read: TVS Apache RTR 160 এর ফিচার রিভিউ - বাংলাদেশে আপকামিং ১৬০ সিসি মোটরসাইকেল

বাংলাদেশে ১৬৫ সিসির মোটরসাইকেল এখন নতুন ট্রেন্ড এবং টিভিএস এপাচি আরটিআর ১৬০ এরমধ্যে সবচাইতে কমদামী বাইক। ১৭৭,৯০০ টাকার প্রাইজ ট্যাগ নিয়ে এটা হোন্ডা সিবি হর্নেট এবং বাজাজ পালসার এনএস১৬০ থেকে প্রায় ২২,০০০ টাকা কম। কাজেই, যদি আপনি ১৬৫ সিসির বাইকের প্রাইসিং এবং মাইলেজ নিয়ে চিন্তা করেন, তবে এটা আপনার জন্য ভালো একটি অপশন। অথবা, আপনি আরো তিনমাস অপেক্ষা করতে পারেন, বাংলাদেশে টিভিএস এর একটি আল্টিমেট ১৬০ সিসি বাইকের জন্য।